

গার্গী আগরওয়ালা মাহাতোঃ সম্প্রতি খবরে প্রকাশ প্রাক্তন আমলা ভি কে পান্ডিয়ান বিজু জনতা দলের (বিজেডি) সদস্যপদ নিয়েছেন। বলা হচ্ছে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক তাঁর রাজনৈতিক উত্তরাধিকার তাঁর হাতে তুলে দিতে চলেছেন। যদি এমনটা হয়, তাহলে ভারতীয় রাজনীতিতে প্রকৃতপক্ষে একটি ‘নতুন’ অধ্যায় যুক্ত হবে যা অধিকাংশ ক্ষেত্রে বংশবাদের রাজনীতির(Dynastic politics) কবলে আটকে আছে। নবীন পট্টনায়েক ভারতবর্ষের রাজনীতিতে এখন একজন মুখ্যমন্ত্রী যিনি গত ২৪ বছর ধরে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রীর পদে অধিষ্ঠিত থাকা সত্ত্বেও দাগহীন রয়েছেন। দুর্নীতির অভিযোগ বাদ দিন, তার বিরুদ্ধে স্বজনপোষণ সহ অন্য কোনও অভিযোগ নেই। আমলাতন্ত্র থেকে ভি কে পান্ডিয়ানকে রাজনীতির জগতে নিয়ে এসে পট্টনায়েক যে বার্তা দিয়েছেন তা একজন পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ হিসেবে তার ভাবমূর্তিকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
রাজনীতিতে নবীন পট্টনায়েকের এই পদক্ষেপের গুরুত্ব বুঝতে হলে আমাদের দেশের প্রাচীনতম দল কংগ্রেস থেকে শুরু করে ছোট ছোট আঞ্চলিক দলগুলির দিকে তাকাতে হবে। এটা আমাদের রাজনীতির দুর্ভাগ্য যে আমাদের রাজনৈতিক নেতারা বংশবাদের রাজনীতির (Dynastic politics )ঘেরাটোপে আটকে আছে। সামাজিক ন্যায়বিচারের স্লোগান উত্থাপনকারী লালু প্রসাদ যাদবই হোন বা দ্রাবিড় আন্দোলন থেকে উঠে আসা দল ডিএমকে-র এম করুণানিধি, সকলেই রাজনৈতিক উত্তরাধিকার তাদের ছেলে বা পরিবারের কারও হাতে তুলে দিয়েছেন। আমাদের দেশে এমন খুব কম রাজনৈতিক দল রয়েছে যেখানে বংশবাদের রাজনীতি (Dynastic politics)তার শিকড় বিস্তার করেনি। রাজনীতিতে এই বিকৃতি শুধু আমাদের দেশে নয় প্রতিবেশী দেশগুলিতেও রয়েছে। স্বাধীনতার পর আমাদের দেশ থেকে রাজতন্ত্র বিদায় নিয়েছে, এখন আর রাজার ছেলে আক্ষরিক অর্থে আর রাজা হয় না। কিন্তু গণতন্ত্রের এই বিকৃতি রাজতন্ত্রের পুরাতন ব্যবস্থাকে কায়েম রেখেছে।
কেউ বলতে পারেন যে নবীন পট্টনায়েক অবিবাহিত, তাই তিনি কার প্রতি মোহগ্রস্ত হবেন। তবে মনে রাখবেন আমাদের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও টিএমসি প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও অবিবাহিত। কেউ কি বলতে পারেন যে তিনি প্রতীকীভাবে তার ভাইপো অভিষেক ব্যানার্জীকে তার প্রতিনিধি হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করেননি? অন্যদিকে মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে শিবসেনা ও এনসিপি , উত্তরপ্রদেশের সমাজবাদী দল ,জম্মু ও কাশ্মীরের পিডিপি ও ন্যাশানাল কনফারেন্স । এছাড়া আরও বহু রাজনৈতিক দল রয়েছে যারা স্বাধীনতার ৭৬ বছর পরও রাজতন্ত্রের কায়দায় রাজনীতি করে চলেছেন।
একটা সময় ছিল যখন অনেকেই মনে করেছিল নবীন পট্টনায়েক তার ভাগ্নে অরুণ পট্টনায়েককে উত্তরাধিকার হস্তান্তর করবেন, কিন্তু সেটি যে কেবল একটি গুজব এবং জল্পনা ছিল তা আজ প্রমাণিত। নবীন পট্টনায়েক ২০১৯ সালে একটি পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন যে BJD-এর উত্তরসূরি কে হবেন তা শুধুমাত্র ওড়িশার মানুষই ঠিক করবে। তাহলে কি এখন BJD-এর উত্তরসূরি নির্ধারণ করা হয়েছে? উত্তরটি এখনও ভবিষ্যতের গর্ভেই রয়েছে।
আমাদের দেশের রাজনীতিতে আমলাদের নেতা-মন্ত্রী হওয়ার সূত্রপাত নবীন পট্টনায়েকের হাত ধরেই হচ্ছে সেটা ভাবার কোনও কারণ নেই। আমাদের আমলাদের নেতা-মন্ত্রী হওয়ার ইতিহাস বহু পুরনো। প্রায় প্রতিটি দলই আমলাদের নেতা বানিয়েছে। কংগ্রেসে নটওয়ার সিং এবং মণিশঙ্কর আইয়ার, বিজেপিতে আর কে সিং ,তৃণমূল কংগ্রেসের মণীশ গুপ্ত ও যশবন্ত সিনহা । রাজনীতিতে আমলাদের একটি একটি দীর্ঘ তালিকা রয়েছে। এর আগে যখন রাম মন্দিরের মূর্তিগুলি প্রকাশ করা হয়েছিল, সেই সময় ফৈজাবাদ জেলা ডিএম কে কে নায়ার পদত্যাগ করেছিলেন এবং বিজেপির টিকিটে লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হয়ে সংসদে পৌঁছেছিলেন। তাঁর স্ত্রীও একজন আইএএস ছিলেন এবং তিনিও লোকসভা নির্বাচন জিতেছিলেন। এই প্রেক্ষাপটে, ভি কে পান্ডিয়ানের পক্ষে আমলা থেকে নেতা হওয়া বড় কথা নয়, তবে একটি বড় বিষয় হল একটি দলের শীর্ষে পৌঁছানোর সম্ভাবনা। এমনটা হলে বলা যাবে বংশবাদী রাজনীতির (Dynastic politics)যুগে নবীন পট্টনায়েক সত্যিই বিস্ময়কর।
আরও পড়ুন
রাতের ঘামের সমস্যা এবং এ সম্পর্কে আপনি কি করতে পারেন
উত্তরাপথঃ রাতের ঘামের সমস্যা শরীরের কুলিং সিস্টেমের একটি স্বাভাবিক অংশ, তাপ মুক্তি এবং সর্বোত্তম শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে।তবে রাতের ঘাম একটি সাধারণ সমস্যা যা বিভিন্ন কারণে হতে পারে।এর অস্বস্তিকর অনুভূতির জন্য ঘুম ব্যাহত হতে পারে, যার ফলে ক্লান্তি এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে। আপনি যদি রাতে অতিরিক্ত ঘাম অনুভব করেন, তাহলে তার অন্তর্নিহিত কারণটি চিহ্নিত করা এবং এটি মোকাবেলার জন্য কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এখানে রাতের ঘামের কিছু সম্ভাব্য কারণ নিয়ে আলোচনা করা হল।মেনোপজ: যে কেউ, বয়স বা লিঙ্গ নির্বিশেষে, রাতের ঘাম অনুভব করতে পারে। .....বিস্তারিত পড়ুন
সহযাত্রী
দীপা - আর তো এগারো বছর আটমাস বারোদিন চাকরি , তাই না ? অংশু - বাপরে বরাবরই তোমার স্মৃতিশক্তি প্রবল , এতোটা মনে আছে ? দীপা- ঘোরো টো টো করে আর কটা বছর , আফটার রিটায়ার্ড মেন্ট কি করবে ? অংশু - ফার্ম হাউস ,গাছপালা পশুপাখি নিয়ে থাকবো। দীপা- বাঃ উন্নতি হয়েছে। যে অংশুবাবু কখনও একটা ফুলের চারা লাগায়নি সে কিনা ফার্ম হাউস করবে … অংশু - সময়ের সাথে সব বদলায় ম্যাডাম , আচ্ছা তোমার কনুইয়ের নীচে সেই পোড়া দাগটা দেখি তো গেছে কিনা … দীপা- তুমি অনেক রোগা হয়ে গেছো , তা ওজন কত শুনি ? অংশু - সত্তর বাহাত্তর হবে বোধহয় মাপিনি, দীপা - তা কেনো মাপবে ? একটা অগোছালো মানুষ। অংশু - যাক বাবা তাও অপদার্থ শব্দ টা বলোনি। দীপা - ভাবোনা ডিভোর্স হয়েছে বলে সে অধিকার নেই। সমাজ বিজ্ঞানের অধ্যাপক হয়েও আসলে সমাজটাই শেখোনি , আর কি শিখেছো বলো, ঐ ছেলে পড়ানো , সেমিনার আর লেখালেখি। তা ধন্যবাদ তোমার রূপালী ঠৌট উপন্যাস এবছর একাডেমি পেলো , দারুণ লেখো তুমি, আগের চেয়ে অনেক ধার। অংশু- বাঃ তুমি পড়েছো ? দীপা- সব পড়েছি , তোমার রিসেন্ট উপন্যাসের নায়িকা মেঘনা টি কে ? মানে কার আড়ালে কাকে লিখেছো ? অংশু - এও কি বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপিকাকে বলে দিতে হবে ? দীপা- বারোটা বছর সময়ের শাসনে অনেক বদলালেও আমি বোধহয় সেই বড্ড সেকেলেই রয়ে গেলাম। অংশু - একা একাই কাটিয়ে দিলে বারো বছর। দীপা- একই প্রশ্ন আমিও করতে পারি। অংশু - আচ্ছা দীপা আজ না হয় শেষবারের মতো বলি, আমার মধ্যে কি ছিলো না বলোতো ? কেনো পারোনি এই বাউন্ডুলে ভবঘুরে মানুষটার সাথে চিরকালের ঘর বাঁধতে ? আমি কি ভালোবাসতে জানি না ? .....বিস্তারিত পড়ুন
Side effects of vitamin: ভিটামিনের আধিক্য আপনার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে
উত্তরাপথঃ ভিটামিনের প্রয়োজনীয়তা আমরা সবাই নিশ্চয়ই ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি যে সুস্থ থাকতে হলে শরীরে প্রয়োজনীয় সব ভিটামিন থাকা খুবই জরুরি। ভিটামিন আমাদের সুস্থ করার পাশাপাশি আমাদের সমগ্র শরীরের বিকাশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যাইহোক, এটি অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া আমাদের জন্য ক্ষতিকারকও হতে পারে। আসুন জেনে নিই অতিরিক্ত ভিটামিন গ্রহণের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া (Side effects of vitamin)সুস্থ থাকার জন্য শরীরে সব ধরনের পুষ্টি থাকা খুবই জরুরি। এ কারণেই বয়স্ক থেকে শুরু করে চিকিৎসক, সবাই আমাদেরকে সুষম ও পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন। সমস্ত পুষ্টি উপাদান আমাদের শরীরকে বিভিন্ন উপায়ে সুস্থ করে তোলে। এর মধ্যে ভিটামিন একটি, যা আমাদের সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। .....বিস্তারিত পড়ুন
প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে
উত্তরাপথঃ হঠাৎ করেই একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে।২০২৩ এর ৩০ অক্টোবর প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি মৃত আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত একটি নতুন দ্বীপের জন্ম দিয়েছে। বিস্ফোরণের পর জাপানের ওগাসাওয়ারা দ্বীপ চেইনের কাছে বিশাল বিশাল পাথরের টুকরো দেখা গেছে। এ বিষয়ে জাপানি গবেষক বলেন, গত মাসে প্রশান্ত মহাসাগর জলের নিচে আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের পর টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে ইওটো দ্বীপের কাছে একটি ছোট নতুন দ্বীপের উদ্ভব হয়েছে।টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকম্প গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ফুকাশি মায়েনো জানিয়েছেন যে নতুন দ্বীপ, এখনও যার নাম নেই প্রশান্ত মহাসাগরের ইওটো দ্বীপ থেকে ১ কিলোমিটার দূরে ১০০ মিটার ব্যাসের একটি পাথুরে দ্বীপে একটি phreatomagmatic বিস্ফোরণ ঘটেছে। টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে বিস্ফোরণটি দেখা গেছে। ভূপৃষ্ঠের নীচে জলের সাথে লাল গরম ম্যাগমা সংঘর্ষের কারণে প্রতি কয়েক মিনিটে বিস্ফোরণ ঘটে।গত ২১ অক্টোবর, ২০২৩-এ অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়েছিল, যা আগে ইও জিমা নামে পরিচিত ছিল এবং এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের স্থান ছিল। প্রায় ১০ দিন ধরে অগ্ন্যুৎপাত চলার পর, আগ্নেয়গিরির উপাদান অগভীর সমুদ্রতলের উপর জমা হয় এবং প্রায় ১৬০ ফুট পর্যন্ত উচ্চতায় বড় বড় পাথরের আকারে সমুদ্র পৃষ্ঠের উপরে উঠে আসে। .....বিস্তারিত পড়ুন