

কম লবণ শরীরের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে ছবি – উত্তরাপথ
উত্তরাপথঃ অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার ক্ষতির কথা সবাই জানে, তবে কম লবণও শরীরের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। বর্তমানে তরুণদের মধ্যে নিজেদের ফিট রাখার জন্য ‘লবণে না’বলার প্রবণতা বাড়ছে।খুব কম লবণযুক্ত খাবার খাওয়া শরীরের পক্ষে ভালো কি খারাপ যদিও এটি বিশেষজ্ঞদের মধ্যে বিতর্কের বিষয়। তবে এই লবণের পরিমাণ খুব কম হলে শরীরে অনেক সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। অত্যধিক লবণ গ্রহণ উচ্চ রক্তচাপের মতো স্বাস্থ্য ঝুঁকির সাথে যুক্ত।এই কারণেই বিশেষজ্ঞরা এটি সীমিত পরিমাণে খাওয়ার পরামর্শ দেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মতে, প্রতিদিন ৫ গ্রাম পর্যন্ত লবণ খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য স্বাভাবিক, তবে এর চেয়ে কম বা বেশি আমাদের ক্ষতি করতে পারে।
শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা কম হলে নিম্ন রক্তচাপ হতে পারে । এই অবস্থা হাইপোটেনশন হিসাবে পরিচিত। হাইপোটেনশনে আক্রান্ত হলে, একজন ব্যক্তি মাথা ঘোরা, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া এবং দৃষ্টি ঝাপসা হওয়ার মতো লক্ষণগুলি অনুভব করতে পারে। দীর্ঘস্থায়ী হাইপোটেনশন শরীরের নির্দিষ্ট অংশে অপর্যাপ্ত রক্ত প্রবাহের কারণ হতে পারে, যা সময়ের সাথে সাথে ক্ষতির কারণ হতে পারে।
হাইপোনাট্রেমিয়া হল একটি গুরুতর অবস্থা যেখানে রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা বিপজ্জনকভাবে কম হয়ে যায়। এর লক্ষণগুলি বমি বমি ভাব এবং মাথা ব্যাথা থেকে হ্যালুসিনেশন এবং খিঁচুনি পর্যন্ত হতে পারে। গুরুতর ক্ষেত্রে, হাইপোনাট্রেমিয়া এমনকি জীবনহানি হতে পারে।সোডিয়াম একটি অপরিহার্য ইলেক্ট্রোলাইট যা স্নায়ু সংক্রমণ এবং তরল ভারসাম্য সহ বিভিন্ন শারীরিক ক্রিয়াকলাপে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।তাই খুব কম লবণযুক্ত খাদ্য এই ভারসাম্যকে ব্যাহত করতে পারে এবং সম্ভাব্যভাবে ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্যহীনতার দিকে পরিচালিত করতে পারে।
সোডিয়াম এবং পটাসিয়াম গ্রহণের মধ্যে ভারসাম্য বিবেচনা করাও গুরুত্বপূর্ণ।খুব কম সোডিয়াম খেলে শরীরে ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে। এর ফলে পেশীতে খিঁচুনি, দুর্বলতা এবং এমনকি অনিয়মিত হৃদস্পন্দন হতে পারে। এটি ক্রীড়াবিদ এবং ভারী শারীরিক ক্রিয়াকলাপ করা লোকদের জন্য বিশেষত বিপজ্জনক হতে পারে।
কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে খুব কম সোডিয়াম খাবার খাওয়া ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে, যা টাইপ 2 ডায়াবেটিসের কারণ।
খুব কম সোডিয়াম খাওয়া কিডনিকে চাপ দিতে পারে, কারণ তাদের সঠিকভাবে কাজ করার জন্য একটি নির্দিষ্ট মাত্রার সোডিয়াম প্রয়োজন। এমন অবস্থায় সোডিয়ামের অভাবে কিডনির কার্যকারিতা ব্যাহত হয় এবং কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায।
সোডিয়ামের অভাব স্নায়ু সংকেত ব্যাহত করতে পারে এবং পেশী সংকোচনকে প্রভাবিত করতে পারে। এর অভাবে পেশী দুর্বলতা, ক্র্যাম্প এবং অনেক ক্ষেত্রে প্যারালাইসিসও হতে পারে।এছাড়াও হার্ট ফেইলিওর বা কিডনি রোগ, স্বাস্থ্যের উপর লবণ গ্রহণের প্রভাবকে প্রভাবিত করতে পারে। এই ক্ষেত্রে, একটি নির্দিষ্ট চিকিৎসা পরিকল্পনার অংশ হিসাবে কম লবণযুক্ত খাদ্য গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।
খুব কম পরিমাণে সোডিয়ামও হার্টের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। সোডিয়াম গ্রহণ কমানো কিছু ব্যক্তির রক্তচাপ কমাতে পারে, যা হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের মতো হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
তা হঠাৎ করে আপনি যদি ‘লবণে না’বলার সিদ্ধান্ত নেবেন বলে ঠিক করেন তাহলে আপনাকে অবশ্যয় একজন ডায়েটিশিয়ান বা একজন চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে,তারপর পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ অপরিহার্য ।
আরও পড়ুন
Fried rice syndrome: আগের দিনের রান্না করা ভাত খেলে হতে পারে এই বিশেষ অসুখটি
উত্তরাপথঃ আপনার কি বাসী ভাত বা পান্তা খাওয়ার অভ্যেস আছে? সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়া তোলপাড় ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম (Fried rice syndrome) নিয়ে আমরা প্রায়ই অবশিষ্ট খাবার গরম করে আবার খাই। কিন্তু জানেন কি এই অভ্যাস আপনাকে অসুস্থ করে তুলতে পারে। অনেক সময় পর আগের রান্না করা ভাত খাওয়ার ফলে পেট সংক্রান্ত সমস্যা হয়। কেউ কেউ মনে করেন যে খাবার পুনরায় গরম করলে এতে উপস্থিত ব্যাকটেরিয়া মারা যায়, কিন্তু তা নয়। যে খাবারেই স্টার্চ থাকে না কেন, এতে উপস্থিত টক্সিন তাপ প্রতিরোধী। অর্থাৎ খাবার গরম করার পরও ব্যাকটেরিয়া নষ্ট হয় না। ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম নামে এই সমস্যা সম্পর্কিত একটি অবস্থা রয়েছে। আজ আমরা এই ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম অবস্থার লক্ষণ, কারণ এবং প্রতিকার নিয়ে আলোচনা করব। ভাত রান্না করার পর, যখন অবশিষ্ট ভাত কয়েক ঘন্টা বা সারারাত ঘরের তাপমাত্রায় রেখে দেওয়া হয় এবং তাতে ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে শুরু করে, তখন এই অবস্থার নাম দেওয়া হয়েছে ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম। .....বিস্তারিত পড়ুন
Bandna Festival: ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল পাঁচ দিন বাঁদনার আমেজে মশগুল থাকে
বলরাম মাহাতোঃ চিরাচরিত রীতি অনুযায়ী কার্তিক অমাবস্যার আগের দিন থেকে মোট পাঁচ দিন ব্যাপী বাঁদনার(Bandna Festival) আমেজে মশগুল থাকে ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। অবশ্য, পরবের শুভ সূচনা হয় তারও কয়েকদিন আগে। আদিবাসী সম্প্রদায়ের সামাজিক শাসন ব্যবস্থার চূড়ামণি হিসাবে গাঁয়ের মাহাতো, লায়া, দেহরি কিম্বা বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি নির্ধারণ করেন- ৩, ৫, ৭ বা ৯ ক’দিন ধরে গবাদি পশুর শিং-এ তেল মাখাবে গৃহস্বামী! রুখামাটির দেশের লোকেরা কোনোকালেই মাছের তেলে মাছ ভাজা তত্ত্বের অনুসারী নয়। তাই তারা গোরুর শিং-এ অন্য তেলের পরিবর্তে কচড়া তেল মাখানোয় বিশ্বাসী। কারণ কচড়া তেল প্রস্তুত করতে গোধনকে খাটাতে হয় না যে! কচড়া তেলের অপ্রতুলতার কারণে বর্তমানে সরষের তেল ব্যবহৃত হলেও, কচড়া তেলের ধারণাটি যে কৃষিজীবী মানুষের গবাদি পশুর প্রতি প্রেমের দ্যোতক, তা বলাই বাহুল্য! এভাবেই রাঢ বঙ্গে গোবর নিকানো উঠোনে হাজির হয়- ঘাওয়া, অমাবস্যা, গরইয়া, বুঢ়ি বাঁদনা ও গুঁড়ি বাঁদনার উৎসবমুখর দিনগুলি। পঞ্চদিবসে তেল দেওয়া, গঠ পূজা, কাঁচি দুয়ারি, জাগান, গহাইল পূজা, চুমান, চউক পুরা, নিমছান, গোরু খুঁটা, কাঁটা কাঢ়া প্রভৃতি ১১টি প্রধান পর্ব সহ মোট ১৬টি লোকাচারের মাধ্যমে উদযাপিত হয় বাঁদনা পরব(Bandna Festival )। .....বিস্তারিত পড়ুন
দীপাবলির সময় কেন পটকা ফোটানো নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা যায় না ?
উত্তরাপথঃ দীপাবলির পরের দিন, যখন কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (CPCB) শহরের বায়ু মানের সূচকের তালিকা প্রকাশ করে,তখন দেখা যায় রাজধানী দিল্লি বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দূষিত শহরের প্রথমেই রয়েছে। CPCB-এর মতে, ১২ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় দিল্লির বায়ু মানের সূচক ছিল ২১৮ যা ভোরের দিকে বেড়ে ৪০৭ এ পৌঁছায় । ৪০০ – ৫০০ AQI এর স্তর সুস্থ ব্যক্তিদের প্রভাবিত করে। দীপাবলির সারা রাত, লোকেরা পটকা ফাটিয়ে দীপাবলি উদযাপন করে। ১৩ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আবার তথ্য প্রকাশ করে এই তালিকায়, দিল্লির গড় বায়ু মানের সূচক ছিল ৩৫৮ যা 'খুব খারাপ' বিভাগে পড়ে। বায়ু দূষণের এই পরিস্থিতি শুধু দিল্লিতেই সীমাবদ্ধ ছিল না। নয়ডার বায়ু মানের সূচক ১৮৯ থেকে ৩৬৩ এ এবং রোহতক, হরিয়ানার ১৩৭ থেকে বেড়ে ৩৮৩ হয়েছে। দীপাবলির দুই দিন দিল্লি ,নয়ডা ,কলকাতা, মুম্বাই সহ দেশের অন্যান্য শহরেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। এই দিনগুলিতে মানুষ বিষাক্ত বাতাসে শ্বাস নিতে বাধ্য হয়েছে। ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জাতীয় রাজধানী দিল্লি এবং নয়ডায় সবুজ পটকা ছাড়া যে কোনও ধরণের আতশবাজি ফাটান সম্পূর্ণ রূপে নিষিদ্ধ। আদালত সবুজ পটকা পোড়ানোর সময়ও নির্ধারণ করে দিয়েছে রাত ৮টা থেকে ১০টা। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে সুপ্রিম কোর্টের এই আদেশের মানে কী? আদালতের এই আদেশ কি এখন প্রত্যাহার করা উচিত? পুলিশ কেন এই আদেশ কার্যকর করতে পারছে না? এর জন্য কি পুলিশ দায়ী নাকি সরকারের উদাসীনতা রয়েছে এর পেছনে? .....বিস্তারিত পড়ুন
PAN-Aadhar link: কেন্দ্র সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ডকে নিষ্ক্রিয় করেছে
উত্তরাপথ : আধারের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক (PAN-Aadhar link)করার সময়সীমা শেষ হওয়ার পরে কেন্দ্রীয় সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ড নিষ্ক্রিয় করেছে৷ আপনি যদি এখনও প্যান কার্ডের সাথে আধার কার্ড লিঙ্ক না করে থাকেন, তাহলে আপনি সরকারের এই কঠোর পদক্ষেপের আওতায় এসেছেন। আপনি যদি আপনার আধার কার্ডকে প্যানের সাথে লিঙ্ক করতে চান তবে আপনি জরিমানা দিয়ে এটি সক্রিয় করতে পারেন। কেন্দ্র সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ডকে আধারের সাথে লিঙ্ক না করার কারণে নিষ্ক্রিয় করেছে। একটি আরটিআই-এর জবাবে, সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ডাইরেক্ট ট্যাক্সেস জানিয়েছে যে আধার কার্ডের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক (PAN-Aadhar link) করার সময়সীমা ৩০ জুন শেষ হয়েছে। যারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আধার কার্ড এবং প্যান কার্ড লিঙ্ক করেননি তাদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দেশে ৭০ কোটি প্যান কার্ড বর্তমানে ভারতে প্যান কার্ডের সংখ্যা ৭০.২ কোটিতে পৌঁছেছে। এর মধ্যে প্রায় ৫৭.২৫ কোটি মানুষ আধারের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক করেছেন। .....বিস্তারিত পড়ুন