বিজ্ঞানীরা বায়ু দূষণের পিছনে লুকানো কারণ আবিষ্কার করেছেন

উত্তরাপথঃগবেষকরা বায়ু দূষণ কীভাবে তৈরি হয় সে সম্পর্কে নতুন তথ্য খুঁজে পেয়েছেন, বিশেষ করে বায়ুতে হাইড্রোকার্বন নামক অণুগুলির উপর পরীক্ষা করে। তারা আলোর সংস্পর্শে এলে এই অণুগুলি কীভাবে আচরণ করে তা পর্যবেক্ষণ করার জন্য উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করেছেন, যা আগে কখনও দেখা যায়নি ।

আলো কীভাবে অণুগুলিকে প্রভাবিত করে

বাতাসে হাইড্রোকার্বন যখন সূর্যালোকের সাথে মিথস্ক্রিয়া করে, তখন এটি নাইট্রাস অ্যাসিডের মতো পদার্থ তৈরি করতে পারে, যা ধোঁয়াশা এবং দূষণে অবদান রাখে। এই প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল অণুর ভিতরে একটি প্রোটন (পরমাণুতে পাওয়া একটি ক্ষুদ্র কণা) দ্রুত স্থানান্তর, যা প্রোটন স্থানান্তর নামে পরিচিত। এটি আরও ভালভাবে বোঝার জন্য, বিজ্ঞানীরা অধ্যয়ন করেছেন যে এই প্রোটন অণুর ভিতরে কীভাবে চলাচল করে।

দ্রুত বিস্তারিতভাবে প্রোটনের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ

একটি অণুর ভিতরে, একটি প্রোটন খুব দ্রুত এক অংশ থেকে অন্য অংশে যেতে পারে। এটি ঘটতে দেখার জন্য, গবেষকরা একটি অতি দ্রুত ইলেকট্রন ক্যামেরা ব্যবহার করেছেন যা মানুষের চুলের চেয়ে ১০,০০০ গুণেরও বেশি ছোট স্কেলে ক্ষুদ্র নড়াচড়া নির্ধারণ করতে পারে। এই বিশেষ ক্যামেরাটি, কম্পিউটার মডেলের সাথে মিলিত হয়ে, বিজ্ঞানীদের দেখতে সাহায্য করেছে যে প্রোটনের নড়াচড়ার পর, অণুগুলিও মোচড় দেয় এবং ঘুরতে থাকে – আলোর দ্বারা উত্তেজিত হওয়ার পরে অণুগুলি কীভাবে শক্তি নির্গত করে এবং স্থির হয় তার দুটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ

অণুগুলি যখন আলো শোষণ করে, তখন তারা উত্তেজিত হয় এবং তারপরে শান্ত অবস্থায় ফিরে আসে। এই শিথিলকরণ কীভাবে ঘটে তা ঠিক কীভাবে বোঝা যায় তা বিজ্ঞানীদের দূষণকারী কীভাবে তৈরি হয় তা জানতে সাহায্য করে। এই গবেষণায়, বিজ্ঞানীরা একটি প্রধান শিথিলকরণ পথ চিহ্নিত করেছেন: প্রোটন অণুর ভিতরে চলে যায় এবং অণুর কিছু অংশ তাদের স্বাভাবিক আকৃতি থেকে বেরিয়ে আসে। এই আবিষ্কার দূষণের পিছনে রসায়ন সম্পর্কে আরও ভাল ধারণা প্রদান করে।

ক্ষুদ্র পরিবর্তনগুলি দেখার জন্য শক্তিশালী সরঞ্জাম ব্যবহার

বায়ুমণ্ডলে আলো এবং অণুর মধ্যে মিথস্ক্রিয়া ধোঁয়ার মতো বড় পরিবেশগত প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে। কিন্তু এই পরিবর্তনগুলি অত্যন্ত ক্ষুদ্র স্কেলে ঘটে – এক মিটারের এক বিলিয়ন ভাগেরও কম সময়ে – এবং এক সেকেন্ডের এক ট্রিলিয়ন ভাগেরও কম সময়ে ঘটে, যার ফলে এগুলি পরিমাপ করা খুব কঠিন হয়ে পড়ে।

এটি কাটিয়ে উঠতে, গবেষকরা SLAC ন্যাশনাল অ্যাক্সিলারেটর ল্যাবরেটরি নামক একটি স একটি বিশেষ যন্ত্র ব্যবহার করেছিলেন। এই যন্ত্রটি অণুতে এত ছোট এবং দ্রুত পরিবর্তন দেখতে পারে। গবেষণায় বিজ্ঞানীরা পর্যবেক্ষণ করেছেন যে আলো শোষণের পর ও-নাইট্রোফেনল নামক একটি অণু কীভাবে পরিবর্তিত হয়। তারা তথ্য বিশ্লেষণ করার জন্য কম্পিউটার অ্যালগরিদম ব্যবহার করেছেন, প্রোটন স্থানান্তর এবং মোচড়ের কারণে অণুর আকৃতি কীভাবে পরিবর্তিত হয় তা প্রকাশ করেছেন। তাদের ফলাফল কম্পিউটার সিমুলেশনের মাধ্যমেও নিশ্চিত করা হয়েছে।

ভবিষ্যতের জন্য প্রভাব

এই গবেষণা বিজ্ঞানীদের আলোর দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার সময় অণুগুলি কী কী বিস্তারিত পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে যায় তা বুঝতে সাহায্য করে, বিশেষ করে দূষণ গঠনের সাথে সম্পর্কিত। এটি আরও জটিল অণু অধ্যয়ন এবং বায়ু দূষণের পিছনের রসায়নকে আরও ভালভাবে বোঝার সুযোগ দেয়, যা শেষ পর্যন্ত পরিবেশগত ক্ষতি কমানোর উপায় খুঁজে পেতে সাহায্য করবে বলে বিজ্ঞানীদের ধারণা।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


Electoral Bond এর গোপনীয়তা সরিয়ে রাজনৈতিক দলগুলিকে, জানাতে হবে প্রাপ্ত অনুদানের পরিমাণ

উত্তরাপথঃ বুধবার, নির্বাচনী বন্ড (Electoral Bond)প্রকল্পের আইনি বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদনের শুনানি হয়। শীর্ষ আদালত তার মন্তব্যে বলেছে, 'নির্বাচনী বন্ডগুলি রাজনৈতিক দলগুলিকে বেনামী অর্থ প্রদান করে, কারণ তাদের কেনাকাটা সম্পর্কিত রেকর্ডগুলি স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার কাছে উপলব্ধ যা শুধুমাত্র তদন্তকারী সংস্থাগুলি অ্যাক্সেস করতে পারে৷ এর আগে নির্বাচনী বন্ড’ (Electoral Bond) সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) কেন্দ্র দাবি করেছিল, রাজনৈতিক দলগুলির আয়ের উৎস জানার অধিকার নেই জনতার।এবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তৎপর হল নির্বাচন কমিশন (Election Commission of India)।বুধবার বিকেল ৫টার মধ্যে যাবতীয় হিসেব জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কমিশনের তরফে।নির্বাচনী বন্ডের (Electoral Bond)মামলায় কেন্দ্রের আর্জি সত্বেও সুপ্রিম কোর্ট রাজনৈতিক দলগুলিকে আয়ের উৎস জানাতে বলেছিল। আদলত নির্দেশ দিয়েছিল, গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোন রাজনৈতিক দল কত অনুদান মিলেছে, সেই তথ্য বন্ধ খামে জানাতে হবে।এর আগেও নির্বাচনী বন্ডের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে একাধিক মামলা হয়েছে শীর্ষ আদালতে। মামলাকারীরা অভিযোগ করেছিলেন, রাজনৈতিক দলগুলি এই নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ বিদেশ থেকে পেতে পারে এর ফলে গণতন্ত্র ধ্বংস হবে। যদিও কোনও রাজনৈতিক দলই এই দাবি মানতে চায়নি। ৩ অক্টোবর মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সব তথ্য দিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। এই রায়ের পরেই তৎপর হল কমিশন। .....বিস্তারিত পড়ুন

NASA Carbon Emission: পৃথিবী কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করার চেয়ে বেশি নির্গত করছে

উত্তরাপথঃ কার্বন নির্গমন (NASA Carbon Emission) সম্পর্কে নাসার সর্বশেষ আবিষ্কার পৃথিবীর জন্য এক সতর্কতা সংকেত। মহাকাশ সংস্থার মতে, পৃথিবী কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করার চেয়ে বেশি নির্গত করছে, যার ফলে গ্রিনহাউস গ্যাসের বায়ুমণ্ডলীয় ঘনত্ব উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। NASA এর এই আবিষ্কারটি জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য কারণ হিসাবে দেখা যেতে পারে, সেইসাথে কার্বন নিঃসরণ কমানোর জন্য জরুরি পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার উপর আলোকপাত করেছে।নাসার সর্বশেষ গবেষণায় যে তথ্য উঠে এসেছে তাতে পৃথিবীর মহাসাগর এবং ভূমি-ভিত্তিক বাস্তুতন্ত্র আগের চেয়ে কম কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করছে। গবেষণায় দেখা গেছে যে গত এক দশকে ভূমি এবং মহাসাগর দ্বারা শোষিত কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ ৫% হ্রাস পেয়েছে, যার ফলে গ্যাসের বায়ুমণ্ডলীয় ঘনত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। .....বিস্তারিত পড়ুন

প্রাপ্তবয়স্কদের স্মৃতিশক্তি এবং চিন্তাভাবনা হ্রাস সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিক

উত্তরাপথঃ সারা বিশ্বের জনসংখ্যার বয়স বৃদ্ধির সাথে স্মৃতিশক্তি এবং চিন্তাভাবনা হ্রাস এবং ডিমেনশিয়ার মতো নিউরোডিজেনারেটিভ রোগের প্রকোপ বাড়ছে৷ তাদের এই  সমস্যাগুলি যে কেবল তাদের একার সমস্যা তা নয় ,এটি ধীরে ধীরে পুরো পারিবারিক সমস্যার আকার নেয়।সম্প্রতি বয়স্ক প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে মস্তিষ্কের কার্যকারিতাকে পুনরুদ্ধার করার জন্য গবেষকদের মধ্যে কার্যকর কৌশল খোঁজার আগ্রহ বাড়ছে।বর্তমানে বেশীরভাগ গবেষক মস্তিস্কের স্বাস্থ্য উদ্ধারের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিকের সম্ভাব্য ভূমিকা নিয়ে গবেষণা করছেন । এখন খুব স্বাভাবিকভাবেই একটি প্রশ্ন আসে প্রোবায়োটিক কি? কেনই বা গবেষকরা মস্তিস্কের স্বাস্থ্য উদ্ধারের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিকের ভূমিকা নিয়ে গবেষণা করছেন । .....বিস্তারিত পড়ুন

Karar Oi Lauh Kapat: কাজী নজরুলের এই গানকে ঘিরে  বিতর্কে এ আর রহমান

উত্তরাপথঃ বিতর্কে 'পিপ্পা' ছবির সঙ্গীত পরিচালক অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান।সম্প্রতি কবি কাজী নজরুল ইসলামের পরিবার একটি হিন্দি ছবিতে কবির জনপ্রিয় গান 'করার ঐ লৌহ কাপাত...' (Karar Oi Lauh Kapat )।কিন্তু এ আর রহমানের সঙ্গীত পরিচালনায় ওই গানটি যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে তাতে আপত্তি জানিয়েছে নজরুল পরিবার।বিতর্কের পর যে চুক্তির আওতায় ওই গানটি ছবিতে ব্যবহার করা হয়েছে তা প্রকাশ্যে আনার দাবি তুলেছে কবির পরিবার।'পিপ্পা' শিরোনামের হিন্দি চলচ্চিত্রটি যেখানে (Karar Oi Lauh Kapat )গানটি ব্যবহার করা হয়েছে তা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেওয়া একজন ভারতীয় সেনা সৈনিককে কেন্দ্র করে একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত। ছবির সঙ্গীত পরিচালক অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান। গানের কথা ঠিক রেখেও সুর পাল্টানোর অভিযোগে ভারত ও বাংলাদেশে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।কবির পরিবারের অভিযোগ, গানটি ব্যবহারের অনুমতি দিলেও সুর পরিবর্তনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।পরিবারের সদস্যরাও ছবিটি থেকে গানটি বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top