

উত্তরাপথঃ আপনি কি জানেন প্ল্যাস্টিকের জলের বোতল আপনার শরীরে মাইক্রোপ্লাস্টিক প্রবেশের সবচেয়ে বড় উৎস হতে পারে।আমরা যখন প্ল্যাস্টিকের বোতল থেকে জল পান করি তখন মাইক্রোপ্লাস্টিক নামে পরিচিত ক্ষুদ্র, সম্ভাব্য ক্ষতিকারক প্লাস্টিকের কণাগুলি বোতলের জলের সাথে মিশে যায়। Journal of Water and Health এ প্রকাশিত একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে,বোতল থেকে জল পান করার সময় যখন বোতলের ঢাকাটি খোলা বা বন্ধ করা হয় তখন প্ল্যাস্টিকের বোতল ও ঢাকার মধ্যে বারবার ঘর্ষণ তৈরি হয় যা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে মাইক্রোপ্লাস্টিক তৈরি করে, এবং পরে বোতলের জলে মিশে যায়। প্রতিবার বোতল খোলা বা বন্ধ করার সময় ঘর্ষণে প্রায় ৫০০ মাইক্রোপ্লাস্টিক কণা তৈরি হতে পারে,বলে গবেষণায় দাবী করা হয়েছে।
সেই সাথে বিজ্ঞানীদের অনুমান, আমরা এক বছরে প্রায় ১৬,০০০ মাইক্রোপ্লাস্টিক কণা গ্রহণ করি – যাকে কঠিন পলিমার কণাও বলা হয় -এটি শুধুমাত্র বোতলজাত জল থেকে আমাদের শরীরে আসে। নতুন গবেষণায় দেখা গেছে বোতল থেকে জল পান করার সময় বোতল খোলা বা বন্ধ করার সময় কেবল মাইক্রোপ্লাস্টিক জলে মিশে যায় তা নয়, বোতলজাত জলে মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিতি সাধারণত বোতলের উৎপাদন প্রক্রিয়ার সময় থেকেই শুরু হয়ে যায়। উৎপাদনের সময়, প্লাস্টিকের জলের বোতলগুলি উচ্চ চাপ, তাপমাত্রার পরিবর্তন এবং পরিবহনের কারণে, বোতলের প্লাস্টিককে ক্ষয় করতে পারে, যা মাইক্রোপ্লাস্টিক তৈরির দিকে পরিচালিত করে ।
বিজ্ঞানীরা ২০১৮ সালের একটি সমীক্ষাতে ১১ টিরও বেশি ব্র্যান্ডের জলের ২৫৯টি বোতল পরীক্ষা করেছেন এবং প্রায় ৯৩ শতাংশ বোতলে মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিতি পেয়েছেন।গত বছর ফরাসি বিজ্ঞানীরা নয়টি বোতলজাত ( mineral water) জলের মধ্যে সাতটিতে মাইক্রোপ্লাস্টিক খুঁজে পেয়েছেন। বোতলজাত জলে ট্যাপের জলের চেয়ে প্রায় ৬০ গুণ বেশি মাইক্রোপ্লাস্টিক থাকে।বিজ্ঞানীদের মতে ফিল্টার করা জল হল সবচেয়ে ভাল পছন্দ, কারণ এতে সম্ভবত কম দূষক রয়েছে যা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে।
জলের বোতল ছাড়াও, মাইক্রোপ্লাস্টিক রয়েছে এমন অনেক জিনিষ আমরা প্রতিদিন ব্যবহার করি সেক্ষেত্রে খেলনা থেকে শুরু করে খাবারের মোড়ক এবং আরও অনেক কিছু। প্লাস্টিক বিশ্বের অন্যতম বহুল ব্যবহৃত উপকরণ।দীর্ঘদিন ধরে প্লাসটিকের উপকরণগুলি ব্যবহারের ফলে সময়ের সাথে সাথে ছোট ছোট টুকরো টুকরো হয়ে মাইক্রোপ্লাস্টিক তৈরি করতে পারে।প্লাস্টিকের এই মাইক্রোস্কোপিক টুকরোগুলি তারপর আমাদের জল, মাটি এবং বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। বিশ্বব্যাপী প্লাস্টিকের ব্যাপক ব্যবহার এর অন্যতম কারণ।মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিতি সম্পূর্ণরূপে এড়ানো প্রায় অসম্ভব, কারণ আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সর্বত্র প্লাস্টিক রয়েছে এককথায় মারিয়ানা ট্রেঞ্চ থেকে এন্টার্কটিকা পর্যন্ত সর্বত্র প্লাস্টিক।
গবেষকরা সম্প্রতি মানুষের ফুসফুস, বুকের দুধ এবং এমনকি প্ল্যাসেন্টাল টিস্যুতে মাইক্রোপ্লাস্টিক আবিষ্কার করেছেন।বিজ্ঞানীরা এখনও মানবদেহে মাইক্রোপ্লাস্টিকের প্রভাব অধ্যয়ন করছেন এবং ক্রমবর্ধমানভাবে স্বাস্থ্যের প্রভাবগুলি সম্পর্কে অনুসন্ধান করছেন। সম্প্রতি, দক্ষিণ কোরিয়ার একদল বিজ্ঞানী মানব শরীরে মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিতির উপর গবেষণা পর্যালোচনা করেছেন এবং এটি আমাদের স্বাস্থ্যকে কিভাবে প্রভাবিত করছে তা আবিষ্কার করেছেন।বিজ্ঞানীদের মতে মাইক্রোপ্লাস্টিকের কণাগুলি আমাদের হজমতন্ত্র এবং শ্বাসযন্ত্রকে প্রভাবিত করতে পারে,সেইসাথে এর রাসায়নিক সংযোজন এবং দূষকগুলি অন্তঃস্রাব এবং প্রজনন সিস্টেমের ক্ষতি করতে পারে।
মাইক্রোপ্লাস্টিকগুলি ভেঙে যাওয়ার সাথে সাথে, এর কণাগুলি আমাদের শরীরে এমন জায়গাগুলির মধ্য দিয়ে যায় যেখানে ধারণা করা হয়েছিল যে তারা পৌঁছাতে পারে না, যেমন রক্ত ও মস্তিষ্ক । যদিও মাইক্রোপ্লাস্টিকের স্বাস্থ্যগত প্রভাব সম্পর্কে এখনও অনেক কিছু জানার বাকি আছে।
আরও পড়ুন
Roop Kishor Soni: একটি আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য তুলে ধরেছেন
উত্তরাপথঃ রাজস্থান মানেই ওজনদার রূপার গহনা ,আর তার উপর কারুকাজ। প্রচলিত এই ধারনা ভেঙ্গে আজ রূপোর গহনাকে আধুনিকতার সাথে শিল্পের এক অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন যে ব্যক্তি তিনি হলেন রূপ কিশোরী সোনী(Roop Kishor Soni)।তিনি ২০১৬ সালের ৯ ডিসেম্বর প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির কাছ থেকে তার অসাধারণ শিল্প কর্মের জন্য জাতীয় পুরুস্কার পান। রাজস্থানের জয়সলমেরের শহরের এই শিল্পী ৩.৮ গ্রাম ওজনের ০.৯ সেমি চওড়া রৌপ্য আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য খোদাই করেছেন।এই ছোট রূপার আংটিতে শিল্পী তাজমহল, সিডনি অপেরা হাউস, স্ট্যাচু অফ লিবার্টি, চীনের গ্রেট ওয়াল, আইফেল টাওয়ার, বিগ বেন, পিসার হেলানো টাওয়ার এবং মিশরীয় পিরামিডের চিত্র এক সাথে ফুটিয়ে তুলেছেন।এছাড়াও তিনি আরও দুটি পৃথক ডিজাইনের অত্যাশ্চর্য আংটি তৈরি করেছেন।৮.৬ গ্রাম ওজনের একটি রিংয়ে তিনি সূর্যাস্তের সময় ভারতীয় উট সাফারি সহ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন ভারতীয় বিশেষত্ব ফুটিয়ে তুলেছেন,এবং অন্যটিতে বিভিন্ন হিন্দু দেব-দেবী ছবি এবং মন্দির খোদাই করেছিলেন। শিল্পী বলেছেন যে তিনি তার বাবার কাছ থেকে তার শৈল্পিক দক্ষতা উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছেন। সেই সাথে তিনি বলেন "আমার বাবাও একজন জাতীয় পুরুস্কার প্রাপ্ত শিল্পী ছিলেন। তিনি আমাকে শিল্পের এই দক্ষতা শিখিয়েছিলেন কারণ তিনি পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে শিল্পের ফর্মটিকে বাঁচিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন।" .....বিস্তারিত পড়ুন
ওজন হ্রাস (weight loss) মস্তিষ্কের বার্ধক্যের লক্ষণগুলিকে ধীর করে
উত্তরাপথঃ এপ্রিলে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, শাকসবজি, সামুদ্রিক খাবার এবং গোটা শস্য সমৃদ্ধ একটি ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্য খাওয়া - এমনকি শুধুমাত্র খাদ্যের নির্দেশিকা অনুসরণ করে ওজন হ্রাস (weight loss)মস্তিষ্কের বার্ধক্যের লক্ষণগুলিকে ধীর করে বলে মনে করা হয়।সাম্প্রতি ডিউক ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিনের বিজ্ঞানীদের দ্বারা পরিচালিত, একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে ওজন হ্রাস মস্তিষ্কে বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে ৯ মাস পর্যন্ত ধীর করে (aging process) দিতে পারে। গবেষণায় ৬০ থেকে ৭৮ বছর বয়সের মধ্যে ৪৭ জন অংশগ্রহণকারীকে জড়িত করা হয়েছিল, যাদের প্রত্যেকেরই ওজন বেশি বা স্থূল ছিল এবং তাদের অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যগ্রহণ ছিল। তাদের এলোমেলোভাবে একটি ক্যালোরি-সীমাবদ্ধ গ্রুপ বা একটি নিয়ন্ত্রণ গ্রুপে বরাদ্দ করা হয়েছিল।ক্যালোরি-সীমাবদ্ধতা গোষ্ঠীর সদস্যদের একটি খাদ্য পরিকল্পনা অনুসরণ করে, যার লক্ষ্য ছিল তাদের আনুমানিক প্রয়োজনের চেয়ে ১০ – ১৫% কম ক্যালোরি গ্রহণ করা। অন্যদিকে, নিয়ন্ত্রণ গ্রুপ তাদের খাদ্য পরিবর্তন করেনি .....বিস্তারিত পড়ুন
রাতের ঘামের সমস্যা এবং এ সম্পর্কে আপনি কি করতে পারেন
উত্তরাপথঃ রাতের ঘামের সমস্যা শরীরের কুলিং সিস্টেমের একটি স্বাভাবিক অংশ, তাপ মুক্তি এবং সর্বোত্তম শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে।তবে রাতের ঘাম একটি সাধারণ সমস্যা যা বিভিন্ন কারণে হতে পারে।এর অস্বস্তিকর অনুভূতির জন্য ঘুম ব্যাহত হতে পারে, যার ফলে ক্লান্তি এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে। আপনি যদি রাতে অতিরিক্ত ঘাম অনুভব করেন, তাহলে তার অন্তর্নিহিত কারণটি চিহ্নিত করা এবং এটি মোকাবেলার জন্য কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এখানে রাতের ঘামের কিছু সম্ভাব্য কারণ নিয়ে আলোচনা করা হল।মেনোপজ: যে কেউ, বয়স বা লিঙ্গ নির্বিশেষে, রাতের ঘাম অনুভব করতে পারে। .....বিস্তারিত পড়ুন
Karar Oi Lauh Kapat: কাজী নজরুলের এই গানকে ঘিরে বিতর্কে এ আর রহমান
উত্তরাপথঃ বিতর্কে 'পিপ্পা' ছবির সঙ্গীত পরিচালক অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান।সম্প্রতি কবি কাজী নজরুল ইসলামের পরিবার একটি হিন্দি ছবিতে কবির জনপ্রিয় গান 'করার ঐ লৌহ কাপাত...' (Karar Oi Lauh Kapat )।কিন্তু এ আর রহমানের সঙ্গীত পরিচালনায় ওই গানটি যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে তাতে আপত্তি জানিয়েছে নজরুল পরিবার।বিতর্কের পর যে চুক্তির আওতায় ওই গানটি ছবিতে ব্যবহার করা হয়েছে তা প্রকাশ্যে আনার দাবি তুলেছে কবির পরিবার।'পিপ্পা' শিরোনামের হিন্দি চলচ্চিত্রটি যেখানে (Karar Oi Lauh Kapat )গানটি ব্যবহার করা হয়েছে তা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেওয়া একজন ভারতীয় সেনা সৈনিককে কেন্দ্র করে একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত। ছবির সঙ্গীত পরিচালক অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান। গানের কথা ঠিক রেখেও সুর পাল্টানোর অভিযোগে ভারত ও বাংলাদেশে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।কবির পরিবারের অভিযোগ, গানটি ব্যবহারের অনুমতি দিলেও সুর পরিবর্তনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।পরিবারের সদস্যরাও ছবিটি থেকে গানটি বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। .....বিস্তারিত পড়ুন