"মহাকাশে লেটুস চাষ করেছেন সুনীতা : জানুন এর ৬ স্বাস্থ্যগুণ"

উত্তরাপথঃমহাকাশ মানেই শুধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির রহস্যময় জগৎ—কিন্তু ভাবতে পারেন, সেখানেই এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নভোচারী কিছু দিন আগে ব্যস্ত ছিলেন সবজি চাষে? হ্যাঁ, ঠিকই শুনছেন। নাসার নভোচারী সুনীতা উইলিয়ামস আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (ISS) নয় মাসের দীর্ঘ মিশনে অবস্থান করেছিলেন। আর সেখানেই তিনি করছেন এক চমকপ্রদ গবেষণা—মহাকাশে লেটুস চাষ! কেন এই পরীক্ষা? নাসার নতুন প্রকল্পের নাম Plant Habitat-07। এর উদ্দেশ্য হলো, মাধ্যাকর্ষণহীন পরিবেশে গাছপালা কীভাবে জল শোষণ করে ও বেড়ে ওঠে, তা বোঝা। ভবিষ্যতের মহাকাশ ভ্রমণ ও মঙ্গল অভিযানের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা মানুষ যদি দীর্ঘ সময় মহাকাশে থাকে, তবে তাদের তাজা সবজির প্রয়োজন হবেই। এই পরীক্ষায় সুনীতা চাষ করছেন একটি বিশেষ জাতের লেটুস—“আউটরেজিয়াস রোমেইন লেটুস”, যা সাধারণত সালাদে ব্যবহৃত হয়। যদিও এই লেটুস এখন খাওয়ার জন্য নয়, তবে গবেষণার সাফল্য ভবিষ্যতে মহাকাশচারীদের পাতে এনে দিতে পারে টাটকা শাকসবজি। একই সঙ্গে পৃথিবীর কৃষি গবেষণাতেও নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে এই উদ্যোগ। এবার জানা যাক লেটুস খাওয়ার ৬ টি স্বাস্থ্যগুণ সম্পর্কে। লেটুস শুধু সালাদে রঙ বাড়ায় না, শরীরকেও দেয় অসংখ্য উপকারিতা। চলুন জেনে নিই— ১। পুষ্টিগুণে ভরপুর – ভিটামিন, খনিজ ও প্রোটিনে সমৃদ্ধ লেটুস আমাদের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সাহায্য করে। ২। জলীয় অংশে ভরপুর – লেটুসে থাকে প্রায় ৯৬% জল, যা শরীরকে রাখে সতেজ ও হাইড্রেটেড। ৩। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ভান্ডার – ক্যানসার প্রতিরোধ, প্রদাহ কমানো ও দীর্ঘমেয়াদি রোগ থেকে সুরক্ষা দিতে সাহায্য করে। ৪। ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক – সালাদের ছোট্ট অংশও ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে রাখে, ফলে ওজন কমাতে সহায়তা করে। .....বিস্তারিত পড়ুন

গাজা সিটি ঘিরে নতুন সংঘাত: ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের মোড় কোথায়?

উত্তরাপথঃ প্রায় দুই বছর ধরে চলতে থাকা ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ আবারও নতুন মাত্রা পেল। বুধবার ইসরায়েল ঘোষণা করেছে, তারা গাজা সিটি দখলের লক্ষ্যে অভিযানের প্রথম ধাপ শুরু করেছে। এরই মধ্যে কয়েক হাজার রিজার্ভ সৈন্যকে ডাকা হয়েছে। তবে এদিকে যুদ্ধবিরতির নতুন প্রস্তাব নিয়ে চলছে আলোচনাও। এই দুই বিপরীতমুখী পদক্ষেপ এখন গোটা মধ্যপ্রাচ্যের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে পারে। গাজা সিটি বহুদিন ধরেই হামাসের রাজনৈতিক ও সামরিক শক্তির কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। ইসরায়েলি সেনাদের দাবি, শহরের ভেতর অসংখ্য সুড়ঙ্গ, অস্ত্র মজুতঘর ও কমান্ড সেন্টার রয়েছে। সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফি ডেফ্রিন সরাসরি বলেন: “হামাস এখন একটি বিধ্বস্ত গেরিলা বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। আমরা গাজা সিটির গভীরে ঢুকে তাদের শক্ত ঘাঁটি ভেঙে দেব।” তবে বাস্তবে শহরটি এখন এক মানবিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি। হাসপাতাল, স্কুল, এমনকি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানও আর নিরাপদ নেই। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আশঙ্কা করছে, নতুন হামলা হলে হাজার হাজার সাধারণ মানুষ গৃহহীন ও হতাহত হবে। হামাস সম্প্রতি একটি ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে রাজি হয়েছে। এতে কিছু অপহৃতকে মুক্তি দেওয়ার বিনিময়ে ইসরায়েলে আটক ফিলিস্তিনি বন্দিদের ছেড়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু নেতানিয়াহুর সরকার বলছে— সব অপহৃতকে একসঙ্গে মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ থামবে না।এই দ্বন্দ্বই এখন আলোচনার মূল বাধা। মধ্যস্থতাকারী আরব দেশগুলো সময় চাইছে, কিন্তু ইসরায়েলি সরকার যুদ্ধবিরতির চেয়ে সামরিক অভিযানে বেশি জোর দিচ্ছে। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গাজায় এখন পর্যন্ত ৬২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। কয়েক লক্ষ্য মানুষ গৃহহীন হয়ে শরণার্থী শিবিরে ঠাঁই নিয়েছে। .....বিস্তারিত পড়ুন

১৯৮৫ সালের জেএএল বিমানের দুর্ঘটনা: ৪০ বছর পরেও অশ্রুজলে স্মরণ

উত্তরাপথঃ আকাশপথে ভরসা রেখেই মানুষ যাত্রা করে—দ্রুত পৌঁছানোর আশায়, নতুন স্বপ্নের খোঁজে। কিন্তু ১৯৮৫ সালের ১২ আগস্টের সেই ভয়াল বিকেল জাপানের আকাশকে করে দিয়েছিল রক্তিম। জাপান এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ১২৩, টোকিও থেকে ওসাকার পথে উড়েছিল; কিন্তু ৪৫ মিনিট পরই গুনমা প্রিফেকচারের পাহাড়ি অরণ্যে মিলে বিমানটির ভগ্নাবশেষ । ৫২৪ জন যাত্রীর মধ্যে প্রাণ বাঁচাতে পেরেছিলেন মাত্র চারজন। এ ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে একক বিমান দুর্ঘটনায় সর্বাধিক প্রাণহানির ঘটনা। চল্লিশ বছর পেরিয়ে গেছে। কিন্তু শোক কি এত সহজে ফিকে হয়? আজও পরিবারের সদস্যরা হাতে ফুল নিয়ে ভেজা পাহাড়ি পথ বেয়ে ওঠেন ওসুতাকা রিজের সেই শোকস্তম্ভে। কেউ খুঁজে ফেরেন সন্তানের হাসি, কেউ ভাইয়ের মুখ, কেউ বা হারানো স্বামী-স্ত্রীর ছায়া। ৭৮ বছরের কুনিকো মিয়াজিমা তাঁর ৯ বছরের ছেলেকে হারিয়েছিলেন সেই রাতে। তিনি বলেন, “এ জায়গা শুধু শোকের নয়, জীবনের গুরুত্ব বোঝানোর এক জায়গা।” শোকস্তম্ভের সামনে নীরব প্রার্থনায় দাঁড়িয়ে থাকে শত শত মানুষ। আকাশে রঙিন বেলুন উড়ে যায়—যেন হারানো আত্মাদের মুক্তির বার্তা। বিকেল ৬টা ৫৬ মিনিটে, দুর্ঘটনার সঠিক সময়ে, বাজে নীরবতার ঘণ্টা। সেদিন বিমানে ছিলেন জনপ্রিয় গায়ক কিউ সাকামোতোও, যার গান “সুকিয়াকি” আজও প্রজন্মের পর প্রজন্মকে স্পর্শ করে। কিন্তু তাঁর সুরও থেমে যায় অকালেই, অসংখ্য স্বপ্নের মতো। সরকারি তদন্ত জানায়—ভুল মেরামতই সেই মর্মান্তিক পরিণতির কারণ। বিমানের লেজের চাপরোধী অংশটি ভেঙে গিয়ে পুরো হাইড্রলিক সিস্টেম অকেজো হয়ে পড়ে। এক মুহূর্তে নিয়ন্ত্রণ হারায় বিশাল জাহাজটি, আর শেষ পর্যন্ত ভেঙে পড়ে পাহাড়ি জঙ্গলে। আজও পরিবারগুলো পাহাড়ে ওঠে, যদিও অনেকের আজ বয়সের ভারে পাহাড়ে উঠা বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে। .....বিস্তারিত পড়ুন

ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে জীবনধারায় তিনটি সহজ পরিবর্তন

উত্তরাপথঃ সাম্প্রতিক এক আন্তর্জাতিক গবেষণায় দেখা গেছে, জীবনধারায় মাত্র তিনটি পরিবর্তনের মাধ্যমে টাইপ–২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি প্রায় ৩১% কমানো সম্ভব।হার্ভার্ড টি.এইচ. চ্যান স্কুল অব পাবলিক হেলথ এবং স্পেনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা একটি দীর্ঘমেয়াদি ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল (PREDIMED-Plus) পরিচালনা করেন। ছয় বছরের পর্যবেক্ষণে তারা দেখেছেন, সঠিক খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ এবং পেশাদারদের সহায়তায় ওজন নিয়ন্ত্রণ—এই তিনটি পরিবর্তন একত্রে ডায়াবেটিস প্রতিরোধে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। গবেষণার বর্ণনা অংশগ্রহণকারী সংখ্যা: ৪,৭৪৬ জন বয়স সীমা: ৫৫ থেকে ৭৫ বছর অবস্থা: সবাই অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলকায় ছিলেন এবং মেটাবলিক সিন্ড্রোমে ভুগছিলেন, তবে শুরুতে কারও টাইপ–২ ডায়াবেটিস ছিল না। ইন্টারভেনশন গ্রুপ ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্যাভ্যাস (Mediterranean diet) মেনে চলা। প্রতিদিন প্রায় ৬০০ ক্যালোরির  কম খাদ্য গ্রহণমাঝারি মাত্রার ব্যায়াম (দ্রুত হাঁটা, হালকা শক্তি ও ভারসাম্যের ব্যায়াম) পেশাদার সহায়তায় ওজন নিয়ন্ত্রণ কন্ট্রোল গ্রুপ: কেবল ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্যাভ্যাস, তবে ক্যালোরি সীমাবদ্ধতা বা ব্যায়ামের নির্দেশনা ছিল না। ফলাফল ডায়াবেটিস ঝুঁকি হ্রাস: ইন্টারভেনশন গ্রুপের অংশগ্রহণকারীদের টাইপ–২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি ৩১% কমে যায়। ওজন পরিবর্তন: গড়ে ৩.৩ কেজি কমে, যেখানে কন্ট্রোল গ্রুপে কেবল ০.৬ কেজি কমেছে। পেটের মেদ হ্রাস: কোমরের মাপ গড়ে ৩.৬ সেন্টিমিটার কমেছে (কন্ট্রোল গ্রুপে মাত্র ০.৩ সেন্টিমিটার)। কেন কাজ করে এই পদ্ধতি? ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্যাভ্যাসে থাকে— প্রচুর ফল, শাকসবজি, গোটা শস্য অলিভ অয়েলসহ স্বাস্থ্যকর চর্বি সীমিত পরিমাণে দুধজাত খাদ্য ও চর্বিহীন প্রোটিন প্রায় নেই বললেই চলে লাল মাংস এই ধরনের খাদ্য ইনসুলিন সেনসিটিভিটি বাড়ায় ও শরীরে প্রদাহ কমায়। যখন এর সঙ্গে ক্যালোরি নিয়ন্ত্রণ ও শারীরিক কার্যকলাপ যোগ হয়, তখন শরীরের ওজন এবং রক্তে শর্করা দুই-ই আরও ভালভাবে নিয়ন্ত্রণে আসে। গবেষকরা জানিয়েছেন, বাস্তবে এই পরিবর্তনের ফলে প্রতি ১০০ জন মানুষের মধ্যে প্রায় ৩ জন ডায়াবেটিস থেকে রক্ষা পায়। বিশ্বের ডায়াবেটিস–মহামারির প্রেক্ষিতে এটি একটি বড় সাফল্য। .....বিস্তারিত পড়ুন

# রাতে ঘুমের সমস্যাঃ এই খাবারগুলিতেই লুকিয়ে রয়েছে ভালো ঘুমের রহস্য

উত্তরাপথঃ ঘুম মানবদেহের জন্য এক অত্যাবশ্যক শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া। পর্যাপ্ত ও মানসম্মত ঘুমের অভাব ক্লান্তি, মানসিক চাপ, হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি, এমনকি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস করতে পারে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে খাদ্যাভ্যাস ঘুমের মানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আজ আমরা  খাদ্য ও ঘুমের সম্পর্ককে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ করব। কখনও কি ভেবে দেখেছেন যে আপনি যা খাচ্ছেন তা আপনার ঘুমের উপর প্রভাব ফেলতে পারে? আমরা অনেকেই জানি যে পেট ভরে খেয়ে ঘুমাতে গেলে ঘুম ভালো হয় না এবং সকালে ঘুম থেকে উঠে ক্লান্ত বোধ হয়। এর একটি বড় কারণ হলো রাতে বেশি খাওয়া। অতিরিক্ত খাবার হজম করতে শরীরের অতিরিক্ত শক্তি লাগে, যা আমাদের পাকস্থলীর উপর চাপ সৃষ্টি করে এবং রাতের ঘুমকে ব্যাহত করে।এক্ষেত্রে ক্যাফেইনযুক্ত খাবার ও পানীয় আমাদের রাতের ঘুম কমিয়ে দেয়। আবার অন্যদিকে এমন কিছু খাবার আছে যা আমাদের রাতের ঘুমকে আরও গভীর করে তুলতে পারে।এই আলোচনায় সাম্প্রতিক আন্তর্জাতিক গবেষণা (২০২১–২০২৪) থেকে সংগৃহীত তথ্য ব্যবহার করা হয়েছে। বিশেষভাবে যেসব খাদ্য উপাদান যেগুলি মেলাটোনিন ও ট্রিপটোফ্যান উৎপাদনে ভূমিকা রাখে, সেগুলিকে গুরুত্ব দিয়ে পর্যালোচনা করা হয়েছে। গবেষণার ফলাফলগুলো থেকে দেখা যায়— ১। মেলাটোনিনসমৃদ্ধ খাদ্য: ডিম, মাছ, বাদাম, বীজ এবং টক চেরির রস শরীরে মেলাটোনিনের মাত্রা বাড়িয়ে ঘুম উন্নত করে। ২। ট্রিপটোফ্যানসমৃদ্ধ খাদ্য: দুধ, পূর্ণশস্য, ডাল, শাকসবজি ও ফল ট্রিপটোফ্যান সরবরাহ করে, যা থেকে শরীরে সেরোটোনিন এবং পরবর্তীতে মেলাটোনিন তৈরি হয়। ৩। কিউই ফল ও টক চেরির রস: ছোট আকারের পরীক্ষায় দেখা গেছে, এগুলো রাতে ঘুমের সময়কাল বৃদ্ধি ও মান উন্নত করে। ৪। ম্যাগনেশিয়াম: শাকসবজি, বাদাম, ডাল ও পূর্ণশস্যে থাকা ম্যাগনেশিয়াম কর্টিসল উত্তেজনা কমিয়ে স্নায়ুতন্ত্রকে শান্ত করে। গবেষণায় দেখা গেছে, ম্যাগনেশিয়াম সাপ্লিমেন্ট গভীর ঘুম (deep sleep) ও স্বপ্নঘুম (REM sleep) বৃদ্ধিতে সহায়ক। ৫। খাওয়ার সময়: শোবার অন্তত ২–৩ ঘণ্টা আগে রাতের খাবার শেষ করা এবং প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে .....বিস্তারিত পড়ুন

গাট ব্যাকটেরিয়ার গোপন শক্তি - "কেচাপ থেকে টুথপেস্ট—হজম হয় সব!"

উত্তরাপথঃ দশকের পর দশক ধরে বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করে এসেছেন যে খাবারে ব্যবহৃত অনেক সাধারণ থিকনার বা ঘন করার উপাদান (যেমন সেলুলোজ-ভিত্তিক অ্যাডিটিভ) মানুষের শরীরে হজম হয় না। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণা দেখাচ্ছে, এই ধারণা পুরোপুরি সঠিক নয়। কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলাম্বিয়া–এর একদল গবেষক আবিষ্কার করেছেন, আমাদের অন্ত্রে থাকা বিশেষ কিছু গাট ব্যাকটেরিয়া আসলে এই বৃহৎ আণবিক গঠনগুলোকে খাবার হিসেবে ব্যবহার করতে পারে। এতদিন ধরে যেটিকে অসম্ভব মনে করা হতো! গবেষকদের মতে, এর মূল রহস্য লুকিয়ে আছে এনজাইমে। সাধারণত আমাদের শরীর খাদ্য আঁশ ভাঙতে যে এনজাইম ব্যবহার করে, সেই একই এনজাইম সক্রিয় হয়ে এই কৃত্রিম সেলুলোজজাত থিকনারকেও ভেঙে ফেলতে পারে। ড. দীপেশ পানওয়ার, মাইকেল স্মিথ ল্যাবরেটরির পোস্টডক্টরাল ফেলো এবং গবেষণার প্রধান লেখক, জানিয়েছেন— “আমরা এতদিন ধরে ভেবেছিলাম এই সেলুলোজ-জাত থিকনারগুলো অপরিবর্তিত অবস্থায় শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। কিন্তু আমাদের গবেষণা দেখাল, ফল, শাকসবজি ও সিরিয়ালের মতো প্রাকৃতিক পলিস্যাকারাইড খাওয়ার পর অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া আসলে এই অ্যাডিটিভগুলো ভাঙতে সক্ষম।” কেচাপ, সালাদ ড্রেসিং, আইসক্রিম, এমনকি টুথপেস্ট—এসবের মধ্যে যে ঘনভাব বা মসৃণতা আমরা পাই, তার মূল কারণ এই সেলুলোজ-ভিত্তিক থিকনার। কিন্তু একইসঙ্গে, বেশি পরিমাণে এগুলো গ্রহণ করলে এগুলো ল্যাক্সেটিভ বা হালকা জোলাপ হিসেবেও কাজ করে। এই গবেষণা দেখিয়েছে, যদি অন্ত্রে থাকা ব্যাকটেরিয়াগুলো আগে থেকেই প্রাকৃতিক শর্করার দীর্ঘ শৃঙ্খল (পলিস্যাকারাইড)–এর সংস্পর্শে থাকে, তবে তারা কৃত্রিম সেলুলোজ ভাঙতে প্রস্তুত হয়ে যায়। অর্থাৎ, স্বাস্থ্যকর খাবারের সঙ্গে এই অ্যাডিটিভ খেলে ব্যাকটেরিয়া সহজে এগুলোকে শক্তি হিসেবে ব্যবহার করতে পারে। ড. হ্যারি ব্রুমার, কেমিস্ট্রি বিভাগের অধ্যাপক, বলেছেন— “আমরা কখনো ভাবিনি যে এই কৃত্রিম উপাদানগুলোও ব্যাকটেরিয়ার জন্য চিনি সরবরাহ করতে পারে। এতদিন যেগুলোকে নিছক নিষ্ক্রিয় থিকনার মনে করা হতো, সেগুলো আসলে ভিন্ন ভূমিকাও রাখছে।” .....বিস্তারিত পড়ুন

#ছোট গল্প - মায়ের অপেক্ষা

দেবারতী দেঃ একটি ছোট্ট গ্রামে, যেখানে ধানখেতের সবুজ আর নদীর কলতান একে অপরের সঙ্গে মিশে যায়, সেখানে থাকতেন মাধুরী। বয়স পঞ্চাশের কাছাকাছি, কিন্তু তার চোখে এখনও জ্বলত সেই তরুণী মেয়েটির স্বপ্ন, যে একদিন শহরে গিয়ে নিজের ছেলে অমিতের জন্য একটা ভালো জীবন গড়ে দিতে চেয়েছিল। মাধুরী একজন মধ্যবয়সী মা, যার জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত ছিল তার একমাত্র ছেলে অমিতকে ঘিরে। অমিত ছিল মাধুরীর গর্ব। গ্রামের স্কুলে পড়াশোনায় সে ছিল সেরা। মাধুরীর স্বামী মারা গিয়েছিলেন যখন অমিত মাত্র দশ বছরের। সেই থেকে মাধুরী একা হাতে ছেলেকে মানুষ করেছেন। দিনরাত খেটে, অন্যের বাড়িতে কাজ করে, ধানখেতে মজুরি করে তিনি অমিতের পড়াশোনার খরচ জোগাড় করতেন। অমিতও মায়ের ত্যাগের মর্যাদা রাখত। সে কলকাতার একটি নামী কলেজে পড়াশুনা করে , সে এখন শহরে একটি বড় কোম্পানিতে চাকরি করে। কিন্তু মাধুরীর মন ছিল অস্থির। অমিত শহরে গেছে তিন বছর হয়ে গেল, কিন্তু বাড়ি ফিরেছে মাত্র একবার। ফোনে কথা হয়, কিন্তু সেই কথায় মাধুরীর মন ভরে না। "মা, আমি খুব ব্যস্ত। এবার পুজোয় আসব," অমিত বলে। কিন্তু পুজো আসে, চলেও যায়। অমিতের দেখা মেলে না। মাধুরী প্রতিদিন সকালে উঠে বাড়ির উঠোনে দাঁড়িয়ে দূরের রাস্তার দিকে তাকিয়ে থাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। যদি অমিতের ছায়া দেখা যায়! সে তার ছেলের পছন্দের মাছের ঝোল রান্না করে, তার পুরনো জামাটা সেলাই করে রাখে, যদি হঠাৎ সে চলে আসে। কিন্তু দিনগুলো কেটে যায়, আর মাধুরীর অপেক্ষা কেবল দীর্ঘ হয়। একদিন গ্রামে খবর এলো, অমিত বিয়ে করেছে। শহরের একটি মেয়েকে, নাম রিয়া। মাধুরী খুশি হলেন, কিন্তু মনের কোণে একটা চাপা ব্যথা। অমিত তাকে বলেনি। সে শুধু ফোনে বলল, "মা, আমি রিয়াকে নিয়ে শীঘ্রই আসব।" মাধুরী হাসলেন, কিন্তু চোখের কোণে জল চিকচিক করছিল। মাস কেটে গেল। এক সন্ধ্যায়, যখন মাধুরী বারান্দায় বসে তার পুরনো রেডিওতে ভাটিয়ালি গান শুনছিলেন, দূরে একটা গাড়ির আলো দেখা গেল। তার হৃৎপিণ্ড দ্রুত লাফিয়ে উঠল। গাড়িটা থামল, আর তা থেকে নামল অমিত। তার পাশে একটি সুন্দরী মেয়ে, রিয়া। মাধুরী দৌড়ে গিয়ে ছেলেকে জড়িয়ে ধরলেন। "অমিত, তুই এসেছিস!" তার গলা ভারী হয়ে গেল। অমিত হাসল, কিন্তু তার চোখেও জল ছিল। "মা, আমি দেরি করে ফেলেছি। কিন্তু এবার আমি থাকব। আমি আর রিয়া এখানেই থাকতে চাই, তোমার কাছে।" .....বিস্তারিত পড়ুন

12 3 4 5 6 7 8
Scroll to Top