চাকরি ছাড়ার পর ফেরত দিতে হলো অফিসে খাওয়া চায়ের দাম

উত্তরাপথঃ চা কে আমরা যতই বলি স্ট্রিট ফুড বলি না কেন আসলে এটি এমন একটি পানীয় যা বিশ্ব অর্থনীতির বিশ্বায়নকে চালিত করেছিল। দীর্ঘক্ষণ কাজ করার ফলে কর্মীদের মধ্যে ক্লান্তি কিংবা বিরক্তি কাজ করে, তা কাটাতেই প্রায় প্রতিটি সরকারি-বেসরকারি অফিসেই কম বেশি চা-কফি খাওয়ার সুযোগ থাকে। কিন্তু একটি প্রতিষ্ঠানের চাকরি ছাড়ার পর দুই কর্মীকে অফিসে যত কাপ চা খেয়েছেন, তার বিল পরিশোধ করতে হয়েছে। এই বিরল কাণ্ড ঘটেছে চীনে। 

ঘটনা চীনের আনহুই প্রদেশের। সেখানে দুই কর্মী চাকরি ছেড়েছিলেন। খুবই স্বাভাবিক ঘটনা, আমরা অনেকেই চাকরি ছেড়ে থাকি। কিন্তু পরের ধাপে যা ঘটলো, তা কোনভাবেই স্বাভাবিক নয়। অনেক অফিসই তার কর্মীদের জন্য বিনামূল্যে চা-কফির ব্যবস্থা রাখে। ওই দুই কর্মী জানতেন, তাদের অফিসেও বিনামূল্যে চা খাওয়ানো হয়। কিন্তু চাকরি ছাড়ার পর অফিসের বস তাদের কাছ থেকে অফিসে থাকতে তারা যত কাপ চা খেয়েছেন, তার দাম পুরোটা পরিশোধ করতে বলেন।

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানায়, বিষয়টি যে মৌখিক স্তরেই সীমাবদ্ধ ছিল, তা নয়। চায়ের টাকা আদায়ের জন্য রীতিমতো আইনি চিঠিও দেওয়া হয়েছে ওই দুই কর্মীকে। সেই চিঠি পেয়ে কর্মীরা স্বাভাবিকভাবেই অবাক হয়েছেন। সব থেকে বড় কথা, টাকার অঙ্কটাও নেহাত কম নয়। চীনে মদ খাওয়ার প্রবণতা কমাতে সম্প্রতি জনপ্রিয় হয়েছে দুধ চা। এই চা খেতে জায়গা বিশেষে গুনতে হয় ৯০ থেকে ২৮৮ ইউয়ান পর্যন্ত।

যাই হোক, কর্মীরা গুণে গুণে ১৭ হাজার ইউয়ান অফিসের অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করে দিয়েছেন। এর বিরুদ্ধে নিজেদের পক্ষে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেয়নি ওই দুই কর্মী। তবে ঘটনাটি তারা ফলাও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছেন। স্বাভাবিকভাবেই বিশ্ব এখন তাদের বসের নিন্দায় পঞ্চমুখ।

প্রসঙ্গত চা এর নামটি এসেছে চীন থেকে, যেখানে এটি প্রথম আবিষ্কৃত হয়েছিল ৩০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের কাছাকাছি। চা প্রথমে একটি ঔষধি ভেষজ হিসাবে ব্যবহার করা হত , কিন্তু পরে এটি আবিষ্কৃত হয় যে চায়েরও সাইকোঅ্যাকটিভ বৈশিষ্ট্য রয়েছে। আজ, চা বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় পানীয়, যা সারা বিশ্বের মানুষ উপভোগ করে। চীনে, চা বিশেষভাবে জনপ্রিয় – প্রকৃতপক্ষে, চীনে এটি জলের পরে দেশের দ্বিতীয়-সবচেয়ে জনপ্রিয় পানীয়। এর সুস্বাদু গন্ধ এবং স্বাস্থ্য সুবিধার জন্য , চা নিত্যদিনের পানীয় হিসাবে বিবেচিত হয়।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


বিশ্বের সবচেয়ে প্রিয় অ্যালকোহল-বিহীন পানীয়ের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে ভারতের মাসালা চা

উত্তরাপথঃ চা ভারতের অন্যতম  প্রিয় পানীয়।ভারতের একটা বড় অংশের মানুষ এটি ছাড়া তাদের দিন শুরুর কল্পনাও করতে পারেন না। সকালে ঘুম থেকে ওঠা থেকে শুরু করে দিনের যেকোনো সময় শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা যে কোনও ঋতুতে ভারতীয়দের চা-এ না নেই কখনও। ভারতে চা মানুষকে একত্রিত করে তা সে কর্মক্ষেত্র, রাস্তার ধারের প্রিয় স্টলে বা বাড়িতে বন্ধু/পরিবারের সাথে সর্বত্র চা কে কেন্দ্র করে চলে বিশাল আসর।  সম্প্রতি, জনপ্রিয় খাদ্য ও ভ্রমণ নির্দেশিকা TasteAtlas ২০২৩- ২৪-এর জন্য তার বছরের শেষ পুরস্কারের অংশ হিসাবে পুরষ্কার প্রাপকের  একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। ভারতীয় রন্ধনপ্রণালী, রেস্তোরাঁর পাশাপাশি রান্নার বইগুলিও বিশ্বতালিকায় স্থান পেয়েছে।TasteAtlas বিশ্বের সবচেয়ে প্রিয় অ্যালকোহল-বিহীন পানীয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে। তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারতের মাসালা চা।  একটি ইনস্টাগ্রাম পোস্টে খবরটি প্রকাশ করে, TasteAtlas লিখেছে,মসলা চা একটি সুগন্ধযুক্ত পানীয় যা ভারতে পাওয়া যায়। এটি কালো চায়ের দানা এবং দুধের সংমিশ্রণে তৈরি করা হয়। এতে একটি মসলার মিশ্রণও দেওয়া হয়, যার মধ্যে সাধারণত এলাচ, আদা, লবঙ্গ, দারুচিনি এবং কালো গোলমরিচ থাকে।যদিও মশলার পছন্দ এবং সঠিক অনুপাত প্রায়শই পরিবর্তিত হয়। .....বিস্তারিত পড়ুন

১৪ ফেব্রুয়ারি ‘ভ্যালেন্টাইন ডে’কে কেন বিশ্ব ভালোবাসা দিবস বলা হয়?

বলরাম মাহাতোঃ ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। ভালোবাসাকে কেন্দ্র করেই মানুষের জন্ম ও বেড়ে ওঠা।ভালোবাসা হয়ে ওঠে সমস্ত সুখের উৎস ও বেঁচে থাকার প্রয়াস। তাই ১৪ ফেব্রুয়ারি দিনটি সব সম্পর্কের ও সব বয়সীদের মনে দিয়ে যায় দোলা। ভ্যালেন্টাইন ডে বা ভালোবাসা দিবসের উৎপত্তির গল্পটি আমরা প্রায় সবাই জানি। তবুও এ দিনটি যার নামে প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী পালিত হয়ে আসছে, তাকে উষ্ণতার এ দিনে মনে না করলেই নয়।ভ্যালেন্টাইন ডে’র গল্পটি শুরু হয় অত্যাচারী রোমান সম্রাট দ্বিতীয় ক্লাডিয়াস এবং খ্রিস্টান পাদ্রী ও চিকিৎসক সেন্ট ভ্যালেন্টাইনকে দিয়ে। তৃতীয় শতকে সম্রাট ক্লাডিয়াস সমগ্র রোমানবাসীকে ১২জন দেব-দেবীর আরাধনা করার নির্দেশ দেন।সেসময় খ্রিস্টধর্ম প্রচার করা ছিলো কাঠোরভাবে নিষিদ্ধ। এমনকি খ্রিস্টানদের সঙ্গে মেলামেশা করার জন্য শাস্তিস্বরূপ মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হতো।এদিকে, সেন্ট ভ্যালেন্টাইন ছিলেন খ্রিস্টধর্মের প্রতি নিবেদিতপ্রাণ। মৃত্যুর ভয়ে তিনি খ্রিস্টধর্ম পালনে পিছপা হননি। কিন্তু যা হবার তাই হলো, সম্রাট ক্লাডিয়াস তাকে কারাগারে বন্দি করে রাখলেন। ভ্যালেন্টাইনের জীবনের শেষ সপ্তাহগুলোতে ঘটলো এক জাদুকরী ঘটনা। তিনি যে কারাগারে বন্দি ছিলেন সেখানকার কারারক্ষী ভ্যালেন্টাইনের প্রজ্ঞা দেখে মুগ্ধ হন। .....বিস্তারিত পড়ুন

জানেন কি পেঙ্গুইনরা দিনে ১০,০০০ বার, মাত্র কয়েক সেকেন্ডের জন্য ঘুমায়

উত্তরাপথঃ আপনি হয়ত দেখে থাকবেন আমাদের মধ্যে অনেকেই একটানা বসে কাজ করার মাঝে হাল্কা ঘুমের অনুভুতি অনুভব করে এটি অপর্যাপ্ত ঘুমের একটি স্পষ্ট লক্ষণ ,তবে কিছু পরিস্থিতিতে এটি বিপজ্জনক হতে পারে যেমন গাড়ি চালানোর সময়। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি নতুন সমীক্ষায় দেখা গেছে যে চিনস্ট্র্যাপ পেঙ্গুইনরা প্রতিদিন ১০,০০০  বার এই রকম হাল্কা ঘুমায়, গড়ে মাত্র চার সেকেন্ডের জন্য তাদের দৈনিক ঘুমের প্রয়োজন ১১ ঘণ্টারও বেশি।গবেষকদের অনুমান পেঙ্গুইনের প্রজনন স্থান গুলি কোলাহলপূর্ণ এবং চাপযুক্ত বিভিন্ন  শিকারী পাখি এবং তাদের আক্রমনাত্মক প্রতিবেশীর কারণে। তাদের এই ধরনের ঘুমের সময়সূচী  পেঙ্গুইনদের তাদের বাচ্চাদের রক্ষা করতে সাহায্য করে।ওয়ান ইয়ং লি  যিনি ইনচনের Korea Polar Research Institute থেকে গবেষণা করেন কিভাবে প্রাণীদের আবাসস্থল তাদের আচরণকে প্রভাবিত করে। প্রায় এক দশক আগে, তিনি অ্যান্টার্কটিকার কিং জর্জ দ্বীপে থাকতে শুরু করেন। সেই সময় তিনি  চিনস্ট্র্যাপ পেঙ্গুইনের (পাইগোসেলিস অ্যান্টার্কটিকাস) ঘুমের আচরণ সম্পর্কে অদ্ভুত কিছু লক্ষ্য করেছিলেন।সেই সময় তার মনে হয় চিনস্ট্র্যাপ পেঙ্গুইন খুব সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য ঘুমাচ্ছে । .....বিস্তারিত পড়ুন

জাপানের SLIM ল্যান্ডারটি আবার কাজ করতে শুরু করেছে

উত্তরাপথঃ জাপানের মহাকাশ অনুসন্ধান কর্মসূচির জন্য এটি একটি বড় খবর,তাদের চন্দ্র ল্যান্ডার SLIM সফলভাবে চাঁদে তার মিশন পুনরায় শুরু করেছে। টোকিও-ভিত্তিক জাপান অ্যারোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সি (JAXA) সম্প্রতি ঘোষণা করেছে যে "গত সন্ধ্যায় আমরা SLIM এর সাথে যোগাযোগ স্থাপনে সফল হয়েছি, এবং আবার অপারেশন শুরু করেছি!"   বিজ্ঞানী এবং প্রকৌশলীদের অবিরাম প্রচেষ্টার জন্য ধন্যবাদ, SLIM মহাকাশযানটিকে সম্প্রতি পুনরুজ্জীবিত এবং পুনরায় সক্রিয় করা হয়েছে। উন্নত প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনী কৌশল ব্যবহার করে, JAXA প্রকৌশলীরা নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করতে এবং চন্দ্র ল্যান্ডারের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে সক্ষম হয়। এই অগ্রগতি জাপানের চন্দ্র অন্বেষণ কর্মসূচিকে পুনরুজ্জীবিত করেছে এবং মহাকাশ অনুসন্ধানের বিশাল সম্ভাবনার উপর একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি দিয়েছে। SLIM মহাকাশযানের পুনরায় সক্রিয়করণ বৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্য বেশ কয়েকটি উত্তেজনাপূর্ণ সুযোগ উপস্থাপন করে। আশ্চর্যজনক ঘোষণাটি জাপানের মহাকাশ কর্মসূচির জন্যও একটি উৎসাহ জনক খবর। .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top