১ লা জুন ২০২৩

সম্পাদকীয়

আমাদের নতুন ভাষা ইমোজি

প্রযুক্তি ও বিশ্বায়ন আজ সব ভাষার শেকড় নাড়িয়ে দিয়েছে।  ভাষার ঐতিহ্যগত কাঠামো আজ ভেঙে পড়ছে বলে মনে হচ্ছে। নিজস্ব ভাষা ঐতিহ্য ধরে রাখতে ২১ ফেব্রুয়ারী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন হয়ে গেল। আজ দেশের বিভিন্ন রাজ্যের ভাষার মানুষ যেমন মনে করে যে হিন্দির কারণে তাদের ভাষার প্রভাব কমে যাচ্ছে, ঠিক একইভাবে ইংরেজির কারণে হিন্দির প্রসার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে মনে করেন বিপুলসংখ্যক হিন্দিপ্রেমী।  কিন্তু ইংরেজির ক্ষেত্রে কী হবে?  সম্প্রতি তথ্যে প্রকাশ যুক্তরাজ্যের তরুণ ছাত্ররা ইংরেজি শব্দের সঠিক বানানকে অবহেলা করছে। যখন আমরা একটি পূর্ণাঙ্গ এবং শক্তিশালী ভাষার কথা চিন্তা করি, তখন আমাদের মনে কিছু বিষয় উঠে আসে।  যেমন, এটির একটি উন্নত স্ক্রিপ্ট থাকতে এবং সেইসাথে একটি  বিশাল শব্দ জগত  এবং বহু সাংখ্যক মানুষের কথোপকথনের এক মাধ্যম হবে। এর নিজস্ব সাহিত্য থাকবে, যা মানুষ পড়বে। আজকের কোন ভাষা কি এই ঐতিহ্যগত মানদণ্ডের দাবি মেনে চলে? হিংলিশ এবং বেংলিশের মতো নতুন ভাষার রূপগুলি ইংরেজি ব্যাকরণের প্রয়োজনীয়তাকে ব্যাপকভাবে সংকুচিত করেছে। 

আমাদের নতুন প্রজন্মের মধ্যে একটি নতুন ভাষা গড়ে উঠছে। যে ভাষার সঠিক কোনও বানান নেই, নেই কোনও শব্দ ভাণ্ডার আর কোনও ব্যাকরণ। এই নতুন ভাষা  আমাদের ঐতিহ্যগত ভাষার পরিসরকে সংকুচিত করছে। আর এই নতুন ভাষার নাম ইমোজি। এই ভাষাকে আমরা উপেক্ষা করতে পারি না। অনেক ধরণের ছোট অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে মনের ভাব প্রকাশ করে ইমোজি। আপনি যদি কিছু পছন্দ করেন তবে একটি সম্পূর্ণ বাক্য লিখতে হবে না একটি ইমোজি ব্যবহার করলেই আপনি আপনার মনের ভাব বোঝাতে পারবেন আবার কোনো কিছুর উপর আপনার মতামত প্রকাশ করতে চান তার জন্য ভালো শব্দ খুঁজে বের করার দরকার নেই একটি ইমোজি যথেষ্ট।  এমনকি ইমোজি দিয়ে পুরো প্রেমপত্র লেখা যায়।সোশাল প্লাটফর্মগুলিতে এখন ইমোজির যথেচ্ছ ব্যবহার চোখে পড়ছে।  গুগল, টুইটার, ফেসবুক হয়াটসঅ্যাপ ছাড়াও এখন বহুজাতিক কোম্পানিগুলিও তাদের প্রচারে ইমোজি ব্যবহার করছে। এখন অনলাইনে ৯২ শতাংশ মানুষ প্রতিদিন ইমোজি ব্যবহার করে এবং ১০ বিলিয়নেরও বেশী ইমোজি পাঠানো হয়। এটি মানুষের মধ্যে ভাষাগত যোগাযোগ পরিবর্তনের একটি উদাহরণ।

ভাষার এই অবক্ষয় ঠেকাতে ইংল্যান্ড, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, নিউজিল্যান্ড, কানাডা, বাহামা, জ্যামাইকা, গায়ানা, দক্ষিণ আফ্রিকা এমনকি এশিয়ার দেশগুলোতেও তরুণ শিক্ষার্থীদের বানান প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত করছে।  তাদের উৎসাহ দিতে পুরুস্কৃত করা হচ্ছে।সেই সব দেশের সরকার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তাদের নতুন প্রজন্মের মধ্যে ইংরেজি বানান সংরক্ষণ করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছে।  কিন্তু ভাষা সংরক্ষণের সমস্ত ব্যবস্থা সত্ত্বেও আজ ইংরেজি নিজেকে সামলাতে সক্ষম নয়।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


Side effects of vitamin: ভিটামিনের আধিক্য আপনার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে

উত্তরাপথঃ ভিটামিনের প্রয়োজনীয়তা আমরা সবাই নিশ্চয়ই ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি যে সুস্থ থাকতে হলে শরীরে প্রয়োজনীয় সব ভিটামিন থাকা খুবই জরুরি।  ভিটামিন আমাদের সুস্থ করার পাশাপাশি আমাদের সমগ্র শরীরের বিকাশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।  যাইহোক, এটি অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া আমাদের জন্য ক্ষতিকারকও হতে পারে।  আসুন জেনে নিই অতিরিক্ত ভিটামিন গ্রহণের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া (Side effects of vitamin)সুস্থ থাকার জন্য শরীরে সব ধরনের পুষ্টি থাকা খুবই জরুরি।  এ কারণেই বয়স্ক থেকে শুরু করে চিকিৎসক, সবাই আমাদেরকে সুষম ও পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন।  সমস্ত পুষ্টি উপাদান আমাদের শরীরকে বিভিন্ন উপায়ে সুস্থ করে তোলে।  এর মধ্যে ভিটামিন একটি, যা আমাদের সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। .....বিস্তারিত পড়ুন

ওজন হ্রাস (weight loss) মস্তিষ্কের বার্ধক্যের লক্ষণগুলিকে ধীর করে

উত্তরাপথঃ এপ্রিলে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, শাকসবজি, সামুদ্রিক খাবার এবং গোটা শস্য সমৃদ্ধ একটি ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্য খাওয়া - এমনকি শুধুমাত্র খাদ্যের নির্দেশিকা অনুসরণ করে   ওজন হ্রাস (weight loss)মস্তিষ্কের বার্ধক্যের লক্ষণগুলিকে ধীর করে বলে মনে করা হয়।সাম্প্রতি ডিউক ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিনের বিজ্ঞানীদের দ্বারা পরিচালিত, একটি  গবেষণায় দেখা গেছে যে ওজন হ্রাস মস্তিষ্কে বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে ৯ মাস পর্যন্ত ধীর করে (aging process) দিতে পারে। গবেষণায় ৬০ থেকে ৭৮ বছর বয়সের মধ্যে ৪৭ জন অংশগ্রহণকারীকে জড়িত করা হয়েছিল, যাদের প্রত্যেকেরই ওজন বেশি বা স্থূল ছিল এবং তাদের অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যগ্রহণ  ছিল। তাদের এলোমেলোভাবে একটি ক্যালোরি-সীমাবদ্ধ গ্রুপ বা একটি নিয়ন্ত্রণ গ্রুপে বরাদ্দ করা হয়েছিল।ক্যালোরি-সীমাবদ্ধতা গোষ্ঠীর সদস্যদের একটি খাদ্য পরিকল্পনা অনুসরণ করে, যার লক্ষ্য ছিল তাদের আনুমানিক প্রয়োজনের চেয়ে ১০ – ১৫% কম ক্যালোরি গ্রহণ করা। অন্যদিকে, নিয়ন্ত্রণ গ্রুপ তাদের খাদ্য পরিবর্তন করেনি .....বিস্তারিত পড়ুন

প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে

উত্তরাপথঃ হঠাৎ করেই একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে।২০২৩ এর ৩০ অক্টোবর  প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি মৃত আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত একটি নতুন দ্বীপের জন্ম দিয়েছে। বিস্ফোরণের পর জাপানের ওগাসাওয়ারা দ্বীপ চেইনের কাছে বিশাল বিশাল পাথরের টুকরো দেখা গেছে। এ বিষয়ে জাপানি গবেষক বলেন, গত মাসে প্রশান্ত মহাসাগর জলের নিচে আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের পর টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে ইওটো দ্বীপের কাছে একটি ছোট নতুন দ্বীপের উদ্ভব হয়েছে।টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকম্প গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ফুকাশি মায়েনো জানিয়েছেন যে নতুন দ্বীপ, এখনও যার নাম নেই প্রশান্ত মহাসাগরের ইওটো দ্বীপ থেকে ১ কিলোমিটার দূরে ১০০ মিটার ব্যাসের একটি পাথুরে দ্বীপে একটি phreatomagmatic বিস্ফোরণ ঘটেছে। টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে বিস্ফোরণটি দেখা গেছে। ভূপৃষ্ঠের নীচে জলের সাথে লাল গরম ম্যাগমা সংঘর্ষের কারণে প্রতি কয়েক মিনিটে বিস্ফোরণ ঘটে।গত ২১ অক্টোবর, ২০২৩-এ অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়েছিল, যা আগে ইও জিমা নামে পরিচিত ছিল এবং এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের স্থান ছিল। প্রায় ১০ দিন ধরে অগ্ন্যুৎপাত চলার পর, আগ্নেয়গিরির উপাদান অগভীর সমুদ্রতলের উপর জমা হয় এবং প্রায় ১৬০ ফুট পর্যন্ত উচ্চতায় বড় বড় পাথরের আকারে সমুদ্র পৃষ্ঠের উপরে উঠে আসে। .....বিস্তারিত পড়ুন

ফ্লিম রিভিউ -ওপেনহাইমার

উত্তরাপথ: বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্রিস্টোফার নোলান দ্বারা পরিচালিত”ওপেনহাইমার” একটি মাস্টারপিস মুভি। ছবিতে জে. রবার্ট ওপেনহেইমার, এক নামকরা পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পারমাণবিক বোমার বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।এই সিনেমায় ওপেনহাইমার এর জটিল জীবনকে বর্ণনা করা হয়েছে। সেই হিসেবে 'ওপেনহাইমার'কে বায়োপিক বলা যেতে পারে।  কারণ এটি একজন মানুষের গল্প। এই ছবির গল্প তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত।ছবির শুরুতে পারমাণবিক বোমা তৈরির আবেগের কথা বলা হয়েছে।  যেখানে নায়ক কিছু না ভেবে নিবেদিতপ্রাণভাবে এমন একটি অস্ত্র তৈরিতে নিয়োজিত থাকে যা বিশ্বকে ধ্বংস করতে পারে।  অস্ত্র তৈরি হওয়ার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে নায়ক তার কাজের ফলাফল দেখে অপরাধবোধে পূর্ণ হয়।  এবং তৃতীয় পর্যায়টি হল রাজনীতি  যা ওপেনহাইমারকে মোকাবেলা করতে হয়েছে।  পুরো সিনেমাটি রঙিন হলেও রাজনৈতিক অংশ সাদা-কালো রাখা হয়েছে।  এই তিনটি সময়কালে যা কিছু ঘটছে, তা সবই একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত। .....বিস্তারিত পড়ুন