

উত্তরাপথঃ আমাদের দেশে স্বাধীনতার পরবর্তী সময় থেকে এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকবার জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা হলেও কোনো শিক্ষানীতিই দেশের জনগণের আস্থা পুরোপুরি অর্জন করতে পারেনি। এর ফলে ডিগ্রীধারী শিক্ষিতের হার বাড়লেও ,বাড়েনি সুশিক্ষিতের হার।যখন শিক্ষার অধিকার আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল, তখন লক্ষ্য ছিল যে সমস্ত শিশুকে শুধুমাত্র শিক্ষার সুবিধা দেওয়া হবে না, এর মানও উন্নত করা হবে। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে শিক্ষা সংক্রান্ত বার্ষিক প্রতিবেদনে যে চিত্র দেখা যাচ্ছে তা যথেষ্ট হতাশাজনক। প্রাথমিক শ্রেণীতে ভর্তির পরিমাণ কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও , চৌদ্দ বছরের বেশি বয়সী শিশুদের মধ্যে স্কুল ছুটের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
সবচেয়ে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি হল গ্রামীণ শিক্ষার ক্ষেত্রে, যেখানে শিশুরা তাদের পাঠ্য পুস্তক পর্যন্ত ঠিক মত পড়তে পারছেনা। শিক্ষার সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে চৌদ্দ থেকে আঠারো বছর বয়সী শিশুদের প্রায় ৮৭ শতাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিবন্ধিত, তবে তাদের পঁচিশ শতাংশ সাবলীলভাবে দ্বিতীয় শ্রেনীর বইও ঠিক মত পড়তে পারেনা তাদের আঞ্চলিক ভাষাতে।প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য যে শিক্ষা সম্পর্কিত বার্ষিক প্রতিবেদন গ্রামীণ এলাকায় শিক্ষার স্তর মূল্যায়নের লক্ষ্য নিয়ে তৈরি করা হয়।এটি মূলত শিশুদের নিবন্ধন, পাঠ্য এবং মৌলিক পাটিগণিত করার ক্ষমতা মূল্যায়ন করে কিন্তু সব স্তরেই পরিস্থিতি উদ্বেগজনক।
প্রতিবেদনে সবচেয়ে বেশি উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে চৌদ্দ থেকে আঠারো বছর বয়সী শিশুদের শিক্ষার স্তর নিয়ে।এই বয়সের ৩২ শতাংশের বেশি শিশু কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিবন্ধিত নয়। যারা নিবন্ধিত, তাদের বেশিরভাগের শেখার এবং দক্ষতা বিকাশের ক্ষমতা খুবই দুর্বল। এই বয়সী মেয়েদের নিবন্ধন উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। তবে বেশির ভাগ ছেলেমেয়ের লেখাপড়া ছেড়ে দেওয়ার প্রধান কারণ হিসাবে পরিবারের দুর্বল আর্থিক অবস্থার কথা বলা হয়েছে,এছাড়াও বিদ্যালয়গুলোর বেহাল দশা, মৌলিক সুবিধার অভাব ইত্যাদি নানা কারণের কথাও রিপোর্টে রয়েছে। তবে, প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে কোভিডের পরে অনেক বেসরকারী স্কুল স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে গেছে।জনগণের দুর্বল আর্থিক অবস্থার কারণে বিপুল সংখ্যক শিশু সরকারী স্কুলে ফিরে এসেছে।
এর আগেও অনেক গবেষণায় গ্রামীণ এলাকার সরকারি স্কুলগুলোর অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছিল এবং সেগুলোর উন্নতির জন্যও পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। তবে রাজ্য সরকারগুলি এই বিষয়ে এখনও মনোযোগী বলে মনে হচ্ছে না।আমাদের রাজ্য সহ অনেক রাজ্যে প্রাথমিক স্তরে এক বা দুইজন শিক্ষককে পুরো স্কুল ম্যানেজ করতে হয়, ছাত্র সংখ্যার অনুপাতে শিক্ষকদের অনুপাত অনেক ক্ষেত্রে একেবারে নগণ্য।শিক্ষকের ঘাটতি মেটাতে অনেক রাজ্য চুক্তির ভিত্তিতে প্যারা শিক্ষক নিয়োগের পথ গ্রহণ করেছে , কিন্তু শিক্ষার্থীদের মানোন্নয়নের বিষয়টি এখনও উপেক্ষিত রয়েছে। এক্ষেত্রে অভিযোগ করা হচ্ছে শিক্ষকদের শিক্ষার্থীদের পাঠদান এবং তাদের ব্যক্তিত্ব বিকাশে যতটা মনোযোগ দেওয়া উচিত ততটা তারা দিতে পারছেন না। এরফলে শিশুদের পড়াশুনার মান দিন দিন নীচে নেমে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন
Dirac Medalist Prof. Sen: অগ্রগামী ভারতীয় তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী
উত্তরাপথ: আজ বিশ্ববরেণ্য ফান্ডামেন্টাল ফিজিক্স পুরষ্কার প্রাপ্ত পদার্থবিজ্ঞানী তথা বাংলার কৃতি সন্তান অশোক সেনের জন্মদিন। উত্তরাপথের পক্ষ থেকে তাঁর প্রতি রইল শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। অশোক সেন, একজন বিশিষ্ট তাত্ত্বিক ভারতীয় পদার্থবিদ যিনি ,স্ট্রিং তত্ত্ব এবং উচ্চ-শক্তি পদার্থবিদ্যার ক্ষেত্রে যুগান্তকারী অবদান রেখেছেন। তার অগ্রগামী কাজ তাকে কেবল আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিই দেয়নি বরং মহাবিশ্বের মৌলিক আইন সম্পর্কে আমাদের বোঝার ক্ষেত্রে আরও অগ্রগতির পথ তৈরি করেছে। .....বিস্তারিত পড়ুন
Banarasi Saree: ভারতের হৃদয় থেকে একটি কালজয়ী ধন
গার্গী আগরওয়ালা মাহাতো: ভারত তার সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্য বিখ্যাত, এবং ভারতীয় কারুশিল্পের সবচেয়ে আইকনিক প্রতীকগুলির মধ্যে একটি হল বেনারসি শাড়ি। জটিল ডিজাইন এবং বিলাসবহুল কাপড় দিয়ে বোনা, বেনারসি শাড়ি ভারতীয় মহিলাদের হৃদয়ে একটি বিশেষ স্থান অধিকার করে রয়েছে। এবার আসাযাক ভারতের প্রাচীন শহর বারাণসী থেকে ভারতীয় ফ্যাশনের একটি কালজয়ী ধন হয়ে ওঠার বেনারসির যাত্রা। বেনারসি শাড়ির উৎপত্তি উত্তর প্রদেশ রাজ্যের প্রাচীন শহর বারাণসী (পূর্বে বেনারস নামে পরিচিত) থেকে বলে .....বিস্তারিত পড়ুন
Tomato দাম কমাতে উদ্যাগ কেন্দ্রের
উত্তরাপথ: প্রায় গোটা দেশে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে টমেটো (Tomato)। কোথাও কোথাও কেজি প্রতি দেড়শো থেকে আড়াইশো টাকা অবধি। এই পরিস্থিতিতে আমজনতাকে স্বস্তি দিতে উদ্যোগী হল কেন্দ্রের উপভোক্তা বিষয়ক বিভাগ। তারা জাতীয় কৃষি সমবায় বিপণন ফেডারেশন এবং জাতীয় সমবায় উপভোক্তা ফেডারেশনকে নির্দেশ দিয়েছে, কৃষকদের থেকে সরাসরি টমেটো সংগ্রহ করে দেশের যে এলাকায় বেশি দামে টমেটো বিক্রি হচ্ছে, সেখানে তা বিক্রি ব্যবস্থা করতে। বাজারে জোগান বাড়লেই কমবে টমেটোর দাম, মত মোদি সরকারের। .....বিস্তারিত পড়ুন
ICC টুর্নামেন্ট জিতলে পুরুষ ও মহিলাদের দল একই অর্থ পাবে
উত্তরাপথ: এবার থেকে ICC টুর্নামেন্ট জিতলে পুরুষ ও মহিলা দলের প্রাইজ মানি একই। ডারবানে বসেছে আইসিসি-র (ICC) বার্ষিক বৈঠক সেখানেই স্থির হয়েছে । ICC-র চেয়ারম্যান গ্রেগ বার্কলে বলেছেন, ”ক্রিকেটের ইতিহাসে তাৎপর্যপূর্ণ মুহূর্ত এটি। আমি অত্যন্ত খুশি যে পুরুষ ও মহিলাদের দল আইসিসি-র ইভেন্টে এবার প্রাইজ মানি হিসেবে একই অর্থ পাবে।” তিনি আরও বলেন, ”২০১৭ সাল থেকে প্রতি বছর আমরা মহিলাদের ইভেন্টের প্রাইজ মানি বাড়িয়ে এসেছি, উদ্দেশ্য ছিল একটাই। মহিলাদের বিশ্বকাপ জয় এবং পুরুষদের বিশ্বকাপ জয়ের আর্থিক পুরস্কার এক হবে .....বিস্তারিত পড়ুন