lipophilic index: বিজ্ঞানীরা বলছেন চর্বিযুক্ত মাছ খাওয়ার অনেক সুবিধা

উত্তরাপথ

ছবি প্রতীকী

চর্বিযুক্ত মাছ, যেমন সালমন, টুনা এবং ম্যাকেরেল, দীর্ঘদিন ধরে ওমেগা -3 ফ্যাটি অ্যাসিডের একটি ভাল উৎস হিসাবে পরিচিত। সম্প্রতি ইউনিভার্সিটি অফ ইস্টার্ন ফিনল্যান্ড দ্বারা পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে যে চর্বিযুক্ত মাছ খাওয়া হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্যও খুব উপযোগী। এটি লিপোফিলিক সূচক কমিয়ে দিতে পারে  যা সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়।এবার আসা যাক চর্বি যুক্ত মাছ খাওয়ার সুবিধাগুলি নিয়ে আলোচনায় ।

চর্বিযুক্ত মাছ খাওয়া মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে, বিশেষ করে বয়স্ক প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে। আমেরিকান জার্নাল অফ ক্লিনিকাল নিউট্রিশন-এ প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে বয়স্ক প্রাপ্তবয়স্করা যারা সপ্তাহে অন্তত একবার ফ্যাটি মাছ খান তাদের মনে রাখার ক্ষমতা ভাল ছিল যারা মাছ খেয়েছিলেন তাদের থেকে। গবেষণায় বলা হয়েছে যে ফ্যাটি মাছের ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড মস্তিষ্ককে বয়সজনিত স্মৃতি শক্তি কমে যাওয়া থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে।

গবেষণা বলছে চর্বিযুক্ত মাছ হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করতে পারে। আমেরিকান কলেজ অফ কার্ডিওলজির জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে সপ্তাহে দুবার চর্বিযুক্ত মাছ খাওয়া হার্ট ফেইলিউরের ঝুঁকি কম করে। গবেষণায় আরও বলা হয়েছে যে ফ্যাটি মাছের ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড প্রদাহ (Inflamation) কমাতে এবং হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।

ফ্যাটি মাছ খাওয়া মানসিক বিষণ্নতার ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করতে পারে। জার্নাল অফ অ্যাফেক্টিভ ডিসঅর্ডার-এ প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে যারা সপ্তাহে অন্তত একবার চর্বিযুক্ত মাছ খান তাদের মানসিক বিষণ্নতা হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে যারা মাছ কম খান তাদের তুলনায়। গবেষণায় বলা হয়েছে যে চর্বিযুক্ত মাছের ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড প্রদাহ কমাতে এবং মানসিক শান্তি বজায় রাখতে  সাহায্য করতে পারে।

চর্বিযুক্ত মাছ চোখের স্বাস্থ্যের জন্যও ভালো হতে পারে। জার্নাল অফ নিউট্রিশনে প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে চর্বিযুক্ত মাছ খাওয়া বয়স-সম্পর্কিত ম্যাকুলার অবক্ষয়ের ঝুঁকির  কম করে । গবেষণায় বলা হয়েছে যে ফ্যাটি মাছে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড চোখকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে।

যদিও চর্বিযুক্ত মাছের সুবিধাগুলি সম্পূর্ণরূপে বোঝার জন্য আরও গবেষণার প্রয়োজন। তবে গবেষণার এই ফলাফলগুলি আমাদের পরামর্শ দেয় যে আপনার খাদ্যে চর্বিযুক্ত মাছ যোগ করা আপনার সামগ্রিক স্বাস্থ্য এবং সুস্থতার জন্য একটি ভাল উপায় হতে পারে।

বিস্তারিত জানতে পড়ুন: Fatty fish consumption reduces lipophilic index in erythrocyte membranes and serum phospholipids, Nutrition, Metabolism and Cardiovascular Diseases, 2023, (DOI: 10.1016/j.numecd.2023.04.011)

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


Electoral Bond এর গোপনীয়তা সরিয়ে রাজনৈতিক দলগুলিকে, জানাতে হবে প্রাপ্ত অনুদানের পরিমাণ

উত্তরাপথঃ বুধবার, নির্বাচনী বন্ড (Electoral Bond)প্রকল্পের আইনি বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদনের শুনানি হয়। শীর্ষ আদালত তার মন্তব্যে বলেছে, 'নির্বাচনী বন্ডগুলি রাজনৈতিক দলগুলিকে বেনামী অর্থ প্রদান করে, কারণ তাদের কেনাকাটা সম্পর্কিত রেকর্ডগুলি স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার কাছে উপলব্ধ যা শুধুমাত্র তদন্তকারী সংস্থাগুলি অ্যাক্সেস করতে পারে৷ এর আগে নির্বাচনী বন্ড’ (Electoral Bond) সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) কেন্দ্র দাবি করেছিল, রাজনৈতিক দলগুলির আয়ের উৎস জানার অধিকার নেই জনতার।এবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তৎপর হল নির্বাচন কমিশন (Election Commission of India)।বুধবার বিকেল ৫টার মধ্যে যাবতীয় হিসেব জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কমিশনের তরফে।নির্বাচনী বন্ডের (Electoral Bond)মামলায় কেন্দ্রের আর্জি সত্বেও সুপ্রিম কোর্ট রাজনৈতিক দলগুলিকে আয়ের উৎস জানাতে বলেছিল। আদলত নির্দেশ দিয়েছিল, গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোন রাজনৈতিক দল কত অনুদান মিলেছে, সেই তথ্য বন্ধ খামে জানাতে হবে।এর আগেও নির্বাচনী বন্ডের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে একাধিক মামলা হয়েছে শীর্ষ আদালতে। মামলাকারীরা অভিযোগ করেছিলেন, রাজনৈতিক দলগুলি এই নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ বিদেশ থেকে পেতে পারে এর ফলে গণতন্ত্র ধ্বংস হবে। যদিও কোনও রাজনৈতিক দলই এই দাবি মানতে চায়নি। ৩ অক্টোবর মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সব তথ্য দিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। এই রায়ের পরেই তৎপর হল কমিশন। .....বিস্তারিত পড়ুন

সেলফির উচ্চ রেটিং কি আপনাকে আরওপাতলা হতে উৎসাহিত করছে ?

উত্তরাপথঃ সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে সেলফি তোলা এবং নিজেকে পাতলা হিসাবে দেখানোর মধ্যে একটি সম্পর্ক থাকতে পারে। যুক্তরাজ্যের ইয়র্ক সেন্ট জন ইউনিভার্সিটির রুথ নাইট এবং ইউনিভার্সিটি অফ ইয়র্কের ক্যাথরিন প্রেস্টন সম্প্রতি PLOS ONE জার্নালে তাদের ফলাফল প্রকাশ করেছেন।সেখানে সেলফির উচ্চ রেটিং এবং আমাদের শরীরের গঠনের মধ্যে যোগসূত্র খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে।    বর্তমান সোশ্যাল মিডিয়ায় সেলফি হল এক জনপ্রিয় ছবি দেওয়ার ধরন। যিনি সেলফি তোলেন তিনি ক্যামেরাকে তাদের শরীর থেকে দূরে রেখে নিজেই নিজের ছবি তোলে। আগের গবেষণায় বলা হয়েছে সেলফিগুলি দেখার ফলে ছবির বিষয়গুলি সম্পর্কে দর্শকদের সিদ্ধান্ত প্রভাবিত হতে পারে। .....বিস্তারিত পড়ুন

Vijay Stambh : চিতোরগড় দুর্গে বিজয় স্তম্ভ হিন্দু – মুসলিম সহাবস্থানের প্রতীক

উত্তরাপথঃ খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীতে মৌর্য রাজবংশ কর্তৃক স্থাপিত চিতোরগড় দুর্গ সাহস ও আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে আজও দাঁড়িয়ে আছে। এই দুর্গ তার বিশাল কাঠামো, রাজপ্রাসাদ, একাধিক  সুদৃশ্য মন্দির সহ সুন্দর জলাশয়ের জন্য বিখ্যাত।৭০০-একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, এই দুর্গটিতে প্রায় ৬৫টি ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন রয়েছে যা রাজপুত এবং ইসলামিক স্থাপত্য শৈলীর সূক্ষ্মতার প্রমান দেয়। বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh)) হল এই দুর্গে অবস্থিত,সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর কাঠামো।এই আশ্চর্য-অনুপ্রেরণামূলক স্তম্ভটি কেবল তার উচ্চতার জন্য বিখ্যাত নয়,এটি রাজপুতদের অদম্য সাহস এবং অধ্যবসায়ের গল্পও বলে যা চিতোরগড় দুর্গেরই সমার্থক হয়ে উঠেছে।বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh), নাম থেকে বোঝা যায়, বিজয়ের প্রতীক।  প্রাচীনকালে যে কোনো যুদ্ধ অভিযানের সাফল্যের পর সেই বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতে রাজারা মন্দির, স্তূপ, স্মৃতিস্তম্ভ ও স্তম্ভ নির্মাণ করতেন।  ৯ তলা এই বিজয় স্তম্ভটি ১৯৪০ থেকে ১৪৪৮ সালের মধ্যে মহারানা কুম্ভ দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন

দীপাবলির সময় কেন পটকা ফোটানো নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা যায় না ?

উত্তরাপথঃ দীপাবলির পরের দিন, যখন কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (CPCB) শহরের বায়ু মানের সূচকের তালিকা প্রকাশ করে,তখন  দেখা যায় রাজধানী দিল্লি বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দূষিত শহরের প্রথমেই রয়েছে। CPCB-এর মতে, ১২ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় দিল্লির বায়ু মানের সূচক ছিল ২১৮ যা ভোরের দিকে বেড়ে ৪০৭ এ পৌঁছায় । ৪০০ – ৫০০ AQI  এর স্তর সুস্থ ব্যক্তিদের প্রভাবিত করে। দীপাবলির সারা রাত, লোকেরা পটকা ফাটিয়ে দীপাবলি উদযাপন করে। ১৩ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আবার তথ্য প্রকাশ করে এই তালিকায়, দিল্লির গড় বায়ু মানের সূচক ছিল ৩৫৮ যা 'খুব খারাপ' বিভাগে পড়ে।   বায়ু দূষণের এই পরিস্থিতি শুধু দিল্লিতেই সীমাবদ্ধ ছিল না।  নয়ডার বায়ু মানের সূচক ১৮৯ থেকে ৩৬৩ এ এবং রোহতক, হরিয়ানার ১৩৭ থেকে বেড়ে ৩৮৩ হয়েছে। দীপাবলির দুই দিন দিল্লি ,নয়ডা  ,কলকাতা, মুম্বাই সহ দেশের অন্যান্য শহরেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। এই দিনগুলিতে মানুষ বিষাক্ত বাতাসে শ্বাস নিতে বাধ্য হয়েছে। ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জাতীয় রাজধানী দিল্লি এবং নয়ডায় সবুজ পটকা ছাড়া যে কোনও ধরণের আতশবাজি ফাটান সম্পূর্ণ রূপে নিষিদ্ধ। আদালত সবুজ পটকা পোড়ানোর সময়ও নির্ধারণ করে দিয়েছে রাত ৮টা থেকে ১০টা। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে সুপ্রিম কোর্টের এই আদেশের মানে কী?  আদালতের এই আদেশ কি এখন প্রত্যাহার করা উচিত?  পুলিশ কেন এই আদেশ কার্যকর করতে পারছে না?  এর জন্য কি পুলিশ দায়ী নাকি সরকারের উদাসীনতা রয়েছে এর পেছনে? .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top