উত্তরাপথঃ সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, ফেসবুক, টুইটার এবং ইনস্টাগ্রামের মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। তারা আমাদের নিজেদেরকে প্রকাশ করার, আমাদের চিন্তাভাবনা ভাগ করে নেওয়ার এবং সারা বিশ্বের সাথে সংযোগ করার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম দিয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে, আমরা যা বলতে পারি এবং যা করতে পারি তার অন্যতম কারণ হল এই প্ল্যাটফর্মগুলি দ্বারা আরোপিত বিধিনিষেধগুলি অনেক কম।
ভারত সরকার এই প্ল্যাটফর্মগুলিতে শেয়ার করা বিষয়বস্তু নিয়ন্ত্রণ করার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে, নতুন নিয়ম প্রবর্তন করেছে যার লক্ষ্য ভুল তথ্য, ঘৃণামূলক বক্তব্য এবং অনলাইন হয়রানির মত বিষয়ের বিস্তার রোধ করা। যদিও এই প্রচেষ্টাগুলি একটি নিরাপদ এবং আরও দায়িত্বশীল অনলাইন পরিবেশ দেওয়ার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে, সেই সাথে সরকার সমস্ত ধরনের মত প্রকাশের স্বাধীনতা, যার জনগণের উপর প্রভাব নিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করেছে৷
বাস্তবতা হল সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলি কিছু সময়ের জন্য মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সীমিত করছে। অনেক ব্যবহারকারী অভিযোগ করেছেন যে তাদের পোস্টগুলিকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে বা পর্যালোচনার জন্য পতাকাঙ্কিত করা হচ্ছে, প্রায় কোনও ব্যাখ্যা ছাড়াই৷ সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে নির্দিষ্ট মান লঙ্ঘনের জন্য কিছু ব্যবহারকারীকে প্ল্যাটফর্ম থেকে সরিয়ে বা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
ফেব্রুয়ারীতে ভারত সরকার ঘোষিত নতুন নিয়মের লক্ষ্য হল সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলির অতিরিক্ত যাচাই-বাছাই করে এই উদ্বেগগুলি সমাধান করা। এই নিয়মগুলির অধীনে, Facebook, Twitter, Instagram এবং WhatsApp-এর মতো প্ল্যাটফর্মগুলিকে অতিরিক্ত ভাবে তাদের ব্যবহারকারীদের দেওয়া তথ্যের উপর নজর রাখতে হবে যাতে তাদের প্ল্যাটফর্মগুলি থেকে ঘৃণাত্মক বক্তব্য বা ভুল তথ্য ছড়ানো না হয়।
যদিও এক্ষেত্রে ব্যবহারকারীদের একটা অংশের যুক্তি যে এই বিধিনিষেধগুলি অপ্রয়োজনীয়। এটি মানুষের ব্যক্তিগত সৃজনশীলতা এবং উদ্ভাবনকে বাধা দেয়। তারা যুক্তি দেয় যে অনলাইন হয়রানির সমস্যা মোকাবেলার সর্বোত্তম উপায় হ’ল ব্যবহারকারীদের কীভাবে দায়িত্বশীলভাবে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করতে হয় সে সম্পর্কে শিক্ষিত করা।সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলি দ্বারা আরোপিত বিধিনিষেধগুলিকে সেন্সরশিপের একটি রূপ হিসাবেও দেখা যেতে পারে। নির্দিষ্ট ধরনের বিষয়বস্তু অপসারণ করে বা ব্যবহারকারীরা কী বলতে পারে তা সীমাবদ্ধ করা । এটি একপ্রকার অনলাইনে মত প্রকাশের স্বাধীনতার উপর সরকারের হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ায়।
তবে এক্ষেত্রে একটি যুক্তি হতে পারে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলির দ্বারা আরোপিত বিধিনিষেধগুলি একটি নিরাপদ এবং দায়িত্বশীল অনলাইন পরিবেশের প্রচার করার উদ্দেশ্যে। এই ক্ষেত্রে প্ল্যাটফর্মগুলি দায়িত্বশীল আচরণের প্রচার এবং ব্যবহারকারীদের স্বাধীনভাবে নিজেদের মতামত প্রকাশ করার অনুমতি দেওয়ার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখে।
আরও পড়ুন
শ্বাস-প্রশ্বাসে অস্বস্তি: স্লিপ অ্যাপনিয়া দীর্ঘ কোভিড ঝুঁকির সাথে যুক্ত
উত্তরাপথ: ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথের রিকভার ইনিশিয়েটিভ এবং এনওয়াইইউ ল্যাঙ্গোন হেলথের একটি সমীক্ষা অনুসারে কোভিড পরবর্তীকালে প্রাপ্তবয়স্কদের দীর্ঘমেয়াদী লক্ষণগুলির জন্য ১২-৭৫% কোভিডের ঝুঁকি বেড়েছে, যা সরাসারি স্লিপ অ্যাপনিয়ার সঙ্গে যুক্ত । অথচ শিশুদের ক্ষেত্রে এই ঝুঁকি প্রায় নেই । .....বিস্তারিত পড়ুন
কৃষ্ণগহ্বরের "ছায়া" ও "ছবি"
ড. সায়ন বসু: ১৭৮৩ সালে ভূতত্ত্ববিদ জন মিচেল (John Michell) ‘ডার্ক স্টার’ (dark stars) শিরোনামে একটি গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশ করেন। তার গবেষণা পত্রের বিষয়বস্তু ছিল "বিপুল পরিমাণ ভর বিশিষ্ট কোন বস্তু যার মহাকর্ষের প্রভাবে আলোক তরঙ্গ পর্যন্ত পালাতে পারে না"। এখান থেকেই মূলত কৃষ্ণগহ্বরের (Black Hole) ধারণা আসে এবং এটি নিয়ে গবেষনা ও অনুসন্ধান শুরু হয়। পরবর্তিতে অবশ্য এটি বিজ্ঞান মহলে একটি অযৌক্তিক তত্ত্ব হিসেবে বেশ অবহেলার স্বীকার হয়। আলোর মত কোন কিছু বেরিয়ে আসতে পারবে না এমন একটি তত্ত্ব বিজ্ঞানীদের কাছে বেশ অযৌক্তিক মনে হয়েছিল। তাই ধীরে ধীরে থেমে যায় কৃষ্ণগহ্বর নিয়ে গবেষনা। .....বিস্তারিত পড়ুন
পরম সুন্দরী
মৈত্রেয়ী চৌধুরী: চাকরির বাজার ভীষণ মন্দা। পাত্র সৃজিত এম. এস.সি পাশ করেও কোনো চাকরি পাচ্ছে না। অগত্যা পরিবারের ব্যাবসার হাল ধরেছে। পারিবারিক সূত্রে তাদের মিষ্টির বেশ বড় দোকান রয়েছে। সৃজিত পড়াশোনা তে বেশ ভালো ছাত্র ছিল। প্রতিদিন সকালে পেপারে চাকরির বিজ্ঞাপন খোঁজা তার একটি কাজ। বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান, বয়স তো থেমে থাকবে না। বাবা মা ছেলের বিয়ে নিয়ে বেশ চিন্তিত। তারা কিছু দিনের মধ্যেই ছেলের বিয়ে দেবেন এরকম স্থির করেন। মোনালিসা ভূগোলে সদ্য এম.এ, পি. এইচ. ডি করে একই ভাবেই চাকরির খোঁজ করে যাচ্ছে। বাবা সুভাষ বাবু সরকারি .....বিস্তারিত পড়ুন
বঞ্চনার আর এক নাম শবর
বলরাম মাহাতো: শবর কথাটির উৎপত্তি হয়েছে ‘সগর’ থেকে। ‘সগর’ শব্দের অর্থ হলো কুঠার। বোঝাই যাচ্ছে, শবররা কুঠার হাতে বনে জঙ্গলে ঘুরে বেড়াতেন। সেখান থেকেই শবর নামটির প্রচলন হয়। শবররা বাস করেন পশ্চিম বাংলা, চেন্নাই, মধ্যপ্রদেশ, ছোটনাগপুর আর উড়িষ্যায়। আমাদের দেশে বর্তমানে শবরদের সংখ্যা ২,০০০ এর কিছু বেশি। শবর কোনো একজনের নাম নয়, এটি একটি জনগোষ্ঠীর নাম। বর্তমানে ভারতে এই শবর জনগোষ্ঠী একটি .....বিস্তারিত পড়ুন