উত্তরাপথ


ছবি সংগৃহীত
এবার কি কাঠ দিয়ে উপগ্রহ তৈরির পথে জাপান?সম্প্রতি, কিয়োটো ইউনিভার্সিটি বেশ কয়েকটি জাপানি কোম্পানির সহযোগিতায় বিশ্বের প্রথম কাঠের উপগ্রহ তৈরি করতে চলেছে। এই উদ্ভাবনী প্রকল্পের লক্ষ্য হল মহাকাশ প্রযুক্তিতে দীর্ঘস্থায়ী উপকরণ ব্যবহারের সাথে সাথে এক পরিবেশবান্ধব মহাকাশ অনুসন্ধানের পথে অগ্রসর হওয়া।
কিয়োটো ইউনিভার্সিটির ল্যাবরেটরি ফর উড সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির নেতৃত্বে এই প্রকল্পের লক্ষ্য হল বিভিন্ন মহাকাশ অভিযানের ফলে মহাকাশে সৃষ্ট ক্রমবর্ধমান জঞ্জাল সহ মহাকাশ অভিযানের পরিবেশগত প্রভাব মোকাবেলা করা। প্রাথমিকভাবে ধাতু এবং অন্যান্য নন-বায়োডিগ্রেডেবল উপকরণ দিয়ে তৈরি স্যাটেলাইটগুলি কার্যকাল শেষ হওয়ার পর মহাকাশের জঞ্জালে পরিণত হয় এই ক্রমবর্ধমান জঞ্জাল ভবিষ্যতের মহাকাশ মিশনের জন্য ঝুঁকি তৈরি করে।
এই প্রথম উপগ্রহ (স্যাটেলাইট) কাঠামোর জন্য কাঠকে প্রধান উপাদান হিসেবে ব্যবহার করে, কিয়োটো ইউনিভার্সিটির গবেষক দলটি আশাবাদী এতে মহাকাশ অনুসন্ধানের পরিবেশগত দূষণ কম হবে। কাঠ একটি পুনর্নবীকরণযোগ্য উপাদান, হালকা ওজনের, যার ঐতিহ্যবাহী উপগ্রহ উপকরণের তুলনায় কম কার্বন পদচিহ্ন রয়েছে। এই উদ্যোগ সফল হলে, মহাকাশ অনুসন্ধানে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের সূচনা হবে।
“লিগনোস্যাট” নামের কাঠের স্যাটেলাইটে একটি বিশেষ ধরনের কাঠ ব্যবহার করে তৈরি করা হবে যা মহাকাশের কঠিন পরিস্থিতি সহ্য করতে পারে। স্যাটেলাইটটির মহাকাষে যাবতীয় প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা এবং স্থায়িত্বের বিষয়টি নিশ্চিত করতে দলটি আরও ব্যাপক পরীক্ষা চালাচ্ছে।প্রকল্পটি বৈজ্ঞানিক এবং পরিবেশবিদ উভয় সম্প্রদায়ের কাছে উল্লেখযোগ্য গবেষণার উপাদান । এটি দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়নের প্রতি জাপানের প্রতিশ্রুতি সহ পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তির প্রচারের জন্য জাপানের প্রচেষ্টাকে তুলে ধরে।
পরিবেশগত সুবিধাগুলি ছাড়াও, কাঠের উপগ্রহটি চরম পরিস্থিতিতে কাঠের কার্যকারিতা সম্পর্কে মূল্যবান অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করতে পারে। মহাকাশে কাঠ কীভাবে আচরণ করে তা বোঝা পৃথিবীতে এবং মহাকাশে উভয় ভবিষ্যতের নির্মাণ এবং নকশা প্রকল্পগুলির জন্য প্রভাব ফেলতে পারে। কাঠ বিজ্ঞান, মহাকাশ প্রকৌশল, এবং উপকরণ প্রযুক্তিতে দক্ষতার সমন্বয়ের মাধ্যমে, দলটি ঐতিহ্যবাহী উপগ্রহ নির্মাণের সীমানাকে অতিক্রম করে এক দীর্ঘ মেয়াদী মহাকাশ অনুসন্ধানের জন্য নতুন পথ খোলার লক্ষ্য নিয়ে তাদের এই গবেষণা চালাচ্ছে।
যদিও কাঠের স্যাটেলাইট প্রকল্পটি এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে,এবং এটি ইতিমধ্যেই বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায়ের মধ্যে যথেষ্ট উত্তেজনা এবং প্রত্যাশা তৈরি করেছে। বিশ্বজুড়ে গবেষক এবং বিশেষজ্ঞরা এর অগ্রগতি ঘনিষ্ঠভাবে অনুসরণ করছেন, তাঁরা এই উদ্ভাবনী প্রচেষ্টার ফলাফল এবং সম্ভাব্য প্রভাবগুলি দেখতে আগ্রহী।
সারা বিশ্বের গবেষকগণ মহাকাশে পরিবেশগত চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবেলার জন্য দীর্ঘ মেয়াদী সমাধান খোঁজার দিকে গবেষণা করে চলেছে। কাঠের স্যাটেলাইট প্রকল্পের মতো উদ্যোগগুলি এক্ষেত্রে বিজ্ঞানীদের আশার আলো দেখায়। বিশ্বের প্রথম কাঠের স্যাটেলাইটের সফল সৃষ্টি আমাদের পরিবেশ বান্ধব এবং উন্নত ভবিষ্যতের দিকে আমাদের যাত্রায় একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক হতে পারে।
আরও পড়ুন
প্রাপ্তবয়স্কদের স্মৃতিশক্তি এবং চিন্তাভাবনা হ্রাস সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিক
উত্তরাপথঃ সারা বিশ্বের জনসংখ্যার বয়স বৃদ্ধির সাথে স্মৃতিশক্তি এবং চিন্তাভাবনা হ্রাস এবং ডিমেনশিয়ার মতো নিউরোডিজেনারেটিভ রোগের প্রকোপ বাড়ছে৷ তাদের এই সমস্যাগুলি যে কেবল তাদের একার সমস্যা তা নয় ,এটি ধীরে ধীরে পুরো পারিবারিক সমস্যার আকার নেয়।সম্প্রতি বয়স্ক প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে মস্তিষ্কের কার্যকারিতাকে পুনরুদ্ধার করার জন্য গবেষকদের মধ্যে কার্যকর কৌশল খোঁজার আগ্রহ বাড়ছে।বর্তমানে বেশীরভাগ গবেষক মস্তিস্কের স্বাস্থ্য উদ্ধারের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিকের সম্ভাব্য ভূমিকা নিয়ে গবেষণা করছেন । এখন খুব স্বাভাবিকভাবেই একটি প্রশ্ন আসে প্রোবায়োটিক কি? কেনই বা গবেষকরা মস্তিস্কের স্বাস্থ্য উদ্ধারের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিকের ভূমিকা নিয়ে গবেষণা করছেন । .....বিস্তারিত পড়ুন
World Children's Day: সত্যিই কি ‘বিশ্ব শিশু দিবস´পালনের কোনও যৌক্তিকতা আছে ?
প্রীতি গুপ্তাঃ হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটি দিন তারপর ১৪ নভেম্বর আমাদের দেশ সহ সারা বিশ্বজুড়ে পালন করা হবে ‘বিশ্ব শিশু দিবস´(World Children's Day)।এই দিনটি শিশুদের মঙ্গলের জন্য, তাদের ভবিষ্যতের জন্য একটি অনুকূল বিশ্ব তৈরি করার প্রচেষ্টার একটি দিন।কিন্তু প্রশ্ন,সত্যি কি হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে সারা বিশ্ব জুড়ে শিশু দিবস পালন করার কোনও যৌক্তিকতা আছে? আদৌ কি এর কোনও লাভ আমরা আমাদের প্রান্তিক স্তরের শিশুদের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছি ? সম্প্রতি কাজের প্রয়োজনে রাজস্থানের উদয়পুর শহরে আসা। আমরা সবাই জানি উদয়পুর বিখ্যাত তার হ্রদের কারণে । এখানকার স্থানীয় থেকে পর্যটক সকলেই এই সুন্দর হ্রদগুলির আকর্ষণে বারবার ছুঁটে যায়। ‘ফতে সাহেব লেক’ রাজস্থানের উদয়পুরের এক বিখ্যাত পর্যটক স্থল।এখানে বহু মানুষ সকাল- বিকেল এই লেকের চার ধারে হাঁটাহাঁটি করতে বেরিয়ে পড়ে। সেভাবেই দুই দিন আগে বিকেলে হঠাৎ করে বেরিয়ে পড়লাম ‘ফতে সাহেব লেকের ধারে হাঁটার উদ্দেশ্য নিয়ে। হাঁটার মাঝখানে হঠাৎ করে একটি বাচ্চাছেলে আওয়াজ করে ডাকছে ,বললাম কিছু বলবি? সে বলল একটু দাঁড়াতে। ও ছুটে গিয়ে হাতে করে কয়েকটি বেলুন নিয়ে এসে হাজির । সে বারবার বেলুন কেনার অনুরোধ জানাতে লাগল। হাতে অন্য কাজের চাপ নেই অনেকটা অবসর সময় তাই আমি অনেকটা সাংবাদিক সুলভ মন নিয়ে বললাম ঠিক আছে আমি তোর বেলুন নেব ,কিন্তু তার আগে আমি তোকে যা বলব তার তার ঠিক ঠিক উত্তর দিতে হবে। সে খুশী খুশী রাজি হয়ে গেল । .....বিস্তারিত পড়ুন
Bandna Festival: ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল পাঁচ দিন বাঁদনার আমেজে মশগুল থাকে
বলরাম মাহাতোঃ চিরাচরিত রীতি অনুযায়ী কার্তিক অমাবস্যার আগের দিন থেকে মোট পাঁচ দিন ব্যাপী বাঁদনার(Bandna Festival) আমেজে মশগুল থাকে ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। অবশ্য, পরবের শুভ সূচনা হয় তারও কয়েকদিন আগে। আদিবাসী সম্প্রদায়ের সামাজিক শাসন ব্যবস্থার চূড়ামণি হিসাবে গাঁয়ের মাহাতো, লায়া, দেহরি কিম্বা বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি নির্ধারণ করেন- ৩, ৫, ৭ বা ৯ ক’দিন ধরে গবাদি পশুর শিং-এ তেল মাখাবে গৃহস্বামী! রুখামাটির দেশের লোকেরা কোনোকালেই মাছের তেলে মাছ ভাজা তত্ত্বের অনুসারী নয়। তাই তারা গোরুর শিং-এ অন্য তেলের পরিবর্তে কচড়া তেল মাখানোয় বিশ্বাসী। কারণ কচড়া তেল প্রস্তুত করতে গোধনকে খাটাতে হয় না যে! কচড়া তেলের অপ্রতুলতার কারণে বর্তমানে সরষের তেল ব্যবহৃত হলেও, কচড়া তেলের ধারণাটি যে কৃষিজীবী মানুষের গবাদি পশুর প্রতি প্রেমের দ্যোতক, তা বলাই বাহুল্য! এভাবেই রাঢ বঙ্গে গোবর নিকানো উঠোনে হাজির হয়- ঘাওয়া, অমাবস্যা, গরইয়া, বুঢ়ি বাঁদনা ও গুঁড়ি বাঁদনার উৎসবমুখর দিনগুলি। পঞ্চদিবসে তেল দেওয়া, গঠ পূজা, কাঁচি দুয়ারি, জাগান, গহাইল পূজা, চুমান, চউক পুরা, নিমছান, গোরু খুঁটা, কাঁটা কাঢ়া প্রভৃতি ১১টি প্রধান পর্ব সহ মোট ১৬টি লোকাচারের মাধ্যমে উদযাপিত হয় বাঁদনা পরব(Bandna Festival )। .....বিস্তারিত পড়ুন
World’s most polluted cities: নয়াদিল্লি, মুম্বাই এবং কলকাতা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায়
উত্তরাপথঃ দিওয়ালি উদযাপনের একদিন পর জাতীয় রাজধানী নয়াদিল্লি, মুম্বাই এবং কলকাতা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের (World’s most polluted cities) তালিকায় উঠে এসেছে।সোমবার, অর্থাৎ দীপাবলির পরের দিন এই শহরগুলির বায়ুর গুণমান উল্লেখযোগ্য মাত্রায় খারাপ হয়েছে।বায়ুর গুনমান খারাপ হওয়ার পেছনে মাত্রাতিরিক্ত আতশবাজি জ্বালানোকে দায়ী করা হয়েছে। আমাদের বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের (World’s most polluted cities) তালিকায় যথারীতি প্রথম স্থান দখল করেছে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি। দীপাবলির পরের দিন এটির AQI (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স) পরিসংখ্যান ছিল ৪০৭। নভেম্বরের শুরু থেকে, দিল্লিতে AQI পরিসংখ্যান খারাপ হয়েছে। সুইস গ্রুপ আইকিউএয়ার শহরের বাতাসকে "বিপজ্জনক" বিভাগে রেখেছে।ভারতের আর্থিক রাজধানী মুম্বাই বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায়(World’s most polluted cities), ১৫৭ এর AQI সহ ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে। কলকাতা ১৫৪ এর AQI সহ সপ্তম স্থানে রয়েছে। .....বিস্তারিত পড়ুন