

ষাট ও সত্তরের দশকে সহ-অভিনেত্রীর ভূমিকায় অভিনয় করা বিখ্যাত অভিনেত্রী শশীকলা প্রয়াত। ৪ এপ্রিল মুম্বাইয়ে নিজ বাসভবনে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। শশিকলার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর।শশীকলা ১০০ টিরও বেশি ছবিতে সহ-অভিনেত্রীর ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। শশিকলা তার সময়কালে হিন্দি সিনেমায় তার স্মরণীয় ভূমিকা দিয়ে সবাইকে অবাক করে দিয়েছিলেন।
ষাট ও সত্তরের দশকে উত্তর ভারতে পর্দার সবচেয়ে ঘৃণ্য দুই নারী ছিলেন ললিতা পাওয়ার এবং শশীকলা। অতি-প্রতিভাবান, ললিতা পাওয়ার এবং শশীকলা দুজনেই খলনায়কের বাইরে ক্যারিয়ার তৈরি করেছিলেন।তাদের অভিনয় দক্ষতা সেই সময় দর্শকদের কাছে তাদের দুষ্টু এক নারী হিসেবে তুলে ধরেছিল,অবশ্য তার জন্য আমরা আবেগপ্রবণ দর্শকদের দোষ দিতে পারি না।কিন্তু শশীকলা ছিলেন গর্বিত ভিলেন। তিনি শতাধিক চলচ্চিত্রে দুষ্ট নারীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন।
শশিকলার জন্ম মহারাষ্ট্রের সোলাপুরে। তার পরিবার খুব ধনী ছিল এবং তার বাবা একজন বড় ব্যবসায়ী ছিলেন। তবে শশীকলা নাচ, গান এবং অভিনয়ের প্রতি অনুরাগী ছিলেন। তাই শশীকলা সোলাপুর জেলার অনেক শহরে অনেক স্টেজ শো করেছেন। সে সময় শশিকলার বয়স ছিল মাত্র ৫ বছর।এরপর এমন একটা সময় এসেছিল যখন শশীকলার বাবা দরিদ্র হয়ে পড়েন এবং জীবিকা নির্বাহ করা কঠিন হয়ে পড়ে। এরপর পরিবারকে মুম্বাইয়ে নিয়ে আসেন শশিকলার বাবা।মুম্বাইতে, পুরো পরিবার কষ্টের সাথে দিন পার করতে থাকে। শশীকলাও কাজের সন্ধানে এদিক ওদিক ঘুরে বেড়াতে থাকেন। শশীকলার জীবনে পরিবর্তন আসে যখন তিনি সেই সময়ের শীর্ষ অভিনেত্রী নূর জাহানের সাথে দেখা করেন।সে সময় নূর জাহানের স্বামী শওকত হুসেইন রিজভী ‘জিনাত’ নামে একটি ছবি বানাচ্ছিলেন এবং নূর জাহানের পীড়াপীড়িতে তিনি শশীকলাকে একটি কাওয়ালি দৃশ্যে অভিনয়ের সুযোগ দেন।
শশিকলা ৬০ এর দশকে অনেক স্মরণীয় চলচ্চিত্র করেছিলেন। তারাচাঁদ বরজাতিয়ার চলচ্চিত্র ‘আরতি’-তে নেতিবাচক চরিত্রে অভিনয়ের জন্য শশিকলা ফিল্মফেয়ার পুরস্কারও পেয়েছিলেন। এই ছবির পরে, শশীকলা একজন পার্শ্ব অভিনেত্রী হিসাবে বিখ্যাত হয়ে ওঠেন এবং একই ধরনের ভূমিকা পেতে শুরু করেন। তিনি ‘অনুপমা’, ‘ফুল অর পাথর’, ‘অ্যায়ি মিলন কি বেলা’, ‘গুমরাহ’, ‘ওয়াক্ত’ এবং ‘খুবসুরাত’-এর মতো ছবি করেছেন। ‘বাদশা’ ছবিতে শাহরুখ খানের মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন শশীকলা। তাকে ‘কভি খুশি কাভি গম’, ‘মুজসে শাদি করোগি’ এবং ‘চোরি চোরি’-এর মতো ছবিতেও দেখা গেছে।চলচ্চিত্র ছাড়াও শশিকলা টিভি জগতেও কাজ করেছেন। ‘জিনা ইসি কা নাম হ্যায়’, ‘সোন পরী’ এবং ‘দিল দেখে দেখো’ ছবিতে দেখা গেছে তাকে। ২০০৭ সালে, শশীকলা পদ্মশ্রী পুরস্কারে সম্মানিত হন।
আরও পড়ুন
Vijay Stambh : চিতোরগড় দুর্গে বিজয় স্তম্ভ হিন্দু – মুসলিম সহাবস্থানের প্রতীক
উত্তরাপথঃ খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীতে মৌর্য রাজবংশ কর্তৃক স্থাপিত চিতোরগড় দুর্গ সাহস ও আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে আজও দাঁড়িয়ে আছে। এই দুর্গ তার বিশাল কাঠামো, রাজপ্রাসাদ, একাধিক সুদৃশ্য মন্দির সহ সুন্দর জলাশয়ের জন্য বিখ্যাত।৭০০-একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, এই দুর্গটিতে প্রায় ৬৫টি ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন রয়েছে যা রাজপুত এবং ইসলামিক স্থাপত্য শৈলীর সূক্ষ্মতার প্রমান দেয়। বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh)) হল এই দুর্গে অবস্থিত,সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর কাঠামো।এই আশ্চর্য-অনুপ্রেরণামূলক স্তম্ভটি কেবল তার উচ্চতার জন্য বিখ্যাত নয়,এটি রাজপুতদের অদম্য সাহস এবং অধ্যবসায়ের গল্পও বলে যা চিতোরগড় দুর্গেরই সমার্থক হয়ে উঠেছে।বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh), নাম থেকে বোঝা যায়, বিজয়ের প্রতীক। প্রাচীনকালে যে কোনো যুদ্ধ অভিযানের সাফল্যের পর সেই বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতে রাজারা মন্দির, স্তূপ, স্মৃতিস্তম্ভ ও স্তম্ভ নির্মাণ করতেন। ৯ তলা এই বিজয় স্তম্ভটি ১৯৪০ থেকে ১৪৪৮ সালের মধ্যে মহারানা কুম্ভ দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন
Roop Kishor Soni: একটি আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য তুলে ধরেছেন
উত্তরাপথঃ রাজস্থান মানেই ওজনদার রূপার গহনা ,আর তার উপর কারুকাজ। প্রচলিত এই ধারনা ভেঙ্গে আজ রূপোর গহনাকে আধুনিকতার সাথে শিল্পের এক অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন যে ব্যক্তি তিনি হলেন রূপ কিশোরী সোনী(Roop Kishor Soni)।তিনি ২০১৬ সালের ৯ ডিসেম্বর প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির কাছ থেকে তার অসাধারণ শিল্প কর্মের জন্য জাতীয় পুরুস্কার পান। রাজস্থানের জয়সলমেরের শহরের এই শিল্পী ৩.৮ গ্রাম ওজনের ০.৯ সেমি চওড়া রৌপ্য আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য খোদাই করেছেন।এই ছোট রূপার আংটিতে শিল্পী তাজমহল, সিডনি অপেরা হাউস, স্ট্যাচু অফ লিবার্টি, চীনের গ্রেট ওয়াল, আইফেল টাওয়ার, বিগ বেন, পিসার হেলানো টাওয়ার এবং মিশরীয় পিরামিডের চিত্র এক সাথে ফুটিয়ে তুলেছেন।এছাড়াও তিনি আরও দুটি পৃথক ডিজাইনের অত্যাশ্চর্য আংটি তৈরি করেছেন।৮.৬ গ্রাম ওজনের একটি রিংয়ে তিনি সূর্যাস্তের সময় ভারতীয় উট সাফারি সহ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন ভারতীয় বিশেষত্ব ফুটিয়ে তুলেছেন,এবং অন্যটিতে বিভিন্ন হিন্দু দেব-দেবী ছবি এবং মন্দির খোদাই করেছিলেন। শিল্পী বলেছেন যে তিনি তার বাবার কাছ থেকে তার শৈল্পিক দক্ষতা উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছেন। সেই সাথে তিনি বলেন "আমার বাবাও একজন জাতীয় পুরুস্কার প্রাপ্ত শিল্পী ছিলেন। তিনি আমাকে শিল্পের এই দক্ষতা শিখিয়েছিলেন কারণ তিনি পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে শিল্পের ফর্মটিকে বাঁচিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন।" .....বিস্তারিত পড়ুন
সম্পাদকীয়- রাজনৈতিক সহিংসতা ও আমাদের গণতন্ত্র
সেই দিনগুলো চলে গেছে যখন নেতারা তাদের প্রতিপক্ষকেও সম্মান করতেন। শাসক দলের নেতারা তাদের বিরোধী দলের নেতাদের কথা ধৈর্য সহকারে শুনতেন এবং তাদের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতেন। আজ রাজনীতিতে অসহিষ্ণুতা বাড়ছে। কেউ কারো কথা শুনতে প্রস্তুত নয়। আগ্রাসন যেন রাজনীতির অঙ্গ হয়ে গেছে। রাজনৈতিক কর্মীরা ছোটখাটো বিষয় নিয়ে খুন বা মানুষ মারার মত অবস্থার দিকে ঝুঁকছে। আমাদের দেশে যেন রাজনৈতিক সহিংসতা কিছুতেই শেষ হচ্ছে না।আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার চেয়ে রাজনৈতিক সংঘর্ষে বেশি মানুষ নিহত হচ্ছেন। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি) অনুসারে, ২০১৪ সালে, রাজনৈতিক সহিংসতায় ২৪০০ জন প্রাণ হারিয়েছিল এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ২০০০ জন মারা গিয়েছিল। আমরা পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্র হিসেবে আমাদের দেশের গণতন্ত্রের জন্য গর্বিত হতে পারি, কিন্তু এটা সত্য যে আমাদের সিস্টেমে অনেক মৌলিক সমস্যা রয়েছে যা আমাদের গণতন্ত্রের শিকড়কে গ্রাস করছে, যার জন্য সময়মতো সমাধান খুঁজে বের করা প্রয়োজন। .....বিস্তারিত পড়ুন
Fructose: নতুন গবেষণায় ফ্রুক্টোজকে স্থূলতার কারণ বলা হয়েছে
উত্তরাপথঃ একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় জোরালো প্রমাণ দেওয়া হয়েছে যে ফ্রুক্টোজ (Fructose), সাধারণত প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং পানীয়গুলিতে থাকা এক ধরনের চিনি, যা স্থূলতার প্রাথমিক চালক। বছরের পর বছর ধরে, পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা , পাশ্চাত্য খাদ্যে, স্থূলতার মূল কারণ নিয়ে বিতর্ক করেছেন, কেউ কেউ অত্যধিক ক্যালোরি গ্রহণের দিকে ইঙ্গিত করেছেন, অন্যরা কার্বোহাইড্রেট বা চর্বি জাতীয় খাবারকে দায়ী করেছেন। Obesity জার্নালে সাম্প্রতিক একটি গবেষণাপত্রে ফ্রুক্টোজকে স্থূলতার প্রকৃত চালক হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।The University of Colorado Anschutz Medical Campus এর Dr. Richard Johnson এবং তার দলের মতে, ফ্রুক্টোজ হল একটি সাধারণ চিনি যা ফল এবং মধুর প্রাথমিক পুষ্টি। .....বিস্তারিত পড়ুন