

উত্তরাপথঃ সারা বিশ্বে হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের ঘটনা দ্রুত বাড়ছে। সেইসাথে বাড়ছে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বহু মানুষের মৃত্যুর ঘটনা। কিন্তু, সমস্যা হল হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আগে, অনেকেই বুঝতে পারেন না যে তাদের সাথে এমন কিছু হতে পারে। যে কারণে অনেক সময় তথ্যের অভাবে এবং হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ না বোঝার কারণে অনেকের জীবন বাঁচানো কঠিন হয়ে পড়ে।সেইকারনে, ডাক্তার এবং স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের দ্বারা সর্বদা একটি স্বাস্থ্যকর জীবনধারা অবলম্বন করার এবং কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সমস্ত পরীক্ষা করানো এবং তাদের রিপোর্টগুলিকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
সম্প্রতি, দ্য নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিনে প্রকাশিত একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, দুটি রক্ত পরীক্ষার সাহায্যে অনেক বছর আগে থেকেই হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি শনাক্ত করা যায়। এই রিপোর্ট অনুসারে, হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি প্রায় ৩০ বছর আগে হার্টের স্বাস্থ্যের অবস্থার ভিত্তিতে অনুমান করা যেতে পারে।
এখন পর্যন্ত হৃদরোগের স্বাস্থ্য জানতে, ডাক্তাররা প্রায়শই রক্ত পরীক্ষা বা ইসিজি পরীক্ষা করার পরামর্শ দেন। এই পরীক্ষাগুলিকে , খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা চিহ্নিতকারী হিসাবে দেখা হয়। খারাপ কোলেস্টেরল বা এলডিএলকে হার্ট অ্যাটাকের জন্য একটি ঝুঁকির কারণ হিসাবে বিবেচনা করা হয় এবং এটিকে বাড়তে না দেওয়ার জন্য লোকেদের সমস্ত প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
কিন্তু এই নতুন গবেষণার প্রধান লেখক ডক্টর পল রিডকারের মতে, আগে এলডিএল বা খারাপ কোলেস্টেরলের সাহায্যে বোঝা যেত না মানুষের হার্ট কতটা সুস্থ। কিন্তু, প্রায় ৩০ দশকের গবেষণার পরে, সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে সি-রিঅ্যাকটিভ প্রোটিন বা সিআরপি এবং লাইপোপ্রোটিন দুটি নতুন বায়ো মার্কার হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে হার্টের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে।
গবেষকরা বলছেন যে সি-রিঅ্যাকটিভ প্রোটিন এবং লাইপোপ্রোটিন পরীক্ষা করা এবং এই নতুন পরীক্ষার রিপোর্টের ভিত্তিতে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বোঝা এবং মানুষের জীবন বাঁচাতে সাহায্য করতে পারে।
এছাড়াও আপনি যদি আপনার হার্টকে প্রাকৃতিক ভাবে সুস্থ রাখতে চান তবে আপনি কিছু স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে পারেন।যেমন,
তাজা ফল ও শাকসবজি খান
আপনার হার্টকে সুস্থ রাখতে আপনার খাদ্যতালিকায় বিভিন্ন রঙিন ফল ও শাকসবজি অন্তর্ভুক্ত করুন। প্রধানত আপনার খাদ্যতালিকায় শাক, টমেটো, গাজর এবং আপেল ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত করুন। শাক সবজি নাইট্রেট সমৃদ্ধ, যা ধমনী খোলা রাখতে এবং রক্ত সঞ্চালন উন্নত করতে সহায়ক হতে পারে। আপেলে রয়েছে প্রিবায়োটিক, যা উপকারী অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়াকে পুষ্ট করে। এটি হার্টের স্বাস্থ্যেরও উন্নতি করতে পারে।
প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করুন
হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে, প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করুন। এর জন্য আপনার খাদ্যতালিকায় চর্বিহীন মাংস, মাছ, ডিম, বাদাম, বীজ এবং সয়া জাতীয় পণ্য যোগ করুন। এর পাশাপাশি, স্যামন, সার্ডিন এবং ট্রাউটের মতো তৈলাক্ত মাছে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ, যা আপনার হৃদয়কে সুস্থ রাখতে পারে।
স্বাস্থ্যকর চর্বি গুরুত্বপূর্ণ
আপনার হৃদয় নিরাপদ রাখতে, আপনার খাদ্যে স্বাস্থ্যকর চর্বি যোগ করুন। প্রধানত ক্যানোলা, অলিভ অয়েল, তিলের তেল, সূর্যমুখী এবং সয়াবিন তেলে মনোস্যাচুরেটেড এবং পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে, যা আপনার শরীরে এলডিএল কোলেস্টেরল (খারাপ কোলেস্টেরল) কমাতে সাহায্য করতে পারে।
কিছু স্বাস্থ্যকর মশলা এবং ভেষজ
হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে আপনার ডায়েটে কিছু স্বাস্থ্যকর মশলা এবং ভেষজ যোগ করুন। প্রধানত হলুদ, রসুন, আদা এবং তুলসীর মতো ভেষজ এবং মশলাগুলিতে প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা হৃদরোগকে উন্নত করতে পারে।
দুগ্ধজাত পণ্য যোগ করতে ভুলবেন না
আপনার হার্টকে সুস্থ রাখতে, আপনি আপনার খাদ্যতালিকায় চর্বিমুক্ত বা কম চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত পণ্য যেমন দুধ, পনির বা দই যোগ করতে পারেন। এটি দিয়ে হার্টের স্বাস্থ্য বাড়ানো যেতে পারে।
আরও পড়ুন
দীপাবলির সময় কেন পটকা ফোটানো নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা যায় না ?
উত্তরাপথঃ দীপাবলির পরের দিন, যখন কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (CPCB) শহরের বায়ু মানের সূচকের তালিকা প্রকাশ করে,তখন দেখা যায় রাজধানী দিল্লি বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দূষিত শহরের প্রথমেই রয়েছে। CPCB-এর মতে, ১২ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় দিল্লির বায়ু মানের সূচক ছিল ২১৮ যা ভোরের দিকে বেড়ে ৪০৭ এ পৌঁছায় । ৪০০ – ৫০০ AQI এর স্তর সুস্থ ব্যক্তিদের প্রভাবিত করে। দীপাবলির সারা রাত, লোকেরা পটকা ফাটিয়ে দীপাবলি উদযাপন করে। ১৩ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আবার তথ্য প্রকাশ করে এই তালিকায়, দিল্লির গড় বায়ু মানের সূচক ছিল ৩৫৮ যা 'খুব খারাপ' বিভাগে পড়ে। বায়ু দূষণের এই পরিস্থিতি শুধু দিল্লিতেই সীমাবদ্ধ ছিল না। নয়ডার বায়ু মানের সূচক ১৮৯ থেকে ৩৬৩ এ এবং রোহতক, হরিয়ানার ১৩৭ থেকে বেড়ে ৩৮৩ হয়েছে। দীপাবলির দুই দিন দিল্লি ,নয়ডা ,কলকাতা, মুম্বাই সহ দেশের অন্যান্য শহরেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। এই দিনগুলিতে মানুষ বিষাক্ত বাতাসে শ্বাস নিতে বাধ্য হয়েছে। ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জাতীয় রাজধানী দিল্লি এবং নয়ডায় সবুজ পটকা ছাড়া যে কোনও ধরণের আতশবাজি ফাটান সম্পূর্ণ রূপে নিষিদ্ধ। আদালত সবুজ পটকা পোড়ানোর সময়ও নির্ধারণ করে দিয়েছে রাত ৮টা থেকে ১০টা। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে সুপ্রিম কোর্টের এই আদেশের মানে কী? আদালতের এই আদেশ কি এখন প্রত্যাহার করা উচিত? পুলিশ কেন এই আদেশ কার্যকর করতে পারছে না? এর জন্য কি পুলিশ দায়ী নাকি সরকারের উদাসীনতা রয়েছে এর পেছনে? .....বিস্তারিত পড়ুন
Electoral Bond এর গোপনীয়তা সরিয়ে রাজনৈতিক দলগুলিকে, জানাতে হবে প্রাপ্ত অনুদানের পরিমাণ
উত্তরাপথঃ বুধবার, নির্বাচনী বন্ড (Electoral Bond)প্রকল্পের আইনি বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদনের শুনানি হয়। শীর্ষ আদালত তার মন্তব্যে বলেছে, 'নির্বাচনী বন্ডগুলি রাজনৈতিক দলগুলিকে বেনামী অর্থ প্রদান করে, কারণ তাদের কেনাকাটা সম্পর্কিত রেকর্ডগুলি স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার কাছে উপলব্ধ যা শুধুমাত্র তদন্তকারী সংস্থাগুলি অ্যাক্সেস করতে পারে৷ এর আগে নির্বাচনী বন্ড’ (Electoral Bond) সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) কেন্দ্র দাবি করেছিল, রাজনৈতিক দলগুলির আয়ের উৎস জানার অধিকার নেই জনতার।এবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তৎপর হল নির্বাচন কমিশন (Election Commission of India)।বুধবার বিকেল ৫টার মধ্যে যাবতীয় হিসেব জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কমিশনের তরফে।নির্বাচনী বন্ডের (Electoral Bond)মামলায় কেন্দ্রের আর্জি সত্বেও সুপ্রিম কোর্ট রাজনৈতিক দলগুলিকে আয়ের উৎস জানাতে বলেছিল। আদলত নির্দেশ দিয়েছিল, গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোন রাজনৈতিক দল কত অনুদান মিলেছে, সেই তথ্য বন্ধ খামে জানাতে হবে।এর আগেও নির্বাচনী বন্ডের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে একাধিক মামলা হয়েছে শীর্ষ আদালতে। মামলাকারীরা অভিযোগ করেছিলেন, রাজনৈতিক দলগুলি এই নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ বিদেশ থেকে পেতে পারে এর ফলে গণতন্ত্র ধ্বংস হবে। যদিও কোনও রাজনৈতিক দলই এই দাবি মানতে চায়নি। ৩ অক্টোবর মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সব তথ্য দিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। এই রায়ের পরেই তৎপর হল কমিশন। .....বিস্তারিত পড়ুন
Karar Oi Lauh Kapat: কাজী নজরুলের এই গানকে ঘিরে বিতর্কে এ আর রহমান
উত্তরাপথঃ বিতর্কে 'পিপ্পা' ছবির সঙ্গীত পরিচালক অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান।সম্প্রতি কবি কাজী নজরুল ইসলামের পরিবার একটি হিন্দি ছবিতে কবির জনপ্রিয় গান 'করার ঐ লৌহ কাপাত...' (Karar Oi Lauh Kapat )।কিন্তু এ আর রহমানের সঙ্গীত পরিচালনায় ওই গানটি যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে তাতে আপত্তি জানিয়েছে নজরুল পরিবার।বিতর্কের পর যে চুক্তির আওতায় ওই গানটি ছবিতে ব্যবহার করা হয়েছে তা প্রকাশ্যে আনার দাবি তুলেছে কবির পরিবার।'পিপ্পা' শিরোনামের হিন্দি চলচ্চিত্রটি যেখানে (Karar Oi Lauh Kapat )গানটি ব্যবহার করা হয়েছে তা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেওয়া একজন ভারতীয় সেনা সৈনিককে কেন্দ্র করে একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত। ছবির সঙ্গীত পরিচালক অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান। গানের কথা ঠিক রেখেও সুর পাল্টানোর অভিযোগে ভারত ও বাংলাদেশে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।কবির পরিবারের অভিযোগ, গানটি ব্যবহারের অনুমতি দিলেও সুর পরিবর্তনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।পরিবারের সদস্যরাও ছবিটি থেকে গানটি বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। .....বিস্তারিত পড়ুন
World Children's Day: সত্যিই কি ‘বিশ্ব শিশু দিবস´পালনের কোনও যৌক্তিকতা আছে ?
প্রীতি গুপ্তাঃ হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটি দিন তারপর ১৪ নভেম্বর আমাদের দেশ সহ সারা বিশ্বজুড়ে পালন করা হবে ‘বিশ্ব শিশু দিবস´(World Children's Day)।এই দিনটি শিশুদের মঙ্গলের জন্য, তাদের ভবিষ্যতের জন্য একটি অনুকূল বিশ্ব তৈরি করার প্রচেষ্টার একটি দিন।কিন্তু প্রশ্ন,সত্যি কি হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে সারা বিশ্ব জুড়ে শিশু দিবস পালন করার কোনও যৌক্তিকতা আছে? আদৌ কি এর কোনও লাভ আমরা আমাদের প্রান্তিক স্তরের শিশুদের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছি ? সম্প্রতি কাজের প্রয়োজনে রাজস্থানের উদয়পুর শহরে আসা। আমরা সবাই জানি উদয়পুর বিখ্যাত তার হ্রদের কারণে । এখানকার স্থানীয় থেকে পর্যটক সকলেই এই সুন্দর হ্রদগুলির আকর্ষণে বারবার ছুঁটে যায়। ‘ফতে সাহেব লেক’ রাজস্থানের উদয়পুরের এক বিখ্যাত পর্যটক স্থল।এখানে বহু মানুষ সকাল- বিকেল এই লেকের চার ধারে হাঁটাহাঁটি করতে বেরিয়ে পড়ে। সেভাবেই দুই দিন আগে বিকেলে হঠাৎ করে বেরিয়ে পড়লাম ‘ফতে সাহেব লেকের ধারে হাঁটার উদ্দেশ্য নিয়ে। হাঁটার মাঝখানে হঠাৎ করে একটি বাচ্চাছেলে আওয়াজ করে ডাকছে ,বললাম কিছু বলবি? সে বলল একটু দাঁড়াতে। ও ছুটে গিয়ে হাতে করে কয়েকটি বেলুন নিয়ে এসে হাজির । সে বারবার বেলুন কেনার অনুরোধ জানাতে লাগল। হাতে অন্য কাজের চাপ নেই অনেকটা অবসর সময় তাই আমি অনেকটা সাংবাদিক সুলভ মন নিয়ে বললাম ঠিক আছে আমি তোর বেলুন নেব ,কিন্তু তার আগে আমি তোকে যা বলব তার তার ঠিক ঠিক উত্তর দিতে হবে। সে খুশী খুশী রাজি হয়ে গেল । .....বিস্তারিত পড়ুন