যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ঃ মর্মান্তিক ছাত্র মৃত্যু নিয়ে এবার কলরব

উত্তরাপথঃ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ভারতের একটি নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান । সম্প্রতি সেখানে বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের পড়ুয়া স্বপ্নদীপ কুণ্ডুর রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় জোরাল হচ্ছে ব়্য়াগিংয়ের তত্ত্ব।ব়্য়াগিংয়ের অভিযোগে পুলিস গ্রেফতার করেছে বিশ্ববিদ্যালয়েরই প্রাক্তন ছাত্র সৌরভ চৌধুরীকে। যদিও  সৌরভ চৌধুরীর ববা-মা  ছেলে দোষী এমনটা মানতে চাইছেন না । তাদের দাবী মৃত ছাত্র স্নপ্নদীপের বাবা-মা তাঁদের ছেলের নাম-ই বারবার নিচ্ছে এবং তাঁরা-ই সৌরভকে ফাঁসিয়েছে।যদিও পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে এবং তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত স্পষ্ট করে কিছু বলা সম্ভব নয়।

স্নপ্নদীপের মৃত্যু আমাদের সামনে বেশ কিছু প্রশ্ন তুলে ধরেছে । যে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় সর্বদা তাদের প্রতিবাদী চরিত্রের জন্য খবরের শিরোনামে থাকে, তা সে বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কিত বিষয় হোক বা বাইরের । আজ কেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিবাদী ছাত্রদের মুখে শোনা যাচ্ছে না হউক কলরবের মত ধ্বনি? বিভিন্ন কারণে মোমবাতি মিছিল করা বুদ্ধিজীবিরা বা কেন চুপ স্নপ্নদীপের মত একটি নিরীহ ছাত্রের মৃত্যুতে ?  

 আমার সকলেই জানি যে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সক্রিয়তা এবং রাজনৈতিক কর্মব্যস্ততার এক   ইতিহাস রয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, একাডেমিক বিষয়, রাজনৈতিক মতাদর্শ এবং প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের দাবি সহ বিভিন্ন ইস্যুতে ছাত্র বিক্ষোভ রাজ্যবাসী প্রত্যক্ষ করেছে । অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই বিক্ষোভ থেকে সংঘর্ষের ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্র গোষ্ঠীর মধ্যে দেখা যায়, যার ফলে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হয় এবং একাডেমিক পরিবেশে ব্যাঘাত ঘটে।

কিন্তু এবার দুর্ভাগ্যবশত, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ছাত্রের প্রাণহানির মত মর্মান্তিক পরিণতি ঘটেছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া স্বপ্নদীপের রহস্যমৃত্যুর ঘটনার  চাঞ্চল্যকর তথ্য হস্টেল আবাসিকদের নিজস্ব চ্যাটে উঠে আসছে , আর জোরাল হছে  র‌্যাগিং-এর তত্ত্ব। বিস্ফোরক সব তথ্য উঠে এসেছে আবাসিকদের নিজস্ব চ্যাটে। সেই চ্যাটের বেশ কিছু স্ক্রিনশট ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যদিও ভাইরাল এই অডিয়ো ক্লিপের সত্যতা যাচাই করেনি উত্তরাপথ ।

ভাইরাল হওয়া ওই চ্যাটের স্ক্রিনশটে দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন আবাসিকরা তাদের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন। রাত ১০ টা থেকে ভোর ৫ টা পর্যন্ত তাদের উপর বিভিন্ন অত্যাচার চলত বলে চ্যাটে তারা তুলে ধরেছে। তবে স্বপ্নদীপের মৃত্যুর পর থেকে যেভাবে র‌্যাগিং-এর অভিযোগ উঠে আসতে শুরু করেছিল, তাতে এই ভাইরাল স্ক্রিনশট নতুন মাত্রা যোগ করল বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


Side effects of vitamin: ভিটামিনের আধিক্য আপনার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে

উত্তরাপথঃ ভিটামিনের প্রয়োজনীয়তা আমরা সবাই নিশ্চয়ই ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি যে সুস্থ থাকতে হলে শরীরে প্রয়োজনীয় সব ভিটামিন থাকা খুবই জরুরি।  ভিটামিন আমাদের সুস্থ করার পাশাপাশি আমাদের সমগ্র শরীরের বিকাশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।  যাইহোক, এটি অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া আমাদের জন্য ক্ষতিকারকও হতে পারে।  আসুন জেনে নিই অতিরিক্ত ভিটামিন গ্রহণের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া (Side effects of vitamin)সুস্থ থাকার জন্য শরীরে সব ধরনের পুষ্টি থাকা খুবই জরুরি।  এ কারণেই বয়স্ক থেকে শুরু করে চিকিৎসক, সবাই আমাদেরকে সুষম ও পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন।  সমস্ত পুষ্টি উপাদান আমাদের শরীরকে বিভিন্ন উপায়ে সুস্থ করে তোলে।  এর মধ্যে ভিটামিন একটি, যা আমাদের সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। .....বিস্তারিত পড়ুন

Bandna Festival: ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল পাঁচ দিন বাঁদনার আমেজে মশগুল থাকে

বলরাম মাহাতোঃ চিরাচরিত রীতি অনুযায়ী কার্তিক অমাবস্যার আগের দিন থেকে মোট পাঁচ দিন ব্যাপী বাঁদনার(Bandna Festival) আমেজে মশগুল থাকে ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। অবশ্য, পরবের শুভ সূচনা হয় তারও কয়েকদিন আগে। আদিবাসী সম্প্রদায়ের সামাজিক শাসন ব্যবস্থার চূড়ামণি হিসাবে গাঁয়ের মাহাতো, লায়া, দেহরি কিম্বা বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি নির্ধারণ করেন- ৩, ৫, ৭ বা ৯ ক’দিন ধরে গবাদি পশুর শিং-এ তেল মাখাবে গৃহস্বামী! রুখামাটির দেশের লোকেরা কোনোকালেই মাছের তেলে মাছ ভাজা তত্ত্বের অনুসারী নয়। তাই তারা গোরুর শিং-এ অন্য তেলের পরিবর্তে কচড়া তেল মাখানোয় বিশ্বাসী। কারণ কচড়া তেল প্রস্তুত করতে গোধনকে খাটাতে হয় না যে! কচড়া তেলের অপ্রতুলতার কারণে বর্তমানে সরষের তেল ব্যবহৃত হলেও, কচড়া তেলের ধারণাটি যে কৃষিজীবী মানুষের গবাদি পশুর প্রতি প্রেমের দ্যোতক, তা বলাই বাহুল্য! এভাবেই রাঢ বঙ্গে গোবর নিকানো উঠোনে হাজির হয়- ঘাওয়া, অমাবস্যা, গরইয়া, বুঢ়ি বাঁদনা ও গুঁড়ি বাঁদনার উৎসবমুখর দিনগুলি। পঞ্চদিবসে তেল দেওয়া, গঠ পূজা, কাঁচি দুয়ারি, জাগান, গহাইল পূজা, চুমান, চউক পুরা, নিমছান, গোরু খুঁটা, কাঁটা কাঢ়া প্রভৃতি ১১টি প্রধান পর্ব সহ মোট ১৬টি লোকাচারের মাধ্যমে উদযাপিত হয় বাঁদনা পরব(Bandna Festival )। .....বিস্তারিত পড়ুন

Free Gift in Politics: ভারতের নির্বাচন ও ফ্রি গিফট সংস্কৃতি

উত্তরাপথঃ ফ্রি গিফট (Free gift in politics)এর রাজনীতি সম্প্রতি ভারতের নির্বাচনী রাজনীতিতে একটি বিশিষ্ট ভূমিকা পালন করছে। বিনামূল্যে কোটি কোটি জনগণকে উপহার প্রদান যা রাজকোষের উপর অতিরিক্ত বোঝা ফেলবে এই সত্যটি জানা সত্ত্বেও, রাজনৈতিক দলগুলি ভোটারদের আকৃষ্ট করার জন্য ফ্রি গিফট (Free gift in politics) দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচনের দৌড়ে একে অপরের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।এক সময় প্রয়াত তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জে জয়ললিতা বিনামূল্যে শাড়ি, প্রেসার কুকার, ওয়াশিং মেশিন, টেলিভিশন সেট ইত্যাদির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটের আগে যে বিনামূল্যের সংস্কৃতি শুরু করেছিলেন তা পরবর্তী কালে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলি দ্রুত অনুসরণ করেছিল। এরপর ২০১৫ সালে আম আদমি পার্টি নেতৃত্ব দিল্লির ভোটারদের কাছে বিনামূল্যে বিদ্যুৎ, জল, বাস ভ্রমণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে জয়লাভ করেছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন

World Children's Day: সত্যিই কি ‘বিশ্ব শিশু দিবস´পালনের কোনও যৌক্তিকতা আছে ?

প্রীতি গুপ্তাঃ হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটি দিন তারপর ১৪ নভেম্বর আমাদের দেশ সহ সারা বিশ্বজুড়ে  পালন করা হবে ‘বিশ্ব শিশু দিবস´(World Children's Day)।এই দিনটি শিশুদের মঙ্গলের জন্য, তাদের ভবিষ্যতের জন্য একটি অনুকূল বিশ্ব তৈরি করার প্রচেষ্টার একটি দিন।কিন্তু প্রশ্ন,সত্যি কি হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে সারা বিশ্ব জুড়ে শিশু দিবস পালন করার কোনও যৌক্তিকতা আছে? আদৌ কি এর কোনও লাভ আমরা আমাদের প্রান্তিক স্তরের শিশুদের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছি ? সম্প্রতি কাজের প্রয়োজনে রাজস্থানের উদয়পুর শহরে আসা। আমরা সবাই জানি উদয়পুর বিখ্যাত তার হ্রদের কারণে । এখানকার স্থানীয় থেকে পর্যটক সকলেই এই সুন্দর হ্রদগুলির আকর্ষণে বারবার ছুঁটে যায়। ‘ফতে সাহেব লেক’ রাজস্থানের উদয়পুরের এক বিখ্যাত পর্যটক স্থল।এখানে বহু মানুষ সকাল- বিকেল এই লেকের চার ধারে হাঁটাহাঁটি করতে বেরিয়ে পড়ে। সেভাবেই দুই দিন আগে বিকেলে হঠাৎ করে বেরিয়ে পড়লাম ‘ফতে সাহেব লেকের ধারে হাঁটার উদ্দেশ্য নিয়ে। হাঁটার মাঝখানে হঠাৎ করে একটি বাচ্চাছেলে আওয়াজ করে ডাকছে ,বললাম কিছু বলবি? সে বলল একটু দাঁড়াতে। ও ছুটে গিয়ে হাতে করে কয়েকটি বেলুন নিয়ে এসে হাজির । সে বারবার বেলুন কেনার অনুরোধ জানাতে লাগল। হাতে অন্য কাজের চাপ নেই অনেকটা অবসর সময় তাই আমি অনেকটা সাংবাদিক সুলভ মন নিয়ে বললাম ঠিক আছে আমি তোর বেলুন নেব ,কিন্তু তার আগে আমি  তোকে যা বলব তার তার ঠিক ঠিক উত্তর দিতে হবে। সে খুশী খুশী রাজি হয়ে গেল । .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top