স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে কড়া বার্তা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের

উত্তরাপথঃ স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে বেসরকারি নার্সিং হোমের বিরুদ্ধে অভিযোগ সাধারণ মানুষের দীর্ঘদিনের । এবার সেই অভিযোগকে মান্যতা দিয়ে বেসরকারি নার্সিং হোমের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন রাজ্যের প্রতিটি নার্সিং হোমকে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড গ্রহণ করতে হবে। আর তা না করলে বাতিল করা হবে ওই বেসরকারি হাসপাতালগুলির লাইসেন্স। সোমবার রাজ্যের বিধানসভা অধিবেশন থেকে তেমনটাই জানালেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে সংক্রামক রোগীদের সঠিক চিকিৎসা ব্যবস্থা করতে উত্তরবঙ্গে একটি আইডি হাসপাতাল তৈরি করার কথাও ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী।

প্রসঙ্গত রাজ্যের বিধানসভা অধিবেশনে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকা রোগীদের ভর্তি করা নিয়ে বেসরকারি হাসপাতালগুলির বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠেছে। সেই সংক্রান্ত একটি প্রশ্ন তোলেন শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শংকর ঘোষ।সেই প্রশ্নের জবাবে মুখ্যমন্ত্রীর সাফ জানিয়ে দেন, সরকারি হাসপাতালগুলি স্বাস্থ্যসাথী কার্ড গ্রহণ না করলে তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হবে।

কিন্তু এই কার্ড নিয়ে চলতে থাকা এই বিতর্ক নতুন কিছু নয়। এই কার্ড চালু হওয়ার পর থেকেই প্রায়ই নানা অভিযোগের কথা শোনা যায়। বিশেষ করে বেসরকারি হাসপাতাল তথা স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলির দিকেই অভিযোগের আঙুল ওঠে।এই কার্ডে চিকিৎসা পরিষেবা পেতে সাধারণ মানুষকে বেসরকারি হাসপাতালে যে অবস্থার মধ্যে দিয়ে যেতে হ্যতা ভুক্তভোগী মাত্র জানেন। তবে এই বিষয়ে চলতি সমস্যার সমাধান করতে এই বছরের মার্চ মাসে ‘প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট ইউনিট’ (পিএমইউ) গড়ার কথাও ঘোষণা করেছিল রাজ্য সরকার। এই পিএমইউ গঠন হয়ে গেলে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ফিরিয়ে দেওয়া নিয়ে যে সমস্ত হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে, তাদের বিরুদ্ধে চটজলদি ব্যবস্থা নিতে পারবে রাজ্য সরকার। কোনও হাসপাতালে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নেওয়া না হলে তা কেন নেওয়া হচ্ছে না, তাও জানতে চাইবে এই পিএমউই। অনলাইন ও অফলাইন দু’টি পদ্ধতিতে নিজেদের অভিযোগ জানাতে পারবে আম জনতা। ইতিমধ্যেই সেই নিয়ে কাজ অনেকখানি এগিয়েছে বলে সরকারি সূত্রে খবর।

তবে  বাস্তবে  ‘প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট ইউনিট” কতটা সফল হবে তা সময় বলবে। এর আগেও মুখ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্যসাথী কার্ড গ্রহণ না করা নিয়ে  বহুবার বেসরকারি হাসপাতালগুলির বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ দিয়েছেন ,কিন্তু বাস্তবে তেমন তার ফল পাওয়া যায়নি ।অন্যদিকে এই কার্ড নিয়ে পরিষেবা দেওয়ার ব্যাপারে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বেসরকারি হাসপাতালগুলি একাধিক অভিযোগ তুলেছেন।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


সম্পাদকীয়-  রাজনৈতিক সহিংসতা ও আমাদের গণতন্ত্র

সেই দিনগুলো চলে গেছে যখন নেতারা তাদের প্রতিপক্ষকেও সম্মান করতেন। শাসক দলের নেতারা তাদের বিরোধী দলের নেতাদের কথা ধৈর্য সহকারে শুনতেন এবং তাদের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতেন।  আজ রাজনীতিতে অসহিষ্ণুতা বাড়ছে।  কেউ কারো কথা শুনতে প্রস্তুত নয়।  আগ্রাসন যেন রাজনীতির অঙ্গ হয়ে গেছে।  রাজনৈতিক কর্মীরা ছোটখাটো বিষয় নিয়ে খুন বা মানুষ মারার মত অবস্থার দিকে ঝুঁকছে। আমাদের দেশে যেন রাজনৈতিক সহিংসতা কিছুতেই শেষ হচ্ছে না।আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার চেয়ে রাজনৈতিক সংঘর্ষে বেশি মানুষ নিহত হচ্ছেন।  ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি) অনুসারে, ২০১৪ সালে, রাজনৈতিক সহিংসতায় ২৪০০ জন প্রাণ হারিয়েছিল এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ২০০০ জন মারা গিয়েছিল।  আমরা পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্র হিসেবে আমাদের দেশের গণতন্ত্রের জন্য গর্বিত হতে পারি, কিন্তু এটা সত্য যে আমাদের সিস্টেমে অনেক মৌলিক সমস্যা রয়েছে যা আমাদের গণতন্ত্রের শিকড়কে গ্রাস করছে, যার জন্য সময়মতো সমাধান খুঁজে বের করা প্রয়োজন। .....বিস্তারিত পড়ুন

বিশ্বকাপ ২০২৩: পাকিস্তানকে হারিয়ে Afghanistan এ ঈদের মতো পরিস্থিতি

আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপ ২০২৩-এর ২২ তম ম্যাচে আফগানিস্তান পাকিস্তানকে বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করেছে। সেই ম্যাচে পাকিস্তানকে ৮ উইকেটে হারিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করে আফগানিস্তান। এই প্রথম ওয়ানডেতে পাকিস্তানকে হারাল আফগানিস্তান আর এই পাকিস্তানকে হারিয়ে আফগানিস্থানে(Afghanistan)এখন ঈদের মতো পরিস্থিতি।এক আফগানিস্থানি সমর্থকের মতে এটি ছিল আমাদের ইতিহাসের একটি বিরল মুহূর্ত যখন পুরো জাতি খুশি ছিল এবং নিজেদের মত করে তারা তাদের এই খুশী উদযাপন করেছেন। এক্স হ্যান্ডেলে এক সমর্থকের মতে, সেদিন উদযাপন ছিল, পার্টি ছিল। এটি ছিল আমাদের ইতিহাসের একটি বিরল মুহূর্ত যখন পুরো জাতি খুশি ছিল এছাড়াও, এটি ছিল ২০২৩ বিশ্বকাপের তৃতীয় বড় আপসেট । টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় বাবর আজমের দল। প্রথমে ব্যাট করে পাকিস্তান দল ২৮২ রান করে। জবাবে আফগানিস্তান দল ২৮৩ রান তাড়া করে ৪৯ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্য অর্জন করে। এই ম্যাচে হারের পর বেশ ক্ষুব্ধ দেখাচ্ছিল অধিনায়ক বাবর আজমকে। ম্যাচ-পরবর্তী উপস্থাপনার সময়, তিনি দলের ত্রুটিগুলি তালিকাভুক্ত করেছিলেন এবং পরাজয়ের জন্য নিজেদের দায়ী করেছিলেন। .....বিস্তারিত পড়ুন

Vijay Stambh : চিতোরগড় দুর্গে বিজয় স্তম্ভ হিন্দু – মুসলিম সহাবস্থানের প্রতীক

উত্তরাপথঃ খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীতে মৌর্য রাজবংশ কর্তৃক স্থাপিত চিতোরগড় দুর্গ সাহস ও আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে আজও দাঁড়িয়ে আছে। এই দুর্গ তার বিশাল কাঠামো, রাজপ্রাসাদ, একাধিক  সুদৃশ্য মন্দির সহ সুন্দর জলাশয়ের জন্য বিখ্যাত।৭০০-একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, এই দুর্গটিতে প্রায় ৬৫টি ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন রয়েছে যা রাজপুত এবং ইসলামিক স্থাপত্য শৈলীর সূক্ষ্মতার প্রমান দেয়। বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh)) হল এই দুর্গে অবস্থিত,সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর কাঠামো।এই আশ্চর্য-অনুপ্রেরণামূলক স্তম্ভটি কেবল তার উচ্চতার জন্য বিখ্যাত নয়,এটি রাজপুতদের অদম্য সাহস এবং অধ্যবসায়ের গল্পও বলে যা চিতোরগড় দুর্গেরই সমার্থক হয়ে উঠেছে।বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh), নাম থেকে বোঝা যায়, বিজয়ের প্রতীক।  প্রাচীনকালে যে কোনো যুদ্ধ অভিযানের সাফল্যের পর সেই বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতে রাজারা মন্দির, স্তূপ, স্মৃতিস্তম্ভ ও স্তম্ভ নির্মাণ করতেন।  ৯ তলা এই বিজয় স্তম্ভটি ১৯৪০ থেকে ১৪৪৮ সালের মধ্যে মহারানা কুম্ভ দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন

ফ্লিম রিভিউ -ওপেনহাইমার

উত্তরাপথ: বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্রিস্টোফার নোলান দ্বারা পরিচালিত”ওপেনহাইমার” একটি মাস্টারপিস মুভি। ছবিতে জে. রবার্ট ওপেনহেইমার, এক নামকরা পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পারমাণবিক বোমার বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।এই সিনেমায় ওপেনহাইমার এর জটিল জীবনকে বর্ণনা করা হয়েছে। সেই হিসেবে 'ওপেনহাইমার'কে বায়োপিক বলা যেতে পারে।  কারণ এটি একজন মানুষের গল্প। এই ছবির গল্প তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত।ছবির শুরুতে পারমাণবিক বোমা তৈরির আবেগের কথা বলা হয়েছে।  যেখানে নায়ক কিছু না ভেবে নিবেদিতপ্রাণভাবে এমন একটি অস্ত্র তৈরিতে নিয়োজিত থাকে যা বিশ্বকে ধ্বংস করতে পারে।  অস্ত্র তৈরি হওয়ার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে নায়ক তার কাজের ফলাফল দেখে অপরাধবোধে পূর্ণ হয়।  এবং তৃতীয় পর্যায়টি হল রাজনীতি  যা ওপেনহাইমারকে মোকাবেলা করতে হয়েছে।  পুরো সিনেমাটি রঙিন হলেও রাজনৈতিক অংশ সাদা-কালো রাখা হয়েছে।  এই তিনটি সময়কালে যা কিছু ঘটছে, তা সবই একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত। .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top