উত্তরাপথ


থাইরয়েডের সমস্যা এখন এক অতি পরিচিত সমস্যা । বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ এই সমস্যা নিয়ে বসবাস করছে, যা তাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি দিককে প্রভাবিত করতে পারে। তবে সঠিক ব্যবস্থাপনা ও যত্নের মাধ্যমে থাইরয়েড রোগ নিয়ে সুখী, সুস্থ জীবন যাপন করা সম্ভব।
থাইরয়েড গ্রন্থি, যা ঘাড়ে অবস্থিত, হরমোন তৈরি করে যা শরীরের বিপাক নিয়ন্ত্রণ করে। যখন থাইরয়েড গ্রন্থি খুব বেশি বা খুব কম হরমোন তৈরি করে, তখন এটি ওজনের ওঠানামা, ক্লান্তি এবং মেজাজের পরিবর্তন সহ বিভিন্ন উপসর্গের কারণ হতে পারে। থাইরয়েড রোগের দুটি প্রধান প্রকার রয়েছে: হাইপোথাইরয়েডিজম এবং হাইপারথাইরয়েডিজম।
হাইপোথাইরয়েডিজম ঘটে যখন থাইরয়েড গ্রন্থি পর্যাপ্ত হরমোন তৈরি করে না, যার ফলে বিপাক প্রক্রিয়া ধীর হয়ে যায়। লক্ষণগুলির মধ্যে ওজন বৃদ্ধি, ক্লান্তি, বিষণ্নতা এবং স্মৃতিশক্তি এবং ঘনত্বের সমস্যা অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। হাইপারথাইরয়েডিজম ঘটে যখন থাইরয়েড গ্রন্থি অত্যধিক হরমোন তৈরি করে, যার ফলে ত্বরিত বিপাক হয়। লক্ষণগুলির মধ্যে ওজন হ্রাস, ক্ষুধা বৃদ্ধি, উদ্বেগ এবং বিরক্তি অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।
আপনার যদি থাইরয়েড রোগ নির্ণয় করা হয়ে থাকে, তাহলে আপনার ব্যক্তিগত প্রয়োজন অনুসারে ডাক্তারের মতামত নিয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ। থাইরয়েড রোগের চিকিৎসায় ওষুধ, সার্জারি বা উভয়ের সংমিশ্রণ অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।
চিকিৎসার পাশাপাশি, জীবনধারার পরিবর্তনও আপনার থাইরয়েড রোগ নিয়ন্ত্রন করতে সাহায্য করতে পারে। একটি স্বাস্থ্যকর, সুষম খাদ্য খাওয়া, নিয়মিত ব্যায়াম করা এবং তামাক এবং অ্যালকোহল এড়িয়ে চলা সবই থাইরয়েড স্বাস্থ্যকে সহায়তা করতে পারে। স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট কৌশল, যেমন গভীর শ্বাস, ধ্যান বা যোগব্যায়ামও থাইরয়েড রোগের লক্ষণ কমাতে সাহায্য করতে পারে।এছাড়াও আপনার অবস্থা সম্পর্কে পরিবার এবং বন্ধুদের সাথে খোলামেলাভাবে যোগাযোগ করাও গুরুত্বপূর্ণ, যাতে তারা আপনাকে প্রয়োজনীয় সহায়তা এবং তথ্য দিতে পারে।
থাইরয়েড রোগের সাথে জীবনযাপন করা একটি কষ্টকর অভিজ্ঞতা হতে পারে, তবে এটি মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে আপনি একা নন এবং আপনার জন্য অনেক চিকিত্সার বিকল্প রয়েছে। আপনার ডাক্তারের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কথা বলে স্বাস্থ্যকর জীবনধারা গ্রহণ করে এবং আপনার অবস্থা সম্পর্কে অবগত থাকার মাধ্যমে, আপনি আপনার থাইরয়েড রোগ অনেকাংশে নিয়ন্ত্রন করতে পারেন এবং একটি সুখী, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করতে পারেন।
আরও পড়ুন
Fructose: নতুন গবেষণায় ফ্রুক্টোজকে স্থূলতার কারণ বলা হয়েছে
উত্তরাপথঃ একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় জোরালো প্রমাণ দেওয়া হয়েছে যে ফ্রুক্টোজ (Fructose), সাধারণত প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং পানীয়গুলিতে থাকা এক ধরনের চিনি, যা স্থূলতার প্রাথমিক চালক। বছরের পর বছর ধরে, পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা , পাশ্চাত্য খাদ্যে, স্থূলতার মূল কারণ নিয়ে বিতর্ক করেছেন, কেউ কেউ অত্যধিক ক্যালোরি গ্রহণের দিকে ইঙ্গিত করেছেন, অন্যরা কার্বোহাইড্রেট বা চর্বি জাতীয় খাবারকে দায়ী করেছেন। Obesity জার্নালে সাম্প্রতিক একটি গবেষণাপত্রে ফ্রুক্টোজকে স্থূলতার প্রকৃত চালক হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।The University of Colorado Anschutz Medical Campus এর Dr. Richard Johnson এবং তার দলের মতে, ফ্রুক্টোজ হল একটি সাধারণ চিনি যা ফল এবং মধুর প্রাথমিক পুষ্টি। .....বিস্তারিত পড়ুন
Vijay Stambh : চিতোরগড় দুর্গে বিজয় স্তম্ভ হিন্দু – মুসলিম সহাবস্থানের প্রতীক
উত্তরাপথঃ খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীতে মৌর্য রাজবংশ কর্তৃক স্থাপিত চিতোরগড় দুর্গ সাহস ও আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে আজও দাঁড়িয়ে আছে। এই দুর্গ তার বিশাল কাঠামো, রাজপ্রাসাদ, একাধিক সুদৃশ্য মন্দির সহ সুন্দর জলাশয়ের জন্য বিখ্যাত।৭০০-একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, এই দুর্গটিতে প্রায় ৬৫টি ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন রয়েছে যা রাজপুত এবং ইসলামিক স্থাপত্য শৈলীর সূক্ষ্মতার প্রমান দেয়। বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh)) হল এই দুর্গে অবস্থিত,সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর কাঠামো।এই আশ্চর্য-অনুপ্রেরণামূলক স্তম্ভটি কেবল তার উচ্চতার জন্য বিখ্যাত নয়,এটি রাজপুতদের অদম্য সাহস এবং অধ্যবসায়ের গল্পও বলে যা চিতোরগড় দুর্গেরই সমার্থক হয়ে উঠেছে।বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh), নাম থেকে বোঝা যায়, বিজয়ের প্রতীক। প্রাচীনকালে যে কোনো যুদ্ধ অভিযানের সাফল্যের পর সেই বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতে রাজারা মন্দির, স্তূপ, স্মৃতিস্তম্ভ ও স্তম্ভ নির্মাণ করতেন। ৯ তলা এই বিজয় স্তম্ভটি ১৯৪০ থেকে ১৪৪৮ সালের মধ্যে মহারানা কুম্ভ দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন
ফ্লিম রিভিউ -ওপেনহাইমার
উত্তরাপথ: বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্রিস্টোফার নোলান দ্বারা পরিচালিত”ওপেনহাইমার” একটি মাস্টারপিস মুভি। ছবিতে জে. রবার্ট ওপেনহেইমার, এক নামকরা পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পারমাণবিক বোমার বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।এই সিনেমায় ওপেনহাইমার এর জটিল জীবনকে বর্ণনা করা হয়েছে। সেই হিসেবে 'ওপেনহাইমার'কে বায়োপিক বলা যেতে পারে। কারণ এটি একজন মানুষের গল্প। এই ছবির গল্প তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত।ছবির শুরুতে পারমাণবিক বোমা তৈরির আবেগের কথা বলা হয়েছে। যেখানে নায়ক কিছু না ভেবে নিবেদিতপ্রাণভাবে এমন একটি অস্ত্র তৈরিতে নিয়োজিত থাকে যা বিশ্বকে ধ্বংস করতে পারে। অস্ত্র তৈরি হওয়ার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে নায়ক তার কাজের ফলাফল দেখে অপরাধবোধে পূর্ণ হয়। এবং তৃতীয় পর্যায়টি হল রাজনীতি যা ওপেনহাইমারকে মোকাবেলা করতে হয়েছে। পুরো সিনেমাটি রঙিন হলেও রাজনৈতিক অংশ সাদা-কালো রাখা হয়েছে। এই তিনটি সময়কালে যা কিছু ঘটছে, তা সবই একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত। .....বিস্তারিত পড়ুন
সম্পাদকীয়- রাজনৈতিক সহিংসতা ও আমাদের গণতন্ত্র
সেই দিনগুলো চলে গেছে যখন নেতারা তাদের প্রতিপক্ষকেও সম্মান করতেন। শাসক দলের নেতারা তাদের বিরোধী দলের নেতাদের কথা ধৈর্য সহকারে শুনতেন এবং তাদের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতেন। আজ রাজনীতিতে অসহিষ্ণুতা বাড়ছে। কেউ কারো কথা শুনতে প্রস্তুত নয়। আগ্রাসন যেন রাজনীতির অঙ্গ হয়ে গেছে। রাজনৈতিক কর্মীরা ছোটখাটো বিষয় নিয়ে খুন বা মানুষ মারার মত অবস্থার দিকে ঝুঁকছে। আমাদের দেশে যেন রাজনৈতিক সহিংসতা কিছুতেই শেষ হচ্ছে না।আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার চেয়ে রাজনৈতিক সংঘর্ষে বেশি মানুষ নিহত হচ্ছেন। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি) অনুসারে, ২০১৪ সালে, রাজনৈতিক সহিংসতায় ২৪০০ জন প্রাণ হারিয়েছিল এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ২০০০ জন মারা গিয়েছিল। আমরা পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্র হিসেবে আমাদের দেশের গণতন্ত্রের জন্য গর্বিত হতে পারি, কিন্তু এটা সত্য যে আমাদের সিস্টেমে অনেক মৌলিক সমস্যা রয়েছে যা আমাদের গণতন্ত্রের শিকড়কে গ্রাস করছে, যার জন্য সময়মতো সমাধান খুঁজে বের করা প্রয়োজন। .....বিস্তারিত পড়ুন