টাইপ 2 ডায়াবেটিসে সময়ে খাবার খাওয়া, ক্যালোরি গণনার চেয়ে বেশি কার্যকর

টাইপ 2 ডায়াবেটিসে লক্ষ্য হল ওজন কমানো ছবি – উত্তরাপথ

উত্তরাপথঃ টাইপ 2 ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে একটি সাধারণ লক্ষ্য হল ওজন কমানো , অতিরিক্ত ওজন এবং স্থূলতার সাথে টাইপ 2 ডায়াবেটিসের অবস্থার দৃঢ় সম্পর্ক রয়েছে।এই বিপাকীয় ব্যাধিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য কোন ডায়েটিং কৌশলটি সবচেয়ে ভাল কাজ করে তা স্পষ্ট নয়।

তবে টাইপ 2 ডায়াবেটিস রোগীদের একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে যে অধ্যয়নের অংশগ্রহণকারীরা যারা দুপুর থেকে রাত ৮ টার মধ্যে খাবার খাওয়া শেষ করেছে তারা, যারা ক্যালোরি গণনা করে তাদের সামগ্রিক ক্যালোরি গ্রহণ কমিয়েছেন তাদের তুলনায় দৈনিক বেশি ওজন কমিয়েছেন। তবে মজার বিষয় হল, উভয় পদ্ধতিই ক্ষেত্রে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রনে একই রকম উন্নতি হয়েছে।

সম্প্রতি পাভলো আমেরিকান সোসাইটি ফর নিউট্রিশনের বার্ষিক ফ্ল্যাগশিপ মিটিং NUTRITION 2023-এ ,বিজ্ঞানীরা টাইপ 2 ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের রক্তে শর্করার মাত্রা কার্যকরভাবে কম রাখা সেই সাথে ওজন কমানোর জন্য সর্বোত্তম ডায়েটিং পদ্ধতি প্রকাশ করেছেন। গবেষকদের মতে অনেকের ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে ক্যালোরি গণনা করে খাবার খাওয়া খুব কঠিন বলে মনে করেন, কিন্তু আমাদের গবেষণা দেখায়  যে ঘড়ির কাঁটা ধরে খাওয়াও ক্যালোরি কমাতে এবং ওজন কমানোর একটি সহজ উপায় হতে পারে ।

গবেষণায় যুক্ত এক গবেষকের মতে, আমাদের গবেষণা দেখায় যে ৮ ঘণ্টার একটি নির্দিষ্ট সময় ব্যবধানে সীমাবদ্ধ খাওয়া টাইপ 2 ডায়াবেটিস আক্রান্তদের ওজন কমাতে এবং তাদের রক্তে শর্করার উন্নতি করতে চায় তাদের জন্য একটি ভাল বিকল্প হতে পারে।তবে, টাইপ 2 ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য একাধিক ধরণের ওষুধ রয়েছে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা কম করতে কার্যকর হতে পারে ,যা কিছু খাবারের সাথে গ্রহণ করা প্রয়োজন। তবে, এই ডায়েটিং পদ্ধতির প্রয়োগ করার সময় একজন ডায়েটিশিয়ান বা ডাক্তারের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে যোগাযোগ করা গুরুত্বপূর্ণ।

ছয় মাসের তদন্তের পরে, গবেষকদলটি আবিষ্কার করেছে ,যে অংশগ্রহণকারীরা একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর একটি সীমাবদ্ধ  ডায়েট অনুসরণ করেছেন  তাদের শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ অন্য  গ্রুপের তুলনায় ৩.৫৫% হ্রাস পেয়েছে।আবার অন্য গ্রুপটি যারা শুধুমাত্র সীমিত ক্যালোরি গ্রহণের উপর জোর দিয়েছিল তাদের আপেক্ষিক কোনও ওজন কমেনি । তবে উভয় ক্ষেত্রেই রক্তে শর্করার (HbA1C) মাত্রা হ্রাস পেয়েছে।

টাইপ 2 ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ কমানো একটি সাধারণ পদ্ধতি, সাম্প্রতিক গবেষণা পরামর্শ দেয় যে একটি নির্দিষ্ট সময়ে খাবার গ্রহণ এই ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সুবিধা দিতে পারে। এই পদ্ধতিটি শরীরের প্রাকৃতিক ছন্দের সাথে খাওয়ার ধরণকে সারিবদ্ধ করে এবং ইনসুলিন সংবেদনশীলতা, ওজন ব্যবস্থাপনা এবং সামগ্রিক বিপাকীয় স্বাস্থ্যের উন্নতিতে প্রতিশ্রুতি দেখিয়েছে।

বি.দ্রঃ-পেশাদার চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা এবং ব্যক্তিগত প্রয়োজনের ভিত্তিতে পদ্ধতিকে ব্যক্তিগতকৃত করা গুরুত্বপূর্ণ।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


NASA Carbon Emission: পৃথিবী কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করার চেয়ে বেশি নির্গত করছে

উত্তরাপথঃ কার্বন নির্গমন (NASA Carbon Emission) সম্পর্কে নাসার সর্বশেষ আবিষ্কার পৃথিবীর জন্য এক সতর্কতা সংকেত। মহাকাশ সংস্থার মতে, পৃথিবী কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করার চেয়ে বেশি নির্গত করছে, যার ফলে গ্রিনহাউস গ্যাসের বায়ুমণ্ডলীয় ঘনত্ব উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। NASA এর এই আবিষ্কারটি জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য কারণ হিসাবে দেখা যেতে পারে, সেইসাথে কার্বন নিঃসরণ কমানোর জন্য জরুরি পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার উপর আলোকপাত করেছে।নাসার সর্বশেষ গবেষণায় যে তথ্য উঠে এসেছে তাতে পৃথিবীর মহাসাগর এবং ভূমি-ভিত্তিক বাস্তুতন্ত্র আগের চেয়ে কম কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করছে। গবেষণায় দেখা গেছে যে গত এক দশকে ভূমি এবং মহাসাগর দ্বারা শোষিত কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ ৫% হ্রাস পেয়েছে, যার ফলে গ্যাসের বায়ুমণ্ডলীয় ঘনত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। .....বিস্তারিত পড়ুন

PAN-Aadhar link: কেন্দ্র সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ডকে নিষ্ক্রিয় করেছে

উত্তরাপথ : আধারের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক (PAN-Aadhar link)করার সময়সীমা শেষ হওয়ার পরে কেন্দ্রীয় সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ড নিষ্ক্রিয় করেছে৷ আপনি যদি এখনও প্যান কার্ডের সাথে আধার কার্ড লিঙ্ক না করে থাকেন, তাহলে আপনি সরকারের এই কঠোর পদক্ষেপের আওতায় এসেছেন। আপনি যদি আপনার আধার কার্ডকে প্যানের সাথে লিঙ্ক করতে চান তবে আপনি জরিমানা দিয়ে এটি সক্রিয় করতে পারেন। কেন্দ্র সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ডকে আধারের সাথে লিঙ্ক না করার কারণে নিষ্ক্রিয় করেছে। একটি আরটিআই-এর জবাবে, সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ডাইরেক্ট ট্যাক্সেস জানিয়েছে যে আধার কার্ডের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক (PAN-Aadhar link) করার সময়সীমা ৩০ জুন শেষ হয়েছে। যারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আধার কার্ড এবং প্যান কার্ড লিঙ্ক করেননি তাদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দেশে ৭০ কোটি প্যান কার্ড বর্তমানে ভারতে প্যান কার্ডের সংখ্যা ৭০.২ কোটিতে পৌঁছেছে। এর মধ্যে প্রায় ৫৭.২৫ কোটি মানুষ আধারের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক করেছেন। .....বিস্তারিত পড়ুন

সম্পাদকীয়-  রাজনৈতিক সহিংসতা ও আমাদের গণতন্ত্র

সেই দিনগুলো চলে গেছে যখন নেতারা তাদের প্রতিপক্ষকেও সম্মান করতেন। শাসক দলের নেতারা তাদের বিরোধী দলের নেতাদের কথা ধৈর্য সহকারে শুনতেন এবং তাদের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতেন।  আজ রাজনীতিতে অসহিষ্ণুতা বাড়ছে।  কেউ কারো কথা শুনতে প্রস্তুত নয়।  আগ্রাসন যেন রাজনীতির অঙ্গ হয়ে গেছে।  রাজনৈতিক কর্মীরা ছোটখাটো বিষয় নিয়ে খুন বা মানুষ মারার মত অবস্থার দিকে ঝুঁকছে। আমাদের দেশে যেন রাজনৈতিক সহিংসতা কিছুতেই শেষ হচ্ছে না।আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার চেয়ে রাজনৈতিক সংঘর্ষে বেশি মানুষ নিহত হচ্ছেন।  ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি) অনুসারে, ২০১৪ সালে, রাজনৈতিক সহিংসতায় ২৪০০ জন প্রাণ হারিয়েছিল এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ২০০০ জন মারা গিয়েছিল।  আমরা পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্র হিসেবে আমাদের দেশের গণতন্ত্রের জন্য গর্বিত হতে পারি, কিন্তু এটা সত্য যে আমাদের সিস্টেমে অনেক মৌলিক সমস্যা রয়েছে যা আমাদের গণতন্ত্রের শিকড়কে গ্রাস করছে, যার জন্য সময়মতো সমাধান খুঁজে বের করা প্রয়োজন। .....বিস্তারিত পড়ুন

Vijay Stambh : চিতোরগড় দুর্গে বিজয় স্তম্ভ হিন্দু – মুসলিম সহাবস্থানের প্রতীক

উত্তরাপথঃ খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীতে মৌর্য রাজবংশ কর্তৃক স্থাপিত চিতোরগড় দুর্গ সাহস ও আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে আজও দাঁড়িয়ে আছে। এই দুর্গ তার বিশাল কাঠামো, রাজপ্রাসাদ, একাধিক  সুদৃশ্য মন্দির সহ সুন্দর জলাশয়ের জন্য বিখ্যাত।৭০০-একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, এই দুর্গটিতে প্রায় ৬৫টি ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন রয়েছে যা রাজপুত এবং ইসলামিক স্থাপত্য শৈলীর সূক্ষ্মতার প্রমান দেয়। বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh)) হল এই দুর্গে অবস্থিত,সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর কাঠামো।এই আশ্চর্য-অনুপ্রেরণামূলক স্তম্ভটি কেবল তার উচ্চতার জন্য বিখ্যাত নয়,এটি রাজপুতদের অদম্য সাহস এবং অধ্যবসায়ের গল্পও বলে যা চিতোরগড় দুর্গেরই সমার্থক হয়ে উঠেছে।বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh), নাম থেকে বোঝা যায়, বিজয়ের প্রতীক।  প্রাচীনকালে যে কোনো যুদ্ধ অভিযানের সাফল্যের পর সেই বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতে রাজারা মন্দির, স্তূপ, স্মৃতিস্তম্ভ ও স্তম্ভ নির্মাণ করতেন।  ৯ তলা এই বিজয় স্তম্ভটি ১৯৪০ থেকে ১৪৪৮ সালের মধ্যে মহারানা কুম্ভ দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top