সম্পাদকীয়

আমাদের নতুন ভাষা ইমোজি

প্রযুক্তি ও বিশ্বায়ন আজ সব ভাষার শেকড় নাড়িয়ে দিয়েছে।  ভাষার ঐতিহ্যগত কাঠামো আজ ভেঙে পড়ছে বলে মনে হচ্ছে। নিজস্ব ভাষা ঐতিহ্য ধরে রাখতে ২১ ফেব্রুয়ারী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন হয়ে গেল। আজ দেশের বিভিন্ন রাজ্যের ভাষার মানুষ যেমন মনে করে যে হিন্দির কারণে তাদের ভাষার প্রভাব কমে যাচ্ছে, ঠিক একইভাবে ইংরেজির কারণে হিন্দির প্রসার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে মনে করেন বিপুলসংখ্যক হিন্দিপ্রেমী।  কিন্তু ইংরেজির ক্ষেত্রে কী হবে?  সম্প্রতি তথ্যে প্রকাশ যুক্তরাজ্যের তরুণ ছাত্ররা ইংরেজি শব্দের সঠিক বানানকে অবহেলা করছে। যখন আমরা একটি পূর্ণাঙ্গ এবং শক্তিশালী ভাষার কথা চিন্তা করি, তখন আমাদের মনে কিছু বিষয় উঠে আসে।  যেমন, এটির একটি উন্নত স্ক্রিপ্ট থাকতে এবং সেইসাথে একটি  বিশাল শব্দ জগত  এবং বহু সাংখ্যক মানুষের কথোপকথনের এক মাধ্যম হবে। এর নিজস্ব সাহিত্য থাকবে, যা মানুষ পড়বে। আজকের কোন ভাষা কি এই ঐতিহ্যগত মানদণ্ডের দাবি মেনে চলে? হিংলিশ এবং বেংলিশের মতো নতুন ভাষার রূপগুলি ইংরেজি ব্যাকরণের প্রয়োজনীয়তাকে ব্যাপকভাবে সংকুচিত করেছে। 

আমাদের নতুন প্রজন্মের মধ্যে একটি নতুন ভাষা গড়ে উঠছে। যে ভাষার সঠিক কোনও বানান নেই, নেই কোনও শব্দ ভাণ্ডার আর কোনও ব্যাকরণ। এই নতুন ভাষা  আমাদের ঐতিহ্যগত ভাষার পরিসরকে সংকুচিত করছে। আর এই নতুন ভাষার নাম ইমোজি। এই ভাষাকে আমরা উপেক্ষা করতে পারি না। অনেক ধরণের ছোট অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে মনের ভাব প্রকাশ করে ইমোজি। আপনি যদি কিছু পছন্দ করেন তবে একটি সম্পূর্ণ বাক্য লিখতে হবে না একটি ইমোজি ব্যবহার করলেই আপনি আপনার মনের ভাব বোঝাতে পারবেন আবার কোনো কিছুর উপর আপনার মতামত প্রকাশ করতে চান তার জন্য ভালো শব্দ খুঁজে বের করার দরকার নেই একটি ইমোজি যথেষ্ট।  এমনকি ইমোজি দিয়ে পুরো প্রেমপত্র লেখা যায়।সোশাল প্লাটফর্মগুলিতে এখন ইমোজির যথেচ্ছ ব্যবহার চোখে পড়ছে।  গুগল, টুইটার, ফেসবুক হয়াটসঅ্যাপ ছাড়াও এখন বহুজাতিক কোম্পানিগুলিও তাদের প্রচারে ইমোজি ব্যবহার করছে। এখন অনলাইনে ৯২ শতাংশ মানুষ প্রতিদিন ইমোজি ব্যবহার করে এবং ১০ বিলিয়নেরও বেশী ইমোজি পাঠানো হয়। এটি মানুষের মধ্যে ভাষাগত যোগাযোগ পরিবর্তনের একটি উদাহরণ।

ভাষার এই অবক্ষয় ঠেকাতে ইংল্যান্ড, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, নিউজিল্যান্ড, কানাডা, বাহামা, জ্যামাইকা, গায়ানা, দক্ষিণ আফ্রিকা এমনকি এশিয়ার দেশগুলোতেও তরুণ শিক্ষার্থীদের বানান প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত করছে।  তাদের উৎসাহ দিতে পুরুস্কৃত করা হচ্ছে।সেই সব দেশের সরকার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তাদের নতুন প্রজন্মের মধ্যে ইংরেজি বানান সংরক্ষণ করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছে।  কিন্তু ভাষা সংরক্ষণের সমস্ত ব্যবস্থা সত্ত্বেও আজ ইংরেজি নিজেকে সামলাতে সক্ষম নয়।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


সেলফির উচ্চ রেটিং কি আপনাকে আরওপাতলা হতে উৎসাহিত করছে ?

উত্তরাপথঃ সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে সেলফি তোলা এবং নিজেকে পাতলা হিসাবে দেখানোর মধ্যে একটি সম্পর্ক থাকতে পারে। যুক্তরাজ্যের ইয়র্ক সেন্ট জন ইউনিভার্সিটির রুথ নাইট এবং ইউনিভার্সিটি অফ ইয়র্কের ক্যাথরিন প্রেস্টন সম্প্রতি PLOS ONE জার্নালে তাদের ফলাফল প্রকাশ করেছেন।সেখানে সেলফির উচ্চ রেটিং এবং আমাদের শরীরের গঠনের মধ্যে যোগসূত্র খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে।    বর্তমান সোশ্যাল মিডিয়ায় সেলফি হল এক জনপ্রিয় ছবি দেওয়ার ধরন। যিনি সেলফি তোলেন তিনি ক্যামেরাকে তাদের শরীর থেকে দূরে রেখে নিজেই নিজের ছবি তোলে। আগের গবেষণায় বলা হয়েছে সেলফিগুলি দেখার ফলে ছবির বিষয়গুলি সম্পর্কে দর্শকদের সিদ্ধান্ত প্রভাবিত হতে পারে। .....বিস্তারিত পড়ুন

দীপাবলির সময় কেন পটকা ফোটানো নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা যায় না ?

উত্তরাপথঃ দীপাবলির পরের দিন, যখন কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (CPCB) শহরের বায়ু মানের সূচকের তালিকা প্রকাশ করে,তখন  দেখা যায় রাজধানী দিল্লি বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দূষিত শহরের প্রথমেই রয়েছে। CPCB-এর মতে, ১২ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় দিল্লির বায়ু মানের সূচক ছিল ২১৮ যা ভোরের দিকে বেড়ে ৪০৭ এ পৌঁছায় । ৪০০ – ৫০০ AQI  এর স্তর সুস্থ ব্যক্তিদের প্রভাবিত করে। দীপাবলির সারা রাত, লোকেরা পটকা ফাটিয়ে দীপাবলি উদযাপন করে। ১৩ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আবার তথ্য প্রকাশ করে এই তালিকায়, দিল্লির গড় বায়ু মানের সূচক ছিল ৩৫৮ যা 'খুব খারাপ' বিভাগে পড়ে।   বায়ু দূষণের এই পরিস্থিতি শুধু দিল্লিতেই সীমাবদ্ধ ছিল না।  নয়ডার বায়ু মানের সূচক ১৮৯ থেকে ৩৬৩ এ এবং রোহতক, হরিয়ানার ১৩৭ থেকে বেড়ে ৩৮৩ হয়েছে। দীপাবলির দুই দিন দিল্লি ,নয়ডা  ,কলকাতা, মুম্বাই সহ দেশের অন্যান্য শহরেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। এই দিনগুলিতে মানুষ বিষাক্ত বাতাসে শ্বাস নিতে বাধ্য হয়েছে। ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জাতীয় রাজধানী দিল্লি এবং নয়ডায় সবুজ পটকা ছাড়া যে কোনও ধরণের আতশবাজি ফাটান সম্পূর্ণ রূপে নিষিদ্ধ। আদালত সবুজ পটকা পোড়ানোর সময়ও নির্ধারণ করে দিয়েছে রাত ৮টা থেকে ১০টা। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে সুপ্রিম কোর্টের এই আদেশের মানে কী?  আদালতের এই আদেশ কি এখন প্রত্যাহার করা উচিত?  পুলিশ কেন এই আদেশ কার্যকর করতে পারছে না?  এর জন্য কি পুলিশ দায়ী নাকি সরকারের উদাসীনতা রয়েছে এর পেছনে? .....বিস্তারিত পড়ুন

Roop Kishor Soni: একটি আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য তুলে ধরেছেন

উত্তরাপথঃ রাজস্থান মানেই ওজনদার রূপার গহনা ,আর তার উপর কারুকাজ। প্রচলিত এই ধারনা ভেঙ্গে আজ রূপোর গহনাকে আধুনিকতার সাথে শিল্পের এক অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন যে ব্যক্তি তিনি হলেন রূপ কিশোরী সোনী(Roop Kishor Soni)।তিনি ২০১৬ সালের ৯ ডিসেম্বর প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির কাছ থেকে তার অসাধারণ শিল্প কর্মের জন্য জাতীয় পুরুস্কার পান। রাজস্থানের জয়সলমেরের শহরের এই শিল্পী ৩.৮ গ্রাম ওজনের ০.৯ সেমি চওড়া রৌপ্য আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য খোদাই করেছেন।এই ছোট রূপার আংটিতে শিল্পী তাজমহল, সিডনি অপেরা হাউস, স্ট্যাচু অফ লিবার্টি, চীনের গ্রেট ওয়াল, আইফেল টাওয়ার, বিগ বেন, পিসার হেলানো টাওয়ার এবং মিশরীয় পিরামিডের চিত্র এক সাথে ফুটিয়ে তুলেছেন।এছাড়াও তিনি আরও দুটি পৃথক ডিজাইনের অত্যাশ্চর্য আংটি  তৈরি করেছেন।৮.৬ গ্রাম ওজনের একটি রিংয়ে তিনি সূর্যাস্তের সময় ভারতীয় উট সাফারি সহ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন ভারতীয় বিশেষত্ব ফুটিয়ে তুলেছেন,এবং অন্যটিতে বিভিন্ন হিন্দু দেব-দেবী ছবি এবং মন্দির খোদাই করেছিলেন। শিল্পী বলেছেন যে তিনি তার বাবার কাছ থেকে তার শৈল্পিক দক্ষতা উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছেন। সেই সাথে তিনি বলেন "আমার বাবাও একজন জাতীয় পুরুস্কার প্রাপ্ত শিল্পী ছিলেন। তিনি আমাকে শিল্পের এই দক্ষতা শিখিয়েছিলেন কারণ তিনি পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে শিল্পের ফর্মটিকে বাঁচিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন।" .....বিস্তারিত পড়ুন

প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে

উত্তরাপথঃ হঠাৎ করেই একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে।২০২৩ এর ৩০ অক্টোবর  প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি মৃত আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত একটি নতুন দ্বীপের জন্ম দিয়েছে। বিস্ফোরণের পর জাপানের ওগাসাওয়ারা দ্বীপ চেইনের কাছে বিশাল বিশাল পাথরের টুকরো দেখা গেছে। এ বিষয়ে জাপানি গবেষক বলেন, গত মাসে প্রশান্ত মহাসাগর জলের নিচে আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের পর টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে ইওটো দ্বীপের কাছে একটি ছোট নতুন দ্বীপের উদ্ভব হয়েছে।টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকম্প গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ফুকাশি মায়েনো জানিয়েছেন যে নতুন দ্বীপ, এখনও যার নাম নেই প্রশান্ত মহাসাগরের ইওটো দ্বীপ থেকে ১ কিলোমিটার দূরে ১০০ মিটার ব্যাসের একটি পাথুরে দ্বীপে একটি phreatomagmatic বিস্ফোরণ ঘটেছে। টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে বিস্ফোরণটি দেখা গেছে। ভূপৃষ্ঠের নীচে জলের সাথে লাল গরম ম্যাগমা সংঘর্ষের কারণে প্রতি কয়েক মিনিটে বিস্ফোরণ ঘটে।গত ২১ অক্টোবর, ২০২৩-এ অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়েছিল, যা আগে ইও জিমা নামে পরিচিত ছিল এবং এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের স্থান ছিল। প্রায় ১০ দিন ধরে অগ্ন্যুৎপাত চলার পর, আগ্নেয়গিরির উপাদান অগভীর সমুদ্রতলের উপর জমা হয় এবং প্রায় ১৬০ ফুট পর্যন্ত উচ্চতায় বড় বড় পাথরের আকারে সমুদ্র পৃষ্ঠের উপরে উঠে আসে। .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top