

ভারতরত্ন ,ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার, বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী অবদান রেখেছেন এমন ব্যক্তিদের স্বীকৃতি দেওয়ার ক্ষেত্রে এই পুরষ্কার অত্যন্ত তাৎপর্য বহন করে।ভারতীয় রাজনীতির বিভিন্ন দিকগুলির মতো, ভারতরত্নকে ঘিরে বাছাই প্রক্রিয়া এবং বিতর্কগুলি প্রায়শই বিতর্কের জন্ম দিয়েছে এবং এর নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন হয়েছে বার বার।এবারের অর্থাৎ ২০২৪ সালের ভারতরত্ন পুরষ্কার বিতর্কের উদ্ধে নয়। বিরোধীদের বক্তব্য, কিছু জায়গায় এর মাধ্যমে সরকার বদল হচ্ছে আবার কিছু জায়গায় বিজেপি নতুন দল পাচ্ছে।তাহলে কি ২০২৪ সালের নির্বাচনও কি ভারতরত্নকে ঘিরে আবেগ ও শ্রদ্ধার নামে হবে ?
১৯৫৪ সালে শুরু হওয়া, ভারতরত্ন পুরস্কার প্রাথমিকভাবে শিল্প, সাহিত্য, বিজ্ঞান এবং জনসেবার ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী কৃতিত্বকে সম্মান জানানোর উদ্দেশ্যে ছিল। এরপর মানব প্রচেষ্টার যেকোনো ক্ষেত্রে অবদানকে স্বীকৃতি জানানোর জন্য পুরস্কারের পরিধি প্রসারিত হয়েছে। পুরস্কারটি ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্বারা প্রদান করা হয় এবং এটি জাতীয় স্বীকৃতি এবং গর্বের প্রতীক হিসাবে বিবেচিত হয়।ভারতরত্ন পুরস্কারের জন্য নির্বাচন প্রক্রিয়া প্রায়ই রাজনৈতিক প্রভাব এবং বিতর্কের বিষয় হয়ে রয়েছে। যেহেতু বিশেষজ্ঞদের একটি কমিটির সাথে পরামর্শ করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতি দ্বারা নেওয়া হয়,তাই রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এক্ষেত্রে নতুন নয়।
ইতিহাস বলছে জন্মলগ্ন থেকেই বিতর্ক চলছে ভারতরত্ন নিয়ে। ১৯৫৪ সালে প্রথম ওই খেতাব পান তিন জন সি ভি রমন, সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন ও সি রাজাগোপালাচারি। বিতর্ক চরমে ওঠে পরের বছর। সে সময় প্রধানমন্ত্রী ছিলেন জহওরলাল নেহরু। সকলকে অবাক করে দিয়ে তাঁর নাম দেখা যায় সম্মান প্রাপক হিসেবে। ১৯৭১ সালে ইন্দিরা গাঁধী প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন ফের একই চিত্র। ভারতরত্ন প্রাপকের নাম সাধারণত প্রধানমন্ত্রীর হাত ঘুরেই রাষ্ট্রপতির কাছে পৌঁছয়। স্বভাবতই প্রশ্ন ওঠে, নেহরু ও ইন্দিরা তা হলে কি নিজেরাই নিজেদের নাম রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়েছিলেন?
ভারতরত্ন পুরস্কারকে ঘিরে অন্যতম প্রধান সমালোচনা হল নির্বাচন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার অভাব। যোগ্যতার মানদণ্ড এবং প্রাপক নির্বাচন করার নির্দিষ্ট কারণগুলি প্রায়শই প্রকাশ করা হয় না, যা সিদ্ধান্তের ন্যায্যতা সম্পর্কে জল্পনা ও সন্দেহের জন্ম দেয়। উপরন্তু, এমন কিছু উদাহরণ রয়েছে যেখানে পুরস্কারকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয় সমাজের কিছু অংশকে সন্তুষ্ট করার জন্য বা রাজনৈতিক সুবিধা পাওয়ার জন্য।এর অজস্র উদাহরণ রয়েছে। কংগ্রেস বিজেপির বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির বিরুদ্ধে ভারতরত্ন সমীকরণ এবং ভারতরত্ন জোট গঠনের অভিযোগ আনছে।সেইসাথে রাজনৈতিক সমীকরণ যোগ করতে এবং দলত্যাগ ঘটাতে ভারতরত্ন দেওয়া উচিত কিনা সেই নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন। কিন্তু এটা ভুললে চলবেনা একই অপরাধে দুষ্ট তারাও। রাজীব গাঁধী প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন এম জি রামচন্দ্রনের নাম মরণোত্তর ভারতরত্ন প্রাপক হিসাবে ঘোষণা করেন। লক্ষ্য ছিল তামিলনাড়ু নির্বাচনে ভাল ফল করা। একই ভাবে বি আর অম্বেডকরকে মরণোত্তর ভারতরত্ন দেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বিশ্বনাথপ্রতাপ সিংহ। সেখানে তাঁর লক্ষ্য ছিল দলিত ভোট।
ভারতরত্ন পুরস্কারের সততা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা বজায় রাখার জন্য, একটি স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যোগ্যতার মানদণ্ড পরিষ্কারভাবে সংজ্ঞায়িত করা উচিত এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞদের একটি বৈচিত্র্যময় প্যানেল গঠন জরুরী। যোগ্য ব্যক্তিরা যাতে তাদের ব্যতিক্রমী অবদানের জন্য স্বীকৃতি পায় তা নিশ্চিত করতে জনসাধারণের পরামর্শ এবং প্রতিক্রিয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
আরও পড়ুন
সেলফির উচ্চ রেটিং কি আপনাকে আরওপাতলা হতে উৎসাহিত করছে ?
উত্তরাপথঃ সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে সেলফি তোলা এবং নিজেকে পাতলা হিসাবে দেখানোর মধ্যে একটি সম্পর্ক থাকতে পারে। যুক্তরাজ্যের ইয়র্ক সেন্ট জন ইউনিভার্সিটির রুথ নাইট এবং ইউনিভার্সিটি অফ ইয়র্কের ক্যাথরিন প্রেস্টন সম্প্রতি PLOS ONE জার্নালে তাদের ফলাফল প্রকাশ করেছেন।সেখানে সেলফির উচ্চ রেটিং এবং আমাদের শরীরের গঠনের মধ্যে যোগসূত্র খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে। বর্তমান সোশ্যাল মিডিয়ায় সেলফি হল এক জনপ্রিয় ছবি দেওয়ার ধরন। যিনি সেলফি তোলেন তিনি ক্যামেরাকে তাদের শরীর থেকে দূরে রেখে নিজেই নিজের ছবি তোলে। আগের গবেষণায় বলা হয়েছে সেলফিগুলি দেখার ফলে ছবির বিষয়গুলি সম্পর্কে দর্শকদের সিদ্ধান্ত প্রভাবিত হতে পারে। .....বিস্তারিত পড়ুন
Electoral Bond এর গোপনীয়তা সরিয়ে রাজনৈতিক দলগুলিকে, জানাতে হবে প্রাপ্ত অনুদানের পরিমাণ
উত্তরাপথঃ বুধবার, নির্বাচনী বন্ড (Electoral Bond)প্রকল্পের আইনি বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদনের শুনানি হয়। শীর্ষ আদালত তার মন্তব্যে বলেছে, 'নির্বাচনী বন্ডগুলি রাজনৈতিক দলগুলিকে বেনামী অর্থ প্রদান করে, কারণ তাদের কেনাকাটা সম্পর্কিত রেকর্ডগুলি স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার কাছে উপলব্ধ যা শুধুমাত্র তদন্তকারী সংস্থাগুলি অ্যাক্সেস করতে পারে৷ এর আগে নির্বাচনী বন্ড’ (Electoral Bond) সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) কেন্দ্র দাবি করেছিল, রাজনৈতিক দলগুলির আয়ের উৎস জানার অধিকার নেই জনতার।এবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তৎপর হল নির্বাচন কমিশন (Election Commission of India)।বুধবার বিকেল ৫টার মধ্যে যাবতীয় হিসেব জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কমিশনের তরফে।নির্বাচনী বন্ডের (Electoral Bond)মামলায় কেন্দ্রের আর্জি সত্বেও সুপ্রিম কোর্ট রাজনৈতিক দলগুলিকে আয়ের উৎস জানাতে বলেছিল। আদলত নির্দেশ দিয়েছিল, গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোন রাজনৈতিক দল কত অনুদান মিলেছে, সেই তথ্য বন্ধ খামে জানাতে হবে।এর আগেও নির্বাচনী বন্ডের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে একাধিক মামলা হয়েছে শীর্ষ আদালতে। মামলাকারীরা অভিযোগ করেছিলেন, রাজনৈতিক দলগুলি এই নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ বিদেশ থেকে পেতে পারে এর ফলে গণতন্ত্র ধ্বংস হবে। যদিও কোনও রাজনৈতিক দলই এই দাবি মানতে চায়নি। ৩ অক্টোবর মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সব তথ্য দিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। এই রায়ের পরেই তৎপর হল কমিশন। .....বিস্তারিত পড়ুন
Fructose: নতুন গবেষণায় ফ্রুক্টোজকে স্থূলতার কারণ বলা হয়েছে
উত্তরাপথঃ একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় জোরালো প্রমাণ দেওয়া হয়েছে যে ফ্রুক্টোজ (Fructose), সাধারণত প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং পানীয়গুলিতে থাকা এক ধরনের চিনি, যা স্থূলতার প্রাথমিক চালক। বছরের পর বছর ধরে, পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা , পাশ্চাত্য খাদ্যে, স্থূলতার মূল কারণ নিয়ে বিতর্ক করেছেন, কেউ কেউ অত্যধিক ক্যালোরি গ্রহণের দিকে ইঙ্গিত করেছেন, অন্যরা কার্বোহাইড্রেট বা চর্বি জাতীয় খাবারকে দায়ী করেছেন। Obesity জার্নালে সাম্প্রতিক একটি গবেষণাপত্রে ফ্রুক্টোজকে স্থূলতার প্রকৃত চালক হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।The University of Colorado Anschutz Medical Campus এর Dr. Richard Johnson এবং তার দলের মতে, ফ্রুক্টোজ হল একটি সাধারণ চিনি যা ফল এবং মধুর প্রাথমিক পুষ্টি। .....বিস্তারিত পড়ুন
সহযাত্রী
দীপা - আর তো এগারো বছর আটমাস বারোদিন চাকরি , তাই না ? অংশু - বাপরে বরাবরই তোমার স্মৃতিশক্তি প্রবল , এতোটা মনে আছে ? দীপা- ঘোরো টো টো করে আর কটা বছর , আফটার রিটায়ার্ড মেন্ট কি করবে ? অংশু - ফার্ম হাউস ,গাছপালা পশুপাখি নিয়ে থাকবো। দীপা- বাঃ উন্নতি হয়েছে। যে অংশুবাবু কখনও একটা ফুলের চারা লাগায়নি সে কিনা ফার্ম হাউস করবে … অংশু - সময়ের সাথে সব বদলায় ম্যাডাম , আচ্ছা তোমার কনুইয়ের নীচে সেই পোড়া দাগটা দেখি তো গেছে কিনা … দীপা- তুমি অনেক রোগা হয়ে গেছো , তা ওজন কত শুনি ? অংশু - সত্তর বাহাত্তর হবে বোধহয় মাপিনি, দীপা - তা কেনো মাপবে ? একটা অগোছালো মানুষ। অংশু - যাক বাবা তাও অপদার্থ শব্দ টা বলোনি। দীপা - ভাবোনা ডিভোর্স হয়েছে বলে সে অধিকার নেই। সমাজ বিজ্ঞানের অধ্যাপক হয়েও আসলে সমাজটাই শেখোনি , আর কি শিখেছো বলো, ঐ ছেলে পড়ানো , সেমিনার আর লেখালেখি। তা ধন্যবাদ তোমার রূপালী ঠৌট উপন্যাস এবছর একাডেমি পেলো , দারুণ লেখো তুমি, আগের চেয়ে অনেক ধার। অংশু- বাঃ তুমি পড়েছো ? দীপা- সব পড়েছি , তোমার রিসেন্ট উপন্যাসের নায়িকা মেঘনা টি কে ? মানে কার আড়ালে কাকে লিখেছো ? অংশু - এও কি বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপিকাকে বলে দিতে হবে ? দীপা- বারোটা বছর সময়ের শাসনে অনেক বদলালেও আমি বোধহয় সেই বড্ড সেকেলেই রয়ে গেলাম। অংশু - একা একাই কাটিয়ে দিলে বারো বছর। দীপা- একই প্রশ্ন আমিও করতে পারি। অংশু - আচ্ছা দীপা আজ না হয় শেষবারের মতো বলি, আমার মধ্যে কি ছিলো না বলোতো ? কেনো পারোনি এই বাউন্ডুলে ভবঘুরে মানুষটার সাথে চিরকালের ঘর বাঁধতে ? আমি কি ভালোবাসতে জানি না ? .....বিস্তারিত পড়ুন