ফাল্গুনী ব্যানার্জী (স্ট্রাইকার)
স্বপ্নপূরণ, দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান, সাফল্য। হ্যাঁ, বলা যেতেই পারে, একটা টিমের দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টা, কঠিন পরিশ্রম, আত্মবিশ্বাস-এর ফল। এক কথাই অনবদ্য ফুটবল খেলে বেঙ্গালুরু এফ সি কে হারিয়ে আই এস এল (২০২২-২৩) মরসুমের ট্রফি নিজের ঘরে তুলে নিয়ে এলো এ টি কে মোহনবাগান। গত মরসুমের বেশ কয়েক জন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় (রয়কৃষ্ণ, ডেভিড উইলিয়াম, প্রবীর দাস) দল ছেড়ে চলে যাওয়া এবং কোনো ইতিবাচক No 9 দলে না নেয়ার জন্য অনেক প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল জুয়ান ফার্নান্ডোকে। কিন্তু সমস্ত প্রতিকূলতা কে হারিয়ে ক্রমাগত বিপক্ষের রণনীতি কে হারিয়ে ম্যাচ বের করে আনে। কুর্নিশ জুয়ান। অভিনন্দন মহানবাগান। ভারতসেরা বাংলা।


প্রথমার্ধে মোহনবাগান কিছু এলোমেলো ফুটবল খেলছিল। মিডফিল্ড ও ফরওয়ার্ড লাইনের বল ডিস্ট্রিবিউশন ছিল খারাপ। সেটার সুযোগ নিচ্ছিলো বেঙ্গালুরু। ম্যাচের ১৩ মিনিটে পেনাল্টি বক্সে রয়কৃষ্ণর হাতে বল লাগাই পেনাল্টি পাই বাগান। গোল করতে ভুল করেননি দিমিত্রী। সঠিক পেনাল্টি , ৬’ ৬” গুরপ্রীত সিংহের কিছু করার ছিল না। ঠান্ডা মাথায় গুরপ্রীত ডান দিক দিয়ে বল সোজা সাইড নেটে। বাগান ১-০ এগিয়ে। ক্রমাগত উইং দিয়ে আক্রমণ মিডফিলডে বল দখল ব্যাঙ্গালুরু কে নাজেহাল করে দেয় বাগান। ফুটবলে এক গোলের লিড কখনো সেফ নয়। তাই হলো, শুভাশিস পেনাল্টি বক্সে রয়কৃষ্ণকে পিছন থেকে লাথি মেরে ফেলে দেয়। রেফারির পেনাল্টির সিদ্ধান্ত। ভারত অধিনায়ক এক স্টেপে বিশালকে অন্য পোস্টে ফেলে ডানদিক দিয়ে বল জালে গড়ালো। দারুন পেনাল্টি। ম্যাচের ফল ১-১। দ্বিতীয়ার্ধের বাগান ক্রমাগত আক্রমণ বাড়াতে থাকে কিন্তু ৭৭ মিনিটে কর্নার থেকে দূরের পোস্টে প্রায় ফাঁকাই হেডে গোল করে বেঙ্গালুরু কে এগিয়ে দেয় রয়কৃষ্ণ। ৮০ মিনিটে বাগান কে ম্যাচে ফেরাই কিয়ান। তার ক্ষিপ্র গতি বক্সে তাকে ফাউল করতে বাধ্য করে। আবার পেনাল্টি। এবারও সেই দিমিত্রি। একই দিক, একই একুরেশি, ফলাফল ২-২. এরপর ৯০ মিনিট আক্রমণ প্রতিআক্রমণ চলতে থাকে। কিন্তু কোনো দলেই লক্ষ্যভেদ করতে পারেনি।
অতিরিক্ত সময় এ কোনো গোল না হওয়ায় ম্যাচ চলে যাই পেনাল্টি সুট আউট এ। বিশাল, গুরপ্রীত দুজনেই ভারত সেরা গোলকিপার। এরপর ছিল স্নায়ুর যুদ্ধ। পেনাল্টির প্রথম শটে অ্যালান কোষ্টা গোল করে এগিয়ে দেয় বেঙ্গালুরু এফসি । ব্রুনো সিলভা শট ডানদিকে ঝাঁপিয়ে বাঁচায় বিশাল ।এরপর থেকেই জয়ের আশা আলো দেখতে থাকে মোহনবাগান।কলকাতায় ততক্ষনে বাগান ফ্যানদের উৎসব শুরু হওয়ার মুখে। পরের পেনাল্টি কিয়ান নাসরি সুন্দর গোল করে এগিয়ে দেয় বাগানকে। শেষ শট ক্রস বার্ডের উপর উড়িয়ে দেন ব্যাঙ্গালুরু এফসি র পাবলো পেরেজ। আইএসএল ২০২২-২৩ ট্রফি তখন মোহনবাগানের হাতের মুঠোয়। চারি দিকে উৎসব আনন্দে ভরা চ্যাম্পিয়ন মোহনবাগান। একটা বড টুর্নামেন্ট জিততে গেলে পুরো দল কে একসুতোই বাঁধতে হয়। অনেক লড়াই, অনেক উত্থান পতন ভালো খারাপ সময় পার করতে হয়। সেটাই করে দেখিয়েছেন কোচ জুয়ান, কৃতিত্ব তার।পুরো বাগান টিমের। শুভেচ্ছা। জয় মহান বাগান! জয় ফুটবল!
আরও পড়ুন
ফ্লিম রিভিউ -ওপেনহাইমার
উত্তরাপথ: বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্রিস্টোফার নোলান দ্বারা পরিচালিত”ওপেনহাইমার” একটি মাস্টারপিস মুভি। ছবিতে জে. রবার্ট ওপেনহেইমার, এক নামকরা পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পারমাণবিক বোমার বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।এই সিনেমায় ওপেনহাইমার এর জটিল জীবনকে বর্ণনা করা হয়েছে। সেই হিসেবে 'ওপেনহাইমার'কে বায়োপিক বলা যেতে পারে। কারণ এটি একজন মানুষের গল্প। এই ছবির গল্প তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত।ছবির শুরুতে পারমাণবিক বোমা তৈরির আবেগের কথা বলা হয়েছে। যেখানে নায়ক কিছু না ভেবে নিবেদিতপ্রাণভাবে এমন একটি অস্ত্র তৈরিতে নিয়োজিত থাকে যা বিশ্বকে ধ্বংস করতে পারে। অস্ত্র তৈরি হওয়ার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে নায়ক তার কাজের ফলাফল দেখে অপরাধবোধে পূর্ণ হয়। এবং তৃতীয় পর্যায়টি হল রাজনীতি যা ওপেনহাইমারকে মোকাবেলা করতে হয়েছে। পুরো সিনেমাটি রঙিন হলেও রাজনৈতিক অংশ সাদা-কালো রাখা হয়েছে। এই তিনটি সময়কালে যা কিছু ঘটছে, তা সবই একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত। .....বিস্তারিত পড়ুন
PAN-Aadhar link: কেন্দ্র সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ডকে নিষ্ক্রিয় করেছে
উত্তরাপথ : আধারের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক (PAN-Aadhar link)করার সময়সীমা শেষ হওয়ার পরে কেন্দ্রীয় সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ড নিষ্ক্রিয় করেছে৷ আপনি যদি এখনও প্যান কার্ডের সাথে আধার কার্ড লিঙ্ক না করে থাকেন, তাহলে আপনি সরকারের এই কঠোর পদক্ষেপের আওতায় এসেছেন। আপনি যদি আপনার আধার কার্ডকে প্যানের সাথে লিঙ্ক করতে চান তবে আপনি জরিমানা দিয়ে এটি সক্রিয় করতে পারেন। কেন্দ্র সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ডকে আধারের সাথে লিঙ্ক না করার কারণে নিষ্ক্রিয় করেছে। একটি আরটিআই-এর জবাবে, সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ডাইরেক্ট ট্যাক্সেস জানিয়েছে যে আধার কার্ডের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক (PAN-Aadhar link) করার সময়সীমা ৩০ জুন শেষ হয়েছে। যারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আধার কার্ড এবং প্যান কার্ড লিঙ্ক করেননি তাদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দেশে ৭০ কোটি প্যান কার্ড বর্তমানে ভারতে প্যান কার্ডের সংখ্যা ৭০.২ কোটিতে পৌঁছেছে। এর মধ্যে প্রায় ৫৭.২৫ কোটি মানুষ আধারের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক করেছেন। .....বিস্তারিত পড়ুন
Electoral Bond এর গোপনীয়তা সরিয়ে রাজনৈতিক দলগুলিকে, জানাতে হবে প্রাপ্ত অনুদানের পরিমাণ
উত্তরাপথঃ বুধবার, নির্বাচনী বন্ড (Electoral Bond)প্রকল্পের আইনি বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদনের শুনানি হয়। শীর্ষ আদালত তার মন্তব্যে বলেছে, 'নির্বাচনী বন্ডগুলি রাজনৈতিক দলগুলিকে বেনামী অর্থ প্রদান করে, কারণ তাদের কেনাকাটা সম্পর্কিত রেকর্ডগুলি স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার কাছে উপলব্ধ যা শুধুমাত্র তদন্তকারী সংস্থাগুলি অ্যাক্সেস করতে পারে৷ এর আগে নির্বাচনী বন্ড’ (Electoral Bond) সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) কেন্দ্র দাবি করেছিল, রাজনৈতিক দলগুলির আয়ের উৎস জানার অধিকার নেই জনতার।এবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তৎপর হল নির্বাচন কমিশন (Election Commission of India)।বুধবার বিকেল ৫টার মধ্যে যাবতীয় হিসেব জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কমিশনের তরফে।নির্বাচনী বন্ডের (Electoral Bond)মামলায় কেন্দ্রের আর্জি সত্বেও সুপ্রিম কোর্ট রাজনৈতিক দলগুলিকে আয়ের উৎস জানাতে বলেছিল। আদলত নির্দেশ দিয়েছিল, গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোন রাজনৈতিক দল কত অনুদান মিলেছে, সেই তথ্য বন্ধ খামে জানাতে হবে।এর আগেও নির্বাচনী বন্ডের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে একাধিক মামলা হয়েছে শীর্ষ আদালতে। মামলাকারীরা অভিযোগ করেছিলেন, রাজনৈতিক দলগুলি এই নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ বিদেশ থেকে পেতে পারে এর ফলে গণতন্ত্র ধ্বংস হবে। যদিও কোনও রাজনৈতিক দলই এই দাবি মানতে চায়নি। ৩ অক্টোবর মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সব তথ্য দিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। এই রায়ের পরেই তৎপর হল কমিশন। .....বিস্তারিত পড়ুন
Vijay Stambh : চিতোরগড় দুর্গে বিজয় স্তম্ভ হিন্দু – মুসলিম সহাবস্থানের প্রতীক
উত্তরাপথঃ খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীতে মৌর্য রাজবংশ কর্তৃক স্থাপিত চিতোরগড় দুর্গ সাহস ও আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে আজও দাঁড়িয়ে আছে। এই দুর্গ তার বিশাল কাঠামো, রাজপ্রাসাদ, একাধিক সুদৃশ্য মন্দির সহ সুন্দর জলাশয়ের জন্য বিখ্যাত।৭০০-একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, এই দুর্গটিতে প্রায় ৬৫টি ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন রয়েছে যা রাজপুত এবং ইসলামিক স্থাপত্য শৈলীর সূক্ষ্মতার প্রমান দেয়। বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh)) হল এই দুর্গে অবস্থিত,সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর কাঠামো।এই আশ্চর্য-অনুপ্রেরণামূলক স্তম্ভটি কেবল তার উচ্চতার জন্য বিখ্যাত নয়,এটি রাজপুতদের অদম্য সাহস এবং অধ্যবসায়ের গল্পও বলে যা চিতোরগড় দুর্গেরই সমার্থক হয়ে উঠেছে।বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh), নাম থেকে বোঝা যায়, বিজয়ের প্রতীক। প্রাচীনকালে যে কোনো যুদ্ধ অভিযানের সাফল্যের পর সেই বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতে রাজারা মন্দির, স্তূপ, স্মৃতিস্তম্ভ ও স্তম্ভ নির্মাণ করতেন। ৯ তলা এই বিজয় স্তম্ভটি ১৯৪০ থেকে ১৪৪৮ সালের মধ্যে মহারানা কুম্ভ দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন