“জুহু রিডস” এক নীরব বইপ্রেমী সম্প্রদায়

বইপ্রেমীদের সম্প্রদায়। ছবি সৌজন্য – “জুহু রিডস”

“জুহু রিডস” হল নীরব পাঠকদের একটি বইপ্রেমী সম্প্রদায়। যারা তাদের পেশাগত জীবনের বাইরে তাদের পড়ার অভ্যাসকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য একটি সংগঠন তৈরি করেছেন।বর্তমানে মোবাইলের বাড়বাড়ন্তের যুগে যেখানে আমাদের বই পড়ার অভ্যাস চলে যাচ্ছে সেখানে এটি এক ব্যতিক্রমী প্রচেষ্টা।

জুহু রিডসের সদস্যরা সপ্তাহন্তে একটি পাবলিক পার্কে নীরবে বই পড়ার জন্য মিলিত হন।সেখানে সমস্ত বয়সের লোকেরা একত্রিত হয়ে বই এর প্রতি তাদের আবেগ ভাগ করে নেন, সেই সাথে এটি একটি সমমনস্ক ব্যক্তিদের সাথে সংযোগ স্থাপনের এক মাধ্যম।

এই রকম এক ব্যতিক্রমী বইপ্রেমীদের সম্প্রদায় এর কথা জানতে পেরে উত্তরাপথের পক্ষ থেকে আমাদের পাঠকদের জন্য জুহু রিডসের কাছে কিছু প্রশ্ন রেখেছিলাম।

বইপ্রেমীদের সম্প্রদায় ।ছবি সৌজন্য – জুহু রিডস

উত্তরাপথ; আপনারা জুহু রিডসের কবে থেকে শুরু করেছেন?

জুহু রিডস: আমাদের প্রথম বৈঠক ২০শে মে, ২০২৩-এ অনুষ্ঠিত হয়েছিল৷ আমরা আমাদের ১৩তম বৈঠকটি ১২ই আগস্ট, ২০২৩-এ আয়োজন করেছিলাম ৷ আমরা প্রতি শনিবার বিকেল ৫-৭ টা পর্যন্ত জুহু, মুম্বাইয়ের কাইফি আজমি পার্কে মিলিত হই৷

উত্তরাপথ;. আপনারা হঠাৎ এই রকম একটা গ্রুপ কেন তৈরী করলেন ?এটি শুরু করার পিছনে কারণ ব্যাখ্যা করতে পারেন?

জুহু রিডস : আমরা বেঙ্গালুরুর একটি নীরব পাঠক বইপ্রেমী সম্প্রদায় ‘কবন রিডস’ থেকে অনুপ্রেরণা নিয়েছি। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ‘কাববন রিডস’ শুরু হয়েছিল।

আমাদের সমস্ত নীরব পাঠক সম্প্রদায়ের পিছনের কারণ হল অন্তর্মুখী পাঠকদের কথা বলার চাপ ছাড়াই যোগদানের সুযোগ দেওয়া। আমাদের নীরব পাঠক সম্প্রদায়ের প্রচেষ্টা হল পড়ার ব্যক্তিগত প্রকৃতি ধরে রাখা। আমাদের সেশনে সমস্ত শ্রেনীর পাঠক অংশ নিতে পারেন। কেউ চাইলে তাদের আড্ডাবাজ বন্ধুদেরও সঙ্গে আনতে পারেন।আমাদের উদ্দেশ্য নীরবে পড়া, জুহু রিডসের একটি বৃহত্তর পাঠক গোষ্ঠী , যাদের সবাই নীরবে পড়ে।বর্তমানে আমাদের সারা ভারতে এবং বিদেশের শহরগুলিতে ষাটেরও বেশি নীরব পাঠক বইপ্রেমী সম্প্রদায় রয়েছে।

উত্তরাপথ; আপনাদের গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা কে?

জুহু রিডস: আমরা নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠাতা বলি না বরং কিউরেটর বলি কারণ আমরা একটি সম্প্রদায়। হর্ষ স্নেহাংশু এবং শ্রুতি সাহ হলেন ‘কাববন রিডস’-এর কিউরেটর যারা আমাদেরকে ‘জুহু রিডস’ শুরু করতে অনুপ্রাণিত করেছিলেন।

‘জুহু রিডস’-এর কিউরেটররা হলেন দিয়া সেনগুপ্ত, একজন বিশ্বব্যাপী টেকসই কৌশল পরামর্শদাতা, লেখক এবং বিজনেস স্কুলের অতিথি লেকচারার; এবং রচনা মালহোত্রা, IELTS, TOEFL, PTE এবং SAT-এর একজন ফ্রিল্যান্স টিউটর; ব্যক্তিত্ব বিকাশ প্রশিক্ষক, লেখক এবং কবি; এবং শুভ্র মানহার, লেখক ও বিপণনকারী।

বইপ্রেমীদের সম্প্রদায় । ছবি সৌজন্য – “জুহু রিডস”

উত্তরাপথ;. যখন এই গ্রুপটি শুরু হয়েছিল তখন কতজন সদস্য ছিল?

জুহু রিডস: জুহু রিডসে বেশ কিছু ব্যক্তি আছেন যারা নীরব পাঠের সেশনে নিয়মিত অংশগ্রহণ করেন।

যাইহোক, আমাদের বইপ্রেমীদের সম্প্রদায় প্রতি সপ্তাহে পরিবর্তিত হচ্ছে যদিও আমাদের বেশ কিছু নিয়মিত পাঠক আছেন যারা প্রতি সপ্তাহে ‘জুহু রিডস’ এ পড়তে আসেন। আমাদের সবচেয়ে বড় সমাবেশে ত্রিশ জনেরও বেশি পাঠক ছিলেন যারা ‘জুহু রিডস’এ পড়তে এসেছিলেন।

উত্তরাপথ;. এই গ্রুপের সাথে জড়িত লোকের সংখ্যা কত?

জুহু রিডস: আগেই বলা হয়েছে, ‘জুহু রিডস’-এর তিনজন সহ-কিউরেটর রয়েছে দিয়া, রচনা এবং শুভ্রা। যাইহোক, আমাদের পাঠক প্রতি শনিবার পরিবর্তন হয়।কারণ আমাদের কিছু নিয়মিত পাঠক আছে যারা প্রতি সপ্তাহে ‘জুহু রিডস’ এর সাথে পড়তে জুহুর কাইফি আজমি পার্কে আসেন। পাঁচটা  থেকে সাতটা পর্যন্ত।

বইপ্রেমীদের সম্প্রদায় ছবি সৌজন্য – “জুহু রিডস”উত্তরাপথ;.

“‘জুহু রিডস’ ” কি আনুষ্ঠানিকভাবে  নিবন্ধিত গ্রুপ ?

জুহু রিডস : ‘জুহু রিডস’ হল ‘কিউবন রিডস’-এর মতো নীরব পাঠকদের একটি সম্প্রদায়। আমরা নিজেদের তৈরি করা নির্দেশিকা দ্বারা চালিত হই।

উত্তরাপথ;. আপনার গ্রুপ কিভাবে কাজ করে? আপনার কি অন্য রাজ্যে কোন শাখা আছে?

জুহু রিডস: ‘জুহু রিডস’ ‘কিউবন রিডস’ এর সাথে যুক্ত যা এখন ভারতে এবং ভারতের বাইরের শহরগুলিতে ৬০-এর বেশি সংগঠন নিয়ে গর্ব করে। ভারতে এবং বিদেশে আমাদের সমস্ত নীরব পাঠের সেশনগুলি ইনস্টাগ্রামের মাধ্যমে তাদের পাঠক সম্প্রদায়ের সাথে সংযুক্ত থাকে। প্রতিটি সেশন/শহর/অবস্থানের একটি ইনস্টাগ্রাম পৃষ্ঠা রয়েছে যার নাম ‘রিডস’ দিয়ে শেষ হয়, যেমন বোম্বেতে ‘জুহু রিডস’ এবং ‘বান্দ্রা রিডস’; বেঙ্গালুরুতে ‘কাববন রিডস’, এবং ‘হোয়াইটফিল্ড রিডস’ ইত্যাদি।

বইপ্রেমীদের সম্প্রদায় । ছবি সৌজন্য – “জুহু রিডস”

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


Roop Kishor Soni: একটি আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য তুলে ধরেছেন

উত্তরাপথঃ রাজস্থান মানেই ওজনদার রূপার গহনা ,আর তার উপর কারুকাজ। প্রচলিত এই ধারনা ভেঙ্গে আজ রূপোর গহনাকে আধুনিকতার সাথে শিল্পের এক অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন যে ব্যক্তি তিনি হলেন রূপ কিশোরী সোনী(Roop Kishor Soni)।তিনি ২০১৬ সালের ৯ ডিসেম্বর প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির কাছ থেকে তার অসাধারণ শিল্প কর্মের জন্য জাতীয় পুরুস্কার পান। রাজস্থানের জয়সলমেরের শহরের এই শিল্পী ৩.৮ গ্রাম ওজনের ০.৯ সেমি চওড়া রৌপ্য আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য খোদাই করেছেন।এই ছোট রূপার আংটিতে শিল্পী তাজমহল, সিডনি অপেরা হাউস, স্ট্যাচু অফ লিবার্টি, চীনের গ্রেট ওয়াল, আইফেল টাওয়ার, বিগ বেন, পিসার হেলানো টাওয়ার এবং মিশরীয় পিরামিডের চিত্র এক সাথে ফুটিয়ে তুলেছেন।এছাড়াও তিনি আরও দুটি পৃথক ডিজাইনের অত্যাশ্চর্য আংটি  তৈরি করেছেন।৮.৬ গ্রাম ওজনের একটি রিংয়ে তিনি সূর্যাস্তের সময় ভারতীয় উট সাফারি সহ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন ভারতীয় বিশেষত্ব ফুটিয়ে তুলেছেন,এবং অন্যটিতে বিভিন্ন হিন্দু দেব-দেবী ছবি এবং মন্দির খোদাই করেছিলেন। শিল্পী বলেছেন যে তিনি তার বাবার কাছ থেকে তার শৈল্পিক দক্ষতা উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছেন। সেই সাথে তিনি বলেন "আমার বাবাও একজন জাতীয় পুরুস্কার প্রাপ্ত শিল্পী ছিলেন। তিনি আমাকে শিল্পের এই দক্ষতা শিখিয়েছিলেন কারণ তিনি পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে শিল্পের ফর্মটিকে বাঁচিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন।" .....বিস্তারিত পড়ুন

Side effects of vitamin: ভিটামিনের আধিক্য আপনার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে

উত্তরাপথঃ ভিটামিনের প্রয়োজনীয়তা আমরা সবাই নিশ্চয়ই ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি যে সুস্থ থাকতে হলে শরীরে প্রয়োজনীয় সব ভিটামিন থাকা খুবই জরুরি।  ভিটামিন আমাদের সুস্থ করার পাশাপাশি আমাদের সমগ্র শরীরের বিকাশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।  যাইহোক, এটি অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া আমাদের জন্য ক্ষতিকারকও হতে পারে।  আসুন জেনে নিই অতিরিক্ত ভিটামিন গ্রহণের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া (Side effects of vitamin)সুস্থ থাকার জন্য শরীরে সব ধরনের পুষ্টি থাকা খুবই জরুরি।  এ কারণেই বয়স্ক থেকে শুরু করে চিকিৎসক, সবাই আমাদেরকে সুষম ও পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন।  সমস্ত পুষ্টি উপাদান আমাদের শরীরকে বিভিন্ন উপায়ে সুস্থ করে তোলে।  এর মধ্যে ভিটামিন একটি, যা আমাদের সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। .....বিস্তারিত পড়ুন

ফ্লিম রিভিউ -ওপেনহাইমার

উত্তরাপথ: বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্রিস্টোফার নোলান দ্বারা পরিচালিত”ওপেনহাইমার” একটি মাস্টারপিস মুভি। ছবিতে জে. রবার্ট ওপেনহেইমার, এক নামকরা পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পারমাণবিক বোমার বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।এই সিনেমায় ওপেনহাইমার এর জটিল জীবনকে বর্ণনা করা হয়েছে। সেই হিসেবে 'ওপেনহাইমার'কে বায়োপিক বলা যেতে পারে।  কারণ এটি একজন মানুষের গল্প। এই ছবির গল্প তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত।ছবির শুরুতে পারমাণবিক বোমা তৈরির আবেগের কথা বলা হয়েছে।  যেখানে নায়ক কিছু না ভেবে নিবেদিতপ্রাণভাবে এমন একটি অস্ত্র তৈরিতে নিয়োজিত থাকে যা বিশ্বকে ধ্বংস করতে পারে।  অস্ত্র তৈরি হওয়ার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে নায়ক তার কাজের ফলাফল দেখে অপরাধবোধে পূর্ণ হয়।  এবং তৃতীয় পর্যায়টি হল রাজনীতি  যা ওপেনহাইমারকে মোকাবেলা করতে হয়েছে।  পুরো সিনেমাটি রঙিন হলেও রাজনৈতিক অংশ সাদা-কালো রাখা হয়েছে।  এই তিনটি সময়কালে যা কিছু ঘটছে, তা সবই একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত। .....বিস্তারিত পড়ুন

Electoral Bond এর গোপনীয়তা সরিয়ে রাজনৈতিক দলগুলিকে, জানাতে হবে প্রাপ্ত অনুদানের পরিমাণ

উত্তরাপথঃ বুধবার, নির্বাচনী বন্ড (Electoral Bond)প্রকল্পের আইনি বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদনের শুনানি হয়। শীর্ষ আদালত তার মন্তব্যে বলেছে, 'নির্বাচনী বন্ডগুলি রাজনৈতিক দলগুলিকে বেনামী অর্থ প্রদান করে, কারণ তাদের কেনাকাটা সম্পর্কিত রেকর্ডগুলি স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার কাছে উপলব্ধ যা শুধুমাত্র তদন্তকারী সংস্থাগুলি অ্যাক্সেস করতে পারে৷ এর আগে নির্বাচনী বন্ড’ (Electoral Bond) সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) কেন্দ্র দাবি করেছিল, রাজনৈতিক দলগুলির আয়ের উৎস জানার অধিকার নেই জনতার।এবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তৎপর হল নির্বাচন কমিশন (Election Commission of India)।বুধবার বিকেল ৫টার মধ্যে যাবতীয় হিসেব জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কমিশনের তরফে।নির্বাচনী বন্ডের (Electoral Bond)মামলায় কেন্দ্রের আর্জি সত্বেও সুপ্রিম কোর্ট রাজনৈতিক দলগুলিকে আয়ের উৎস জানাতে বলেছিল। আদলত নির্দেশ দিয়েছিল, গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোন রাজনৈতিক দল কত অনুদান মিলেছে, সেই তথ্য বন্ধ খামে জানাতে হবে।এর আগেও নির্বাচনী বন্ডের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে একাধিক মামলা হয়েছে শীর্ষ আদালতে। মামলাকারীরা অভিযোগ করেছিলেন, রাজনৈতিক দলগুলি এই নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ বিদেশ থেকে পেতে পারে এর ফলে গণতন্ত্র ধ্বংস হবে। যদিও কোনও রাজনৈতিক দলই এই দাবি মানতে চায়নি। ৩ অক্টোবর মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সব তথ্য দিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। এই রায়ের পরেই তৎপর হল কমিশন। .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top