রাজনীতি ও সত্যপাল মালিক 

উত্তরাপথ

ছবি সৌজন্যে: টুইটার সত্যপাল মালিক

জম্মু ও কাশ্মীরের  প্রাক্তন রাজ্যপাল  সত্যপাল মালিক  ২০১৯ এর পুলওয়ামায় সিআরপিএফ কনভয়ে  সন্ত্রাসী হামলায় ৪০ জন জওয়ানের মৃত্যু সহ  অনেক বিষয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছেন।  এ নিয়ে দেশের রাজনীতিতে  তোলপাড় শুরু হয়েছে।  কংগ্রেস সহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলি সরকারের বিরুদ্ধে রীতিমত আক্রমণাত্মক মুডে রয়েছে । অন্যদিকে  সত্যপাল মালিকের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে অমিত শাহ  প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন  জনগণের ভাবা উচিত রাজ্যপাল থাকা অবস্থায় তিনি কেন চুপ থাকলেন ,  রাজ্যপাল থাকাকালীন সত্যপাল মালিকের এই বিষয়ে কথা বলা উচিত ছিল।  আমাদের ছেড়ে যাওয়ার পরেই কেন এই সমস্ত কথা মনে পড়ল ?   ক্ষমতায় থাকলে বিবেক কেন জাগ্রত হল না। সত্যপাল মালিকের বক্তব্য প্রকাশ্যে আসার পর রাজনৈতিক বাদানুবাদের মধ্যে পুলওয়ামার কিছু শহীদ পরিবার পুরো ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবী করছেন।

জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক গত কয়েকদিন ধরেই খবরের  শিরোনামে রয়েছেন।  একনজরে  দেখে নেওয়া যাক তার রাজনৈতিক যাত্রা।  ১৯৭৪ সাল থেকে সত্যপাল মালিকের রাজনৈতিক যাত্রা শুরু হয় লোকদল দিয়ে ।  তারপর  তিনি প্রথমবার বাগপত বিধানসভা আসন থেকে  বিধায়ক হন ।  এর পরে, ১৯৮০ সালে, সত্যপাল মালিক প্রথমবার লোকদল থেকে রাজ্যসভায় পৌঁছান।  এর পরে, ১৮৮৪ সালে, তিনি কংগ্রেসে যোগ দেন।  এরপর তাকে রাজ্যসভায় পাঠায় কংগ্রেস।  কিন্তু ১৯৮৭ সালে বোফর্স কেলেঙ্কারির পর, সত্যপাল মালিক কংগ্রেস থেকে পদত্যাগ করেন।  এর পরে তিনি ১৯৮৮ সালে ভিপি সিংয়ের নেতৃত্বাধীন জনতা দলে যোগ দেন এবং ১৯৮৯ সালে আলিগড় থেকে লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং স্বল্প সময়ের জন্য পর্যটন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ২০০৪ সালে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন । তিনি পার্টিতে বেশ কয়েকটি সিনিয়র পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার পরে, মোদি সরকার ২০১৭  সালের অক্টোবরে মালিককে বিহারের রাজ্যপাল হিসাবে নিযুক্ত করে এবং ২০১৮  সালের আগস্টে তাকে জম্মু ও কাশ্মীরে  স্থানান্তরিত করে। কাশ্মীরে জঙ্গিবাদ শুরু হওয়ার পর মালিক ছিলেন প্রথম রাজনীতিবিদ যিনি এই পদে নিযুক্ত হন।  তার জম্মু ও কাশ্মীরে রাজ্যপাল থাকার সময় মোদী সরকার ৩৭০ ধারা বাতিল করে। এরপর ২০২২ সালের অক্টোবরে মেঘালয়ে তার রাজ্যপাল পদের দায়িত্ব শেষ হওয়ার পর, মালিক ঘোষণা করেছিলেন যে তার সক্রিয় রাজনীতিতে যোগদানের কোন ইচ্ছা নেই, তবে তিনি আরএলডি এবং এসপির “পরামর্শদাতা” হিসেবে  এবং কৃষকদের কল্যাণের জন্য লড়াই করতে চান ।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


Roop Kishor Soni: একটি আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য তুলে ধরেছেন

উত্তরাপথঃ রাজস্থান মানেই ওজনদার রূপার গহনা ,আর তার উপর কারুকাজ। প্রচলিত এই ধারনা ভেঙ্গে আজ রূপোর গহনাকে আধুনিকতার সাথে শিল্পের এক অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন যে ব্যক্তি তিনি হলেন রূপ কিশোরী সোনী(Roop Kishor Soni)।তিনি ২০১৬ সালের ৯ ডিসেম্বর প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির কাছ থেকে তার অসাধারণ শিল্প কর্মের জন্য জাতীয় পুরুস্কার পান। রাজস্থানের জয়সলমেরের শহরের এই শিল্পী ৩.৮ গ্রাম ওজনের ০.৯ সেমি চওড়া রৌপ্য আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য খোদাই করেছেন।এই ছোট রূপার আংটিতে শিল্পী তাজমহল, সিডনি অপেরা হাউস, স্ট্যাচু অফ লিবার্টি, চীনের গ্রেট ওয়াল, আইফেল টাওয়ার, বিগ বেন, পিসার হেলানো টাওয়ার এবং মিশরীয় পিরামিডের চিত্র এক সাথে ফুটিয়ে তুলেছেন।এছাড়াও তিনি আরও দুটি পৃথক ডিজাইনের অত্যাশ্চর্য আংটি  তৈরি করেছেন।৮.৬ গ্রাম ওজনের একটি রিংয়ে তিনি সূর্যাস্তের সময় ভারতীয় উট সাফারি সহ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন ভারতীয় বিশেষত্ব ফুটিয়ে তুলেছেন,এবং অন্যটিতে বিভিন্ন হিন্দু দেব-দেবী ছবি এবং মন্দির খোদাই করেছিলেন। শিল্পী বলেছেন যে তিনি তার বাবার কাছ থেকে তার শৈল্পিক দক্ষতা উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছেন। সেই সাথে তিনি বলেন "আমার বাবাও একজন জাতীয় পুরুস্কার প্রাপ্ত শিল্পী ছিলেন। তিনি আমাকে শিল্পের এই দক্ষতা শিখিয়েছিলেন কারণ তিনি পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে শিল্পের ফর্মটিকে বাঁচিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন।" .....বিস্তারিত পড়ুন

দীপাবলির সময় কেন পটকা ফোটানো নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা যায় না ?

উত্তরাপথঃ দীপাবলির পরের দিন, যখন কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (CPCB) শহরের বায়ু মানের সূচকের তালিকা প্রকাশ করে,তখন  দেখা যায় রাজধানী দিল্লি বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দূষিত শহরের প্রথমেই রয়েছে। CPCB-এর মতে, ১২ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় দিল্লির বায়ু মানের সূচক ছিল ২১৮ যা ভোরের দিকে বেড়ে ৪০৭ এ পৌঁছায় । ৪০০ – ৫০০ AQI  এর স্তর সুস্থ ব্যক্তিদের প্রভাবিত করে। দীপাবলির সারা রাত, লোকেরা পটকা ফাটিয়ে দীপাবলি উদযাপন করে। ১৩ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আবার তথ্য প্রকাশ করে এই তালিকায়, দিল্লির গড় বায়ু মানের সূচক ছিল ৩৫৮ যা 'খুব খারাপ' বিভাগে পড়ে।   বায়ু দূষণের এই পরিস্থিতি শুধু দিল্লিতেই সীমাবদ্ধ ছিল না।  নয়ডার বায়ু মানের সূচক ১৮৯ থেকে ৩৬৩ এ এবং রোহতক, হরিয়ানার ১৩৭ থেকে বেড়ে ৩৮৩ হয়েছে। দীপাবলির দুই দিন দিল্লি ,নয়ডা  ,কলকাতা, মুম্বাই সহ দেশের অন্যান্য শহরেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। এই দিনগুলিতে মানুষ বিষাক্ত বাতাসে শ্বাস নিতে বাধ্য হয়েছে। ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জাতীয় রাজধানী দিল্লি এবং নয়ডায় সবুজ পটকা ছাড়া যে কোনও ধরণের আতশবাজি ফাটান সম্পূর্ণ রূপে নিষিদ্ধ। আদালত সবুজ পটকা পোড়ানোর সময়ও নির্ধারণ করে দিয়েছে রাত ৮টা থেকে ১০টা। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে সুপ্রিম কোর্টের এই আদেশের মানে কী?  আদালতের এই আদেশ কি এখন প্রত্যাহার করা উচিত?  পুলিশ কেন এই আদেশ কার্যকর করতে পারছে না?  এর জন্য কি পুলিশ দায়ী নাকি সরকারের উদাসীনতা রয়েছে এর পেছনে? .....বিস্তারিত পড়ুন

Vijay Stambh : চিতোরগড় দুর্গে বিজয় স্তম্ভ হিন্দু – মুসলিম সহাবস্থানের প্রতীক

উত্তরাপথঃ খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীতে মৌর্য রাজবংশ কর্তৃক স্থাপিত চিতোরগড় দুর্গ সাহস ও আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে আজও দাঁড়িয়ে আছে। এই দুর্গ তার বিশাল কাঠামো, রাজপ্রাসাদ, একাধিক  সুদৃশ্য মন্দির সহ সুন্দর জলাশয়ের জন্য বিখ্যাত।৭০০-একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, এই দুর্গটিতে প্রায় ৬৫টি ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন রয়েছে যা রাজপুত এবং ইসলামিক স্থাপত্য শৈলীর সূক্ষ্মতার প্রমান দেয়। বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh)) হল এই দুর্গে অবস্থিত,সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর কাঠামো।এই আশ্চর্য-অনুপ্রেরণামূলক স্তম্ভটি কেবল তার উচ্চতার জন্য বিখ্যাত নয়,এটি রাজপুতদের অদম্য সাহস এবং অধ্যবসায়ের গল্পও বলে যা চিতোরগড় দুর্গেরই সমার্থক হয়ে উঠেছে।বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh), নাম থেকে বোঝা যায়, বিজয়ের প্রতীক।  প্রাচীনকালে যে কোনো যুদ্ধ অভিযানের সাফল্যের পর সেই বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতে রাজারা মন্দির, স্তূপ, স্মৃতিস্তম্ভ ও স্তম্ভ নির্মাণ করতেন।  ৯ তলা এই বিজয় স্তম্ভটি ১৯৪০ থেকে ১৪৪৮ সালের মধ্যে মহারানা কুম্ভ দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন

ওজন হ্রাস (weight loss) মস্তিষ্কের বার্ধক্যের লক্ষণগুলিকে ধীর করে

উত্তরাপথঃ এপ্রিলে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, শাকসবজি, সামুদ্রিক খাবার এবং গোটা শস্য সমৃদ্ধ একটি ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্য খাওয়া - এমনকি শুধুমাত্র খাদ্যের নির্দেশিকা অনুসরণ করে   ওজন হ্রাস (weight loss)মস্তিষ্কের বার্ধক্যের লক্ষণগুলিকে ধীর করে বলে মনে করা হয়।সাম্প্রতি ডিউক ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিনের বিজ্ঞানীদের দ্বারা পরিচালিত, একটি  গবেষণায় দেখা গেছে যে ওজন হ্রাস মস্তিষ্কে বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে ৯ মাস পর্যন্ত ধীর করে (aging process) দিতে পারে। গবেষণায় ৬০ থেকে ৭৮ বছর বয়সের মধ্যে ৪৭ জন অংশগ্রহণকারীকে জড়িত করা হয়েছিল, যাদের প্রত্যেকেরই ওজন বেশি বা স্থূল ছিল এবং তাদের অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যগ্রহণ  ছিল। তাদের এলোমেলোভাবে একটি ক্যালোরি-সীমাবদ্ধ গ্রুপ বা একটি নিয়ন্ত্রণ গ্রুপে বরাদ্দ করা হয়েছিল।ক্যালোরি-সীমাবদ্ধতা গোষ্ঠীর সদস্যদের একটি খাদ্য পরিকল্পনা অনুসরণ করে, যার লক্ষ্য ছিল তাদের আনুমানিক প্রয়োজনের চেয়ে ১০ – ১৫% কম ক্যালোরি গ্রহণ করা। অন্যদিকে, নিয়ন্ত্রণ গ্রুপ তাদের খাদ্য পরিবর্তন করেনি .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top