চীনের মানচিত্রের নয়া সংস্করণ নিয়ে ভারত –চীন টানাপোড়েন

চীনের মানচিত্রের নয়া সংস্করণ ছবি – টুইটার

উত্তরাপথঃ সোমবার চীনের সরকারি সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসে ২০২৩ সালের স্ট্যান্ডার্ড মানচিত্রের নয়া সংস্করণ প্রকাশ করা হয়েছে।চীনের ন্যাশনাল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অফ সার্ভেয়িং, ম্যাপিং এবং জিওইনফরমেশন দ্বারা প্রকাশিত মানচিত্রটিতে ভারতের অরুণাচল প্রদেশ এবং লাদাখ অঞ্চলের আকসাই চীনের কিছু অংশ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা বর্তমানে ভারতীয় প্রশাসনের অধীনে রয়েছে।একই সঙ্গে তাইওয়ান ও দক্ষিণ চীন সাগরকেও চীন নিজেদের ম্যাপের অন্তর্ভুক্ত করেছে । আসন্ন জি-২০ বৈঠকের আগে চীনের এহেন আচরণ দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে নয়া মাত্রা যোগ করল। যদিও চীনের দাবিকে নস্যাৎ করে অরুণাচল ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ আছে, ছিল, থাকবে বলে সরব হয়েছে নয়াদিল্লি। ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর চীনের এহেন দাবিকে ‘অযৌক্তিক’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, ‘অরুণাচল কখনওই চীনের নয়। ভারতের কিছু ভূখণ্ড নিজেদের বলে দাবি করা চীনের পুরনো অভ্যাস। এহেন অযৌক্তিক দাবি করার কোনও মানে হয় না।’

চীনের মানচিত্রের নয়া সংস্করণ প্রকাশ করার সাম্প্রতিক পদক্ষেপকে উসকানিমূলক কাজ হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা শান্তিপূর্ণভাবে সীমান্ত বিরোধ সমাধানের চলমান প্রচেষ্টাকে ক্ষুন্ন করছে। ভারত ক্রমাগত আলোচনা এবং কূটনৈতিক সম্পর্কের মাধ্যমে সমস্যাটির সমাধানের পক্ষে ওকালতি করেছে এবং পারস্পরিক বোঝাপড়ার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছে।

ভারত ও চীনের মধ্যে আঞ্চলিক বিরোধের প্রধান কারণ হল বিরোধপূর্ণ এলাকাগুলি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ, সমৃদ্ধ প্রাকৃতিক সম্পদ এবং গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য রুটের নৈকট্য রয়েছে। অমীমাংসিত সীমান্ত সমস্যার কারণে মাঝে মাঝে সামরিক অস্থিরতা এবং সীমান্ত অঞ্চলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয় ।  

চীনের আঞ্চলিক দাবির বিরুদ্ধে ভারতের জোরালো প্রতিবাদ তার সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষা করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ভারত সরকার স্পষ্ট করে বলেছে যে বিতর্কিত অঞ্চলে একতরফাভাবে স্থিতাবস্থা পরিবর্তনের কোনো প্রচেষ্টা সহ্য করা হবে না। ভারত তার  প্রতিক্রিয়া আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছেও জানিয়েছে।

চীনের এহেন আচরণে সরব হয়েছে কংগ্রেসও। চীনের মানচিত্র প্রকাশকে তীব্র কটাক্ষ করে কংগ্রেস বলেছে, এগুলি ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ। কোনও বেআইনি দাবি আন্তর্জাতিক মানচিত্র পাল্টাতে পারে না। দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে বলেন, ‘অন্য দেশের অঞ্চলের নাম পরিবর্তন ও মানচিত্র পুনর্নিমাণ চীনের অভ্যাস। ভারতের জাতীয় কংগ্রেস এহেন আচরণের ঘোর বিরোধী।’ অন্যদিকে, চীনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রসঙ্গে মোদিকে কটাক্ষ করেছেন উদ্ধব থ্যাকারেপন্থী শিবসেনা সাংসদ সঞ্জয় রাউত। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর উচিত বিষয়টি খতিয়ে দেখা। কয়েকদিন আগেই চীনের প্রতিনিধিদের আলিঙ্গন করেছিলেন আপনি। চীনের বিরুদ্ধে সার্জিকাল স্ট্রাইক করার সাহস রয়েছে আপনার?’

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


 সম্পাদকীয়

পশ্চিমবঙ্গের ছোট-বড় যে কোনও নির্বাচন মানেই রাজনৈতিক হিংসা । সদ্য অনুষ্ঠিত পঞ্চায়েত নির্বাচনও তার ব্যতিক্রম নয়।রাজনৈতিক হিংসা যাতে না হয় নির্বাচনে তার জন্য যাবতীয় উদ্যোগ গ্রহণ করার পরও হিংসা অব্যাহত থাকল, সারা রাজ্যজুরে ঘটল তেরোটি মৃত্যুর ঘটনা ।পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে  ঘট হিংসা রাজ্যের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহ নাগরিকদের ভোটাধিকার নিয়ে আমাদের সামনে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। আমাদের রাজ্যে চলতে থাকা রাজনৈতিক হিংসার পেছনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ একাধিক কারণ থাকলেও বেকারত্ব সহ দুর্বল গ্রামীন অর্থনীতি এর প্রধান কারণ । দুর্বল গ্রামীন অর্থনীতির কারণে বেশীরভাগ গ্রামীন এলাকার মানুষদের অর্থনৈতিক উপার্জনের সুযোগ খুব কম। বিশেষত স্বল্প শিক্ষিত সেই সব মানুষদের যারা না পায় সরকারি চাকুরি না পারে ঠিকা শ্রমিকের কাজ করতে, গ্রামীন অর্থনীতিতে বিশাল সংখ্যক মানুষ এই শ্রেনীর অন্তর্গত .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top