চালক ছাড়াই পণ্য ট্রেন ৮০ কিলোমিটারেরও বেশি পথ পাড়ি দিল

উত্তরাপথঃ ভারতীয় রেল ব্যবস্থা বিশ্বের বৃহত্তম রেল ব্যবস্থাগুলির মধ্যে একটি। এখানকার কর্মীদের অত্যন্ত সতর্কতার সাথে কাজ করতে হয়, সামান্য অসাবধানতাও মারাত্মক হতে পারে। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪) জম্মু ও কাশ্মীরের কাঠুয়ায় ভারতীয় রেলের এক অসাবধানতার ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। ডিজেল ইঞ্জিন চালিত চালক ছাড়াই পণ্য ট্রেন কাঠুয়া থেকে পাঞ্জাবের হোশিয়ারপুর জেলার একটি গ্রামে চালক ছাড়াই ৮০ কিলোমিটারেরও বেশি পথ পাড়ি দিয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে রেল মন্ত্রণালয়। এ ছাড়াও উত্তর রেলও নিজেদের স্তরে এ বিষয়ে তদন্ত করছে।

 এর আগে ভারতীয় রেলের ক্ষেত্রে এই ধরনের ঘটনা  ঘটেছিল ২০১৭ সালে ৯ ই নভেম্বর। সেখানে ট্রেনের একটি ইঞ্জিন কোনও চালক ছাড়া ১৩ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করেছিল। এবার জম্মুর কাঠুয়া রেলস্টেশনে একই রকম অবহেলার ঘটনা প্রকাশ পেয়েছে। এখানে দাঁড়িয়ে থাকা একটি পণ্যবাহী ট্রেন ঢালের কারণে চালক ছাড়াই চলতে শুরু করে। খবর পাওয়া মাত্রই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এই বিষয়ে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে যে ট্রেনটি কাঠুয়া স্টেশন থেকে পাঞ্জাবের দিকে যাওয়ার সময় পণ্য ট্রেনের চালক এবং লোকো পাইলট কেউই উপস্থিত ছিলেন না। তবে এই যাত্রায় কোনো হতাহত বা সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

প্রাথমিক তদন্তে ওই সময় রেলস্টেশনে যারা  ডিউটিতে ছিলেন ​​ তাদের সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। রেল মন্ত্রক এবং উত্তর রেলওয়ের বিভিন্ন দল কাঠুয়া রেলস্টেশন পরিদর্শন করেছে এবং সেখানে উপস্থিত তথ্য-প্রমাণ ও তথ্য বিশ্লেষণ করেছে। প্রাথমিক ভাবে তথ্যে প্রকাশ যে ট্র্যাকের উপর পণ্য ট্রেনটি  দাঁড়িয়ে ছিল সেখানে একটি হালকা শব্দ হয়েছিল।এরপর ট্রেনটি ৭০ – ৮০ কিলোমিটার বেগে চলতে শুরু করে।মুকেরিয়ান পাঞ্জাবের উনচি বাসির কাছে পণ্যবাহী ট্রেনটি বালির বস্তার সাহায্যে থামানো হয়।

 এই চালকহীন চলন্ত ট্রেনের একটি ভিডিও ভাইরালও হয়েছে। ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, চালক ছাড়াই চলছে পণ্যবাহী ট্রেন। এই ট্রেনটি অনেক স্টেশনের মধ্য দিয়ে গেছে এবং তারপর এটি পাঞ্জাবে থামানো হয়েছে। এ বিষয়ে জম্মুর বিভাগীয় ট্রাফিক ম্যানেজার বলেন, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। সূত্রের খবর, চালকবিহীন এই ট্রেনটিকে থামাতে একাধিকবার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তা সফল হয়নি। এর পর আরেকটি রিকভারি ইঞ্জিন পাঠানো হয়। অনেক চেষ্টার পরে, পণ্য ট্রেনটি পাঞ্জাবের মুকেরিয়ানের উনচি বাসির কাছে থামানো যায়। এখন এ বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


Free Gift in Politics: ভারতের নির্বাচন ও ফ্রি গিফট সংস্কৃতি

উত্তরাপথঃ ফ্রি গিফট (Free gift in politics)এর রাজনীতি সম্প্রতি ভারতের নির্বাচনী রাজনীতিতে একটি বিশিষ্ট ভূমিকা পালন করছে। বিনামূল্যে কোটি কোটি জনগণকে উপহার প্রদান যা রাজকোষের উপর অতিরিক্ত বোঝা ফেলবে এই সত্যটি জানা সত্ত্বেও, রাজনৈতিক দলগুলি ভোটারদের আকৃষ্ট করার জন্য ফ্রি গিফট (Free gift in politics) দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচনের দৌড়ে একে অপরের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।এক সময় প্রয়াত তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জে জয়ললিতা বিনামূল্যে শাড়ি, প্রেসার কুকার, ওয়াশিং মেশিন, টেলিভিশন সেট ইত্যাদির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটের আগে যে বিনামূল্যের সংস্কৃতি শুরু করেছিলেন তা পরবর্তী কালে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলি দ্রুত অনুসরণ করেছিল। এরপর ২০১৫ সালে আম আদমি পার্টি নেতৃত্ব দিল্লির ভোটারদের কাছে বিনামূল্যে বিদ্যুৎ, জল, বাস ভ্রমণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে জয়লাভ করেছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন

PAN-Aadhar link: কেন্দ্র সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ডকে নিষ্ক্রিয় করেছে

উত্তরাপথ : আধারের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক (PAN-Aadhar link)করার সময়সীমা শেষ হওয়ার পরে কেন্দ্রীয় সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ড নিষ্ক্রিয় করেছে৷ আপনি যদি এখনও প্যান কার্ডের সাথে আধার কার্ড লিঙ্ক না করে থাকেন, তাহলে আপনি সরকারের এই কঠোর পদক্ষেপের আওতায় এসেছেন। আপনি যদি আপনার আধার কার্ডকে প্যানের সাথে লিঙ্ক করতে চান তবে আপনি জরিমানা দিয়ে এটি সক্রিয় করতে পারেন। কেন্দ্র সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ডকে আধারের সাথে লিঙ্ক না করার কারণে নিষ্ক্রিয় করেছে। একটি আরটিআই-এর জবাবে, সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ডাইরেক্ট ট্যাক্সেস জানিয়েছে যে আধার কার্ডের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক (PAN-Aadhar link) করার সময়সীমা ৩০ জুন শেষ হয়েছে। যারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আধার কার্ড এবং প্যান কার্ড লিঙ্ক করেননি তাদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দেশে ৭০ কোটি প্যান কার্ড বর্তমানে ভারতে প্যান কার্ডের সংখ্যা ৭০.২ কোটিতে পৌঁছেছে। এর মধ্যে প্রায় ৫৭.২৫ কোটি মানুষ আধারের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক করেছেন। .....বিস্তারিত পড়ুন

World Children's Day: সত্যিই কি ‘বিশ্ব শিশু দিবস´পালনের কোনও যৌক্তিকতা আছে ?

প্রীতি গুপ্তাঃ হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটি দিন তারপর ১৪ নভেম্বর আমাদের দেশ সহ সারা বিশ্বজুড়ে  পালন করা হবে ‘বিশ্ব শিশু দিবস´(World Children's Day)।এই দিনটি শিশুদের মঙ্গলের জন্য, তাদের ভবিষ্যতের জন্য একটি অনুকূল বিশ্ব তৈরি করার প্রচেষ্টার একটি দিন।কিন্তু প্রশ্ন,সত্যি কি হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে সারা বিশ্ব জুড়ে শিশু দিবস পালন করার কোনও যৌক্তিকতা আছে? আদৌ কি এর কোনও লাভ আমরা আমাদের প্রান্তিক স্তরের শিশুদের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছি ? সম্প্রতি কাজের প্রয়োজনে রাজস্থানের উদয়পুর শহরে আসা। আমরা সবাই জানি উদয়পুর বিখ্যাত তার হ্রদের কারণে । এখানকার স্থানীয় থেকে পর্যটক সকলেই এই সুন্দর হ্রদগুলির আকর্ষণে বারবার ছুঁটে যায়। ‘ফতে সাহেব লেক’ রাজস্থানের উদয়পুরের এক বিখ্যাত পর্যটক স্থল।এখানে বহু মানুষ সকাল- বিকেল এই লেকের চার ধারে হাঁটাহাঁটি করতে বেরিয়ে পড়ে। সেভাবেই দুই দিন আগে বিকেলে হঠাৎ করে বেরিয়ে পড়লাম ‘ফতে সাহেব লেকের ধারে হাঁটার উদ্দেশ্য নিয়ে। হাঁটার মাঝখানে হঠাৎ করে একটি বাচ্চাছেলে আওয়াজ করে ডাকছে ,বললাম কিছু বলবি? সে বলল একটু দাঁড়াতে। ও ছুটে গিয়ে হাতে করে কয়েকটি বেলুন নিয়ে এসে হাজির । সে বারবার বেলুন কেনার অনুরোধ জানাতে লাগল। হাতে অন্য কাজের চাপ নেই অনেকটা অবসর সময় তাই আমি অনেকটা সাংবাদিক সুলভ মন নিয়ে বললাম ঠিক আছে আমি তোর বেলুন নেব ,কিন্তু তার আগে আমি  তোকে যা বলব তার তার ঠিক ঠিক উত্তর দিতে হবে। সে খুশী খুশী রাজি হয়ে গেল । .....বিস্তারিত পড়ুন

Bandna Festival: ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল পাঁচ দিন বাঁদনার আমেজে মশগুল থাকে

বলরাম মাহাতোঃ চিরাচরিত রীতি অনুযায়ী কার্তিক অমাবস্যার আগের দিন থেকে মোট পাঁচ দিন ব্যাপী বাঁদনার(Bandna Festival) আমেজে মশগুল থাকে ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। অবশ্য, পরবের শুভ সূচনা হয় তারও কয়েকদিন আগে। আদিবাসী সম্প্রদায়ের সামাজিক শাসন ব্যবস্থার চূড়ামণি হিসাবে গাঁয়ের মাহাতো, লায়া, দেহরি কিম্বা বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি নির্ধারণ করেন- ৩, ৫, ৭ বা ৯ ক’দিন ধরে গবাদি পশুর শিং-এ তেল মাখাবে গৃহস্বামী! রুখামাটির দেশের লোকেরা কোনোকালেই মাছের তেলে মাছ ভাজা তত্ত্বের অনুসারী নয়। তাই তারা গোরুর শিং-এ অন্য তেলের পরিবর্তে কচড়া তেল মাখানোয় বিশ্বাসী। কারণ কচড়া তেল প্রস্তুত করতে গোধনকে খাটাতে হয় না যে! কচড়া তেলের অপ্রতুলতার কারণে বর্তমানে সরষের তেল ব্যবহৃত হলেও, কচড়া তেলের ধারণাটি যে কৃষিজীবী মানুষের গবাদি পশুর প্রতি প্রেমের দ্যোতক, তা বলাই বাহুল্য! এভাবেই রাঢ বঙ্গে গোবর নিকানো উঠোনে হাজির হয়- ঘাওয়া, অমাবস্যা, গরইয়া, বুঢ়ি বাঁদনা ও গুঁড়ি বাঁদনার উৎসবমুখর দিনগুলি। পঞ্চদিবসে তেল দেওয়া, গঠ পূজা, কাঁচি দুয়ারি, জাগান, গহাইল পূজা, চুমান, চউক পুরা, নিমছান, গোরু খুঁটা, কাঁটা কাঢ়া প্রভৃতি ১১টি প্রধান পর্ব সহ মোট ১৬টি লোকাচারের মাধ্যমে উদযাপিত হয় বাঁদনা পরব(Bandna Festival )। .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top