৩৭০ ধারার সিদ্ধান্ত কি SC-এ বাতিল হতে পারে ?

উত্তরাপথ

৩৭০ ধারা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তকে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।  দেশের সবচেয়ে বড় আদালত আগামী ২ আগস্ট থেকে এ বিষয়ে নিয়মিত শুনানি করবে।  প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় সহ ৫ বিচারপতির বেঞ্চ উভয় পক্ষের যুক্তি শুনবে।  এ বিষয়ে যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে চূড়ান্ত রায় ঘোষণার কথা রয়েছে।

এখন প্রশ্ন হঠাৎ  কেন ৪ বছর পর সুপ্রিম কোর্টে ৩৭০ ধারা নিয়ে শুনানি হচ্ছে, পিটিশনকারীদের যুক্তি কী এবং সুপ্রিম কোর্টে কি এই সিদ্ধান্ত টি বাতিল হয়ে যেতে পারে? সম্প্রতি ৩৭০ ধারার বিরুদ্ধে আদালতে মামলাকারী শেহলা রশিদ ও শাহ ফয়সাল তাদের আবেদন প্রত্যাহার করে নিছেন। ৩ জুলাই ২০২৩-এ, সুপ্রিম কোর্ট একটি নোটিশ জারি করে যে আইএএস শাহ ফয়সাল । সেখানে তিনিই জানান ৩৭০ অনুচ্ছেদে সরকারের বিরুদ্ধে তার আবেদন তিনি প্রত্যাহার করেছে।  এরপর ৪ জুলাই, শাহ ফয়সাল টুইট করে বলেন যে আমার মতো অনেক কাশ্মীরিদের জন্য, ৩৭০ অতীতের জিনিস।  ভারত মহাসাগরে মিশেছে ঝিলাম ও গঙ্গার পানি।  এখন আর পিছিয়ে যাওয়া নেই, শুধু সামনে।

 একইভাবে, জেএনইউ-এর প্রাক্তন ছাত্রনেতা শেহলা রশিদও ৩৭০ অনুচ্ছেদে দায়ের করা আবেদন প্রত্যাহার করে নিয়েছে। তবে তাদের উভয়ের আবেদন প্রত্যাহারে এ মামলার সিদ্ধান্তে কোনো প্রভাব পড়বে না বলে মনে করছেন আইন বিশেষজ্ঞরা। আবেদনকারীরা সুপ্রিম কোর্টে ৩৭০ ধারার বিরুদ্ধে যে প্রধান যুক্তি দিয়েছেন তাতে অনুচ্ছেদ ৩৭০(৩) অনুসারে, ভারতের রাষ্ট্রপতি জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভার সম্মতি ছাড়া ৩৭০ অনুচ্ছেদে সংশোধনের অনুমতি দিতে পারেন না।

প্রকৃতপক্ষে, ২ শে মার্চ, ১৯৫৯ সালে, প্রেম নাথ কৌল বনাম জম্মু ও কাশ্মীর মামলায়, সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ তার রায় দেয়।  এই বেঞ্চ তার সিদ্ধান্তে বলেছে যে গণপরিষদ বলেছে যে জম্মু ও কাশ্মীর এবং কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে ৩৭০ অনুচ্ছেদের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে গণপরিষদকে।  যতক্ষণ না রাজ্যের গণপরিষদ নিজেই বিলুপ্ত হয়ে যায় এবং ৩৭০ অনুচ্ছেদের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়,ততক্ষণ এটি অস্থায়ী।পরে, জম্মু ও কাশ্মীরের গণপরিষদ নিজেই ভেঙ্গে দেয় এবং ভারতের সরকার ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রয়োগ করে।  এভাবে সেই সময় ৩৭০ একটি স্থায়ী আইন হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বর্তমান সরকার ৩৭০ ধারাকে সাময়িক বলে যে বর্ণনা করছে তা সঠিক নয়।  সরকারের বিরুদ্ধে এমন অনেক যুক্তি আছে, যা সুপ্রিম কোর্টে সরকারের অবস্থানকে দুর্বল করে দিতে পারে।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


যুক্তিবাদী আন্দোলনের পথিকৃৎ প্রবীর ঘোষও আমি

ড. জীবনকুমার সরকার: ৭ এপ্রিল ২০২৩ প্রয়াত হলেন যুক্তিবাদী আন্দোলনের পথিকৃৎ প্রবীর ঘোষ। তাঁর প্রয়াণে দেশ ভারাক্রান্ত। যুক্তিবাদীরা চরম মর্মাহত। আমিও। তাঁর সঙ্গে কীভাবে জড়িয়েছিলাম সে এক ইতিহাস। ১৯৯৪ সালে মাধ্যমিক পাস করে গাজোল হাইস্কুলে সবে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছি। নতুন বইয়ের মধ্যে ডুবে আছি। আর নিয়মিত ক্লাস করছি। এইভাবে পুজোর ছুটি এসে যায়। পুজোর ছুটির আগের দিন অর্থাৎ যেদিন স্কুল হয়ে এক মাসের জন্য বন্ধ থাকবে স্কুল, সেইদিন আমি আর রাজেন লাইব্রেরীতে যাই। রাজেন আমার ছাত্রজীবনের সেরা বন্ধু। দুজনে কী বই নেবো, কী ধরনের বই নিয়ে .....বিস্তারিত পড়ুন

মতুয়া আন্দোলনের এক মনোগ্রাহী ভাষ্য

অরবিন্দ পুরকাইত: আপাত বা গভীর কোনও স্তরেই তেমন কিছু তফাৎ পরিলক্ষিত না হলেও, বর্ণবাদী সমাজে একই পাড়ায় একেবারে প্রায় পাশাপাশি কেবল বিশেষ বিশেষ ঘরে জন্মানোর নিমিত্ত - শিক্ষাদীক্ষা পরের কথা – ভূমিষ্ঠ হওয়া থেকেই আজীবন একজন শ্রদ্ধা-ভক্তি-প্রণাম পাওয়ার অদৃশ্য শংসাপত্রের অধিকারী আর অন্যজনের সেবা-শ্রদ্ধা-ভক্তির অদৃশ্য দাসখতের দায়বদ্ধতা! কেন-না সৃষ্টিলগ্নেই একজন প্রজাপতি ব্রহ্মার মুখনিসৃত আর অন্যজন পদজ যে! সুতরাং মুখ থাকবে সবার উপরে, সবার নিচে পা – এতে অস্বাভাবিকতা বা আশ্চর্যের তো কিছু নেই! কিন্তু কেবল সেবা-শ্রদ্ধাতেই সব মিটে .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top