

হীরা সবসময় তাদের উজ্জ্বলতা এবং বিরলতা দিয়ে মানুষের কল্পনাকে মোহিত করেছে।বর্তমানে ভারতের অনন্তপুর এবং কুর্নুল জেলার গুন্টকাল এবং পাথিকোন্ডা এলাকা সম্ভাব্য হীরা-সমৃদ্ধ অঞ্চল হিসাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এখানে প্রতি বর্ষায় কৃষিক্ষেত্রে হীরা পাওয়া যাচ্ছে বলে খবর। কুরনুল জেলার মাদ্দিকেরা মন্ডলের বাসিনপল্লীতে খরিফ মৌসুমের জন্য কৃষিকাজের কাজে নিয়োজিত থাকাকালীন একজন কৃষক একটি বড় হীরা পেয়েছিলেন। এরপর তিনি এক ব্যবসায়ীর কাছে ২ কোটি টাকায় ওই হীরা বিক্রি করেন বলে খবর।এরপর সেই খবর লোকের মুখে মুখে ছডিয়ে পড়ে। বর্তমানে স্থানীয় হীরা ব্যবসায়ীরা একটি সিন্ডিকেট গঠন করেছে এবং পুরো ব্যপারটা তারা গোপন রাখতে চাইছে রাজ্য সরকার ও পুলিশের থেকে তাই প্রশাসনের কাছে কোনো তথ্য নেই বলে অভিযোগ।
কথিত আছে এক সময় রায়ালসীমার বিজয়নগর সাম্রাজ্য তার মূল্যবান পাথর ও হীরার ব্যবসার জন্য পরিচিত ছিল। তখনকার দিনে হাম্পির বাজারে সবজির মতো হীরা বিক্রি হত।এত বছর পর আবার কুরনুল এবং অনন্তপুর জেলার এলাকাগুলি বর্ষা ঋতুতে হীরা শিকারিদের ভাগ্য পরীক্ষা করার জন্য জনপ্রিয় স্পটে পরিণত হয়েছে।স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য তুগগালি, জোন্নাগিরি, কুর্নুলের মাদ্দিকেরে এবং অনন্তপুর জেলার বজরাকারুরের শুকনো জমিতে কয়েক দশক ধরে বর্ষাকালে মূল্যবান পাথর দেখা যাচ্ছিল।এরপর একদিন মদ্দিকেরা মণ্ডলের বাসিনাপল্লী গ্রামে চাষাবাদ করতে গিয়ে এক কৃষক একটি বড় হীরা খুঁজে পান। এলাকার পেশাদার ব্যবসায়ীরা কৃষকের কাছ থেকে সেটি ২ কোটি টাকায় কিনে নেয় বলে খবর। সম্ভবত এত বছর পর এটিই প্রথম এই স্থানে হীরা পাওয়া।
এখন অন্ধ্র প্রদেশ ও তেলেঙ্গানা রাজ্যের বিভিন্ন অংশ থেকে হীরা শিকারীরা তাদের ভাগ্য পরীক্ষা করতে এবং ভাল অর্থ উপার্জন করতে এই এলাকায় ছুটে আসছে। বর্ষার সময় একচেটিয়াভাবে শুকনো জমির উপর কিভাবে মূল্যবান পাথর পাওয়া যাচ্ছে তা নিয়ে এখনও কোনও গবেষণা করা হয়নি। তবে খনি ও ভূতত্ত্বের একজন কর্মকর্তা এই এলাকায় গবেষণার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
স্থানীয় লোকমুখে প্রচলিত ২০১৯ সালে, একজন কৃষক নাকি কৃষিক্ষেত্রে হীরা খুঁজে পেয়েছিলেন যা তিনি ৬০ লাখ টাকায় বিক্রি করেন।এরপর ২০২০ সালে, দুই গ্রামবাসী ৫ লাখ এবং ৬ লাখ মূল্যের দুটি মূল্যবান পাথর খুঁজে পেয়েছিলেন কিন্তু সেগুলোর দাম তারা না জানায় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা তাদের থেকে যথাক্রমে ১.৫ লাখ এবং ৫০,০০০টাকায় কিনে নেন।গত বছরও নাকি একজন ব্যক্তি একটি হীরা ৮০ লাখে বিক্রি করেছেন। জোনাগিরি এলাকার অন্য এক ব্যক্তি ৩০ ক্যারেটের একটি হীরা খুঁজে পেয়ে এক বছর আগে স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর কাছে ১.২কোটি টাকায় বিক্রি করেছিলেন বলে জানা গেছে।
পরিস্থিতি এখন এমন পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে হাজার হাজার মানুষ তাদের দৈনন্দিন কাজ ছেড়ে ভাগ্য পরীক্ষা করার জন্য হীরা সমৃদ্ধ গ্রামে অস্থায়ী তাঁবুতে বাস করছে ,আবার কেউ কেউ অ্যাডভেঞ্চারের জন্য যাচ্ছেন এবং স্থানীয় হোটেলে থাকছেন। বর্ষার মরসুমে হোটেলগুলি একেবারে হাউস্ফুল । কুরনুল এবং অনন্তপুর জেলায়, এই প্রাক-বর্ষা মৌসুমে রাতারাতি কোটিপতি হওয়ার অনেক ঘটনা লোকমুখে শোনা গেলেও,গ্রামটি এখনও পর্যন্ত কাউকে এমন ভাগ্য দেখিয়েছে বলে জানা যায়নি।এই অঞ্চলে এসব মূল্যবান পাথর প্রাকৃতিকভাবে মাটিতে পাওয়া যায় এবং কৃষকেরা জমি চাষ শুরু করলে বৃষ্টির পর এগুলো বেরিয়ে আসে। শত শত যুবক এবং বৃদ্ধ ধৈর্য সহকারে খোলা মাঠে হীরা খুঁজছেন এইসব অঞ্চলে এটি একটি সাধারণ দৃশ্য।
যেহেতু বর্ষা প্রতি বছর জুন মাসে আসে এবং জুলাই এবং তার পরেও সক্রিয় থাকে, এটি শুধুমাত্র কৃষকদের জন্য নয়, হীরা এবং আধা-মূল্যবান পাথর শিকারীদের জন্যও এই সময়টি গুরুত্বপূর্ণ । কারণ প্রারম্ভিক বৃষ্টিতে কৃষিক্ষেত্রের উপরের স্তর ধুয়ে হীরা বেরিয়ে আসে ।গ্রামবাসীদের মতে হীরার মতো এই পাথরগুলির ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজনের ভাগ্য পরিবর্তন করেছে ।তবে হীরা পাওয়া না পাওয়ার পুরটাই নির্ভর করছে ব্যক্তিগত ভাগ্যের উপর।
আরও পড়ুন
দীপাবলির সময় কেন পটকা ফোটানো নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা যায় না ?
উত্তরাপথঃ দীপাবলির পরের দিন, যখন কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (CPCB) শহরের বায়ু মানের সূচকের তালিকা প্রকাশ করে,তখন দেখা যায় রাজধানী দিল্লি বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দূষিত শহরের প্রথমেই রয়েছে। CPCB-এর মতে, ১২ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় দিল্লির বায়ু মানের সূচক ছিল ২১৮ যা ভোরের দিকে বেড়ে ৪০৭ এ পৌঁছায় । ৪০০ – ৫০০ AQI এর স্তর সুস্থ ব্যক্তিদের প্রভাবিত করে। দীপাবলির সারা রাত, লোকেরা পটকা ফাটিয়ে দীপাবলি উদযাপন করে। ১৩ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আবার তথ্য প্রকাশ করে এই তালিকায়, দিল্লির গড় বায়ু মানের সূচক ছিল ৩৫৮ যা 'খুব খারাপ' বিভাগে পড়ে। বায়ু দূষণের এই পরিস্থিতি শুধু দিল্লিতেই সীমাবদ্ধ ছিল না। নয়ডার বায়ু মানের সূচক ১৮৯ থেকে ৩৬৩ এ এবং রোহতক, হরিয়ানার ১৩৭ থেকে বেড়ে ৩৮৩ হয়েছে। দীপাবলির দুই দিন দিল্লি ,নয়ডা ,কলকাতা, মুম্বাই সহ দেশের অন্যান্য শহরেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। এই দিনগুলিতে মানুষ বিষাক্ত বাতাসে শ্বাস নিতে বাধ্য হয়েছে। ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জাতীয় রাজধানী দিল্লি এবং নয়ডায় সবুজ পটকা ছাড়া যে কোনও ধরণের আতশবাজি ফাটান সম্পূর্ণ রূপে নিষিদ্ধ। আদালত সবুজ পটকা পোড়ানোর সময়ও নির্ধারণ করে দিয়েছে রাত ৮টা থেকে ১০টা। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে সুপ্রিম কোর্টের এই আদেশের মানে কী? আদালতের এই আদেশ কি এখন প্রত্যাহার করা উচিত? পুলিশ কেন এই আদেশ কার্যকর করতে পারছে না? এর জন্য কি পুলিশ দায়ী নাকি সরকারের উদাসীনতা রয়েছে এর পেছনে? .....বিস্তারিত পড়ুন
World’s most polluted cities: নয়াদিল্লি, মুম্বাই এবং কলকাতা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায়
উত্তরাপথঃ দিওয়ালি উদযাপনের একদিন পর জাতীয় রাজধানী নয়াদিল্লি, মুম্বাই এবং কলকাতা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের (World’s most polluted cities) তালিকায় উঠে এসেছে।সোমবার, অর্থাৎ দীপাবলির পরের দিন এই শহরগুলির বায়ুর গুণমান উল্লেখযোগ্য মাত্রায় খারাপ হয়েছে।বায়ুর গুনমান খারাপ হওয়ার পেছনে মাত্রাতিরিক্ত আতশবাজি জ্বালানোকে দায়ী করা হয়েছে। আমাদের বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের (World’s most polluted cities) তালিকায় যথারীতি প্রথম স্থান দখল করেছে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি। দীপাবলির পরের দিন এটির AQI (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স) পরিসংখ্যান ছিল ৪০৭। নভেম্বরের শুরু থেকে, দিল্লিতে AQI পরিসংখ্যান খারাপ হয়েছে। সুইস গ্রুপ আইকিউএয়ার শহরের বাতাসকে "বিপজ্জনক" বিভাগে রেখেছে।ভারতের আর্থিক রাজধানী মুম্বাই বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায়(World’s most polluted cities), ১৫৭ এর AQI সহ ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে। কলকাতা ১৫৪ এর AQI সহ সপ্তম স্থানে রয়েছে। .....বিস্তারিত পড়ুন
প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে
উত্তরাপথঃ হঠাৎ করেই একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে।২০২৩ এর ৩০ অক্টোবর প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি মৃত আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত একটি নতুন দ্বীপের জন্ম দিয়েছে। বিস্ফোরণের পর জাপানের ওগাসাওয়ারা দ্বীপ চেইনের কাছে বিশাল বিশাল পাথরের টুকরো দেখা গেছে। এ বিষয়ে জাপানি গবেষক বলেন, গত মাসে প্রশান্ত মহাসাগর জলের নিচে আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের পর টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে ইওটো দ্বীপের কাছে একটি ছোট নতুন দ্বীপের উদ্ভব হয়েছে।টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকম্প গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ফুকাশি মায়েনো জানিয়েছেন যে নতুন দ্বীপ, এখনও যার নাম নেই প্রশান্ত মহাসাগরের ইওটো দ্বীপ থেকে ১ কিলোমিটার দূরে ১০০ মিটার ব্যাসের একটি পাথুরে দ্বীপে একটি phreatomagmatic বিস্ফোরণ ঘটেছে। টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে বিস্ফোরণটি দেখা গেছে। ভূপৃষ্ঠের নীচে জলের সাথে লাল গরম ম্যাগমা সংঘর্ষের কারণে প্রতি কয়েক মিনিটে বিস্ফোরণ ঘটে।গত ২১ অক্টোবর, ২০২৩-এ অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়েছিল, যা আগে ইও জিমা নামে পরিচিত ছিল এবং এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের স্থান ছিল। প্রায় ১০ দিন ধরে অগ্ন্যুৎপাত চলার পর, আগ্নেয়গিরির উপাদান অগভীর সমুদ্রতলের উপর জমা হয় এবং প্রায় ১৬০ ফুট পর্যন্ত উচ্চতায় বড় বড় পাথরের আকারে সমুদ্র পৃষ্ঠের উপরে উঠে আসে। .....বিস্তারিত পড়ুন
Bandna Festival: ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল পাঁচ দিন বাঁদনার আমেজে মশগুল থাকে
বলরাম মাহাতোঃ চিরাচরিত রীতি অনুযায়ী কার্তিক অমাবস্যার আগের দিন থেকে মোট পাঁচ দিন ব্যাপী বাঁদনার(Bandna Festival) আমেজে মশগুল থাকে ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। অবশ্য, পরবের শুভ সূচনা হয় তারও কয়েকদিন আগে। আদিবাসী সম্প্রদায়ের সামাজিক শাসন ব্যবস্থার চূড়ামণি হিসাবে গাঁয়ের মাহাতো, লায়া, দেহরি কিম্বা বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি নির্ধারণ করেন- ৩, ৫, ৭ বা ৯ ক’দিন ধরে গবাদি পশুর শিং-এ তেল মাখাবে গৃহস্বামী! রুখামাটির দেশের লোকেরা কোনোকালেই মাছের তেলে মাছ ভাজা তত্ত্বের অনুসারী নয়। তাই তারা গোরুর শিং-এ অন্য তেলের পরিবর্তে কচড়া তেল মাখানোয় বিশ্বাসী। কারণ কচড়া তেল প্রস্তুত করতে গোধনকে খাটাতে হয় না যে! কচড়া তেলের অপ্রতুলতার কারণে বর্তমানে সরষের তেল ব্যবহৃত হলেও, কচড়া তেলের ধারণাটি যে কৃষিজীবী মানুষের গবাদি পশুর প্রতি প্রেমের দ্যোতক, তা বলাই বাহুল্য! এভাবেই রাঢ বঙ্গে গোবর নিকানো উঠোনে হাজির হয়- ঘাওয়া, অমাবস্যা, গরইয়া, বুঢ়ি বাঁদনা ও গুঁড়ি বাঁদনার উৎসবমুখর দিনগুলি। পঞ্চদিবসে তেল দেওয়া, গঠ পূজা, কাঁচি দুয়ারি, জাগান, গহাইল পূজা, চুমান, চউক পুরা, নিমছান, গোরু খুঁটা, কাঁটা কাঢ়া প্রভৃতি ১১টি প্রধান পর্ব সহ মোট ১৬টি লোকাচারের মাধ্যমে উদযাপিত হয় বাঁদনা পরব(Bandna Festival )। .....বিস্তারিত পড়ুন