কাশফুল ঘোষণা করছে যে “মা” আসছে

উত্তরাপথঃ দুর্গাপূজা এগিয়ে আসার সাথে সাথে বাংলার বাতাস প্রত্যাশা এবং উত্তেজনায় ভরে যায়। রাস্তাঘাট রঙিন আলোয় সাজানোর প্রস্তুতি চলে, তৈরি হয় নানা রকম প্যান্ডেল আর এর মাঝে ঢাকের শব্দে বাতাস ভরে থাকে।এত আয়োজনের মাঝে গ্রামের রাস্তার ধারে অযত্নে দাঁড়িয়ে আছে যে কাশফুল  যে সকলকে ঘোষণা করছে যে “মা” আসছে।

বাংলার মানুষের কাছে দুর্গাপূজা শুধু একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি তাদের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের উদযাপন। বাংলায় দেবীকে দুর্গতিনাশিনী রূপে পূজা করা হয় অর্থাৎ দেবী দুর্গা, যিনি শক্তি, সাহস এবং মন্দের বিরুদ্ধে বিজয়ের প্রতিনিধিত্ব করেন। এটা বিশ্বাস করা হয় যে দুর্গা পূজার সময়, দেবী পৃথিবীতে তার ভক্তদের জন্য , আশীর্বাদ এবং সমৃদ্ধি নিয়ে আসেন। এটি সমগ্র সম্প্রদায়কে একত্রিত করে৷ মানুষের রাগ, অভিমান, ঝগড়া, দুঃখ সব ভুলিয়ে দেয়৷

প্রতিবছর মহালয়ার মাধ্যমে দুর্গাপূজার সূচনা হয়৷ এরপর ঢাকের আওয়াজ ,শিউলি ও কাশ ফুলের উপস্থিতি, কুমোর পাড়ায় চলতে থাকা কাজের ব্যস্ততা, প্যান্ডাল শিল্পীদের ব্যস্ততা এরই মাঝে  শিল্পীর তুলির আঁচড়ে একটু একটু করে মূর্ত হয়ে উঠছে দেবীর রূপ। দুর্গাপূজা যতই ঘনিয়ে আসছে, শহর থেকে গ্রাম ততটাই প্রাণবন্ত হয়ে উঠছে উৎসব পালনের উচ্ছ্বাসে। রাস্তায় নতুন জামাকাপড় এবং উপহার কেনাকাটা করার জন্য লোকেদের ভিড়, খাবারের স্টলগুলির ব্যস্ততা আর এসবের মাঝে কাশফুল তার আনন্দ ও উদযাপনের বার্তা ছড়িয়ে ,সকলকে তাদের জীবনে দুর্গাপূজার তাৎপর্য স্মরণ করিয়ে দেবীর আরাধনা ও প্রশংসায় একত্রিত হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে। তাই মানুষ এখন উৎসবের জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়ার সাথে সাথে তাদের প্রিয় দেবীর জমকালো আগমনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।

বাংলায় দুর্গা পূজা হল এক ভক্তি ও বিশ্বাসের উদযাপন , যা আমাদের বাড়িতে আত্মীয়তার অনুভূতি জাগিয়ে তোলে। এই মুহূর্তটি উমার ঘরে ফেরার উৎসব, যা একটি কন্যার তার পিতামাতার বাড়িতে ফিরে আসার আনন্দ এবং তাৎপর্যকে নির্দেশ করে।তাই শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে দুর্গাপূজা শুধুমাত্র একটি উৎসবই নয় একটি মহাপূজাও, একটি মহৎ উদযাপন যা সমাজের সকল স্তরের মানুষকে একত্রিত করে।

মূলত দুর্গা পূজার ধারণাটি পৃথিবী মাতার পূজা করার একটি পদ্ধতি,যা যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। এখানে মা দুর্গাকে পৃথিবীর উর্বরতার একটি প্রতীক হিসাবে মনে করা হয়। এইভাবেই বছরের পর বছর ধরে শস্য শ্যামলা পৃথিবীর কল্পনায় দেবী দুর্গার আরাধনা করা হচ্ছে।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


Skin Ageing: ত্বকের বার্ধক্যের জন্য একটি প্রোটিন দায়ী বলছেন বিজ্ঞানীরা

উত্তরাপথ: ত্বকের বার্ধক্য একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া যা আমরা বড় হওয়ার সাথে সাথে ঘটে থাকে,এক্ষেত্রে বিভিন্ন কারণ এই প্রক্রিয়াটিকে ত্বরান্বিত করতে পারে। তাদের মধ্যে, সাম্প্রতিক গবেষণায় ত্বকের বার্ধক্যে অবদান রাখার ক্ষেত্রে IL-17 নামক প্রোটিনের ভূমিকার উপর বিজ্ঞানীরা আলোকপাত করেছেন। IL-17, একটি প্রো-ইনফ্ল্যামেটরি সাইটোকাইন ,যা ইমিউন প্রতিক্রিয়াতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।এখন আমরা ত্বকের বার্ধক্যের ক্ষেত্রে IL-17 প্রোটিনের কি এবং ত্বকের উপর এর  প্রভাব সহ ত্বকের যত্ন এবং অ্যান্টি-এজিং চিকিৎসার সম্ভাব্য প্রভাবগুলি অন্বেষণ করব। .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top