ইঞ্জিনিয়ারড ব্যাকটেরিয়া জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা রাখে

উত্তরাপথ

লরেন্স বার্কলে ন্যাশনাল ল্যাবরেটরি এবং ইউসি বার্কলে এর সহযোগিতামূলক গবেষণায় গবেষকরা একটি অভিনব ব্যাকটেরিয়া ইঞ্জিনিয়ারড করেছেন যা জ্বালানি, ওষুধ এবং রাসায়নিক উত্পাদনের সময় উত্পন্ন গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমনকে উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করতে ডিকার্বনাইজশন এর মাধ্যমে। সম্প্রতি Nature জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে এই আবিষ্কারটি । আর এটি “Carbene Transfer Chemistry in Biosynthesis” নামে পরিচিত । একটি অভিনব প্রতিক্রিয়ার সাথে প্রাকৃতিক এনজাইমেটিক বিক্রিয়াকে সংহত করতে ব্যাকটেরিয়াকে কাজে লাগায়। আর যা সাধারণত জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভর করে গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমনকে হ্রাস করার সম্ভাবনা রয়েছে।

কয়েক দশক ধরে, বিজ্ঞানীরা জ্বালানি ও রাসায়নিকের উৎপাদনে এবং ওষুধ আবিষ্কার ও সংশ্লেষণে কার্বেন বিক্রিয়া ব্যবহার করতে চেয়েছেন। কার্বনগুলি অত্যন্ত প্রতিক্রিয়াশীল কার্বন-ভিত্তিক রাসায়নিক যা বিভিন্ন ধরণের প্রতিক্রিয়াতে ব্যবহার করা যেতে পারে। কিন্তু এই কার্বিন প্রক্রিয়াগুলি শুধুমাত্র টেস্টটিউবের মাধ্যমে ছোট ব্যাচে করা যেতে পারে এবং প্রতিক্রিয়া চালানোর জন্য ব্যয়বহুল রাসায়নিক পদার্থের প্রয়োজন হয়।

নতুন গবেষণায়, গবেষকরা প্রাকৃতিক পণ্যগুলির সাথে ব্যয়বহুল রাসায়নিক বিক্রিয়াকে প্রতিস্থাপিত করেছেন যা ব্যাকটেরিয়া স্ট্রেপ্টোমাইসেসের একটি ইঞ্জিনিয়ারড স্ট্রেন দ্বারা উত্পাদিত হতে পারে। এই জৈবিক প্রক্রিয়াটি অনেক বেশি পরিবেশগতভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পাদন করতে সক্ষম করে। যেহেতু ব্যাকটেরিয়া সেলুলার বিপাকের মাধ্যমে রাসায়নিক পণ্য তৈরি করতে sugar ব্যবহার করে, এই আবিষ্কার রাসায়নিক সংশ্লেষণে ব্যবহৃত বিষাক্ত দ্রাবক বা বিষাক্ত গ্যাস ছাড়াই কার্বেন রসায়ন সম্পাদন করতে সক্ষম করে।

গবেষকরা ইঞ্জিনিয়ারড ব্যাকটেরিয়াটিকে পর্যবেক্ষণ করেছেন কারণ এটি carbohydrate -কে carbene পূর্বসূরী এবং alkene সাবস্ট্রেটে বিপাকিত করে এবং রূপান্তরিত করে। ব্যাকটেরিয়াটি একটি বিবর্তিত P450 এনজাইমও তৈরি করে যা সেই রাসায়নিকগুলিকে সাইক্লোপ্রোপেন, উচ্চ-শক্তির অণু তৈরি করতে ব্যবহার করে। এই অভিনব উচ্চ-শক্তির বায়োঅ্যাকটিভ যৌগ এবং উন্নত জৈব জ্বালানীর টেকসই উৎপাদনে সম্ভাব্যভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। এই আকর্ষণীয় আবিষ্কার খুব বড় স্কেলে অর্থাৎ ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্কেলে করা সম্ভব। রাসায়নিক সংশ্লেষণের জন্য এই ইঞ্জিনিয়ারড ব্যাকটেরিয়া নিয়োগ করা কার্বন নির্গমন কমাতে একটি অবিচ্ছেদ্য ভূমিকা পালন করবে। সাম্প্রতিক G7 জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত প্যানেলে বলা হয়েছে 2030 সালের মধ্যে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন মারাত্মকভাবে অর্ধেকে হ্রাস করতে হলে, global warming বৃদ্ধিকে প্রাক-শিল্প স্তরের উপরে 1.5 ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ করতে হবে। যদিও এই পদ্ধতি এখনও বাণিজ্যিকীকরণের জন্য প্রস্তুত নয়।হুয়াং বলেন যে এই সম্পূর্ণরূপে সমন্বিত সিস্টেমটি বিপুল সংখ্যক কার্বেন দাতা অণু এবং অ্যালকন সাবস্ট্রেটের জন্য কল্পনা করা যেতে পারে, এটি এখনও বাণিজ্যিকীকরণের জন্য প্রস্তুত নয়।

এই কাজ বিজ্ঞানের এক নতুন দিশা দেখিয়েছে যা জৈব উৎপাদন সমাধানের জন্য অনুসন্ধান চালিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করবে।

বিস্তারিত জানতে দেখুনঃ Nature, 2023, 617, 403 (https://www.nature.com/articles/s41586-023-06027-2).

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


বিশ্বকাপ ২০২৩: পাকিস্তানকে হারিয়ে Afghanistan এ ঈদের মতো পরিস্থিতি

আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপ ২০২৩-এর ২২ তম ম্যাচে আফগানিস্তান পাকিস্তানকে বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করেছে। সেই ম্যাচে পাকিস্তানকে ৮ উইকেটে হারিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করে আফগানিস্তান। এই প্রথম ওয়ানডেতে পাকিস্তানকে হারাল আফগানিস্তান আর এই পাকিস্তানকে হারিয়ে আফগানিস্থানে(Afghanistan)এখন ঈদের মতো পরিস্থিতি।এক আফগানিস্থানি সমর্থকের মতে এটি ছিল আমাদের ইতিহাসের একটি বিরল মুহূর্ত যখন পুরো জাতি খুশি ছিল এবং নিজেদের মত করে তারা তাদের এই খুশী উদযাপন করেছেন। এক্স হ্যান্ডেলে এক সমর্থকের মতে, সেদিন উদযাপন ছিল, পার্টি ছিল। এটি ছিল আমাদের ইতিহাসের একটি বিরল মুহূর্ত যখন পুরো জাতি খুশি ছিল এছাড়াও, এটি ছিল ২০২৩ বিশ্বকাপের তৃতীয় বড় আপসেট । টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় বাবর আজমের দল। প্রথমে ব্যাট করে পাকিস্তান দল ২৮২ রান করে। জবাবে আফগানিস্তান দল ২৮৩ রান তাড়া করে ৪৯ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্য অর্জন করে। এই ম্যাচে হারের পর বেশ ক্ষুব্ধ দেখাচ্ছিল অধিনায়ক বাবর আজমকে। ম্যাচ-পরবর্তী উপস্থাপনার সময়, তিনি দলের ত্রুটিগুলি তালিকাভুক্ত করেছিলেন এবং পরাজয়ের জন্য নিজেদের দায়ী করেছিলেন। .....বিস্তারিত পড়ুন

Roop Kishor Soni: একটি আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য তুলে ধরেছেন

উত্তরাপথঃ রাজস্থান মানেই ওজনদার রূপার গহনা ,আর তার উপর কারুকাজ। প্রচলিত এই ধারনা ভেঙ্গে আজ রূপোর গহনাকে আধুনিকতার সাথে শিল্পের এক অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন যে ব্যক্তি তিনি হলেন রূপ কিশোরী সোনী(Roop Kishor Soni)।তিনি ২০১৬ সালের ৯ ডিসেম্বর প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির কাছ থেকে তার অসাধারণ শিল্প কর্মের জন্য জাতীয় পুরুস্কার পান। রাজস্থানের জয়সলমেরের শহরের এই শিল্পী ৩.৮ গ্রাম ওজনের ০.৯ সেমি চওড়া রৌপ্য আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য খোদাই করেছেন।এই ছোট রূপার আংটিতে শিল্পী তাজমহল, সিডনি অপেরা হাউস, স্ট্যাচু অফ লিবার্টি, চীনের গ্রেট ওয়াল, আইফেল টাওয়ার, বিগ বেন, পিসার হেলানো টাওয়ার এবং মিশরীয় পিরামিডের চিত্র এক সাথে ফুটিয়ে তুলেছেন।এছাড়াও তিনি আরও দুটি পৃথক ডিজাইনের অত্যাশ্চর্য আংটি  তৈরি করেছেন।৮.৬ গ্রাম ওজনের একটি রিংয়ে তিনি সূর্যাস্তের সময় ভারতীয় উট সাফারি সহ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন ভারতীয় বিশেষত্ব ফুটিয়ে তুলেছেন,এবং অন্যটিতে বিভিন্ন হিন্দু দেব-দেবী ছবি এবং মন্দির খোদাই করেছিলেন। শিল্পী বলেছেন যে তিনি তার বাবার কাছ থেকে তার শৈল্পিক দক্ষতা উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছেন। সেই সাথে তিনি বলেন "আমার বাবাও একজন জাতীয় পুরুস্কার প্রাপ্ত শিল্পী ছিলেন। তিনি আমাকে শিল্পের এই দক্ষতা শিখিয়েছিলেন কারণ তিনি পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে শিল্পের ফর্মটিকে বাঁচিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন।" .....বিস্তারিত পড়ুন

প্রাপ্তবয়স্কদের স্মৃতিশক্তি এবং চিন্তাভাবনা হ্রাস সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিক

উত্তরাপথঃ সারা বিশ্বের জনসংখ্যার বয়স বৃদ্ধির সাথে স্মৃতিশক্তি এবং চিন্তাভাবনা হ্রাস এবং ডিমেনশিয়ার মতো নিউরোডিজেনারেটিভ রোগের প্রকোপ বাড়ছে৷ তাদের এই  সমস্যাগুলি যে কেবল তাদের একার সমস্যা তা নয় ,এটি ধীরে ধীরে পুরো পারিবারিক সমস্যার আকার নেয়।সম্প্রতি বয়স্ক প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে মস্তিষ্কের কার্যকারিতাকে পুনরুদ্ধার করার জন্য গবেষকদের মধ্যে কার্যকর কৌশল খোঁজার আগ্রহ বাড়ছে।বর্তমানে বেশীরভাগ গবেষক মস্তিস্কের স্বাস্থ্য উদ্ধারের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিকের সম্ভাব্য ভূমিকা নিয়ে গবেষণা করছেন । এখন খুব স্বাভাবিকভাবেই একটি প্রশ্ন আসে প্রোবায়োটিক কি? কেনই বা গবেষকরা মস্তিস্কের স্বাস্থ্য উদ্ধারের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিকের ভূমিকা নিয়ে গবেষণা করছেন । .....বিস্তারিত পড়ুন

দীপাবলির সময় কেন পটকা ফোটানো নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা যায় না ?

উত্তরাপথঃ দীপাবলির পরের দিন, যখন কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (CPCB) শহরের বায়ু মানের সূচকের তালিকা প্রকাশ করে,তখন  দেখা যায় রাজধানী দিল্লি বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দূষিত শহরের প্রথমেই রয়েছে। CPCB-এর মতে, ১২ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় দিল্লির বায়ু মানের সূচক ছিল ২১৮ যা ভোরের দিকে বেড়ে ৪০৭ এ পৌঁছায় । ৪০০ – ৫০০ AQI  এর স্তর সুস্থ ব্যক্তিদের প্রভাবিত করে। দীপাবলির সারা রাত, লোকেরা পটকা ফাটিয়ে দীপাবলি উদযাপন করে। ১৩ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আবার তথ্য প্রকাশ করে এই তালিকায়, দিল্লির গড় বায়ু মানের সূচক ছিল ৩৫৮ যা 'খুব খারাপ' বিভাগে পড়ে।   বায়ু দূষণের এই পরিস্থিতি শুধু দিল্লিতেই সীমাবদ্ধ ছিল না।  নয়ডার বায়ু মানের সূচক ১৮৯ থেকে ৩৬৩ এ এবং রোহতক, হরিয়ানার ১৩৭ থেকে বেড়ে ৩৮৩ হয়েছে। দীপাবলির দুই দিন দিল্লি ,নয়ডা  ,কলকাতা, মুম্বাই সহ দেশের অন্যান্য শহরেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। এই দিনগুলিতে মানুষ বিষাক্ত বাতাসে শ্বাস নিতে বাধ্য হয়েছে। ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জাতীয় রাজধানী দিল্লি এবং নয়ডায় সবুজ পটকা ছাড়া যে কোনও ধরণের আতশবাজি ফাটান সম্পূর্ণ রূপে নিষিদ্ধ। আদালত সবুজ পটকা পোড়ানোর সময়ও নির্ধারণ করে দিয়েছে রাত ৮টা থেকে ১০টা। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে সুপ্রিম কোর্টের এই আদেশের মানে কী?  আদালতের এই আদেশ কি এখন প্রত্যাহার করা উচিত?  পুলিশ কেন এই আদেশ কার্যকর করতে পারছে না?  এর জন্য কি পুলিশ দায়ী নাকি সরকারের উদাসীনতা রয়েছে এর পেছনে? .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top