

ড . নিমাইকৃষ্ণ মাহাতঃ মকরপরব হল মানভূমের অন্যতম কৃষিকেন্দ্রিক লোকউৎসব। প্রকৃতপক্ষে মকর পরব হল ফসল তোলার আনন্দ উৎসব। সমগ্র অগ্রাহায়ন মাসে কঠোর পরিশ্রম করে এই অঞ্চলের কৃষকেরা ক্ষেতের ধান কেটে খামারজাত করে। তারপর পৌষ মাসে খামারে ধান ঝেড়ে সেই ধান কুচুড়ি (পুড়া ), মরাই বা বস্তাতে ভরে সঞ্চিত করে রাখে বছর ভর খাওয়া, পরবর্তী চাষের মরশুমে কাজে লাগানো ও অন্যান্য কাজের জন্য। এইসব কঠোর পরিশ্রমধর্মী কাজের শেষে পৌষ সংক্রান্তিতে কৃষকের মনে এক অদ্ভুত আনন্দের সঞ্চার হয়। এই সময় কৃষকদের মনে একদিকে ফসল তোলার (মূলত আমন ধান) আনন্দ, অন্যদিকে চাষের কাজ থেকে সাময়িক বিরতি তথা অবসর- যাপনের ও আনন্দ- বিনোদনের এক অপূর্ব অনুভূতি কাজ করে – যার চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ দেখা যায় মকর পরবে।
তাই, মানভূমে মকর পরব কে পুরোপুরি কৃষিজড়িত উৎসব বলা যায়।
ড. সুকুমার সেন মকর পরব কে ‘শস্য উৎসব‘ হিসাবেই উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন ‘টুসু উৎসব তিষ্য নক্ষত্রে অনুষ্ঠিত শস্যোৎসবের প্রবহমান ধারা।’ মানভূমে মকর পরব বলতে টুসু পার্বণকেই বোঝায়।


মানভূমের বিখ্যাত লোকগবেষক ড. বিনয় মাহাত তাঁর ‘লোকায়ত ঝাড়খন্ড‘ গ্রন্থে বলেছেন ‘ টুসু শব্দটি ধানের খোসা তুষ থেকে উদ্ভূত ।এই তুষ মৃতধানের প্রতীক। আর জলাশয়ে টুস বিসর্জনের অর্থ হল মৃত শস্যকে কবর দেওয়া। মৃতকে কবর দেওয়ার অনুষ্ঠান হলেও টুসু উৎসব শোকোৎসব নয়, বরং মৃতের অবশ্যম্ভাবী পুনর্জন্মকে ত্বরান্বিত করার জন্যে যাদুক্রিয়ার মাধ্যমে আনন্দোৎসব।গোবর পুটলি প্রভৃতি উর্বরতা জ্ঞাপক ঐন্দ্রজালিক উপকরণের মাধ্যমে ধরিত্রীর উর্বরতা শক্তিকে বৃদ্ধি করে মৃত শস্যের পুনর্জন্মকে ত্বরান্বিত করার কৌশলমাত্র।’
ড . নীহাররঞ্জন রায় বলেছেন – ‘তুষ–তুষালি ব্রত কৃষিসংক্রান্ত প্রজনন শক্তির পূজা।’
অনেকের মতে পৌষ মাস হলো লক্ষ্মী মাস। তুষ মানে ধানের খোসা। শস্যের সাথে সম্পর্কিত। কাজেই এ লক্ষ্মীরই পূজা। অনেকে মনে করেন – টুসুদেবী, গঙ্গাদেবীরই পূজা।
ড . সুধীর কুমার করণ বলেছেন – ‘ বাংলাদেশের তোষলা ব্রতসীমান্ত বাংলার টুসুতে পরিণত হয়েছে।’
মকর পরবের প্রাক্কালে মাঠের লক্ষ্মী ঘরে আসে। কৃষক পরিবারে খুশির হাওয়া। এই খুশির আবহে অগ্রহায়ণ মাসের সংক্রান্তির দিনে গ্রামের কুমারী মেয়েরা টুসু স্থাপন করে। মেয়েরা পুরো পৌষ মাস জুড়ে প্রতিদিন একটি করে ফুল ঘরের কুলুঙ্গিতে রেখে দেয়। সারা মাস জুড়ে মেয়েদের কন্ঠে ধ্বনিত হয় টুসু গান। মকর বা টুসু পরবের প্রধান ধারক- বাহক গ্রাম বাংলার উর্বরতার প্রতীক কুমারী মেয়েরা। মা- মাসি- পিসিরা টুসু গানে অংশগ্রহণ করলেও সহযোগীর ভূমিকায় থাকেন ।


প্রকৃতপক্ষে , অগ্রহায়ণ-পৌষ মাসের শস্যসমৃদ্ধ কৃষক পরিবারে টুসুও সৃষ্টি প্রতীক। কুমারী মৃত্তিকার সৃজনশীল হওয়ার ইঙ্গিত। তাই, মকর পরব তথা টুসু পরব হল মানভূমের উর্বরতার প্রতীক ( Fertility cult )।
একটি টুসু গানে কৃষিকাজের অঙ্গ হিসাবে ধান ভানার উল্লেখ আছে –
‘নবান্নের ধান ভানি
দিন খ্যান করে,
কাটুলি বাছুরের লাদ রাখি
টুসু মায়ের তরে।’
মানভূমে পৌষ মাসের শেষের দিকে চাঁউড়ি, বাঁউড়ি, মকর, আখ্যান, ছেঁচান, ঘেঁঘান, টুকি কাছড়া , রাঁই-রুঁই , সাঁই-সুঁই ইত্যাদি ফসলোত্তর শস্য উৎসবগুলির (Post Harvesting Festival) প্রচলন দেখা যায়।
চাঁউড়ি : মকর পরব বা পৌষ সংক্রান্তির আগের আগের দিনটিকে ( অর্থাৎ সংক্রান্তির দু দিন আগে ) পুরুলিয়া জেলা ও তৎসংলগ্ন অঞ্চলে কৃষকেরা ‘চাঁউড়ি’ বলে অভিহিত করে থাকেন। ‘চাঁউড়ি’ কথাটি এসেছে ‘চাল’ থেকে। মকর পরব উপলক্ষে কৃষকেরা যে বিভিন্ন ধরনের পিঠে তৈরি করেন তার জন্য ঢেঁকিতে চাল কুটা (চাল পেষাই) শুরু হয় এই দিন থেকে। ওই দিন সকাল বেলা বাড়ির মহিলারা স্নান করে চাল ভিজতে দেন। বিকালবেলা মহিলারা সেই ভেজা চাল ঢেঁকিতে কুটে (পেষাই করে) চালের গুঁড়ি (পিটুলি) তৈরি করেন। সেই চালের গুঁড়ি পরের দিন পিঠ তৈরীর জন্য রাখা হয়। এই দিন ‘ চাল কুটা ‘ হয় বলে এই দিনটিকে ‘ চাঁউড়ি ‘ বলা হয়।
বাঁউড়ি : মকর সংক্রান্তির আগের দিনটিতে ‘বাঁউড়ি’ পার্বণ অনুষ্ঠিত হয় । ‘বাঁউড়ি’ কথাটি এসেছে ‘বন্ধন’ বা ‘বাঁধন’ থেকে । সাধারণভাবে হাতে করে দড়ি পাকানোর সময় ডান দিক থেকে বাম দিকে ঘুরিয়ে পাকানো হয়। কিন্তু বাঁউড়ির দিনে দড়ি পাকানোর বিশেষত্ব হল যে, এই অঞ্চলের কৃষকেরা পুয়াল (খড়) দিয়ে হাতে করে বাম দিক থেকে ডানদিকে ঘুরিয়ে দড়ি পাকান। এইভাবে অনেকগুলো টুকরো টুকরো দড়ি পাকানো হয়। আগের দিনের কুটা (পেষাই করা) চালের গুঁড়ি দিয়ে এদিন পিঠে তৈরি করা হয়। পিঠে তৈরি শেষ হওয়ার পর ওই বিশেষ দড়িগুলি তুলসী মঞ্চ গোয়ালঘর খামার, মরাই, কুচুড়ি (পুড়া) ইত্যাদির উপর রাখা হয় এবং সেগুলি দিয়ে খামখুটা [ খাম <খাম < স্তম্ভ; যে খুটায় ঘরের ছাউনি র মুধ্যন (মূলদন্ড) কে ঠেস দিয়ে ধরে রাখে], পিঠা তৈরির শেষে পিঠার হাড়ি ইত্যাদিকে বাধা হয় । এই প্রক্রিয়াটিকেই সামগ্রিকভাবে ‘ বাঁউড়ি বাঁধা ‘ বলে।
এ সম্বন্ধে কৃষক সমাজে প্রচলিত লোক বিশ্বাস হল যে ঘরের ধান, সম্পদ, চাল গবাদি পশু ইত্যাদিকে অশুভ শক্তির কুপ্রভাবের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য এই ‘বাঁউড়ি বাধা’ হয়। অর্থাৎ কৃষকেরা বিশ্বাস করেন যে বাঁউড়ি বাঁধার মাধ্যমে ঘরের সম্পদগুলি অশুভ শক্তির প্রভাব এড়িয়ে সুরক্ষিত থাকবে। বাঁউড়ির পরদিন অর্থাৎ মকর সংক্রান্তি ভোরবেলা পরিবারের পুরুষ প্রধান পুকুরে বা নদীতে স্নান করে ঘটিতে জল নিয়ে আসেন এবং সেই ঘটির জল ছিটিয়ে সেই দড়ি গুলি খুলে ফেলেন এবং সংশ্লিষ্ট স্থানগুলি থেকে সেগুলি তুলে নেন। এইভাবে তিনি বাঁউড়ি বা বন্ধন মুক্ত করেন। বন্ধন মুক্ত বাঁউড়িগুলিকে (দড়ি) পুকুর বা নদীর জলে বিসর্জন দেওয়া হয়। প্রচলিত লোকবিশ্বাস , এই বাঁউড়িগুলির সঙ্গেই যেন অশুভ শক্তিকেও বিসর্জন দেয়া হয়। সেদিন গৃহকর্তা বীজ ধানের কুচুড়িতে (পুড়া) বিশেষ রীতিসহকারে পূজা করেন।
মকর পরবের আবহে যেসব আপাতত অর্থহীন কৃষিকেন্দ্রিক লোকপার্বণ রয়েছে, খুব সংক্ষেপে সেগুলির উল্লেখ করা যেতে পারে :
ছেঁচান : আখ্যান যাত্রার ( ১লা মাঘ ) পরের দিনটিকে অর্থাৎ ২রা মাঘকে ‘ছেঁচান’ বলা হয় । এই দিন পিঠে তৈরি করে খাওয়া হয়।
ঘেঁঘান : ছেঁচান -এর পরের দিন অর্থাৎ ৩ রা মাঘকে ঘেঁঘান বলা হয়। এখানে ঘেঁঘান বলতে মকর পরব উপলক্ষে ভিখারিদের গৃহস্থের কাছে পিঠে ভিক্ষে করার আকুলতাকে বোঝানো হয়েছে।
টুকি কাছড়া : ঘেঁঘান -এর পরের দিনটিকে অর্থাৎ ৪ ঠা মাঘকে ‘টুকি কাছড়া ‘ বলা হয়।
রাঁই–রুঁই, সাঁই- সুঁই : টুকি কাছড়ার পরের দিনটিকে অর্থাৎ ৫ই মাঘকে ‘রাঁই -রুঁই, সাঁই -সুঁই’ বলা হয়।
আগেকার দিনে জমিদারি শাসন ও মহাজনি শোষণ ছিল তীব্র। প্রায় সময় অসহায় দরিদ্র চাষিরা জমিদারের খাজনা দিতে পারত না এবং বাধ্য হয়ে মহাজনের কাছে দেনা করত। কিন্তু সেই দেনা শোধ দেওয়ার মতো সামর্থ্য তাদের থাকত না। অথচ মহাজন বা মহাজনের লোক দেনা শোধের তাগাদা দিতে থাকত। ওই তাগাদাকারিকে এড়াবার জন্য চাষি নানা লোকবিশ্বাস বা সংস্কারের দোহাই দিত। চাষির প্রিয় মকর পরবে যাতে তাগাদাকারির উৎপাত বা আগমন না থাকে – এর জন্য চাষি তাগাদাকারিকে বাঁউড়ির( মকর সংক্রান্তির দুদিন পূর্বে ) বলে দিত –
‘বাঁউড়ি, চাঁউড়ি, মকর , আখ্যান , ছেঁচান, ঘেঁঘান, টুকি কাছড়া , রাঁই-রুঁই , সাঁই-সুঁই -তারপরে আসবি। ‘
অর্থাৎ আট দিন পর তাগাদাকারিকে আসার কথা বলে চাষি। কারণ চাষির মধ্যে সংস্কার বা বিশ্বাস রয়েছে যে ওই দিনগুলিতে ঘরের চাল, ধান বা টাকা – পয়সা অর্থাৎ ঘরের লক্ষীকে বাইরের কারোর হাতে দিতে নেই। এই ৮ দিনে মকর পরব উপভোগ করে দরিদ্র চাষি পাওনাদারকে এড়ানোর চেষ্টা করত। তাই, তৎকালীন আর্থ-সামাজিক পরিপ্রেক্ষিতে কৃষক সম্প্রদায় পাওনাদারের হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করার জন্যেই ছেঁচান, ঘেঁঘান, টুকি কাছড়া, রাঁই-রুঁই, সাঁই-সুঁই ইত্যাদির মতো আপাত অর্থহীন পার্বণগুলির সৃষ্টি করেছিল বলে মনে হয় ।
সুতরাং, দেখা যাচ্ছে যে, মানভূমের অন্যান্য কৃষিকেন্দ্রিক লোকপার্বণ অর্থাৎ আখ্যান যাত্রা ও হাল পূন্যাহ (১লা মাঘ) বীজপুন্যাহ (সাধারণত অক্ষয় তৃতীয়ায়), রহিন (১৩ ই জ্যৈষ্ঠ), করম বা জাওয়া পার্বণ (ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের একাদশী তিথিতে) , ভাদু পরব (ভাদ্র সংক্রান্তি ), জিহুড় ডাক (আশ্বিন সংক্রান্তি), বাঁধনা পরব ( কার্তিক মাসের অমাবস্যায়), ডেনি ঠাকুর আনা ( অগ্রহায়ণ মাসে যার যেদিন ফসল তোলা শেষ হয় বা ফসল তোলার পর কোন শুভদিন বা অগ্রহায়ণ সংক্রান্তি ) ইত্যাদির মতোই মকর পরব একান্তভাবেই একটি কৃষি কেন্দ্রিক পার্বণ ।
পুরুলিয়া জেলা ও তৎসংলগ্ন অঞ্চলের কৃষক সমাজে প্রচলিত মকর পরবের অন্তরালে এক বৈচিত্র্যময় লোকবিশ্বাস এর ধারা বহমান দেখা যায়, যা এই অঞ্চলের কৃষি সংস্কৃতির ঐতিহ্যকে আরো নিবিড় এবং সমৃদ্ধ করেছে।
মূল তথ্যসূত্র :
১ ) ড . আশুতোষ ভট্টাচার্য : বাংলার লোকসাহিত্য
২ ) লোকভূমি মানভূম : সম্পাদনা – শ্রমিক সেন, কিরীটি মাহাত
৩ ) অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর : বাংলার ব্রতকথা
৪ ) ড . সুধীর কুমার করণ : পশ্চিম সীমান্ত বাংলার লোকযান
৫ ) ড . বিনয় মাহাত : লোকায়ত ঝাড়খন্ড
৬ ) অধ্যাপক সুবোধ বসু রায় সম্পাদিত ‘ছত্রাক’ ।
আরও পড়ুন
সেলফির উচ্চ রেটিং কি আপনাকে আরওপাতলা হতে উৎসাহিত করছে ?
উত্তরাপথঃ সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে সেলফি তোলা এবং নিজেকে পাতলা হিসাবে দেখানোর মধ্যে একটি সম্পর্ক থাকতে পারে। যুক্তরাজ্যের ইয়র্ক সেন্ট জন ইউনিভার্সিটির রুথ নাইট এবং ইউনিভার্সিটি অফ ইয়র্কের ক্যাথরিন প্রেস্টন সম্প্রতি PLOS ONE জার্নালে তাদের ফলাফল প্রকাশ করেছেন।সেখানে সেলফির উচ্চ রেটিং এবং আমাদের শরীরের গঠনের মধ্যে যোগসূত্র খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে। বর্তমান সোশ্যাল মিডিয়ায় সেলফি হল এক জনপ্রিয় ছবি দেওয়ার ধরন। যিনি সেলফি তোলেন তিনি ক্যামেরাকে তাদের শরীর থেকে দূরে রেখে নিজেই নিজের ছবি তোলে। আগের গবেষণায় বলা হয়েছে সেলফিগুলি দেখার ফলে ছবির বিষয়গুলি সম্পর্কে দর্শকদের সিদ্ধান্ত প্রভাবিত হতে পারে। .....বিস্তারিত পড়ুন
Karar Oi Lauh Kapat: কাজী নজরুলের এই গানকে ঘিরে বিতর্কে এ আর রহমান
উত্তরাপথঃ বিতর্কে 'পিপ্পা' ছবির সঙ্গীত পরিচালক অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান।সম্প্রতি কবি কাজী নজরুল ইসলামের পরিবার একটি হিন্দি ছবিতে কবির জনপ্রিয় গান 'করার ঐ লৌহ কাপাত...' (Karar Oi Lauh Kapat )।কিন্তু এ আর রহমানের সঙ্গীত পরিচালনায় ওই গানটি যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে তাতে আপত্তি জানিয়েছে নজরুল পরিবার।বিতর্কের পর যে চুক্তির আওতায় ওই গানটি ছবিতে ব্যবহার করা হয়েছে তা প্রকাশ্যে আনার দাবি তুলেছে কবির পরিবার।'পিপ্পা' শিরোনামের হিন্দি চলচ্চিত্রটি যেখানে (Karar Oi Lauh Kapat )গানটি ব্যবহার করা হয়েছে তা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেওয়া একজন ভারতীয় সেনা সৈনিককে কেন্দ্র করে একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত। ছবির সঙ্গীত পরিচালক অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান। গানের কথা ঠিক রেখেও সুর পাল্টানোর অভিযোগে ভারত ও বাংলাদেশে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।কবির পরিবারের অভিযোগ, গানটি ব্যবহারের অনুমতি দিলেও সুর পরিবর্তনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।পরিবারের সদস্যরাও ছবিটি থেকে গানটি বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। .....বিস্তারিত পড়ুন
Fructose: নতুন গবেষণায় ফ্রুক্টোজকে স্থূলতার কারণ বলা হয়েছে
উত্তরাপথঃ একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় জোরালো প্রমাণ দেওয়া হয়েছে যে ফ্রুক্টোজ (Fructose), সাধারণত প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং পানীয়গুলিতে থাকা এক ধরনের চিনি, যা স্থূলতার প্রাথমিক চালক। বছরের পর বছর ধরে, পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা , পাশ্চাত্য খাদ্যে, স্থূলতার মূল কারণ নিয়ে বিতর্ক করেছেন, কেউ কেউ অত্যধিক ক্যালোরি গ্রহণের দিকে ইঙ্গিত করেছেন, অন্যরা কার্বোহাইড্রেট বা চর্বি জাতীয় খাবারকে দায়ী করেছেন। Obesity জার্নালে সাম্প্রতিক একটি গবেষণাপত্রে ফ্রুক্টোজকে স্থূলতার প্রকৃত চালক হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।The University of Colorado Anschutz Medical Campus এর Dr. Richard Johnson এবং তার দলের মতে, ফ্রুক্টোজ হল একটি সাধারণ চিনি যা ফল এবং মধুর প্রাথমিক পুষ্টি। .....বিস্তারিত পড়ুন
Bandna Festival: ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল পাঁচ দিন বাঁদনার আমেজে মশগুল থাকে
বলরাম মাহাতোঃ চিরাচরিত রীতি অনুযায়ী কার্তিক অমাবস্যার আগের দিন থেকে মোট পাঁচ দিন ব্যাপী বাঁদনার(Bandna Festival) আমেজে মশগুল থাকে ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। অবশ্য, পরবের শুভ সূচনা হয় তারও কয়েকদিন আগে। আদিবাসী সম্প্রদায়ের সামাজিক শাসন ব্যবস্থার চূড়ামণি হিসাবে গাঁয়ের মাহাতো, লায়া, দেহরি কিম্বা বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি নির্ধারণ করেন- ৩, ৫, ৭ বা ৯ ক’দিন ধরে গবাদি পশুর শিং-এ তেল মাখাবে গৃহস্বামী! রুখামাটির দেশের লোকেরা কোনোকালেই মাছের তেলে মাছ ভাজা তত্ত্বের অনুসারী নয়। তাই তারা গোরুর শিং-এ অন্য তেলের পরিবর্তে কচড়া তেল মাখানোয় বিশ্বাসী। কারণ কচড়া তেল প্রস্তুত করতে গোধনকে খাটাতে হয় না যে! কচড়া তেলের অপ্রতুলতার কারণে বর্তমানে সরষের তেল ব্যবহৃত হলেও, কচড়া তেলের ধারণাটি যে কৃষিজীবী মানুষের গবাদি পশুর প্রতি প্রেমের দ্যোতক, তা বলাই বাহুল্য! এভাবেই রাঢ বঙ্গে গোবর নিকানো উঠোনে হাজির হয়- ঘাওয়া, অমাবস্যা, গরইয়া, বুঢ়ি বাঁদনা ও গুঁড়ি বাঁদনার উৎসবমুখর দিনগুলি। পঞ্চদিবসে তেল দেওয়া, গঠ পূজা, কাঁচি দুয়ারি, জাগান, গহাইল পূজা, চুমান, চউক পুরা, নিমছান, গোরু খুঁটা, কাঁটা কাঢ়া প্রভৃতি ১১টি প্রধান পর্ব সহ মোট ১৬টি লোকাচারের মাধ্যমে উদযাপিত হয় বাঁদনা পরব(Bandna Festival )। .....বিস্তারিত পড়ুন