সোমের প্রতি তারাঃ একটি অনন্য পত্রকাব্য

ড. জীবনকুমার সরকারঃ বাংলা কাব্যসাহিত্যে মধুসূদন দত্ত একটি মাইলস্টোন। তাঁর ‘বীরাঙ্গনা’ কাব্যের অনন্য নির্মাণ-কীর্তির কথা সকলেই জানেন। মোট এগারোটি পত্রে নির্মিত এই কাব্যনাট্যের দ্বিতীয় পত্রকাব্যের নাম ‘সোমের প্রতি তারা’। এগারোজন নারী আলাদা আলাদা এগারোজন পুরুষ বা প্রেমিকাকে পুরুষতান্ত্রিক সকল সংস্কারের উর্ধ্বে উঠে প্রেম নিবেদন করেছেন তাদের মতো করো। এক্ষেত্রে প্রতিটি পত্র স্বতন্ত্র। প্রেম নিবেদনে এই এগারোজন নারীর ভাষা ও বক্তব্যে যে সাহস ও উদ্দীপনা পরিলক্ষিত হয়েছে, তাতে আজকের সময়ে দাঁড়িয়ে পরাক্রমশালিতার উজ্জ্বল পরিচয় বহন করছে।

বীরাঙ্গনা কাব্যের সবচেয়ে বৈপ্লবিক পত্র ‘সোমের প্রতি তারা’। তারার বংশকৌলীন্য ও গৌরব আছে। আছে বিশাল সামাজিক মর্যাদা। গুরু বৃহস্পতির পত্নী সে। তবু সে-সব বিষয়কে অবহেলা করে স্বামীর শিষ্য সোমদেবের প্রতি বিমুগ্ধা হয়েছেন। সহজ করে বললে বলতে হয় প্রেমে মত্ত হয়ে উঠেছেন। উন্মত্ত প্রেমে বৃহস্পতিপত্নী তারাদেবী স্বামী-শিষ্য সোমকে পাবার জন্য সব নীতি, ধর্ম, পুরনো মূল্যবোধ জলাঞ্জলি দিয়েছেন। সমাজ বহির্ভূত প্রেমের আস্ফালন সেকালেও যেমন, একালেও তেমন নিন্দনীয়। সেখানে পৌরাণিক চরিত্র তারার এই প্রেমপত্র একটি বিস্ময়।

তারার স্বামী গুরুবৃহস্পতির কাছে যখন সোমদেব প্রথম আসেন, তখন প্রথম দর্শনেই তারা তার প্রেমে পড়েন। তারার সেই প্রথম প্রেমানুরাগ ও বিমুগ্ধতা মধুসূদন রূপায়িত করেছেন এইভাবে :

“যেদিন প্রথমে তুমি এ শান্ত আশ্রমে

প্রেবেশিলা, নিশাকান্ত, সহসে ফুটিল

নবকুমুদিনী সম এ পরাণ মম

উল্লাসে, ভাসিল যেনো আনন্দ সলিলে।”

এইভাবে গুরুবৃহস্পতির শান্ত আশ্রম প্রেমের তরঙ্গে কেঁপে ওঠে। কেঁপে ওঠে তারার তরঙ্গহীন প্রশান্ত হৃদয়। ১৬৮ পঙক্তির দীর্ঘ এই প্রেমপত্র যে কেমন হবে, তা পত্রের শুরুর দিকে দৃষ্টপাত করা যাক; যেখানে তারা সোমের প্রতি দুর্বলতাবশত হৃদয়ের আকুতি প্রকাশ করছেন এইভাবে :
“কি বলিয়া সম্বোধিবে, হে সুধাংশুনিধি,
তোমারে অভাগী তারা? গুরুপত্নী আমি
তোমার, পুরুষরত্ন; কিন্তু ভাগ্যদোষে,
ইচ্ছে করে দাসী হয়ে সেবি পা দুখানি!”
এখানে মধুসূদন তারাকে পুরাণের বিপরীতে দাঁড় করিয়েছেন। পুরাণের তারা হৃদয়জ কামনায় বিহ্বল সোমকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। সোমকে নিবৃত্ত করেছেন। মহাকবি মাইকেল মধুসূদন পুরাণের সেই থিমকে ভেঙে বিনির্মাণ করেছেন আধুনিকতা। উনিশ শতকের বাংলায় মধুসূদন ছাড়া এমন দুঃসাহস আর কেউ দেখাতে পারেননি।

অন্তেবাসী নারীর হৃদয়ে কী সাংঘাতিক প্রেম সঞ্চারিত করেছেন কবি মধুসূদন, তা তারার কথাতেই স্পষ্ট। সোম গুরুপত্নী তারাকে প্রণাম করলে তারা পেয়েছে অসম্ভব যন্ত্রণা :

“গুরুপত্নী বলি যবে প্রণমিতে পদে

সুধানিধি, মুদি আঁখি, ভাবিতাম মনে

মানিনী যুবতী আমি, তুমি প্রাণপতি,

মানভঙ্গ-আশে নত দাসীর চরণে।”

এ কেবল সাধারণ প্রেম নয়। পরকীয়া প্রেমের সূক্ষ্ম উদ্ভাসন। মধুসূদন সুনিপুণ চিত্রকর। তাঁর চোখ ও মন ক্যামেরার মতো কাজ করেছে। সবচেয়ে বড়ো কথা, চিন্তন ও মননে আধুনিক না হলে এমন চিত্রকর হওয়া যায় না। উনিশ শতকের রেনেসাঁর যুক্তিবাদ, মানবতাবাদ ও বিজ্ঞানচেতনা মধুসূদনকে মহত্ব দান করেছিলো, যার ফসল এই জাতীয় কবিতার নির্মাণ।

পরকীয়া প্রেমের উদ্দামতায় তারা উন্মত্ত হলেও সামাজিক রীতি-নীতির কথাও তারাকে দগ্ধ করেছে। তাই তারা তাঁর মানসযন্ত্রণা প্রকাশ করেছেন এইভাবে :

“গুরুপত্নী চাহে ভিক্ষা,—দেহ ভিক্ষা তারে!

দেহ ভিক্ষা ছায়ারূপে থাকি তব সাথে

দিবানিশি! দিবানিশি সেবি দাসীভাবে

ও পদযুগল,নাথ,—হা ধিক্, কি পাপে,

হায় রে, কি পাপে,বিধি, এ তাপ লিখিলি

এ ভালে? জনম মম মহা ঋষিকুলে,

তবু চণ্ডালিনী আমি? ফলিল কি এবে

পরিমলাকর ফুলে, হায়, হলাহল?

কোকিলের নীড়ে কি রে রাখিলি গোপনে

কাকশিশু? কর্ম্মনাশা—পাপ-প্রবাহিণী!—

কেমনে পড়িল বহি জাহ্নবীর জলে?”

প্রেমের প্রগাঢ় আকর্ষণে বংশকৌলীন্যকে ধুয়েমুছে দিতে পিছপা হননি তারা। প্রেম তো এমনই প্রবাহিনী। প্রেমের আবহমানকালের ঐতিহ্যই হলো সম্মুখের সব জঞ্জালকে সরিয়ে প্রাপ্তির আকাঙ্ক্ষায় দুর্বার গতিতে এগিয়ে যায়। সেখানে অপরাধবোধ বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। তাই তারা নিজেকে অপরাধী মনে করলেও হৃদয়বৃত্তির তাড়নায় শেষমেষ অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে :
“এস তুমি; এস শীঘ্র! যাব কুঞ্জ-বনে,
তুমি,হে বিহঙ্গরাজ, তুমি সঙ্গে নিলে!
দেহ পদাশ্রয় আসি,— প্রেম উদাসীনা
আমি! যথা যাও যাব; করিব যা কর;—
বিকাইব কায় মনঃ তব রাঙা পায়ে!”

আসলে দেহজ কামনাবাসনার এক ঐশর্যময়ী নারী তারা। হৃদয়ধর্মকে চেপে না দিয়ে তার কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। এটা পরাজয় নয়, এটা যেন নারীর ভুবনকে স্বাধীনতায় মুড়ে দিয়ে নিজে কলঙ্কিত সেজেছেন। মনুবাদী ধর্মীয় সংস্কারে অবরুদ্ধ নারীর অন্তরে চেপে রাখা ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষাকে মুক্তি দিয়েছেন। নেপথ্য কারিগর কবি মধুসূদন। নারীর এমন মনস্তাত্ত্বিক পরিসর সেযুগে চিত্রিত করা কম দুঃসাহসের ব্যাপার নয়। বাংলা কাব্যের ইতিহাসে মধুসূদনের কৃতিত্ব এখানেই। কাব্যের পুরনো সব অকারণ ভেঙে দুমড়ে মুষড়ে নবপল্লবে সজ্জিত করেছেন বাংলা কবিতার উঠোন। তারার মতো নারী চরিত্ররা সে উঠোনে শরতের শিউলির ওপর যেন শিশিরের আগমন। তাই বিবাহিতা গুরুপত্নী তারার এই দুর্বার পরকীয়া প্রেম আমাদের কাছে অসামাজিক ঠেকে না। ধর্মীয়-সামাজিক রীতির কারাগার ভাঙতে উদ্যত তারাকে আমাদের একজন প্রকৃত নায়িকা ও বিদ্রোহী নারী বলেই মনে হয় সর্বদা।

তারার বিদ্রোহী সত্তার কথা উনিশ শতকীয় কঠোর পুরুষতান্ত্রিকতার বিপ্রতীপে দাঁড়িয়ে ভাবতে হবে। পুরুষতান্ত্রিক সমাজ চিরকালই বৈধ হোক আর অবৈধ হোক প্রেমে সবসময় পুরুষকে ইন্ধন দিয়েছে আর নারীকে করেছে অবরুদ্ধ। যদিও অবৈধ বলে কোনো প্রেম নেই। প্রেম সময়েই বৈধ। পুরানো বা নতুন প্রেম বলেও কিছু নেই। প্রতিটি প্রেমই নতুন প্রেম। এই বাস্তবতাকে বুঝতে হলে পুরুষ- মৌলবাদের চরিত্র বোঝা দরকার। কারণ, আমাদের দেশের নারী- পুরুষের প্রেমের সংজ্ঞা নির্ধারণ করেছে পুরুষ। আদর্শ নারী কেমন হবে, তাও ঠিক করেছে পুরুষ। নারীরা পুরুষের তৈরি মূল্যবোধকে বহন করে চলে মাত্র। ফলে সোমের প্রেমে উন্মত্ত তারা যে গৃহ ও সমাজের টানাপোড়েনে দ্বিচারিতায় ভোগে, তার মূলে রয়েছে ওই পুরুষতান্ত্রিক বহুরৈখিক মাত্রা। তবু তারা সাহসী এক আধুনিক নারী। তাই তার কণ্ঠে উচ্চারিত হয়েছে এমন স্বর :
“এ নব যৌবনে, বিধু, অর্পিব গোপনে
তোমায়, গোপনে যথা অর্পেণ আনিয়া
সিন্ধুপদে মন্দাকিনী স্বর্ণ, হীরা, মণি!
আর কি লিখিবে দাসী?…
কাঁপি ভয়ে —কাঁদি খেদে—মরিয়া শরমে
কি আর কহিব?
জীবন মরণ মম আজি তব হাতে!”

তারার এই স্বীকারোক্তি এক প্রেমবুভুক্ষু নারীর অসহায় আর্তি। হাজার হাজার বছরের অবরুদ্ধ নারী-হৃদয়ের গোপন আর্তি। একদিকে প্রেমাবেগ অন্যদিকে সামাজিক পাপবোধ — এই দুইয়ের দ্বন্দ্ব- সংঘাতে তারার হৃদয় ক্ষত-বিক্ষত ও রক্তাক্ত। রক্তচিহ্নিত তারার এই প্রেমপত্র আমাদের আধুনিক নারী মনের সন্ধান দেয়। ভারতীয় সমাজ আদর্শের নিরিখে তারার প্রেম নিষিদ্ধ হলেও মধুসূদন তারাকে করে তুলেছেন অপ্রতিরোধ্য। বর্তমান সময়ে আমাদের চারপাশে যেভাবে পরকীয়া প্রেমের নানা বিন্যাস ও স্বাভাবিক অনুমোদন দেখতে পাই, তাতে মনে হয় তারা একবিন্দু ভুল করেননি সোমের প্রেমে পড়ে। তাছাড়া আমাদের দেশে পরকীয়া প্রেম এখন আইনসিদ্ধ। সুতরাং, মধুসূদনের লেখা প্রায় দুশ বছর আগের পরকীয়া প্রেমে জর্জরিত ‘সোমের প্রতি তারা’ পত্রকাব্যটি এইদিকে দিয়ে অনেকার্থদ্যোতনাসম্পন্ন।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


সম্পাদকীয়-  রাজনৈতিক সহিংসতা ও আমাদের গণতন্ত্র

সেই দিনগুলো চলে গেছে যখন নেতারা তাদের প্রতিপক্ষকেও সম্মান করতেন। শাসক দলের নেতারা তাদের বিরোধী দলের নেতাদের কথা ধৈর্য সহকারে শুনতেন এবং তাদের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতেন।  আজ রাজনীতিতে অসহিষ্ণুতা বাড়ছে।  কেউ কারো কথা শুনতে প্রস্তুত নয়।  আগ্রাসন যেন রাজনীতির অঙ্গ হয়ে গেছে।  রাজনৈতিক কর্মীরা ছোটখাটো বিষয় নিয়ে খুন বা মানুষ মারার মত অবস্থার দিকে ঝুঁকছে। আমাদের দেশে যেন রাজনৈতিক সহিংসতা কিছুতেই শেষ হচ্ছে না।আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার চেয়ে রাজনৈতিক সংঘর্ষে বেশি মানুষ নিহত হচ্ছেন।  ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি) অনুসারে, ২০১৪ সালে, রাজনৈতিক সহিংসতায় ২৪০০ জন প্রাণ হারিয়েছিল এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ২০০০ জন মারা গিয়েছিল।  আমরা পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্র হিসেবে আমাদের দেশের গণতন্ত্রের জন্য গর্বিত হতে পারি, কিন্তু এটা সত্য যে আমাদের সিস্টেমে অনেক মৌলিক সমস্যা রয়েছে যা আমাদের গণতন্ত্রের শিকড়কে গ্রাস করছে, যার জন্য সময়মতো সমাধান খুঁজে বের করা প্রয়োজন। .....বিস্তারিত পড়ুন

ফ্লিম রিভিউ -ওপেনহাইমার

উত্তরাপথ: বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্রিস্টোফার নোলান দ্বারা পরিচালিত”ওপেনহাইমার” একটি মাস্টারপিস মুভি। ছবিতে জে. রবার্ট ওপেনহেইমার, এক নামকরা পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পারমাণবিক বোমার বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।এই সিনেমায় ওপেনহাইমার এর জটিল জীবনকে বর্ণনা করা হয়েছে। সেই হিসেবে 'ওপেনহাইমার'কে বায়োপিক বলা যেতে পারে।  কারণ এটি একজন মানুষের গল্প। এই ছবির গল্প তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত।ছবির শুরুতে পারমাণবিক বোমা তৈরির আবেগের কথা বলা হয়েছে।  যেখানে নায়ক কিছু না ভেবে নিবেদিতপ্রাণভাবে এমন একটি অস্ত্র তৈরিতে নিয়োজিত থাকে যা বিশ্বকে ধ্বংস করতে পারে।  অস্ত্র তৈরি হওয়ার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে নায়ক তার কাজের ফলাফল দেখে অপরাধবোধে পূর্ণ হয়।  এবং তৃতীয় পর্যায়টি হল রাজনীতি  যা ওপেনহাইমারকে মোকাবেলা করতে হয়েছে।  পুরো সিনেমাটি রঙিন হলেও রাজনৈতিক অংশ সাদা-কালো রাখা হয়েছে।  এই তিনটি সময়কালে যা কিছু ঘটছে, তা সবই একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত। .....বিস্তারিত পড়ুন

রাতের ঘামের সমস্যা এবং এ সম্পর্কে আপনি কি করতে পারেন  

উত্তরাপথঃ রাতের ঘামের সমস্যা শরীরের কুলিং সিস্টেমের একটি স্বাভাবিক অংশ, তাপ মুক্তি এবং সর্বোত্তম শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে।তবে রাতের ঘাম একটি সাধারণ সমস্যা যা বিভিন্ন কারণে হতে পারে।এর  অস্বস্তিকর অনুভূতির জন্য ঘুম ব্যাহত হতে পারে, যার ফলে ক্লান্তি এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে। আপনি যদি রাতে অতিরিক্ত ঘাম অনুভব করেন, তাহলে তার অন্তর্নিহিত কারণটি চিহ্নিত করা এবং এটি মোকাবেলার জন্য কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এখানে রাতের ঘামের কিছু সম্ভাব্য কারণ নিয়ে আলোচনা করা হল।মেনোপজ: যে কেউ, বয়স বা লিঙ্গ নির্বিশেষে, রাতের ঘাম অনুভব করতে পারে। .....বিস্তারিত পড়ুন

সহযাত্রী

দীপা - আর তো এগারো বছর আটমাস বারোদিন চাকরি , তাই না ? অংশু - বাপরে বরাবরই তোমার স্মৃতিশক্তি প্রবল , এতোটা মনে আছে ? দীপা- ঘোরো টো টো করে আর কটা বছর , আফটার রিটায়ার্ড মেন্ট কি করবে ? অংশু - ফার্ম হাউস ,গাছপালা পশুপাখি নিয়ে থাকবো। দীপা- বাঃ উন্নতি হয়েছে। যে অংশুবাবু কখনও একটা ফুলের চারা লাগায়নি সে কিনা ফার্ম হাউস করবে … অংশু - সময়ের সাথে সব বদলায় ম্যাডাম , আচ্ছা তোমার কনুইয়ের নীচে সেই পোড়া দাগটা দেখি তো গেছে কিনা … দীপা- তুমি অনেক রোগা হয়ে গেছো , তা ওজন কত শুনি ? অংশু - সত্তর বাহাত্তর হবে বোধহয় মাপিনি, দীপা - তা কেনো মাপবে ? একটা অগোছালো মানুষ। অংশু - যাক বাবা তাও অপদার্থ শব্দ টা বলোনি। দীপা - ভাবোনা ডিভোর্স হয়েছে বলে সে অধিকার নেই। সমাজ বিজ্ঞানের অধ্যাপক হয়েও আসলে সমাজটাই শেখোনি , আর কি শিখেছো বলো, ঐ ছেলে পড়ানো , সেমিনার আর লেখালেখি। তা ধন্যবাদ তোমার রূপালী ঠৌট উপন্যাস এবছর একাডেমি পেলো , দারুণ লেখো তুমি, আগের চেয়ে অনেক ধার। অংশু- বাঃ তুমি পড়েছো ? দীপা- সব পড়েছি , তোমার রিসেন্ট উপন্যাসের নায়িকা মেঘনা টি কে ? মানে কার আড়ালে কাকে লিখেছো ? অংশু - এও কি বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপিকাকে বলে দিতে হবে ? দীপা- বারোটা বছর সময়ের শাসনে অনেক বদলালেও আমি বোধহয় সেই বড্ড সেকেলেই রয়ে গেলাম। অংশু - একা একাই কাটিয়ে দিলে বারো বছর। দীপা- একই প্রশ্ন আমিও করতে পারি। অংশু - আচ্ছা দীপা আজ না হয় শেষবারের মতো বলি, আমার মধ্যে কি ছিলো না বলোতো ? কেনো পারোনি এই বাউন্ডুলে ভবঘুরে মানুষটার সাথে চিরকালের ঘর বাঁধতে ? আমি কি ভালোবাসতে জানি না ? .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top