সুনীতা এবং বুচকে উদ্ধার করতে  ড্রাগন স্পেসক্রাফ্ট পৌঁছল আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে

ছবি – সৌজন্যে NASA x handle

সুনীতা ও বুচকে ফেরাতে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে পৌঁছে গেল মহাকাশযান। সঙ্গে পৌঁছলেন দুই মহাকাশচারীও। লাইভ স্ট্রিমে দেখা গিয়েছে তাঁদের পৌঁছনোর মুহূর্ত। দীর্ঘদিন ধরে মহাকাশে আটকে থাকা সুনীতারা তাঁদের দেখেই জড়িয়ে ধরেন। আশার আলো নিয়ে পৌঁছনো দুই নভোশ্চরই এখন তাঁদের কাছে ত্রাতা। তবে এই অভিযানও ভয়ঙ্কর বাধার মুখে পড়েছিল।

আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে ‘ক্রু-৯ মিশন’-এর জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে নাসা এবং স্পেস এক্স। বৃহস্পতিবার ২৬ সেপ্টেম্বর মহাকাশে পাড়ি দেবে এই মিশনের রকেট। সুনীতা উইলিয়াম  এবং বুচ উইলমারকে ফেরানোর জন্য এই মহাকাশযান পাঠানো হচ্ছে। তবে সেক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে নতুন বিপদ। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ফেরানো হবে সুনীতাদের। তারই তোড়জোড় শুরু করেছে নাসা। এই নয়া ‘ক্রু-৯ মিশন’-এর মহাকাশযানে চেপে সেই লক্ষ্যে পাড়ি দিচ্ছেন দুই নভোশ্চর। মহাকাশযানে আরও দু’টি ফাঁকা আসন রাখা হচ্ছে সুনীতা ও বুচের জন্য। তবে জানা গিয়েছে, ক্রান্তীয় একটি ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বিপদের সম্মুখীন হতে পারে এই মিশন। ‘ট্রপিক্যাল সাইক্লোন নাইন’ নামে ঘূর্ণিঝড়টি ঘণীভূত হয়েছে। যেটি ক্রমশ গাল্ফ অফ মেক্সিকো এবং ফ্লোরিডার পশ্চিম উপকূলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।

গত শনিবার ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভারেল থেকে দুপুর ১টা ১৭ মিনিটে ফ্যালকন-৯ উদ্ধারকারী রকেট উৎক্ষেপণ হয়। সুনীতা উইলিয়ামস এবং বুচ উইলমোরকে উদ্ধার করতে সেই রকেটের মধ্যে ছিল এক ড্রাগন স্পেসক্রাফ্ট। যেটি রবিবার বিকেল সাড়ে ৫টায় পৌঁছয় আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে। মহাকাশযানটিতে ছিলেন নাসার নভোশ্চর নিক হগ এবং রাশিয়ার রসকসমসের আলেকজ়ান্ডার গর্বুনভ। চার আসন বিশিষ্ট মহাকাশযানের দু’টি খালি রাখা হয়েছে সুনীতা এবং বুচকে ফিরিয়ে আনার জন্য। আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে মহাকাশযানটিকে নোঙর করার পর নিক এবং অ্যালেকজ়ান্ডার সন্ধ্যা ৭টায় সুনীতাদের কাছে পৌঁছন।

অন্যদিকে সাংবাদিক সম্মেলন করে নাসার ডেপুটি অ্যাডমিনিস্ট্রেটর পাম মেলরয় বলেন, ‘ নিক এবং আলেকজ়ান্ডার যখন ফেব্রুয়ারি মাসে ফিরবেন, সুনীতা এবং বুচকে সঙ্গে নিয়েই আসবেন। তাঁরা আগামী পাঁচ মাস সুনীতাদের সঙ্গেই স্পেস স্টেশনে থাকবেন। ২০০ রকমের পরীক্ষা নিরীক্ষা করবেন তাঁরা।’

তবে সুনীতা এবং ব্যারিকে ফিরিয়ে আনার এই অভিযানও একেবারেই মসৃণ ছিল না। আগেই দু’বার অভিযান পিছিয়ে যায়। উৎক্ষেপণের পর নির্দিষ্ট কক্ষপথে পৌঁছতে তেমন কোনও সমস্যা না হলেও যে ফ্যালকন-৯ রকেট মহাকাশযানটিকে কক্ষপথে পৌঁছে দেয়, তার থেকে ক্যাপসুলটি আলাদা হওয়ার সময় যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা দেয় বলে জানিয়েছে স্পেস এক্স। এতে রকেটের উপরের অংশটি সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে খবর।

স্পেস এক্স জানিয়েছে, রকেটের উপরের অংশটি পরিকল্পনা মাফিক মহাসাগরে এনে ফেলার কথা ছিল। কিন্তু কক্ষপথ থেকে পৃথিবীতে ফিরে আসার সময় রকেটের উপরের অংশের বেশ খানিকটা পুড়ে যায়।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


বিশ্বকাপ ২০২৩: পাকিস্তানকে হারিয়ে Afghanistan এ ঈদের মতো পরিস্থিতি

আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপ ২০২৩-এর ২২ তম ম্যাচে আফগানিস্তান পাকিস্তানকে বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করেছে। সেই ম্যাচে পাকিস্তানকে ৮ উইকেটে হারিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করে আফগানিস্তান। এই প্রথম ওয়ানডেতে পাকিস্তানকে হারাল আফগানিস্তান আর এই পাকিস্তানকে হারিয়ে আফগানিস্থানে(Afghanistan)এখন ঈদের মতো পরিস্থিতি।এক আফগানিস্থানি সমর্থকের মতে এটি ছিল আমাদের ইতিহাসের একটি বিরল মুহূর্ত যখন পুরো জাতি খুশি ছিল এবং নিজেদের মত করে তারা তাদের এই খুশী উদযাপন করেছেন। এক্স হ্যান্ডেলে এক সমর্থকের মতে, সেদিন উদযাপন ছিল, পার্টি ছিল। এটি ছিল আমাদের ইতিহাসের একটি বিরল মুহূর্ত যখন পুরো জাতি খুশি ছিল এছাড়াও, এটি ছিল ২০২৩ বিশ্বকাপের তৃতীয় বড় আপসেট । টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় বাবর আজমের দল। প্রথমে ব্যাট করে পাকিস্তান দল ২৮২ রান করে। জবাবে আফগানিস্তান দল ২৮৩ রান তাড়া করে ৪৯ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্য অর্জন করে। এই ম্যাচে হারের পর বেশ ক্ষুব্ধ দেখাচ্ছিল অধিনায়ক বাবর আজমকে। ম্যাচ-পরবর্তী উপস্থাপনার সময়, তিনি দলের ত্রুটিগুলি তালিকাভুক্ত করেছিলেন এবং পরাজয়ের জন্য নিজেদের দায়ী করেছিলেন। .....বিস্তারিত পড়ুন

NASA Carbon Emission: পৃথিবী কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করার চেয়ে বেশি নির্গত করছে

উত্তরাপথঃ কার্বন নির্গমন (NASA Carbon Emission) সম্পর্কে নাসার সর্বশেষ আবিষ্কার পৃথিবীর জন্য এক সতর্কতা সংকেত। মহাকাশ সংস্থার মতে, পৃথিবী কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করার চেয়ে বেশি নির্গত করছে, যার ফলে গ্রিনহাউস গ্যাসের বায়ুমণ্ডলীয় ঘনত্ব উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। NASA এর এই আবিষ্কারটি জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য কারণ হিসাবে দেখা যেতে পারে, সেইসাথে কার্বন নিঃসরণ কমানোর জন্য জরুরি পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার উপর আলোকপাত করেছে।নাসার সর্বশেষ গবেষণায় যে তথ্য উঠে এসেছে তাতে পৃথিবীর মহাসাগর এবং ভূমি-ভিত্তিক বাস্তুতন্ত্র আগের চেয়ে কম কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করছে। গবেষণায় দেখা গেছে যে গত এক দশকে ভূমি এবং মহাসাগর দ্বারা শোষিত কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ ৫% হ্রাস পেয়েছে, যার ফলে গ্যাসের বায়ুমণ্ডলীয় ঘনত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। .....বিস্তারিত পড়ুন

Bandna Festival: ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল পাঁচ দিন বাঁদনার আমেজে মশগুল থাকে

বলরাম মাহাতোঃ চিরাচরিত রীতি অনুযায়ী কার্তিক অমাবস্যার আগের দিন থেকে মোট পাঁচ দিন ব্যাপী বাঁদনার(Bandna Festival) আমেজে মশগুল থাকে ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। অবশ্য, পরবের শুভ সূচনা হয় তারও কয়েকদিন আগে। আদিবাসী সম্প্রদায়ের সামাজিক শাসন ব্যবস্থার চূড়ামণি হিসাবে গাঁয়ের মাহাতো, লায়া, দেহরি কিম্বা বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি নির্ধারণ করেন- ৩, ৫, ৭ বা ৯ ক’দিন ধরে গবাদি পশুর শিং-এ তেল মাখাবে গৃহস্বামী! রুখামাটির দেশের লোকেরা কোনোকালেই মাছের তেলে মাছ ভাজা তত্ত্বের অনুসারী নয়। তাই তারা গোরুর শিং-এ অন্য তেলের পরিবর্তে কচড়া তেল মাখানোয় বিশ্বাসী। কারণ কচড়া তেল প্রস্তুত করতে গোধনকে খাটাতে হয় না যে! কচড়া তেলের অপ্রতুলতার কারণে বর্তমানে সরষের তেল ব্যবহৃত হলেও, কচড়া তেলের ধারণাটি যে কৃষিজীবী মানুষের গবাদি পশুর প্রতি প্রেমের দ্যোতক, তা বলাই বাহুল্য! এভাবেই রাঢ বঙ্গে গোবর নিকানো উঠোনে হাজির হয়- ঘাওয়া, অমাবস্যা, গরইয়া, বুঢ়ি বাঁদনা ও গুঁড়ি বাঁদনার উৎসবমুখর দিনগুলি। পঞ্চদিবসে তেল দেওয়া, গঠ পূজা, কাঁচি দুয়ারি, জাগান, গহাইল পূজা, চুমান, চউক পুরা, নিমছান, গোরু খুঁটা, কাঁটা কাঢ়া প্রভৃতি ১১টি প্রধান পর্ব সহ মোট ১৬টি লোকাচারের মাধ্যমে উদযাপিত হয় বাঁদনা পরব(Bandna Festival )। .....বিস্তারিত পড়ুন

Vijay Stambh : চিতোরগড় দুর্গে বিজয় স্তম্ভ হিন্দু – মুসলিম সহাবস্থানের প্রতীক

উত্তরাপথঃ খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীতে মৌর্য রাজবংশ কর্তৃক স্থাপিত চিতোরগড় দুর্গ সাহস ও আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে আজও দাঁড়িয়ে আছে। এই দুর্গ তার বিশাল কাঠামো, রাজপ্রাসাদ, একাধিক  সুদৃশ্য মন্দির সহ সুন্দর জলাশয়ের জন্য বিখ্যাত।৭০০-একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, এই দুর্গটিতে প্রায় ৬৫টি ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন রয়েছে যা রাজপুত এবং ইসলামিক স্থাপত্য শৈলীর সূক্ষ্মতার প্রমান দেয়। বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh)) হল এই দুর্গে অবস্থিত,সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর কাঠামো।এই আশ্চর্য-অনুপ্রেরণামূলক স্তম্ভটি কেবল তার উচ্চতার জন্য বিখ্যাত নয়,এটি রাজপুতদের অদম্য সাহস এবং অধ্যবসায়ের গল্পও বলে যা চিতোরগড় দুর্গেরই সমার্থক হয়ে উঠেছে।বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh), নাম থেকে বোঝা যায়, বিজয়ের প্রতীক।  প্রাচীনকালে যে কোনো যুদ্ধ অভিযানের সাফল্যের পর সেই বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতে রাজারা মন্দির, স্তূপ, স্মৃতিস্তম্ভ ও স্তম্ভ নির্মাণ করতেন।  ৯ তলা এই বিজয় স্তম্ভটি ১৯৪০ থেকে ১৪৪৮ সালের মধ্যে মহারানা কুম্ভ দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top