গার্গী আগরওয়ালা মাহাতো
১৭ শতকের উদয়পুরের নাথদ্বারায় অবস্থিত শ্রীনাথজি মন্দিরটি কৃষ্ণ ভক্তদের কাছে এক পবিত্র তীর্থস্থান।সারা বছর শ্রীনাথজির আকর্ষণে দেশ-বিদেশের বহু ভক্ত নাথদ্বারায় ছুটে আসেন। শ্রীনাথজির মন্দিরটি উদয়পুর থেকে ৪৮ কিমি উত্তর-পূর্বে নাথদ্বারায় অবস্থিত। এখানকার লোকেরা বিশ্বাস করে যে ভগবান কৃষ্ণ নিজেই এই মন্দিরের স্থানটি বেছে নিয়েছিলেন। তা নিয়ে ভক্তদের নিয়ে মধ্যে দুই রকম কিংবদন্তি প্রচলিত আছে ।
প্রথম কিংবদন্তি অনুসারে এটা বিশ্বাস করা হয় যে ১৬৭২ সালে, মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের কাছ থেকে কৃষ্ণ মূর্তিটি বাঁচাতে, রানা রাজ সিং বৃন্দাবন থেকে মূর্তিটি নিয়ে যান এবং মুঘল সম্রাটের নাগালের থেকে দূরে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর মূর্তিটিকে একটি গরুর গাড়িতে স্থাপন করে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার সময় গরুর গাড়িটি নাথদ্বারার একটি স্থানে আটকে যায়, মূর্তিটির সাথে থাকা পুরোহিতরা এই ঘটনার উপর উপসংহারে পৌঁছেছিলেন যে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সেই স্থানেই থাকতে চেয়েছিলেন যেখানে গরুর গাড়ি আটকে ছিল। তাই, ভগবানের ইচ্ছা মনে করে একটি বিশাল মন্দির তৈরি করা হয়েছিল যেখানে ভগবান কৃষ্ণের মূর্তি পূজা করা শুরু হয়েছিল এবং এখনও সেই স্থানে পূজা করা হচ্ছে।
দ্বিতীয় কিংবদন্তি অনুসারে,একদিন ভগবান কৃষ্ণ ভক্ত মীরা বাই ভগবানকে তার জন্মস্থান চিতোরে তার সাথে আসতে বলেছিলেন। ভগবান কৃষ্ণ সাথে আসতে রাজি হয়েছিলেন, কিন্তু একটি শর্ত রেখেছিলেন: তিনি বলেছিলেন যে তিনি অবশ্যই তার পিছনে হাঁটবেন তবে তাকে বলেছিলেন, যতক্ষণ না তিনি চিত্তোর পৌঁছান ততক্ষণ পিছনে তাকাবেন না। বিশ্বাস করা হয় যে নাথদ্বারা পৌঁছে, মীরা বাই তার ধৈর্য হারিয়ে ফেলেন এবং ভগবান কৃষ্ণ তাকে কোথায় অনুসরণ করছেন কি না তা পরীক্ষা করার জন্য পিছনে তাকালেন। কৃষ্ণজী তাঁর শর্ত পূর্ণ না হওয়ায় নিজেকে মূর্তিতে রূপান্তরিত করে বললেন, “আমি এখানে বিশ্রাম করব যতক্ষণ না পৃথিবীতে পবিত্রতা আসে, যত তাড়াতাড়ি আমি কলিযুগে চরম পাপ অনুভব করি; আমি এই দেশ থেকে হারিয়ে যাব।” সেই থেকেই নাথদ্বারায় শ্রীনাথজির বাস ।
শ্রীনাথজির মূর্তিটি ভগবান কৃষ্ণের সাত বছর বয়সের বাল্য স্বরূপ। স্থানীয় মানুষেরা শ্রীনাথজির মূর্তিটিকে মন্দিরের ভগবানের চেয়ে বেশী পরিবারের প্রধান হিসাবে বিবেচনা করেন। স্থানীয় বাসীন্দাদের মতে আজও তাঁরা তাদের বাড়ির যে কোনও শুভ কাজ শ্রীনাথজিকে জানিয়ে তারপর শুরু করে। ভগবান ও দেবতার সম্পর্কের চেয়ে বেশী নাথদ্বারার মানুষদের সাথে শ্রীনাথজির সম্পর্ক ভালবাসা এবং শ্রদ্ধার।
নাথদ্বারার শ্রীনাথজি মন্দিরটি দেবতার শ্রিংগারের জন্য বিখ্যাত, এখানে প্রতিমাকে প্রতিদিন একটি করে নতুন পোশাক পরানো হয় । শ্রীনাথজির মূর্তিটি একটি কালো পাথর থেকে খোদাই করা।মূর্তির চিবুকে একটি অত্যন্ত দামী হীরা রয়েছে। মূর্তিটির চারপাশে একটি সাপ, ২টি গরু, ২টি ময়ূর, একটি সিংহ এবং একটি তোতাপাখির ছবি রয়েছে। মন্দিরটির স্থাপত্য সাধারণ মানের যা বৃন্দাবনে অবস্থিত নন্দ মহারাজ মন্দিরের সাথে স্থাপত্যের যথেষ্ট সাদৃশ্য রয়েছে। মন্দিরের স্থানীয় নাম “শ্রীনাথজি কি হাভেলি”।এই হাভেলিতে একটি বিস্তৃত গৃহস্থালি কাঠামো রয়েছে। যেখানে দুধ, পান, চিনি, ফুলের বেশ কিছু স্টোর রুম রয়েছে। এছাড়াও একটি জুয়েলারী চেম্বার, একটি রান্নাঘর, ঘোড়ার জন্য একটি আস্তাবল, একটি কোষাগার, একটি সোনা ও রূপার পিষানোর চাকা এবং একটি ড্রয়িং রুম রয়েছে। শ্রীনাথজির শহর ভ্রমণ করার জন্য শ্রীনাথ হাবেলিতে একটি রথও রয়েছে। এছাড়াও মন্দির কর্তৃপক্ষের অধীনে রয়েছে ৫ শতাধিক গরু। প্রতি বছর, জন্মাষ্টমী, হোলি এবং দীপাবলিতে হাজার হাজার উপাসক এখানে ভিড় করেন ।
আরও পড়ুন
সম্পাদকীয়
এ যেন বহুদিন পর বিজেপির চেনা ছন্দের পতন। হিমাচল প্রদেশের পর কর্ণাটক কংগ্রেস নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বিজেপির বিজয়রথকে থামিয়ে দিল ।২০১৮ পর থেকে লাগাতার হারতে থাকা একটি দল আবার ২০২৪ সাধারণ নির্বাচনে প্রাসঙ্গিক হয়ে গেল । ২২৪ সদস্যের কর্ণাটক বিধানসভায় সরকার গঠন করতে গেলে প্রয়োজন ১১৩টি আসন সেখানে কংগ্রেস একাই পেয়েছে ১৩৬টি আসন, বিজেপি পেয়েছে ৬৫ টি এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী দেবগৌড়ার জেডিএস পেয়েছে ১৯টি এবং অন্যান্য ৪ টি আসন পেয়েছে। যা গতবারের তুলনায় বিজেপির ৩৯ টি আসন কমেছে এবং কংগ্রেসের বেড়েছে ৫৭টি আসন এবং জেডিএসের কমেছে ১৮ টি আসন। কর্ণাটকে কংগ্রেসের এই সাফল্য কি রাজ্যে কংগ্রেসের শক্তিশালী সংগঠনের ফল না কি কর্ণাটকের আগের ক্ষমতাশীল বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ । কর্ণাটকে কংগ্রেসে অনেক বড় নেতা রয়েছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শিবকুমার দক্ষ সংগঠক। আগের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধারামাইয়ার ব্যাপক জনভিত্তি রয়েছে। ভোটের আগে বিজেপির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জগদীশ শেট্টার এবং উপমুখ্যমন্ত্রী সাভাড়ি কংগ্রেসে যোগ দিয়ে নির্বাচনে লড়েছেন। অন্যদিকে বিজেপির প্রচারের সবচেয়ে বড় মুখ ছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। বিজেপির প্রচারে সব নেতারাই মোদীর নাম করেই ভোট চেয়েছিলেন কিন্তু শেষ রক্ষা হল না ।কর্ণাটকের বিজেপি সরকারের ব্যাপক দুর্নীতি সেই সাথে কংগ্রেসের লাগাতার প্রচার যা প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার সুরকে আরও তীব্র করেছে। তাই শুধুমাত্র মোদী ম্যাজিকের উপর ভর করে নির্বাচন জেতা যে আর বিজেপির পক্ষে সম্ভব নয় কর্ণাটকের জনগণ চোখে হাত দিয়ে তাই দেখিয়ে দিল। .....বিস্তারিত পড়ুন
আগামী ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে কি সলমন খানকেও দেখা যাবে কলকাতায় ?
উত্তরাপথ: একেই বলে রথ দেখা কলা বেচা। এলেন ইস্ট বেঙ্গল ক্লাবের শতবর্ষ উদযাপনের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে,আর বাড়তি পাওনা হিসেবে পেয়ে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে একান্ত সাক্ষাতের সুযোগ। কালো টয়োটা এসইউভি ডব্লিউবি০২এএন৬৬৪৯ গাড়িতে করে বিকেল ৪টে ২০ মিনিটে পৌঁছেযান মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাড়িতে। অবশ্য রাস্তায় উপচে পড়া ভিড়ের জন্য দু'বার দাঁড়াতে হয়েছিল গাড়িতে থাকা সুপারস্টারকে। পুলিশি নিরাপত্তার ঘেরাটোপে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ঢোকে সলমন খান। আগেই নিজের টালির চালার বাড়ির সামনে আটপৌড়ে শাড়িতে অপেক্ষায় .....বিস্তারিত পড়ুন
হয়ে গেল পরিণীতি ও রাঘবের এনগেজমেন্টে
উত্তরাপথ: আংটি বদলের মাধ্যমে হয়ে গেল পরিণীতি চোপড়া ও রাঘব চাড্ডার এনগেজমেন্টে । পরিবার ও ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের উপস্থিতিতে একে-অপরকে আংটি পরিয়ে দিলেন রাঘব-পরিণীতি। শনিবারের মায়াবী সন্ধ্যায় রাঘব ও পরিণীতির জুটি থেকে চোখ ফেরানো যাচ্ছিল না। এনগেজমেন্টে পরিণীতি পরেছিলেন ক্রিম রঙের সালোয়ার স্যুট। অপরদিকে রাঘব পরেছিলেন সাদা রঙের কুর্তা-পায়জামা। পরিণীতি ও রাঘবের এনগেজমেন্টে তাদের গোটা পরিবারকে দেখা গেল আনন্দ করতে। .....বিস্তারিত পড়ুন
সময়
অনসূয়া পাঠক: একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের জেনারেল ম্যানেজার সবুজ বোস। রাজারহাট নিউটাউনের একটি বহুতল আবাসনে স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে সুখী জীবন তার। কাজের বাইরে উনার নেশা বলতে নামীদামী পুরানো মডেলের হাত ঘড়ি কালেকশন। এই বিষয়ে তাঁর সংগ্রহশালাটি রীতিমতো চমকে দেবার মতো। তিনি যে বিদেশী মডেলের রিস্ট ওয়াচটি সবচেয়ে বেশী ব্যাবহার করেন সেটা হঠাৎই একদিন খারাপ হয়ে যাওয়াতে পার্শ্ববর্তী করিম চাচার ঘড়ির দোকানে তিনি যান। এবং আশ্চর্যজনক ভাবে দোকানের শো কেসে তাঁর নজর আটকে যায় জার্মানি মডেলের একটি পুরানো ঘড়ির দিকে। এই .....বিস্তারিত পড়ুন