৭৭তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করল সহিসতুলী প্রাথমিক বিদ্যালয়

অনিকেত মতুয়া, মালদাঃ ৭৭তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করল সহিসতুলী প্রাথমিক বিদ্যালয়। ১৫ আগস্ট মালদা শহরের ৬ নং ওয়ার্ডের সহিসটুলী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক অনাড়ম্বর অথচ মনোজ্ঞভাবে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করল। প্রথম পর্বে সকাল ৮টায় পতাকা উত্তোলন করেন প্রধান অতিথি বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক ড. জীবনকুমার সরকার।

এরপর ৭৭তম স্বাধীনতা দিবস উৎযাপনের দ্বিতীয় পর্বে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভায় শুক্লা চক্রবর্তী উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করেন। এরপর স্বাগত বক্তব্য রাখেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা সুস্মিতা চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, আমাদের ইচ্ছা থাকলেও বড়ো করে আয়োজন করতে পারনি। কারণ আমাদের স্কুলের পরিসর ছোটো। খুব সংক্ষিপ্ত আকারে হলেও তার ব্যক্তব্য ছিলো হৃদয়গ্রাহি। এছাড়াও ব্যক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা সুমিতা দাস মহাশয়া। তিনি বলেন, আমরা আগামী বছর আরও যথাযথ উদ্যোগ নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের অংশগ্রণ বাড়িয়ে তুলবো। নৃত্যে-গানে ও আবৃত্তিতে বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে অংশগ্রহণ করে রায় চৌধুরী, শ্রুতি মণ্ডল, অনুরাধা বসাক, নিশা মণ্ডল, কৃত্তিকা মণ্ডল, জয়ীতা সাহা রায়, আরাধ্যা গুপ্তা, আরশি বিশ্বাস প্রমুখ। শিশু কিশোর পর্যায়ের ছাত্র ছাত্রীদের অংশগ্রণমূলক অনুষ্ঠানে মুখরিত ছিলো অনুষ্ঠান কেন্দ্র। অতিথি শিল্পী অন্বেষা মণ্ডল আবৃত্তি পরিবেশন করেন। তার আবৃত্তি পরিবেশনায় চমৎকার আবহ তৈরি হয়েছিলো। এবং স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা করেন প্রধান অতিথি ড. জীবনকুমার সরকার। তিনি বলেন, “বহু মানুষের রক্তের বিনিময়ে এসেছে স্বাধীনতা।” বিশেষ করে বাঙালিদের আত্মবলিদানের কথা সকলকে স্মরণ করান। বেদনার সঙ্গে তিনি বলেন, “ব্রিটিশ তাড়ানো বাঙালি আজ ভারত উপমহাদেশে সতীর দেহের মতো ছিন্নভিন্ন। দেশ ভাগের বিপুল ক্ষতি তাদের জীবনে নিয়ে এসেছে বিপর্যয়। ছিন্নভিন্ন বাঙালি জাতি আজ দ্বিধাহীন, কাণ্ডারীহীন। তাই স্বাধীন দেশে বাঙালি আজও পরাধীন। বাংলার বাইরে বাঙালিদের ওপর নির্যাতন দেখলে এসব পরিষ্কার বোঝা যায়।” দুঃখ প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, ” আজ দেশজুড়ে ধর্মান্ধ মৌলবাদী শক্তির রমরমা। মনুবাদী শক্তি দলিত নির্যাতন, নারী নির্যাতন, জাতের নামে বজ্জাতি সব চালিয়ে যাচ্ছে। আম্বেদকরের সমাজতান্ত্রিক সংবিধান লঙ্ঘন করা হচ্ছে।” অনুষ্ঠান শেষ হয় সকাল সাড়ে দশটায়। শিশু- কিশোরদের পাশাপাশি এদিনের অনুষ্ঠানে অভিভাবক ও অভিভাবিকাবৃন্দরাও উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন আইসিডিএস কর্মীরাও। অল্প সময়ের অনুষ্ঠান হলেও সেটা ছিলো বেশ মনোজ্ঞ। সমগ্র অনুষ্ঠান সুচারু রূপে সঞ্চালনা করেন শিক্ষিকা সুমিতা দাস। সকলকে ধন্যবাদ দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা সুস্মিতা চট্টোপাধ্যায়।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


Karar Oi Lauh Kapat: কাজী নজরুলের এই গানকে ঘিরে  বিতর্কে এ আর রহমান

উত্তরাপথঃ বিতর্কে 'পিপ্পা' ছবির সঙ্গীত পরিচালক অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান।সম্প্রতি কবি কাজী নজরুল ইসলামের পরিবার একটি হিন্দি ছবিতে কবির জনপ্রিয় গান 'করার ঐ লৌহ কাপাত...' (Karar Oi Lauh Kapat )।কিন্তু এ আর রহমানের সঙ্গীত পরিচালনায় ওই গানটি যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে তাতে আপত্তি জানিয়েছে নজরুল পরিবার।বিতর্কের পর যে চুক্তির আওতায় ওই গানটি ছবিতে ব্যবহার করা হয়েছে তা প্রকাশ্যে আনার দাবি তুলেছে কবির পরিবার।'পিপ্পা' শিরোনামের হিন্দি চলচ্চিত্রটি যেখানে (Karar Oi Lauh Kapat )গানটি ব্যবহার করা হয়েছে তা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেওয়া একজন ভারতীয় সেনা সৈনিককে কেন্দ্র করে একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত। ছবির সঙ্গীত পরিচালক অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান। গানের কথা ঠিক রেখেও সুর পাল্টানোর অভিযোগে ভারত ও বাংলাদেশে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।কবির পরিবারের অভিযোগ, গানটি ব্যবহারের অনুমতি দিলেও সুর পরিবর্তনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।পরিবারের সদস্যরাও ছবিটি থেকে গানটি বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। .....বিস্তারিত পড়ুন

Roop Kishor Soni: একটি আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য তুলে ধরেছেন

উত্তরাপথঃ রাজস্থান মানেই ওজনদার রূপার গহনা ,আর তার উপর কারুকাজ। প্রচলিত এই ধারনা ভেঙ্গে আজ রূপোর গহনাকে আধুনিকতার সাথে শিল্পের এক অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন যে ব্যক্তি তিনি হলেন রূপ কিশোরী সোনী(Roop Kishor Soni)।তিনি ২০১৬ সালের ৯ ডিসেম্বর প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির কাছ থেকে তার অসাধারণ শিল্প কর্মের জন্য জাতীয় পুরুস্কার পান। রাজস্থানের জয়সলমেরের শহরের এই শিল্পী ৩.৮ গ্রাম ওজনের ০.৯ সেমি চওড়া রৌপ্য আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য খোদাই করেছেন।এই ছোট রূপার আংটিতে শিল্পী তাজমহল, সিডনি অপেরা হাউস, স্ট্যাচু অফ লিবার্টি, চীনের গ্রেট ওয়াল, আইফেল টাওয়ার, বিগ বেন, পিসার হেলানো টাওয়ার এবং মিশরীয় পিরামিডের চিত্র এক সাথে ফুটিয়ে তুলেছেন।এছাড়াও তিনি আরও দুটি পৃথক ডিজাইনের অত্যাশ্চর্য আংটি  তৈরি করেছেন।৮.৬ গ্রাম ওজনের একটি রিংয়ে তিনি সূর্যাস্তের সময় ভারতীয় উট সাফারি সহ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন ভারতীয় বিশেষত্ব ফুটিয়ে তুলেছেন,এবং অন্যটিতে বিভিন্ন হিন্দু দেব-দেবী ছবি এবং মন্দির খোদাই করেছিলেন। শিল্পী বলেছেন যে তিনি তার বাবার কাছ থেকে তার শৈল্পিক দক্ষতা উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছেন। সেই সাথে তিনি বলেন "আমার বাবাও একজন জাতীয় পুরুস্কার প্রাপ্ত শিল্পী ছিলেন। তিনি আমাকে শিল্পের এই দক্ষতা শিখিয়েছিলেন কারণ তিনি পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে শিল্পের ফর্মটিকে বাঁচিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন।" .....বিস্তারিত পড়ুন

Vijay Stambh : চিতোরগড় দুর্গে বিজয় স্তম্ভ হিন্দু – মুসলিম সহাবস্থানের প্রতীক

উত্তরাপথঃ খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীতে মৌর্য রাজবংশ কর্তৃক স্থাপিত চিতোরগড় দুর্গ সাহস ও আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে আজও দাঁড়িয়ে আছে। এই দুর্গ তার বিশাল কাঠামো, রাজপ্রাসাদ, একাধিক  সুদৃশ্য মন্দির সহ সুন্দর জলাশয়ের জন্য বিখ্যাত।৭০০-একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, এই দুর্গটিতে প্রায় ৬৫টি ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন রয়েছে যা রাজপুত এবং ইসলামিক স্থাপত্য শৈলীর সূক্ষ্মতার প্রমান দেয়। বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh)) হল এই দুর্গে অবস্থিত,সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর কাঠামো।এই আশ্চর্য-অনুপ্রেরণামূলক স্তম্ভটি কেবল তার উচ্চতার জন্য বিখ্যাত নয়,এটি রাজপুতদের অদম্য সাহস এবং অধ্যবসায়ের গল্পও বলে যা চিতোরগড় দুর্গেরই সমার্থক হয়ে উঠেছে।বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh), নাম থেকে বোঝা যায়, বিজয়ের প্রতীক।  প্রাচীনকালে যে কোনো যুদ্ধ অভিযানের সাফল্যের পর সেই বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতে রাজারা মন্দির, স্তূপ, স্মৃতিস্তম্ভ ও স্তম্ভ নির্মাণ করতেন।  ৯ তলা এই বিজয় স্তম্ভটি ১৯৪০ থেকে ১৪৪৮ সালের মধ্যে মহারানা কুম্ভ দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন

সেলফির উচ্চ রেটিং কি আপনাকে আরওপাতলা হতে উৎসাহিত করছে ?

উত্তরাপথঃ সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে সেলফি তোলা এবং নিজেকে পাতলা হিসাবে দেখানোর মধ্যে একটি সম্পর্ক থাকতে পারে। যুক্তরাজ্যের ইয়র্ক সেন্ট জন ইউনিভার্সিটির রুথ নাইট এবং ইউনিভার্সিটি অফ ইয়র্কের ক্যাথরিন প্রেস্টন সম্প্রতি PLOS ONE জার্নালে তাদের ফলাফল প্রকাশ করেছেন।সেখানে সেলফির উচ্চ রেটিং এবং আমাদের শরীরের গঠনের মধ্যে যোগসূত্র খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে।    বর্তমান সোশ্যাল মিডিয়ায় সেলফি হল এক জনপ্রিয় ছবি দেওয়ার ধরন। যিনি সেলফি তোলেন তিনি ক্যামেরাকে তাদের শরীর থেকে দূরে রেখে নিজেই নিজের ছবি তোলে। আগের গবেষণায় বলা হয়েছে সেলফিগুলি দেখার ফলে ছবির বিষয়গুলি সম্পর্কে দর্শকদের সিদ্ধান্ত প্রভাবিত হতে পারে। .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top