অভিনেতা: অভিষেক বচ্চন, অহিল্যা বামরু, জনি লিভার, জয়ন্ত কৃপালানি, ক্রিস্টিন গুডার্ড
পরিচালকঃ সুজিত সরকার
বিভাগ: হিন্দি, নাটক, বায়োপিক
আমাদের যদি এমন জায়গা থেকে শুরু করতে হয় যেখানে জীবন শেষ হওয়ার কথা? যদি ডাক্তার আপনাকে বলেন যে আপনার জীবনের আর মাত্র ১০০ দিন বাকি আছে, তাহলে হয় আপনি জীবনের সেই শেষ পর্বে আপনার অপূর্ণ ইচ্ছা পূরণ করতে শুরু করবেন অথবা আপনি হাল ছেড়ে দেবেন, কিন্তু পরিচালক সুজিত সরকারের এই নায়ক এই দুইয়েরই সমাধান। এইগুলি থেকে কোন বিকল্প বেছে নেয় না। তিনি মৃত্যুকে অস্বীকার করেন এবং শ্রোতাদের একটি অবিশ্বাস্য যাত্রায় নিয়ে যান যা আপনাকে অনেক জায়গায় অসাড় করে দেয়, কিন্তু শেষ পর্যন্ত আপনাকে আশা এবং ভালো অনুভূতি দেয়।
আই ওয়াণ্ট টু টক এর গল্প
গল্পটি অর্জুন সেনের (অভিষেক বচ্চন), যিনি সুজিত সরকারের বন্ধুও বটে। অর্জুন ক্যালিফোর্নিয়ার বিপণন জগতে তরঙ্গ তৈরি করছেন। পেশাগত জীবনে সফল অর্জুন বিয়ের ক্ষেত্রে অতটা ভাগ্যবান বলে প্রমাণিত হয়নি। তিনি তার স্ত্রীর থেকে আলাদা হয়ে গেছেন এবং মেয়ে রেহা তার বাবার সাথে মঙ্গলবার, বৃহস্পতিবার এবং প্রতি সপ্তাহের ছুটিতে থাকে। একদিন, অফিসের একটা চাপা মিটিং চলাকালীন, অর্জুন কাশি হয় এবং মুখ থেকে রক্তপাত শুরু হয়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর তিনি জানতে পারেন, তিনি ল্যারিঞ্জিয়াল ক্যান্সারে আক্রান্ত হন এবং বেঁচে থাকার জন্য তার কাছে মাত্র ১০০ দিন বাকি আছে।
এতক্ষণে অর্জুনও বুঝতে পেরেছে যে তার মেয়ে (অহিল্যা বামরু)ও তার ঘনিষ্ঠ নয়। সে তার চাকরি হারায়।এরপর তার জীবনে একের পর এক সমস্যা আসতে থাকে, কিন্তু তার জীবনের এই সবচেয়ে বেদনাদায়ক সময়ে, অর্জুন তার জীবন জয়ের জন্য যুদ্ধে নামে। যদিও মাঝে মাঝে তিনি নিজের জীবন নেওয়ার কথাও ভাবেন, এরপর একটি বা দুটি নয়, বিশটি অস্ত্রোপচারের মধ্য দিয়ে যায় অর্জুন, সে তার মেয়ের সাথে তার সম্পর্ক উন্নত করে। এই সংযোগে, একঘেয়ে একাকীত্ব, চাকরি হারানো, হাসপাতালের বিশাল বিল, সংসার চালানো, মাথার ওপর ঝুলে থাকা মৃত্যুর খড়্গ নিয়ে প্রতিনিয়ত লড়াই করার মতো অনেক পর্যায়ের মুখোমুখি হন তিনি।
আই ওয়ান্ট টু টক মুভি রিভিউ
পরিচালক সুজিত সরকারের গল্প বলার নিজস্ব স্টাইল রয়েছে। তারা জীবনের ক্ষণস্থায়ী ভীতিকর চিন্তার দিকে নিয়ে যায় এবং আপনার মধ্যে একটি শূন্যতা পূরণ করে। যখন আপনার ব্যথা গভীর হতে শুরু করে, তখন নায়কের বেঁচে থাকার ইচ্ছা মলম হিসাবে কাজ করে।এই ছবির প্রতিটি ফ্রেমে একটা চেষ্টা রয়েছে মনের কথা বলা বা বোঝার। চেষ্টা রয়েছে নিস্তব্ধতার ভাষাকে ধরার। তাই হয়তো অভিষেকের চরিত্রের সংলাপ বড্ড কম। বেশিরভাগটাই অভিব্য়ক্তি। টানাপোড়েন, একাকীত্ব বোঝাতেই হয়তো এই ছবিতে আবহসঙ্গীত প্রায় নেই। বরং বাস্তব শব্দকেই ব্যাকগ্রাউন্ড হিসেবে ধরেছেন সুজিত। যার মধ্যে সবচেয়ে দাগ কাটে শহরের ক্যাকাফোনি।
‘অক্টোবর’ এবং ‘পিকু’-এর মতো দুর্দান্ত ছবি উপহার দেওয়া সুজিতকে এখানেও মানবিক সম্পর্কের গিঁট খুলতে দেখা যায়। বাবা ও মেয়ের মধ্যেকার দৃশ্যগুলো স্মরণীয় হয়ে আছে। ফিল্মটির প্রথমার্ধ আপনার কাছে একটু ধীরগতির মনে হতে পারে, কিন্তু দ্বিতীয় অংশে ফিল্মটি দ্রুত গতিতে চলে। হাসপাতালের দৃশ্যকে ভালো ব্যবহার করেছেন সুজিত। তারা ডাক্তারের (জয়ন্ত কৃপালানি) সাথে রোগী অভিষেকের সম্পর্কের মাধ্যমে অনেক হালকা-হৃদয় মুহুর্তগুলিকে তুলে ধরেছে।
ছবির শিরোনাম অনুযায়ী গল্পের সংলাপগুলোও গোলমেলে। অভিষেকের প্রস্থেটিক মেকআপেও ভালো কাজ করা হয়েছে। হ্যাঁ, অভিষেকের ডিভোর্সি স্ত্রীর পেছনের গল্পটা দেখানো হলে গল্পটা আরও জোর পেত।একজন অভিনেতা হিসেবে অভিষেক বচ্চনের জন্য এই ভূমিকাটি অবশ্যই খুবই চ্যালেঞ্জিং ছিল, কারণ তাকে বেঁচে থাকা একজন ব্যক্তির জীবন যাপন করতে হবে যিনি যেকোনো মুহূর্তে মৃত্যুর কোলে যেতে পারেন, তবে তাকে মৃত্যুর শোক করতে হয় না, বরং জীবন উদযাপন করতে হয়। আমাদের স্বীকার করতেই হবে, অভিষেক এই চরিত্রে বিস্ময়কর কাজ করেছেন। তিনি চরিত্রের প্রতিটি স্তরকে আত্মীকরণ করেছেন, তা রোগীর মতো তার লড়াইয়ের মনোভাব হোক বা বাবা তার মেয়ের সাথে তার সম্পর্ক গড়ে তোলা। তার শারীরিক রূপান্তর চরিত্রটিকে শক্তিশালী করে তোলে।
অর্জুন সেনের মেয়ের চরিত্রে শিশুশিল্পী হোক বা যুবতী কন্যার ভূমিকায় অহিল্যা বামরু, দুজনেই অসাধারণ কাজ করেছেন। জয়ন্ত কৃপালানি ডাক্তারের ভূমিকায় অনবদ্য। জনি লিভার তার ছোট ভূমিকায় স্বস্তির মুহূর্ত প্রদান করে। নার্স ন্যান্সির চরিত্রে ক্রিস্টিন গুডার্ড স্মরণীয়।
আরও পড়ুন
সম্পাদকীয়
এ যেন বহুদিন পর বিজেপির চেনা ছন্দের পতন। হিমাচল প্রদেশের পর কর্ণাটক কংগ্রেস নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বিজেপির বিজয়রথকে থামিয়ে দিল ।২০১৮ পর থেকে লাগাতার হারতে থাকা একটি দল আবার ২০২৪ সাধারণ নির্বাচনে প্রাসঙ্গিক হয়ে গেল । ২২৪ সদস্যের কর্ণাটক বিধানসভায় সরকার গঠন করতে গেলে প্রয়োজন ১১৩টি আসন সেখানে কংগ্রেস একাই পেয়েছে ১৩৬টি আসন, বিজেপি পেয়েছে ৬৫ টি এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী দেবগৌড়ার জেডিএস পেয়েছে ১৯টি এবং অন্যান্য ৪ টি আসন পেয়েছে। যা গতবারের তুলনায় বিজেপির ৩৯ টি আসন কমেছে এবং কংগ্রেসের বেড়েছে ৫৭টি আসন এবং জেডিএসের কমেছে ১৮ টি আসন। কর্ণাটকে কংগ্রেসের এই সাফল্য কি রাজ্যে কংগ্রেসের শক্তিশালী সংগঠনের ফল না কি কর্ণাটকের আগের ক্ষমতাশীল বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ । কর্ণাটকে কংগ্রেসে অনেক বড় নেতা রয়েছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শিবকুমার দক্ষ সংগঠক। আগের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধারামাইয়ার ব্যাপক জনভিত্তি রয়েছে। ভোটের আগে বিজেপির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জগদীশ শেট্টার এবং উপমুখ্যমন্ত্রী সাভাড়ি কংগ্রেসে যোগ দিয়ে নির্বাচনে লড়েছেন। অন্যদিকে বিজেপির প্রচারের সবচেয়ে বড় মুখ ছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। বিজেপির প্রচারে সব নেতারাই মোদীর নাম করেই ভোট চেয়েছিলেন কিন্তু শেষ রক্ষা হল না ।কর্ণাটকের বিজেপি সরকারের ব্যাপক দুর্নীতি সেই সাথে কংগ্রেসের লাগাতার প্রচার যা প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার সুরকে আরও তীব্র করেছে। তাই শুধুমাত্র মোদী ম্যাজিকের উপর ভর করে নির্বাচন জেতা যে আর বিজেপির পক্ষে সম্ভব নয় কর্ণাটকের জনগণ চোখে হাত দিয়ে তাই দেখিয়ে দিল। .....বিস্তারিত পড়ুন
আগামী ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে কি সলমন খানকেও দেখা যাবে কলকাতায় ?
উত্তরাপথ: একেই বলে রথ দেখা কলা বেচা। এলেন ইস্ট বেঙ্গল ক্লাবের শতবর্ষ উদযাপনের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে,আর বাড়তি পাওনা হিসেবে পেয়ে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে একান্ত সাক্ষাতের সুযোগ। কালো টয়োটা এসইউভি ডব্লিউবি০২এএন৬৬৪৯ গাড়িতে করে বিকেল ৪টে ২০ মিনিটে পৌঁছেযান মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাড়িতে। অবশ্য রাস্তায় উপচে পড়া ভিড়ের জন্য দু'বার দাঁড়াতে হয়েছিল গাড়িতে থাকা সুপারস্টারকে। পুলিশি নিরাপত্তার ঘেরাটোপে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ঢোকে সলমন খান। আগেই নিজের টালির চালার বাড়ির সামনে আটপৌড়ে শাড়িতে অপেক্ষায় .....বিস্তারিত পড়ুন
মানভূমে প্রচলিত রাত কহনি
ড. নিমাইকৃষ্ণ মাহাত: পুরুলিয়া জেলা ও তৎসংলগ্ন অঞ্চলে (মানভূম ) সন্ধ্যার ঠিক কিছু পরেই ঠাকুমা , দিদিমা, পিসিমা , মাসিমারা ছোটদের নানা রূপকথা , উপকথা শোনায় যেগুলি ' রাত কহনি ' নামে পরিচিত।এরকম রাত কহনির দু একটি দৃষ্টান্ত দেওয়া যেতে পারে। .....বিস্তারিত পড়ুন
কৃষ্ণগহ্বরের "ছায়া" ও "ছবি"
ড. সায়ন বসু: ১৭৮৩ সালে ভূতত্ত্ববিদ জন মিচেল (John Michell) ‘ডার্ক স্টার’ (dark stars) শিরোনামে একটি গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশ করেন। তার গবেষণা পত্রের বিষয়বস্তু ছিল "বিপুল পরিমাণ ভর বিশিষ্ট কোন বস্তু যার মহাকর্ষের প্রভাবে আলোক তরঙ্গ পর্যন্ত পালাতে পারে না"। এখান থেকেই মূলত কৃষ্ণগহ্বরের (Black Hole) ধারণা আসে এবং এটি নিয়ে গবেষনা ও অনুসন্ধান শুরু হয়। পরবর্তিতে অবশ্য এটি বিজ্ঞান মহলে একটি অযৌক্তিক তত্ত্ব হিসেবে বেশ অবহেলার স্বীকার হয়। আলোর মত কোন কিছু বেরিয়ে আসতে পারবে না এমন একটি তত্ত্ব বিজ্ঞানীদের কাছে বেশ অযৌক্তিক মনে হয়েছিল। তাই ধীরে ধীরে থেমে যায় কৃষ্ণগহ্বর নিয়ে গবেষনা। .....বিস্তারিত পড়ুন