

উত্তরাপথঃ এই পৃথিবীতে এমন অনেক প্রাণী আছে যারা দেখতে খুবই ছোট কিন্তু খুবই বিপজ্জনক। অস্ট্রেলিয়ার সমুদ্রের বিশাল এবং রহস্যময় গভীরতায় এমনই কিছু বিপজ্জনক প্রাণী রয়েছে যেগুলি ছোট হওয়ার পাশাপাশি খুব বিষাক্ত, আবার কিছু দেখতে অনেকটা পাথরের মতো আকার সরিষার বীজের চেয়ে বড় নয় । একটির বিষ এতটাই শক্তিশালী যে, এটি স্পর্শ করার সাথে সাথে মনে হবে শরীরে বিষের সুনামি ছুটে যাচ্ছে , যা ইরুকান্দজি সিন্ড্রোম নামে পরিচিত । এর একটি মাত্র হুল দিয়ে একটি পূর্ণ বয়স্ক মানুষের মৃত্যু হতে পারে।এই বিষাক্ত প্রানীটি হল ইরুকান্দজি জেলিফিশ(Irukandji jellyfish )।এর বিষের কোনো প্রতিষেধক না থাকায়, ইরুকান্দজি জেলিফিশ জলের নীচে থাকা বিশ্বের একটি শক্তিশালী শক্তি। উত্তর কুইন্সল্যান্ডের আদিবাসী ইরুকান্দজির নামানুসারে, এই জেলিফিশগুলির নামকরণ হয়েছে।
ইরুকান্দজি জেলিফিশ (Irukandji jellyfish )সাধারণত সরিষার বীজের থেকে বড় হয় না, যার ফলে জলে তাদের দেখা কঠিন হয়। তাদের আকার ছোট হওয়া সত্ত্বেও, তাদের বিষ অবিশ্বাস্যভাবে শক্তিশালী, এদের বিষে প্রোটিন এবং পেপটাইডের মিশ্রণ রয়েছে বলে মনে করা হয় ।এই বিষের প্রভাবে একজন ব্যক্তির কার্ডিওভাসকুলার, শ্বাসযন্ত্র এবং স্নায়ুতন্ত্র প্রভাবিত হতে পারে একে ইরুকান্দজি সিন্ড্রোম বলা হয়।
ইরুকান্দজি সিন্ড্রোমের লক্ষণগুলি খুব দ্রুততার সাথে পরিবর্তিত হতে পারে । এর ফলে প্রায়শই পেশীতে গুরুতর খিঁচুনি, তীব্র পিঠে ব্যথা, বমি বমি ভাব, বমি, উদ্বেগ, অস্থিরতা, ঘাম হওয়া এবং ধীরে ধীরে শরীর শিথিল হওয়ার অনুভূতি তৈরি হয়। গুরুতর ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপ, পালমোনারি শোথ এবং কার্ডিওভাসকুলার সমস্যার দিকে অগ্রসর হতে পারে, যা অবিলম্বে চিকিৎসা না করা হলে মৃত্যু হতে পারে।
ইরুকান্দজি সিন্ড্রোমের ক্ষেত্রে চিকিৎসায় সাধারণত ব্যথা উপশম, হাইড্রেশন এবং অত্যাবশ্যক লক্ষণগুলির পর্যবেক্ষণ সহ উপসর্গগুলির জন্য সহায়ক চিকিৎসা করা হয়। গুরুতর ক্ষেত্রে, বিষের প্রভাব নিরপেক্ষ করতে এব জটিলতা দূর করতে অ্যান্টিভেনম দেওয়া হয় । ইরুকান্দজি জেলিফিশ দ্বারা দংশন করা ব্যক্তিদের জন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চিকিৎসা শুরু করা প্রয়োজন, কারণ এই ক্ষেত্রে একমাত্র চিকিৎসা সমস্যার উল্লেখযোগ্য উন্নতি করতে পারে।
বর্তমানে ইরুকান্দজি জেলিফিশের জীববিজ্ঞানকে আরও ভালোভাবে বোঝার এবং ইরুকান্দজি সিন্ড্রোম প্রতিরোধ ও চিকিৎসার জন্য উন্নত পদ্ধতির বিকাশের প্রচেষ্টা চলছে। গবেষকরা ইরুকান্দজি সিন্ড্রোমের লক্ষণগুলির জন্য দায়ী নির্দিষ্ট টক্সিন সনাক্ত করতে এই জেলিফিশের বিষের অধ্যয়ন করছেন এবং এর প্রভাব থেকে মুক্ত করার থেরাপি তৈরি করছেন।প্রতি বছর অস্ট্রেলিয়াতে এর কারণে প্রচুর মানুষ মারা যায়।সেই কারণে ইরুকান্দজি জেলিফিশের সাথে যুক্ত ঝুঁকি সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য এবং এই বিপজ্জনক প্রাণীদের সাথে কীভাবে মুখোমুখি হওয়া এড়ানো যায় সে সম্পর্কে ব্যক্তিদের শিক্ষিত করার প্রচেষ্টা করা হচ্ছে। যেহেতু কোনো প্রতিষেধক উপলব্ধ নেই, সেই কারণে সাঁতারু এবং ডুবুরিদের সমুদ্র অন্বেষণ করার সময় সতর্কতা এবং সচেতনতা অবলম্বন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এই ক্ষুদ্র কিন্তু মারাত্মক প্রাণীর মুখোমুখি হলে গুরুতর এবং সম্ভাব্য মারাত্মক পরিণতি হতে পারে।
আরও পড়ুন
World Children's Day: সত্যিই কি ‘বিশ্ব শিশু দিবস´পালনের কোনও যৌক্তিকতা আছে ?
প্রীতি গুপ্তাঃ হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটি দিন তারপর ১৪ নভেম্বর আমাদের দেশ সহ সারা বিশ্বজুড়ে পালন করা হবে ‘বিশ্ব শিশু দিবস´(World Children's Day)।এই দিনটি শিশুদের মঙ্গলের জন্য, তাদের ভবিষ্যতের জন্য একটি অনুকূল বিশ্ব তৈরি করার প্রচেষ্টার একটি দিন।কিন্তু প্রশ্ন,সত্যি কি হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে সারা বিশ্ব জুড়ে শিশু দিবস পালন করার কোনও যৌক্তিকতা আছে? আদৌ কি এর কোনও লাভ আমরা আমাদের প্রান্তিক স্তরের শিশুদের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছি ? সম্প্রতি কাজের প্রয়োজনে রাজস্থানের উদয়পুর শহরে আসা। আমরা সবাই জানি উদয়পুর বিখ্যাত তার হ্রদের কারণে । এখানকার স্থানীয় থেকে পর্যটক সকলেই এই সুন্দর হ্রদগুলির আকর্ষণে বারবার ছুঁটে যায়। ‘ফতে সাহেব লেক’ রাজস্থানের উদয়পুরের এক বিখ্যাত পর্যটক স্থল।এখানে বহু মানুষ সকাল- বিকেল এই লেকের চার ধারে হাঁটাহাঁটি করতে বেরিয়ে পড়ে। সেভাবেই দুই দিন আগে বিকেলে হঠাৎ করে বেরিয়ে পড়লাম ‘ফতে সাহেব লেকের ধারে হাঁটার উদ্দেশ্য নিয়ে। হাঁটার মাঝখানে হঠাৎ করে একটি বাচ্চাছেলে আওয়াজ করে ডাকছে ,বললাম কিছু বলবি? সে বলল একটু দাঁড়াতে। ও ছুটে গিয়ে হাতে করে কয়েকটি বেলুন নিয়ে এসে হাজির । সে বারবার বেলুন কেনার অনুরোধ জানাতে লাগল। হাতে অন্য কাজের চাপ নেই অনেকটা অবসর সময় তাই আমি অনেকটা সাংবাদিক সুলভ মন নিয়ে বললাম ঠিক আছে আমি তোর বেলুন নেব ,কিন্তু তার আগে আমি তোকে যা বলব তার তার ঠিক ঠিক উত্তর দিতে হবে। সে খুশী খুশী রাজি হয়ে গেল । .....বিস্তারিত পড়ুন
ফ্লিম রিভিউ -ওপেনহাইমার
উত্তরাপথ: বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্রিস্টোফার নোলান দ্বারা পরিচালিত”ওপেনহাইমার” একটি মাস্টারপিস মুভি। ছবিতে জে. রবার্ট ওপেনহেইমার, এক নামকরা পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পারমাণবিক বোমার বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।এই সিনেমায় ওপেনহাইমার এর জটিল জীবনকে বর্ণনা করা হয়েছে। সেই হিসেবে 'ওপেনহাইমার'কে বায়োপিক বলা যেতে পারে। কারণ এটি একজন মানুষের গল্প। এই ছবির গল্প তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত।ছবির শুরুতে পারমাণবিক বোমা তৈরির আবেগের কথা বলা হয়েছে। যেখানে নায়ক কিছু না ভেবে নিবেদিতপ্রাণভাবে এমন একটি অস্ত্র তৈরিতে নিয়োজিত থাকে যা বিশ্বকে ধ্বংস করতে পারে। অস্ত্র তৈরি হওয়ার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে নায়ক তার কাজের ফলাফল দেখে অপরাধবোধে পূর্ণ হয়। এবং তৃতীয় পর্যায়টি হল রাজনীতি যা ওপেনহাইমারকে মোকাবেলা করতে হয়েছে। পুরো সিনেমাটি রঙিন হলেও রাজনৈতিক অংশ সাদা-কালো রাখা হয়েছে। এই তিনটি সময়কালে যা কিছু ঘটছে, তা সবই একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত। .....বিস্তারিত পড়ুন
Side effects of vitamin: ভিটামিনের আধিক্য আপনার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে
উত্তরাপথঃ ভিটামিনের প্রয়োজনীয়তা আমরা সবাই নিশ্চয়ই ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি যে সুস্থ থাকতে হলে শরীরে প্রয়োজনীয় সব ভিটামিন থাকা খুবই জরুরি। ভিটামিন আমাদের সুস্থ করার পাশাপাশি আমাদের সমগ্র শরীরের বিকাশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যাইহোক, এটি অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া আমাদের জন্য ক্ষতিকারকও হতে পারে। আসুন জেনে নিই অতিরিক্ত ভিটামিন গ্রহণের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া (Side effects of vitamin)সুস্থ থাকার জন্য শরীরে সব ধরনের পুষ্টি থাকা খুবই জরুরি। এ কারণেই বয়স্ক থেকে শুরু করে চিকিৎসক, সবাই আমাদেরকে সুষম ও পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন। সমস্ত পুষ্টি উপাদান আমাদের শরীরকে বিভিন্ন উপায়ে সুস্থ করে তোলে। এর মধ্যে ভিটামিন একটি, যা আমাদের সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। .....বিস্তারিত পড়ুন
PAN-Aadhar link: কেন্দ্র সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ডকে নিষ্ক্রিয় করেছে
উত্তরাপথ : আধারের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক (PAN-Aadhar link)করার সময়সীমা শেষ হওয়ার পরে কেন্দ্রীয় সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ড নিষ্ক্রিয় করেছে৷ আপনি যদি এখনও প্যান কার্ডের সাথে আধার কার্ড লিঙ্ক না করে থাকেন, তাহলে আপনি সরকারের এই কঠোর পদক্ষেপের আওতায় এসেছেন। আপনি যদি আপনার আধার কার্ডকে প্যানের সাথে লিঙ্ক করতে চান তবে আপনি জরিমানা দিয়ে এটি সক্রিয় করতে পারেন। কেন্দ্র সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ডকে আধারের সাথে লিঙ্ক না করার কারণে নিষ্ক্রিয় করেছে। একটি আরটিআই-এর জবাবে, সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ডাইরেক্ট ট্যাক্সেস জানিয়েছে যে আধার কার্ডের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক (PAN-Aadhar link) করার সময়সীমা ৩০ জুন শেষ হয়েছে। যারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আধার কার্ড এবং প্যান কার্ড লিঙ্ক করেননি তাদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দেশে ৭০ কোটি প্যান কার্ড বর্তমানে ভারতে প্যান কার্ডের সংখ্যা ৭০.২ কোটিতে পৌঁছেছে। এর মধ্যে প্রায় ৫৭.২৫ কোটি মানুষ আধারের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক করেছেন। .....বিস্তারিত পড়ুন