

অধ্যাপক জন জে. হপফিল্ড (বামদিকে) ও অধ্যাপক জিওফ্রে ই. হিনটন (ডানদিকে)। ছবিগুলো NobelPrize এর X-handle থেকে সংগৃহীত।
ডঃ সায়ন বসুঃ নোবেল পুরস্কার সম্বন্ধে বিশ্ব প্রথম জানতে পারে ১৮৯৫ সালে, যখন সুইডিশ আবিষ্কারক, বিজ্ঞানী, এবং শিল্পপতি আলফ্রেড নোবেল তার উইল বা ইচ্ছাপত্রে এটির কথা উল্লেখ করেন। তিনি নোবেল পুরস্কার পাঁচটি ক্ষেত্রে প্রদানের নির্দেশ দেন: পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, চিকিৎসাবিজ্ঞান, সাহিত্য এবং শান্তি। প্রথম নোবেল পুরস্কার প্রদান করা হয় ১৯০১ সালে, যা এই বিশেষ পুরস্কার প্রদানের ঐতিহ্যের সূচনা করে। প্রথম নোবেল পুরস্কার পদার্থবিদ্যায় প্রদান করা হয় ১৯০১ সালে, এবং এই পুরস্কার লাভ করেন উইলহেল্ম কনরাড রন্টজেন। তিনি এক্স-রে আবিষ্কারের জন্য এই সম্মান অর্জন করেন, যা চিকিৎসা ও বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে এক বিপ্লব ঘটিয়েছিল। তিনি ক্যাথোড রশ্মি নিয়ে কাজ করছিলেন, যা উচ্চ-ভোল্টেজের অধীনে গ্যাস-ভরা টিউবের মধ্য দিয়ে ইলেকট্রনের প্রবাহ তৈরি করে। একদিন তিনি লক্ষ্য করলেন যে তার টিউবটি কালো কাগজ দিয়ে ঢেকে রাখার পরও কাছের একটি ফ্লুরোসেন্ট স্ক্রিন উজ্জ্বল হচ্ছে। এর অর্থ ছিল, টিউব থেকে একটি নতুন ধরনের রশ্মি নির্গত হচ্ছে যা কাগজের ভেতর দিয়ে যেতে পারছে। তিনি এই নতুন রশ্মির নাম দেন “এক্স-রে” কারণ এটি ছিল একটি অজানা (অজ্ঞাত) রশ্মি। তাঁর আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তিনি দেখতে পান যে এই রশ্মি মানব শরীরের মাংসের মধ্য দিয়ে যেতে পারে, কিন্তু হাড় আটকে দেয়। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই প্রথমবার মানুষের হাড়ের ছবি তোলা হয়, যা এক্স-রে ইমেজিংয়ের ভিত্তি স্থাপন করে।
এরকমই নানান আবিষ্কার যেগুলির মানবসভ্যতায় অবদান বিপুল, সেগুলিকেই নোবেল পুরস্কারের জন্যে মনোনীত করা হয় প্রতি বছর| ১৯০১ সাল থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে পদার্থবিদ্যায় মোট ১১৭টি নোবেল পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে, যা ২২৫ জন বিজ্ঞানীর মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে জন বারডিন একমাত্র ব্যক্তি যিনি দুবার ফিজিক্সে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন (১৯৫৬ এবং ১৯৭২ সালে)। প্রথম পুরস্কার পান ১৯৫৬ সালে ট্রানজিস্টর আবিষ্কারের জন্য এবং দ্বিতীয়বার ১৯৭২ সালে সুপারকন্ডাক্টিভিটির তত্বের জন্য| তবে এই পুরস্কারটি ৬টি বছরে প্রদান করা হয়নি: ১৯১৬, ১৯৩১, ১৯৩৪, ১৯৪০, ১৯৪১ এবং ১৯৪২। এর মূল কারণ ছিল প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। কিছু বিজ্ঞানী পদার্থবিদ্যায় এই পুরস্কার পাওয়ার সাথে সাথে নোবেল শান্তি পুরস্কারও পেয়েছেন। উদাহরণস্বরূপ, আলফ্রেড ফাইনম্যান (১৯৬৫) এবং অ্যান্ড্রে গেইম (২০১০) শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন| বলে রাখা ভালো, ভারত থেকে এখনো পর্যন্ত মোট ৯ জন নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন এঁদের মধ্যে সিভি রামন (১৯৩০) এবং সুব্রহ্মণ্যম চন্দ্রশেখর (১৯৮৩), এই দু’জনই পদার্থবিদ্যায় এই পুরস্কার পেয়েছেন।
২০২৩ সালে পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন পিয়েরে আগোস্তিনি, ফেরেঙ্ক ক্রাউসজ, এবং অ্যান ল’হুইলিয়ার। এই পুরস্কার তাদের অ্যাটোসেকেন্ড পালসের উৎপাদনের জন্য দেওয়া হয়েছে, যা কণার গতিশীলতা অধ্যয়নের জন্য ব্যবহৃত হয়। এই গবেষণার মাধ্যমে তারা কণা এবং পদার্থের মধ্যে আন্তঃক্রিয়াগুলির বিশদ বিশ্লেষণ করার নতুন পদ্ধতি তৈরি করেছেন, যা আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ উন্নতি। এদের কাজের মাধ্যমে কণার গতি এবং সেগুলির আচরণ সম্পর্কে আরও গভীর জ্ঞান অর্জন করা সম্ভব হয়েছে, যা বিজ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে, বিশেষ করে কোয়ান্টাম মেকানিক্সে, নতুন দৃষ্টিভঙ্গি এনে দিয়েছে।
২০২৪ সালে পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার পেলেন জন জে. হপফিল্ড এবং জিওফ্রে ই. হিনটন। তারা কৃত্রিম স্নায়বিক নেটওয়ার্কের (Artificial Neural Network (ANN)) উপর ভিত্তি করে মেশিন লার্নিং (Machine Learning) প্রযুক্তির জন্য উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন। এই গবেষণা মানুষের মস্তিষ্কের গঠনের অনুপ্রেরণা থেকে এসেছে এবং তারা পদার্থবিদ্যার বিভিন্ন ধারণা ব্যবহার করে এমন নেটওয়ার্ক তৈরি করেছেন, যা প্যাটার্ন চিনতে এবং শিখতে পারে। তাদের কাজ ১৯৮০-এর দশকে শুরু হয়েছিল এবং এখন এটি চিত্র শ্রেণিবিন্যাস, ভাষা প্রক্রিয়াকরণ এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চালিত প্রযুক্তিগুলিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলছে| অধ্যাপক জন জে. হপফিল্ড (John J. Hopfield) হলেন একজন পদার্থবিদ, যিনি ১৯৮০-এর দশকে হপফিল্ড নেটওয়ার্ক উদ্ভাবন করেন। এটি একটি মডেল যা তথ্য সংরক্ষণ এবং পুনরুদ্ধার করতে পারে, যেখানে পদার্থবিদ্যার স্পিন সিস্টেমের ধারণা ব্যবহার করা হয়। এই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অনুপূর্ণ বা বিকৃত চিত্রগুলোকে ধীরে ধীরে সঠিক চিত্রের সাথে মেলানো যায়, যেটি পরে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়। অধ্যাপক হপফিল্ড বর্তমানে আমেরিকার প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটিতে (Princeton University) যুক্ত রয়েছেন। তিনি স্নায়বিক নেটওয়ার্ক এবং জীববিজ্ঞানের সাথে পদার্থবিদ্যার মেলবন্ধন নিয়ে কাজ করেছেন এবং তার অবদানের জন্য আগেও বহু পুরস্কার পেয়েছেন। অধ্যাপক জিওফ্রে ই. হিনটন (Geoffrey E. Hinton) হপফিল্ড নেটওয়ার্কের ওপর ভিত্তি করে বোল্টজম্যান মেশিন (Boltzmann Machine) তৈরি করেন, যা তথ্যের বৈশিষ্ট্য শনাক্ত করতে সক্ষম। তিনি পরিসংখ্যানিক পদার্থবিদ্যার ধারণা ব্যবহার করে কৃত্রিম নেটওয়ার্ককে প্রশিক্ষণ দেন, যা বর্তমানে মুখাবয়ব শনাক্তকরণ, ভাষা প্রক্রিয়াকরণ, এবং চিত্র শ্রেণিবিন্যাসে ব্যবহৃত হচ্ছে। তিনি বর্তমানে কানাডার টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ে (University of Toronto) অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত। পাশাপাশি, তিনি গুগলের সাথে সংযুক্ত রয়েছেন, যেখানে তিনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং গভীর শিক্ষণ (Deep Learning) নিয়ে গবেষণা করেন। হিনটনকে অনেক সময় “ডিপ লার্নিং-এর জনক” বলা হয় তার অবদানের জন্য, যা আজকের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (Artificial Intelligence) মূল ভিত্তি।
কৃত্রিম স্নায়বিক নেটওয়ার্ক এবং মেশিন লার্নিং বর্তমানে জ্যোতির্বিদ্যায় ক্রমবর্ধমান হারে ব্যবহৃত হচ্ছে, বিশেষত বড় পরিসরে ডেটা বিশ্লেষণ এবং প্যাটার্ন শনাক্তকরণে। যেমন:
এক্সোপ্ল্যানেট শনাক্তকরণ: টেলিস্কোপের মাধ্যমে প্রাপ্ত বিশাল পরিমাণ তথ্য থেকে ক্ষুদ্র সংকেত আলাদা করতে মেশিন লার্নিং মডেল ব্যবহার করা হচ্ছে। এটি কৃত্রিম স্নায়বিক নেটওয়ার্ককে ব্যবহার করে গ্রহের ট্রানজিট শনাক্ত করে, যা পূর্বে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে খুবই জটিল ছিল।
গ্যালাক্সি শ্রেণিবিন্যাস: কৃত্রিম স্নায়বিক নেটওয়ার্ক দিয়ে গ্যালাক্সির চিত্রগুলি দ্রুত শ্রেণিবিন্যাস করা যায়, যা গ্যালাক্সির আকার ও গঠন বুঝতে সাহায্য করে। এটি বড় ডেটাসেট, যেমন Sloan Digital Sky Survey (SDSS), বিশ্লেষণ করতে খুবই কার্যকর।
গ্র্যাভিটেশনাল লেন্সিং: মহাবিশ্বের দূরবর্তী অংশ থেকে আসা আলো যেভাবে বাঁকছে, তা বিশ্লেষণ করতে নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা হয়। এটি মহাজাগতিক কাঠামো এবং অদৃশ্য পদার্থের (ডার্ক ম্যাটার) গঠন নিয়ে গবেষণায় সহায়ক।
ব্ল্যাক হোল-এর সিগন্যাল শনাক্তকরণ: লেজার ইন্টারফেরোমিটার গ্র্যাভিটেশনাল-ওয়েভ অবজারভেটরি (LIGO)-তে ব্ল্যাক হোলের সংঘর্ষ থেকে আসা মহাকর্ষীয় তরঙ্গ শনাক্ত করতে মেশিন লার্নিং পদ্ধতি ব্যবহৃত হচ্ছে, যা মানুষের চোখে অনেক সময় অদৃশ্য থেকে যেতে পারে।
এই সব ক্ষেত্রেই কৃত্রিম স্নায়বিক নেটওয়ার্ক পদার্থবিদ্যার বিভিন্ন ধারণার ওপর ভিত্তি করে বড় ডেটা সেট থেকে নির্ভুল তথ্য বের করে আনে, যা জ্যোতির্বিজ্ঞানের গবেষণায় নতুন দিগন্ত খুলে দিচ্ছে।
** লেখক বর্তমানে দক্ষিণ আফ্রিকার University of Witwatersrand-এ পদার্থবিদ্যা বিভাগে কর্মরত।
বিশেষ প্রতিবেদনঃ পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার


আরও পড়ুন
NASA Carbon Emission: পৃথিবী কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করার চেয়ে বেশি নির্গত করছে
উত্তরাপথঃ কার্বন নির্গমন (NASA Carbon Emission) সম্পর্কে নাসার সর্বশেষ আবিষ্কার পৃথিবীর জন্য এক সতর্কতা সংকেত। মহাকাশ সংস্থার মতে, পৃথিবী কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করার চেয়ে বেশি নির্গত করছে, যার ফলে গ্রিনহাউস গ্যাসের বায়ুমণ্ডলীয় ঘনত্ব উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। NASA এর এই আবিষ্কারটি জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য কারণ হিসাবে দেখা যেতে পারে, সেইসাথে কার্বন নিঃসরণ কমানোর জন্য জরুরি পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার উপর আলোকপাত করেছে।নাসার সর্বশেষ গবেষণায় যে তথ্য উঠে এসেছে তাতে পৃথিবীর মহাসাগর এবং ভূমি-ভিত্তিক বাস্তুতন্ত্র আগের চেয়ে কম কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করছে। গবেষণায় দেখা গেছে যে গত এক দশকে ভূমি এবং মহাসাগর দ্বারা শোষিত কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ ৫% হ্রাস পেয়েছে, যার ফলে গ্যাসের বায়ুমণ্ডলীয় ঘনত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। .....বিস্তারিত পড়ুন
PAN-Aadhar link: কেন্দ্র সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ডকে নিষ্ক্রিয় করেছে
উত্তরাপথ : আধারের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক (PAN-Aadhar link)করার সময়সীমা শেষ হওয়ার পরে কেন্দ্রীয় সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ড নিষ্ক্রিয় করেছে৷ আপনি যদি এখনও প্যান কার্ডের সাথে আধার কার্ড লিঙ্ক না করে থাকেন, তাহলে আপনি সরকারের এই কঠোর পদক্ষেপের আওতায় এসেছেন। আপনি যদি আপনার আধার কার্ডকে প্যানের সাথে লিঙ্ক করতে চান তবে আপনি জরিমানা দিয়ে এটি সক্রিয় করতে পারেন। কেন্দ্র সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ডকে আধারের সাথে লিঙ্ক না করার কারণে নিষ্ক্রিয় করেছে। একটি আরটিআই-এর জবাবে, সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ডাইরেক্ট ট্যাক্সেস জানিয়েছে যে আধার কার্ডের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক (PAN-Aadhar link) করার সময়সীমা ৩০ জুন শেষ হয়েছে। যারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আধার কার্ড এবং প্যান কার্ড লিঙ্ক করেননি তাদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দেশে ৭০ কোটি প্যান কার্ড বর্তমানে ভারতে প্যান কার্ডের সংখ্যা ৭০.২ কোটিতে পৌঁছেছে। এর মধ্যে প্রায় ৫৭.২৫ কোটি মানুষ আধারের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক করেছেন। .....বিস্তারিত পড়ুন
Bandna Festival: ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল পাঁচ দিন বাঁদনার আমেজে মশগুল থাকে
বলরাম মাহাতোঃ চিরাচরিত রীতি অনুযায়ী কার্তিক অমাবস্যার আগের দিন থেকে মোট পাঁচ দিন ব্যাপী বাঁদনার(Bandna Festival) আমেজে মশগুল থাকে ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। অবশ্য, পরবের শুভ সূচনা হয় তারও কয়েকদিন আগে। আদিবাসী সম্প্রদায়ের সামাজিক শাসন ব্যবস্থার চূড়ামণি হিসাবে গাঁয়ের মাহাতো, লায়া, দেহরি কিম্বা বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি নির্ধারণ করেন- ৩, ৫, ৭ বা ৯ ক’দিন ধরে গবাদি পশুর শিং-এ তেল মাখাবে গৃহস্বামী! রুখামাটির দেশের লোকেরা কোনোকালেই মাছের তেলে মাছ ভাজা তত্ত্বের অনুসারী নয়। তাই তারা গোরুর শিং-এ অন্য তেলের পরিবর্তে কচড়া তেল মাখানোয় বিশ্বাসী। কারণ কচড়া তেল প্রস্তুত করতে গোধনকে খাটাতে হয় না যে! কচড়া তেলের অপ্রতুলতার কারণে বর্তমানে সরষের তেল ব্যবহৃত হলেও, কচড়া তেলের ধারণাটি যে কৃষিজীবী মানুষের গবাদি পশুর প্রতি প্রেমের দ্যোতক, তা বলাই বাহুল্য! এভাবেই রাঢ বঙ্গে গোবর নিকানো উঠোনে হাজির হয়- ঘাওয়া, অমাবস্যা, গরইয়া, বুঢ়ি বাঁদনা ও গুঁড়ি বাঁদনার উৎসবমুখর দিনগুলি। পঞ্চদিবসে তেল দেওয়া, গঠ পূজা, কাঁচি দুয়ারি, জাগান, গহাইল পূজা, চুমান, চউক পুরা, নিমছান, গোরু খুঁটা, কাঁটা কাঢ়া প্রভৃতি ১১টি প্রধান পর্ব সহ মোট ১৬টি লোকাচারের মাধ্যমে উদযাপিত হয় বাঁদনা পরব(Bandna Festival )। .....বিস্তারিত পড়ুন
World Children's Day: সত্যিই কি ‘বিশ্ব শিশু দিবস´পালনের কোনও যৌক্তিকতা আছে ?
প্রীতি গুপ্তাঃ হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটি দিন তারপর ১৪ নভেম্বর আমাদের দেশ সহ সারা বিশ্বজুড়ে পালন করা হবে ‘বিশ্ব শিশু দিবস´(World Children's Day)।এই দিনটি শিশুদের মঙ্গলের জন্য, তাদের ভবিষ্যতের জন্য একটি অনুকূল বিশ্ব তৈরি করার প্রচেষ্টার একটি দিন।কিন্তু প্রশ্ন,সত্যি কি হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে সারা বিশ্ব জুড়ে শিশু দিবস পালন করার কোনও যৌক্তিকতা আছে? আদৌ কি এর কোনও লাভ আমরা আমাদের প্রান্তিক স্তরের শিশুদের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছি ? সম্প্রতি কাজের প্রয়োজনে রাজস্থানের উদয়পুর শহরে আসা। আমরা সবাই জানি উদয়পুর বিখ্যাত তার হ্রদের কারণে । এখানকার স্থানীয় থেকে পর্যটক সকলেই এই সুন্দর হ্রদগুলির আকর্ষণে বারবার ছুঁটে যায়। ‘ফতে সাহেব লেক’ রাজস্থানের উদয়পুরের এক বিখ্যাত পর্যটক স্থল।এখানে বহু মানুষ সকাল- বিকেল এই লেকের চার ধারে হাঁটাহাঁটি করতে বেরিয়ে পড়ে। সেভাবেই দুই দিন আগে বিকেলে হঠাৎ করে বেরিয়ে পড়লাম ‘ফতে সাহেব লেকের ধারে হাঁটার উদ্দেশ্য নিয়ে। হাঁটার মাঝখানে হঠাৎ করে একটি বাচ্চাছেলে আওয়াজ করে ডাকছে ,বললাম কিছু বলবি? সে বলল একটু দাঁড়াতে। ও ছুটে গিয়ে হাতে করে কয়েকটি বেলুন নিয়ে এসে হাজির । সে বারবার বেলুন কেনার অনুরোধ জানাতে লাগল। হাতে অন্য কাজের চাপ নেই অনেকটা অবসর সময় তাই আমি অনেকটা সাংবাদিক সুলভ মন নিয়ে বললাম ঠিক আছে আমি তোর বেলুন নেব ,কিন্তু তার আগে আমি তোকে যা বলব তার তার ঠিক ঠিক উত্তর দিতে হবে। সে খুশী খুশী রাজি হয়ে গেল । .....বিস্তারিত পড়ুন