শিক্ষার বেহাল দশা

ছবি -প্রতীকী

মৈত্রেয়ী চৌধুরী: এ যেন শিক্ষার এক শিক্ষার বেহাল দশা। যে শিক্ষা সমাজ তথা দেশকে সমৃদ্ধশালী তৈরি করে সেই আসল শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার শিশুরা আজ হারিয়ে যাচ্ছে । অথচ আজ দেখা যাচ্ছে অন্য চিত্র। একজন বাবা মায়ের চোখে সন্তানের পড়াশোনা মানে মার্কসিটের লড়াই। সন্তান কতখানি লেখাপড়া শিখতে তাতে অধিকাংশ বাবা-মায়ের কোনো আগ্রহ নেই। কতখানি মার্কস পেয়ে ছেলে বা মেয়েটি মার্কসের লড়াই তে এগোতে পারছে তাতে মরিয়া প্রচেষ্টা সন্তানের চেয়ে বাবামায়ের। নম্বরের খাতা চওড়া করতে গার্জেন মিটিং এ বিষয়ে শিক্ষক শিক্ষিকাদের অনুরোধ পর্যন্ত করেন তারা যেন ক্লাসে গাইড বই হলো করান। মানেটা স্পষ্ট হলো তো? অর্থাৎ শিক্ষক শিক্ষিকাদের পড়াশোনা বোঝাতে বা শেখাতে হবে না, বলা ভালো পড়াশোনার বিষয়ে শুধু নোট বুক হলো করিয়ে রেজাল্টটা যেন ওজনে বাড়ে। ভাবতে পারছেন?আমাদের শিক্ষার বেহাল দশা আজ এখন কোথায় পৌঁছেছে। এবার আপনারা ভাবছেন তো এমনটা আবার হয় নাকি?
হয় মানে ঘটে চলেছে । আমি নিজে একজন শিক্ষিকা হয়ে বিষয়টি বেশ কিছু দিন ধরেই নোটিশ করছি। আশ্চর্য হচ্ছি ভেবে সার্বিক মূল্যবোধ কোথায় এসে দাঁড়িয়েছে। আমি একজন পশ্চিমবঙ্গ বাসিনী।
বর্তমানে সরকার মেয়েদের উন্নয়নকল্পে কন্যাশ্রী, শিক্ষাশ্রী, সবুজ সাথী , ড্রেস,বই সাইকেল, মিড ডে মিল এই রকমভাবে নানা সাহায্য দিচ্ছেন তবু পড়াশোনার বেহাল দশা। টেক্সট বই পড়ার অভ্যেস একদম নেই বর্তমান ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে। অল্প পড়াশোনায় নম্বর বেশী পাওয়ার চাহিদা

পড়ুয়াদের থেকে অভিভাবক সকলের।তাতে বিষয়ের গভীরে ঢোকার বিষয়টি অথই জলে।
নোট বই পড়ে নিও -এইসব কথা বলে পড়াশোনার চেয়ে ক্লাসে বিষয় বহির্ভূত ব্যাপার  নিয়ে গল্প করে সময় কাটায় যে সব শিক্ষকেরা তাদেরই গ্রহনযোগ্যতা বেশী এখন পড়ুয়াদের থেকে অভিভাবক সকলের কাছে। তবে এরই মাঝে যেসব অভিভাবকেরা একটু সচেতন তারা তো আজ ব্যতিক্রম । সত্যই সেলুকাস কি বিচিত্র এই দেশ —— কথাটি বলতেই হয়। আজ প্রকৃত শিক্ষার সঙ্কটজনক অবস্থা। এইভাবে চলতে থাকলে দেশ তথা সমাজের অবস্থা রসাতলে যেতে আর দেরী নেই। অন্ধকার থেকে প্রকৃত আলোর দিকে যেতে না দিলে আগামী দিন ভাবতে হবে রাজ্য তথা দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে।

অর্জন করার মধ্যে দিয়ে কিভাবে রাজ্যকে নিয়ে যাওয়া যায়  সে কথা আমাদের প্রশাসনের লোকেদের ভাবা উচিত কারণ আমাদের ভালো থাকা খারাপ থাকার যাবতীয় আইন তারাই তো নির্ধারণ  করে। ভিক্ষাবৃত্তি নয় অর্জন করাটাই শেষ কথা হতে হবে।

অর্থাৎ  বর্তমানে পড়ুয়া থেকে মায়েরা পর্যন্ত বিভিন্ন প্রকল্পের দরুন বসে বসে যেভাবে টাকা পেয়ে যাচ্ছে, কোনো পরিশ্রম ছাড়া ,তাতে তাদের কাজের ইচ্ছেটা চলে গেছে । এমনটা যদি হতো এই টাকাগুলো পাওয়ার জন্য স্কিম থাকত যেমন ছাত্রছাত্রীদের ক্লাসের পারফর্মেন্সের উপর , ক্লাস ভিত্তিক পরীক্ষাগুলোর উপর ভিত্তি করে যদি প্রকল্পের টাকাগুলো দেওয়া হত এই রকম সিস্টেম চালু থাকলে পড়াশোনার পরিবেশ স্কুলগুলোতে চালু থাকতো। আর মুক্ত কন্ঠে বলা যেতো—-

জগৎ সভায় আমরা আবার শ্রেষ্ঠ আসন লব।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


Vijay Stambh : চিতোরগড় দুর্গে বিজয় স্তম্ভ হিন্দু – মুসলিম সহাবস্থানের প্রতীক

উত্তরাপথঃ খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীতে মৌর্য রাজবংশ কর্তৃক স্থাপিত চিতোরগড় দুর্গ সাহস ও আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে আজও দাঁড়িয়ে আছে। এই দুর্গ তার বিশাল কাঠামো, রাজপ্রাসাদ, একাধিক  সুদৃশ্য মন্দির সহ সুন্দর জলাশয়ের জন্য বিখ্যাত।৭০০-একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, এই দুর্গটিতে প্রায় ৬৫টি ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন রয়েছে যা রাজপুত এবং ইসলামিক স্থাপত্য শৈলীর সূক্ষ্মতার প্রমান দেয়। বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh)) হল এই দুর্গে অবস্থিত,সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর কাঠামো।এই আশ্চর্য-অনুপ্রেরণামূলক স্তম্ভটি কেবল তার উচ্চতার জন্য বিখ্যাত নয়,এটি রাজপুতদের অদম্য সাহস এবং অধ্যবসায়ের গল্পও বলে যা চিতোরগড় দুর্গেরই সমার্থক হয়ে উঠেছে।বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh), নাম থেকে বোঝা যায়, বিজয়ের প্রতীক।  প্রাচীনকালে যে কোনো যুদ্ধ অভিযানের সাফল্যের পর সেই বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতে রাজারা মন্দির, স্তূপ, স্মৃতিস্তম্ভ ও স্তম্ভ নির্মাণ করতেন।  ৯ তলা এই বিজয় স্তম্ভটি ১৯৪০ থেকে ১৪৪৮ সালের মধ্যে মহারানা কুম্ভ দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন

NASA Carbon Emission: পৃথিবী কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করার চেয়ে বেশি নির্গত করছে

উত্তরাপথঃ কার্বন নির্গমন (NASA Carbon Emission) সম্পর্কে নাসার সর্বশেষ আবিষ্কার পৃথিবীর জন্য এক সতর্কতা সংকেত। মহাকাশ সংস্থার মতে, পৃথিবী কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করার চেয়ে বেশি নির্গত করছে, যার ফলে গ্রিনহাউস গ্যাসের বায়ুমণ্ডলীয় ঘনত্ব উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। NASA এর এই আবিষ্কারটি জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য কারণ হিসাবে দেখা যেতে পারে, সেইসাথে কার্বন নিঃসরণ কমানোর জন্য জরুরি পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার উপর আলোকপাত করেছে।নাসার সর্বশেষ গবেষণায় যে তথ্য উঠে এসেছে তাতে পৃথিবীর মহাসাগর এবং ভূমি-ভিত্তিক বাস্তুতন্ত্র আগের চেয়ে কম কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করছে। গবেষণায় দেখা গেছে যে গত এক দশকে ভূমি এবং মহাসাগর দ্বারা শোষিত কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ ৫% হ্রাস পেয়েছে, যার ফলে গ্যাসের বায়ুমণ্ডলীয় ঘনত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। .....বিস্তারিত পড়ুন

সেলফির উচ্চ রেটিং কি আপনাকে আরওপাতলা হতে উৎসাহিত করছে ?

উত্তরাপথঃ সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে সেলফি তোলা এবং নিজেকে পাতলা হিসাবে দেখানোর মধ্যে একটি সম্পর্ক থাকতে পারে। যুক্তরাজ্যের ইয়র্ক সেন্ট জন ইউনিভার্সিটির রুথ নাইট এবং ইউনিভার্সিটি অফ ইয়র্কের ক্যাথরিন প্রেস্টন সম্প্রতি PLOS ONE জার্নালে তাদের ফলাফল প্রকাশ করেছেন।সেখানে সেলফির উচ্চ রেটিং এবং আমাদের শরীরের গঠনের মধ্যে যোগসূত্র খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে।    বর্তমান সোশ্যাল মিডিয়ায় সেলফি হল এক জনপ্রিয় ছবি দেওয়ার ধরন। যিনি সেলফি তোলেন তিনি ক্যামেরাকে তাদের শরীর থেকে দূরে রেখে নিজেই নিজের ছবি তোলে। আগের গবেষণায় বলা হয়েছে সেলফিগুলি দেখার ফলে ছবির বিষয়গুলি সম্পর্কে দর্শকদের সিদ্ধান্ত প্রভাবিত হতে পারে। .....বিস্তারিত পড়ুন

Fructose: নতুন গবেষণায় ফ্রুক্টোজকে স্থূলতার কারণ বলা হয়েছে

উত্তরাপথঃ একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় জোরালো প্রমাণ দেওয়া হয়েছে যে ফ্রুক্টোজ (Fructose), সাধারণত প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং পানীয়গুলিতে থাকা এক ধরনের চিনি, যা স্থূলতার প্রাথমিক চালক। বছরের পর বছর ধরে, পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা , পাশ্চাত্য খাদ্যে, স্থূলতার মূল কারণ নিয়ে বিতর্ক করেছেন, কেউ কেউ অত্যধিক ক্যালোরি গ্রহণের দিকে ইঙ্গিত করেছেন, অন্যরা কার্বোহাইড্রেট বা চর্বি জাতীয় খাবারকে দায়ী করেছেন। Obesity জার্নালে সাম্প্রতিক একটি গবেষণাপত্রে ফ্রুক্টোজকে স্থূলতার প্রকৃত চালক হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।The University of Colorado Anschutz Medical Campus এর Dr. Richard Johnson এবং তার দলের মতে, ফ্রুক্টোজ হল একটি সাধারণ চিনি যা ফল এবং মধুর প্রাথমিক পুষ্টি। .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top