#ছোট গল্প- একটি স্বপ্নের কথা

প্রীতি গুপ্তাঃ রীতা এক মাঝবয়সী মহিলা, চল্লিশের কোঠায় পা দিয়েছে। তার জীবনটা একটা নিয়মের মধ্যে বাঁধা—সকালে উঠে সংসারের কাজ, স্বামীর জন্য জলখাবার তৈরি, ছেলের স্কুলের টিফিন বানানো, আর তারপর নিজের অফিস। ব্যাঙ্কে কেরানির কাজটা তার কাছে যেন একঘেয়ে হয়ে গেছে। তার মনের মধ্যে একটা ছোট্ট স্বপ্ন লুকিয়ে আছে, যেটা সে কাউকে বলে না। সে স্বপ্ন দেখে একদিন নিজের একটা ছোট্ট ফুলের দোকান খুলবে। ফুলের গন্ধে ভরা একটা জায়গা, যেখানে সে মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারবে। একদিন সন্ধ্যায়, বাড়ি ফিরে রীতা তার ছোট্ট ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে গোলাপের গাছটার দিকে তাকিয়ে ছিল। গাছটা তার মায়ের দেওয়া, তার শেষ স্মৃতি। প্রতিদিন সে গাছটার যত্ন নেয়, যেন মায়ের সঙ্গে তার একটা অদৃশ্য সংযোগ রয়েছে এই গাছটার মাধ্যমে। হঠাৎ তার মনে পড়ল, মা কীভাবে বলতেন, “রীতা, জীবনটা ফুলের মতো। একটু যত্ন নিলেই ফুটে ওঠে। তুই তোর স্বপ্নের যত্ন নে।” কিন্তু স্বপ্ন দেখা আর স্বপ্ন পূরণ করা এক নয়। রীতার স্বামী অমিত, একজন ব্যস্ত ব্যবসায়ী। তার কাছে রীতার স্বপ্নটা যেন ছেলেমানুষি। “ফুলের দোকান? ওতে কত টাকা আসবে? তুই তোর চাকরিটা ছাড়তে পারবি না, রীতা। আমাদের ছেলের পড়াশোনা, বাড়ির খরচ—এসব কি ফুল বিক্রি করে চলবে?” অমিতের কথাগুলো রীতার বুকে ছুরির মতো বিঁধত। তবু সে চুপ করে থাকত, কারণ সে জানত, অমিতের কথায় যুক্তি আছে। একদিন, অফিস থেকে ফেরার পথে, রীতা একটা ফুলের দোকানের সামনে থামল। দোকানের বুড়ো মালিক, হরিদাস, তার দিকে তাকিয়ে হাসলেন। “দিদি, একটা গোলাপ নিয়ে যাও। তোমার মুখের হাসিটা ফুটিয়ে তুলবে।” রীতা হেসে ফেলল। সে একটা গোলাপ কিনল আর হরিদাসের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করল। হরিদাস বললেন, “ফুল বিক্রি করা শুধু টাকার ব্যাপার নয়। এটা মনের আনন্দ। তুমি যদি মন দিয়ে এ কাজ করো, মানুষ তোমার ফুলের গন্ধে হারিয়ে যাবে।” হরিদাসের কথাগুলো রীতার মনে দাগ কাটল। সেদিন রাতে, সে সাহস করে অমিতের সঙ্গে কথা বলল। “আমি জানি, আমার স্বপ্নটা ছোট। কিন্তু এটা আমার। আমি চাই তুমি আমাকে একটা সুযোগ দাও। আমি চাকরি ছাড়ব না, কিন্তু আমি একটা ছোট্ট দোকান শুরু করতে চাই।” অমিত প্রথমে চুপ করে রইল। তারপর বলল, “ঠিক আছে, রীতা। তুমি চেষ্টা করে দেখো। কিন্তু আমার উপর সংসারের দায়িত্ব যেন না বাড়ে।” .....বিস্তারিত পড়ুন

 “দুর্গাপূজার অতীত থেকে বর্তমানের যাত্রা”

গার্গী আগরওয়ালা মাহাতো- শরৎ এলেই বাঙালির প্রাণে জেগে ওঠে দুর্গাপূজার আনন্দ। নীল আকাশ, পথের ধারে ফুটে থাকা সাদা কাশফুল দেখে আমাদের মনে আনন্দের ঢেউ ওঠে—এটাই দুর্গাপূজা। দুর্গাপূজা শুধু ধর্মীয় আচার নয়, এটি বাঙালির আবেগ, সংস্কৃতি আর পরিচয়ের উৎসব। হিন্দু শাস্ত্রে দেবী দুর্গার মহিমা বহুবার বর্ণনা করা হয়েছে,কিন্তু বাংলার মাটিতে তাঁর পূজার রয়েছে দীর্ঘ ইতিহাস ,সেই সাথে তার আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক পরম্পরা। দেবীভাগবত, কালিকাপুরাণ ও বৃহৎনন্দীকেশ্বর পুরাণ মায়ের উপাসনার প্রধান ভিত্তি। আজও রামকৃষ্ণ মিশনের পূজা বৃহৎনন্দীকেশ্বর পুরাণ অনুযায়ী সম্পন্ন হয়,যা আধ্যাত্মিক দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শাস্ত্রমতে, দুর্গাপূজার আসল সময় বাসন্তকালের শুক্ল পক্ষ, কিন্তু শরৎকালে শ্রীরামচন্দ্রের অকালবোধনের কারণে শরতেও দেবী পূজিত হন। এই অকালবোধনের কাহিনী কৃত্তিবাস ওঝার রামায়ণে সুন্দরভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। আশ্চর্যের বিষয়, বাল্মীকির সংস্কৃত রামায়ণের প্রায় ৩৮টি ভাষায় অনুবাদের মধ্যে শুধুমাত্র বাংলায় কৃত্তিবাস রচিত রামায়ণেই এই অকালবোধনের উল্লেখ পাওয়া যায়। কৃত্তিবাস রামায়ণের রচনাকাল আনুমানিক ১৪০০-১৫০০ খ্রিস্টাব্দ, যা বাংলার সংস্কৃতি, চরিত্র ও ভৌগোলিক প্রকৃতির সাথে অসাধারণভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে দুর্গাপ্রতিমার বিবর্তনের একটি নির্দিষ্ট ধারা বাংলায় লক্ষ্য করা যায়। মা দুর্গার মহিষমর্দিনী রূপ মূলত কুষাণ যুগের (খ্রিস্টীয় ১ম-৩য় শতাব্দী), চালুক্য যুগে তার সিংহবাহিনী রূপ পূজিত হতো, এবং মহিষাসুরমর্দিনী রূপটি পল্লব যুগে (খ্রিস্টীয় ৪র্থ-৯ম শতাব্দী) খুঁজে পাওয়া যায়। বাংলায় সপরিবারে দুর্গাপ্রতিমার পূজার প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় ১৪৮০ খ্রিস্টাব্দে রাজশাহী জেলার তাহিরপুরের রাজা কংস নারায়ণের পূজায়। রাজা কংস নারায়ণ ছিলেন মনুসংহিতার টীকাকার কুল্লুক ভট্টের পুত্র। তাঁর কুলপুরোহিত রমেশ শাস্ত্রী দুর্গাপূজার রীতি-মন্ত্র ও সামগ্রিক নির্মাণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। বাঙালি পণ্ডিত রঘুনন্দন তাঁর 'তিথিতত্ত্ব' গ্রন্থে দুর্গাপূজার সম্পূর্ণ বিধি বর্ণনা করেছেন। মিথিলার প্রসিদ্ধ পণ্ডিত বাচস্পতি তাঁর গ্রন্থে দুর্গা প্রতিমার পূজা পদ্ধতির বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন। এই রচনার সময়কাল ১৪২৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৪৮০ খ্রিস্টাব্দ। শরৎকালীন দুর্গাপূজার সর্বোচ্চ প্রসার ও প্রচার লাভ করে ১৭৫৭ সালে কৃষ্ণনগরের অধিপতি নবকৃষ্ণ দেব বাহাদুর এবং শোভাবাজার রাজবাড়ির পূজা .....বিস্তারিত পড়ুন

মহাকাশ স্টেশনে কেন অসুস্থ হচ্ছেন নভোচারীরা?

উত্তরাপথঃ আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (ISS) হলো মানব সভ্যতার সবচেয়ে বড় বৈজ্ঞানিক ল্যাবরেটরি, যেখানে পৃথিবী থেকে হাজার কিলোমিটার দূরে বিজ্ঞানীরা প্রতিদিন গবেষণা চালাচ্ছেন। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো, পৃথিবীতে আমরা সুস্থ থাকার জন্য সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ চাই , অন্যদিকে মহাকাশ স্টেশনের "অতিরিক্ত পরিষ্কার – পরিচ্ছন্নতার" ফলেই নাকি নভোচারীদের মধ্যে নানা স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিচ্ছে। কেন সমস্যা হচ্ছে? ISS-এ প্রতিদিন এয়ার ফিল্টার চালানো হয়, সাপ্তাহিকভাবে মুছে ফেলা হয় সব পৃষ্ঠ, এমনকি নিয়মিত ভ্যাকুয়াম ক্লিনারও ব্যবহার করা হয়। তবুও নভোচারীদের মাঝে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হওয়া, ত্বকে র‍্যাশ ওঠা, এমনকি সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিচ্ছে। নতুন এক গবেষণা জানাচ্ছে, এর মূল কারণ হতে পারে জীবাণুর বৈচিত্র্যের অভাব। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানী রডলফো স্যালিদো বেনিতেজ এবং তাঁর দল দেখেছেন, ISS-এর ভেতরে প্রায় সব জীবাণুই মানুষের ত্বক বা স্টেশনের উপকরণ থেকে এসেছে। মাটির বা জলের মতো প্রাকৃতিক উৎস থেকে আসা জীবাণুর পরিমাণ ০.৩ শতাংশেরও কম। আমরা সাধারণত জীবাণু মানেই রোগ ভেবে ভয় পাই। কিন্তু সত্য হলো, আমাদের শরীর ও পরিবেশে থাকা বিভিন্ন প্রজাতির জীবাণু একে অপরের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে, ফলে ক্ষতিকর জীবাণু একচেটিয়া ক্ষমতা পায় না। যেমন, পৃথিবীতে যারা গ্রামীণ পরিবেশে পশুপাখির সংস্পর্শে থাকে— তাদের মধ্যে হাঁপানি বা অ্যালার্জির ঝুঁকি অনেক কম। কারণ তাদের চারপাশের জীবাণুর বৈচিত্র্য তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী রাখে। কিন্তু মহাকাশ স্টেশনে সেই বৈচিত্র্য নেই। দেয়াল, টেবিল বা যন্ত্রপাতি শুধু নভোচারীদের শরীর থেকে আসা একই ধরনের জীবাণুকেই প্রতিফলিত করছে। এরফলে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা তৈরি হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নভোচারীদের জন্য "ভালো জীবাণু" যোগ করা দরকার। এর একটি উপায় হতে পারে— ফারমেন্টেড খাবার (যেমন দই ও আচার) রাখা। এতে জীবাণুর বৈচিত্র্য কিছুটা বাড়বে। .....বিস্তারিত পড়ুন

আমাদের মস্তিষ্কে প্লাস্টিকের জমাট বাঁধা – এক নতুন আতঙ্ক

উত্তরাপথঃ আমরা প্রতিদিন প্লাস্টিকের ব্যবহার করি—পানীয়ের বোতল, বাজারের ব্যাগ, খেলনা থেকে শুরু করে শ্যাম্পুর বোতল পর্যন্ত। কিন্তু সেই একই প্লাস্টিক এখন আমাদের শরীরের ভেতরে, এমনকি মস্তিষ্কের ভেতরেও ঢুকে পড়ছে—যা এক সময় অকল্পনীয় মনে হতো। সম্প্রতি Nature Medicine-এ প্রকাশিত এক গবেষণা দেখিয়েছে, গত ২৫ বছরে সংগৃহীত মস্তিষ্কের টিস্যু নমুনায় চমকপ্রদ মাত্রায় মাইক্রোপ্লাস্টিক ও ন্যানোপ্লাস্টিক (MNPs) জমা পাওয়া গেছে। গবেষকরা জানান, ২০১৬ সালে যেখানে প্রতি গ্রাম মস্তিষ্ক টিস্যুতে গড়ে প্রায় ৩,৩৪৫ মাইক্রোগ্রাম প্লাস্টিক পাওয়া যেত, ২০২৪ সালে সেই মাত্রা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪,৯১৭ মাইক্রোগ্রামে—অর্থাৎ প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়েছে। আমাদের মস্তিষ্ককে সুরক্ষিত রাখতে একটি বিশেষ প্রতিরোধ ব্যবস্থা আছে—blood-brain barrier। এটি সাধারণত ক্ষতিকর পদার্থকে মস্তিষ্কে প্রবেশ করতে বাধা দেয়। কিন্তু এই গবেষণা প্রমাণ করেছে যে মাইক্রোপ্লাস্টিকও সেই প্রাচীর ভেদ করে প্রবেশ করতে সক্ষম। এমনকি লিভার ও কিডনির তুলনায় মস্তিষ্কে ১০ গুণ বেশি প্লাস্টিক জমে থাকতে দেখা গেছে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, এটি স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতা প্রভাবিত করতে পারে। আরেকটি আলাদা গবেষণায় দেখা গেছে, সমুদ্রতীরবর্তী এলাকায় বসবাসকারী মানুষের মধ্যে যেখানে সমুদ্রের জলে বেশি মাইক্রোপ্লাস্টিক ছিল, সেখানে বাসিন্দাদের মধ্যে একটা বয়সের পর স্মৃতিশক্তি হ্রাস, চিন্তা-ভাবনার সমস্যা, এমনকি দৈনন্দিন কাজ (যেমন পোশাক পরা, বাজার করা) করার ক্ষেত্রেও নানা অসুবিধার মধ্যে পড়তে  দেখা গেছে। গবেষণায় দেখা গেছে, মস্তিষ্কে পাওয়া প্লাস্টিক কণাগুলো মূলত পলিথিন (Polyethylene) জাতীয় প্লাস্টিক থেকে এসেছে—যা বাজারের ব্যাগ, বোতল বা খেলনায় ব্যবহৃত হয়। আশ্চর্যের বিষয় হলো, এগুলো মসৃণ দানার মতো নয়, বরং ধারালো ও লম্বাটে কণা—যা টিস্যুকে আরও ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এখনও নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না যে মাইক্রোপ্লাস্টিক সরাসরি মস্তিষ্কে রোগ সৃষ্টি করে। তবে বিজ্ঞানীরা সতর্ক করছেন— .....বিস্তারিত পড়ুন

টেফলনের বিকল্প? এই আবিষ্কার বদলাতে পারে রান্নার পাত্রের ভবিষ্যৎ

উত্তরাপথঃ টরোন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের Faculty of Applied Science & Engineering–এর গবেষকেরা এমন এক নতুন উপাদান তৈরি করেছেন, যা রান্নার বাসন সহ বিভিন্ন দৈনন্দিন জিনিসে ব্যবহৃত প্রচলিত নন-স্টিক কোটিংয়ের তুলনায় অনেকটা নিরাপদ হতে পারে। এই নতুন কোটিং জলের মতোই তেল বা চর্বিকেও সহজে প্রতিহত করতে সক্ষম, অথচ এতে প্রচলিত ক্ষতিকর PFAS (per- and polyfluoroalkyl substances)–এর মাত্রা অনেক কম। টেফলন ও PFAS-এর বিজ্ঞান ১৯৩০-এর দশকে তৈরি হওয়া টেফলন (PTFE) রান্নার পাত্রে বিপ্লব ঘটায়। টেফলন PFAS পরিবারের অন্তর্ভুক্ত, যেখানে কার্বন-ফ্লোরিনের শক্তিশালী বন্ধন থাকে। এই বন্ধন ভাঙা প্রায় অসম্ভব, তাই টেফলন খুব ভালো নন-স্টিক বৈশিষ্ট্য দেখায়। কিন্তু এই রাসায়নিক ভেঙে না গিয়ে পরিবেশে থেকে যায় বহু বছর ধরে—তাই একে বলা হয় “forever chemicals”। PFAS শুধু টেকসইই নয়, জীবদেহেও জমতে থাকে। খাদ্যশৃঙ্খল ধরে এগোতে এগোতে এর ঘনত্ব আরও বেড়ে যায়। গবেষণা বলছে, দীর্ঘদিন PFAS–এর সংস্পর্শে থাকলে ক্যানসার, জন্মগত ত্রুটি, এমনকি অন্যান্য জটিল স্বাস্থ্যসমস্যার ঝুঁকি বাড়ে। বিকল্প খোঁজার চেষ্টা গবেষক দলটি এবার ব্যবহার করেছে PDMS (polydimethylsiloxane) নামক উপাদান, যা সাধারণভাবে ‘সিলিকন’ নামে পরিচিত। সিলিকন অনেক ক্ষেত্রে জীবদেহের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ (যেমন: চিকিৎসায় ইমপ্লান্টে ব্যবহৃত হয়), কিন্তু এতদিন পর্যন্ত PFAS–এর মতো সিলিকনের ক্ষেত্রে কার্যকর তেল-প্রতিরোধ ক্ষমতা দেখা যায়নি। এই সীমাবদ্ধতা কাটাতে গবেষক স্যামুয়েল আউ তৈরি করেছেন নতুন এক প্রযুক্তি—“ন্যানোস্কেল ফ্লেচিং”। এখানে PDMS–এর ক্ষুদ্র শিকল (bristles) একটি বেস উপাদানের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। এরপর প্রতিটি শিকলের প্রান্তে যুক্ত করা হয় PFAS–এর সবচেয়ে ছোট অণু, যা এক কার্বনের সঙ্গে মাত্র তিনটি ফ্লোরিন নিয়ে গঠিত। এর ফলে তৈরি হয় তীরের পালকের মতো গঠন, যা জলের পাশাপাশি তেলও প্রতিহত করতে পারে। .....বিস্তারিত পড়ুন

ছুটি মানে কিশোরদের স্বাধীন ভাবে চলাফেরা শেখার সুযোগ

উত্তরাপথঃ শীতের ছুটি , গ্রীষ্মের ছুটি বা পূজার ছুটি এলেই  আমাদের অনেক পরিবারের পরিকল্পনা শুরু হয়—কোথায় বেড়াতে যাওয়া হবে, কেমন সময় কাটানো হবে। কিন্তু ছুটি মানেই যে পরিবারের কিশোর-কিশোরীরা পুরোপুরি স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়াতে পারবে, তা অনেক বাবা-মা ভাবতেই পারেন না। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, অর্ধেকেরও কম বাবা-মা তাঁদের টিনএজ সন্তানদের হোটেল রুমে একা রেখে প্রাতরাশ করতে যেতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন । প্রায় এক-তৃতীয়াংশ বাবা-মা অনুমতি দেন সন্তানকে একা কফি শপে যেতে , আর মাত্র পাঁচ জনের মধ্যে একজন অনুমতি দেন বিনোদন পার্কে একা ঘুরে বেড়াতে। ভারতে ছবিটা খুব আলাদা নয়। কলকাতার নিউ টাউনের বাসীন্দা অনিতা বসু জানান, তিনি ছেলের বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে নিউ মার্কেট ঘুরতে যেতে দিলেও, দূরের মলে বা সিনেমা হলে একা যেতে দিতে ভয় পান। দিল্লির এক হোটেল ব্যবসায়ী বলেন, "আমি আমার ছেলেকে মেট্রোতে একা পাঠাই না, যদিও ওর বয়স ১৬।" মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, টিনএজ বয়সে কিছুটা স্বাধীনতা খুব জরুরি। কারণ এই সময়েই তারা বাস্তব জীবনে সিদ্ধান্ত নেওয়া, পরিস্থিতি সামলানো এবং আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলা শেখে। কিন্তু আজকাল শিশু ও কিশোরদের স্বাধীনভাবে খেলাধুলা বা বাইরে যাওয়ার সুযোগ অনেক কমে গেছে। আগের প্রজন্মের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে স্কুলে সাইকেলে যাওয়া বা টিউশন শেষে বন্ধুদের সঙ্গে মাঠে খেলার দৃশ্য ছিল খুব সাধারণ—এখন তা প্রায় বিরল। গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, স্বাধীনতার এই অভাবের সঙ্গে কিশোরদের মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতির একটি সম্পর্ক থাকতে পারে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে টিনএজদের মধ্যে উদ্বেগ, বিষণ্নতা এমনকি আত্মহত্যার প্রবণতাও বেড়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, .....বিস্তারিত পড়ুন

কাঁওয়ার যাত্রা ২০২৫: প্রেম, বিশ্বাস আর স্বপ্নের এক পথচলা

উত্তরাপথঃ কাঁওয়ার যাত্রা ভারতের অন্যতম বৃহত্তম ধর্মীয় আয়োজন। শ্রাবণ মাস এলেই লক্ষ লক্ষ ভক্ত গঙ্গাজল নিয়ে , খালি পায়ে মাইলের পর মাইল হেঁটে তা শিবমন্দিরে অর্পণ করেন। ভক্তির এই যাত্রা কেবল আধ্যাত্মিকতার নয়, এটি এক ধরনের মানসিক শক্তির উৎসওকিন্তু এ বছরের যাত্রায় বিশেষ আলোচনায় উঠে এসেছেন দিল্লির যুবক রাহুল কুমার। তার গল্প সাধারণ ভক্তির নয়, বরং ভালোবাসা আর প্রতিশ্রুতির এক বিরল উদাহরণ। রাহুল টানা ২২০ কিলোমিটার হেঁটেছেন, কাঁধে নিয়ে ১২১ লিটার গঙ্গাজল। উদ্দেশ্য একটাই—তার প্রিয় বান্ধবী যেন আইপিএস অফিসার হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে পারে। এটাই তার চতুর্থ কাঁওয়ার যাত্রা। গত বছর তিনি বহন করেছিলেন ১০১ লিটার জল, এবার তা আরও বাড়িয়েছেন। এই পদক্ষেপ কেবল ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা নয়, বরং বান্ধবীর প্রতি অটল আস্থার প্রতীক। সরকারি হিসেবে প্রতি বছর প্রায় ৪-৫ কোটি মানুষ এই যাত্রায় অংশ নেন। এটি বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় সমাবেশ। তবে, এক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠছে—কেন তরুণ সমাজ এই যাত্রায় এত গভীরভাবে যুক্ত হচ্ছে? একদিকে আছে ভক্তি ও বিশ্বাস, অন্যদিকে আছে ব্যক্তিগত ইচ্ছা ও প্রতিজ্ঞা। রাহুলের পদক্ষেপ দেখাচ্ছে, ধর্মীয় বিশ্বাস কিভাবে ব্যক্তিগত স্বপ্নের সঙ্গে মিশে যেতে পারে। এই দীর্ঘ পথচলায় রাহুল একা নন।সঙ্গে রয়েছে তার বন্ধু নন্দলাল, যিনি বাইকে করে পাশে থেকেছেন, জল-খাবার জুগিয়েছেন। এর মধ্যেও রয়েছে এক সামাজিক শিক্ষা—বন্ধুত্ব কেবল আনন্দে নয়, কঠিন সময়েও সত্যিকার শক্তি জোগায়। রাহুলের কাহিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকে বলছেন— আজকের দিনে এমন ভালোবাসা বিরল।” “এটা সিনেমার গল্পের মতো।” “ভক্তি, আশা আর ভালোবাসার সুন্দর মিলন।” .....বিস্তারিত পড়ুন

12 3 4 5 6 7 8
Scroll to Top