সম্পাদকীয়
২০২৩ সালের খাদ্য সংকট সম্পর্কিত একটি গ্লোবাল রিপোর্ট (GRFC ) সামনে এসেছে । তাতে সারা বিশ্বে তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভোগা মানুষের সংখ্যা বেড়েছে।বর্তমানে পৃথিবীর ৫৮টি দেশ ও অঞ্চল জুড়ে ২৫৮ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ তীব্র ক্ষুধার সম্মুখীন। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে আমাদের কাছে ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্ব জনসংখ্যাকে খাওয়ানোর জন্য পর্যাপ্ত খাবার নাও থাকতে পারে ৷ এই সংকট জলবায়ু পরিবর্তন, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, এবং দীর্ঘ মেয়াদী চাষের প্রতি অনাগ্রহ সহ বিভিন্ন কারণের ফলাফল। আগামী দিনে এটি এমন এক সমস্যা হতে চল্রছে যা নিয়ে বর্তমানে প্রতিটি দেশের সরকার থেকে বিজ্ঞানী প্রত্যেকের এই বিষয়ে আগাম পদক্ষেপ পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।
জলবায়ু পরিবর্তন বিশ্ব খাদ্য সংকটের অন্যতম প্রধান কারণ। পরিবর্তিত জলবায়ুতে খরা এবং বন্যা সহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয় এখন সাধারন সামস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা আমাদের কৃষি উৎপাদনকে ব্যাহত করছে এবং ফসলের ফলন হ্রাস করছে। উপরন্তু, ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলিতে বিভিন্ন মরসুমে নির্দিষ্ট ফসল ফলানো আরও কঠিন করে তুলছে।
ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা বৃদ্ধি খাদ্য সংকটের আরেকটি কারণ। ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্ব জনসংখ্যা ৯.৭ বিলিয়নে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা আমাদের ইতিমধ্যেই চাপে থাকা খাদ্য ব্যবস্থায় অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করবে। আমরা যে খাদ্য উৎপাদন করি তা স্বাস্থ্যকর, পুষ্টিকর এবং দীর্ঘদিন যাতে সংরক্ষণ করা যায় তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি কম সময়ে আরও বেশি খাদ্য উৎপাদনের উপায় খুঁজে বের করতে হবে।
অ-বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষাবাদও খাদ্য সঙ্কটের একটি কারণ । চাষের সাথে যুক্ত অনেকে না জেনে বুঝে শুধুমাত্র উৎপাদন বাড়ানোর জন্য মাত্রাতিরিক্ত নিম্নমানের কীটনাশক প্রয়োগ করে চলেছেন। এই কীটনাশকের ব্যবহার যেমন মাটির পুষ্টি হ্রাস করছে সেই সাথে জীববৈচিত্র্যও হ্রাস করছে । আমাদের বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষাবাদের চর্চা প্রচার করতে হবে যা পরিবেশ রক্ষার সাথে সাথে আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা দিতে সক্ষম হবে ।
সেই সাথে বিশ্ব খাদ্য সংকট মোকাবেলার জন্য, আমাদের অবশ্যই বেশ কিছু বহুমুখী পন্থা অবলম্বন করতে হবে যা সমস্যার মূল কারণগুলিকে সমাধান করবে। পরিবর্তিত জলবায়ুর সাথে সামঞ্জস্য রেখে এবং ফসলের ফলন উন্নত করতে নতুন, ফসল বিকাশের জন্য গবেষণা এবং উন্নয়নে বিনিয়োগ করতে হবে। এক পরিবেশ বান্ধব কৃষি পদ্ধতি চালু করতে হবে যা আমাদের খাদ্যের ঘাটতি পূরনের সাথে সাথে আমাদের ইকো সিসটেমকে উন্নত করবে ।
সেই সাথে আমাদের অবশ্যই খাদ্য বর্জ্যের সমস্যাটি মোকাবেলা করতে হবে, যা বিশ্ব খাদ্য সংকটের একটি অন্যতম কারণ। এটি অনুমান করা হয় যে বিশ্বব্যাপী উৎপাদিত সমস্ত খাদ্যের এক-তৃতীয়াংশ অপচয় হয়, যা সম্পদের একটি উল্লেখযোগ্য ক্ষতি এবং খাদ্য সংকটকে আরও বাড়িয়ে তোলে। আমাদের অবশ্যই খাদ্য বর্জ্য কমাতে পদক্ষেপ নিতে হবে, যার মধ্যে ভোক্তাদের খাদ্য অপচয় কমানোর গুরুত্ব সম্পর্কে শিক্ষিত করা এক অন্যতম পদক্ষেপ।
বিশ্ব খাদ্য সংকট আগামী দিনে এক বড় সমস্যা হতে চলেছে যা নিয়ে খুব শীঘ্র আমাদের পদক্ষেপ নিতে হবে । সেই সাথে জলবায়ু পরিবর্তন, জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং অ-বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ সহ সমস্যার মূল কারণগুলিকে আমাদের অবশ্যই সমাধান করতে হবে।গবেষণা ও উন্নয়নে বিনিয়োগ করতে হবে, সঠিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষাবাদের অনুশীলনের প্রচার করতে হবে এবং খাদ্যের অপচয় কমাতে হবে। শুধুমাত্র একসাথে কাজ করার মাধ্যমে আমরা নিশ্চিত করতে পারি যে আমাদের বিশ্ব জনসংখ্যাকে খাওয়ানোর জন্য আমাদের পর্যাপ্ত খাদ্য রয়েছে।
আরও পড়ুন
মানভূমের নাচনি শিল্পীদের সংগঠন : 'মানভূম লোকসংস্কৃতি ও নাচনী উন্নয়ন সমিতি'
ড. নিমাইকৃষ্ণ মাহাত: মানভূমের প্রচলিত প্রাচীন লোকনৃত্য গুলির মধ্যে অন্যতম হল নাচনি নাচ । এই অঞ্চলের লোকনৃত্যগুলির মধ্যে জনপ্রিয়তায় ও ব্যাপ্তিতে ছৌ নাচের পরেই রয়েছে নাচনি নাচ। এই নাচে আছে মাটির টান , অন্তরের স্পন্দন । মানভূমে বর্তমানে প্রায় ৭০ জন নাচনিশিল্পী রয়েছেন । এই শিল্পীরা সকলেই কমবেশি দুর্ভাগ্য- পীড়িত। অধিকাংশ নাচনিই দুঃখ-কষ্ট, দারিদ্র ও দুর্ভাগ্যের স্রোতে ভাসতে ভাসতে জীবনে বেঁচে থাকার জন্য খড়কুটোর মত আঁকড়ে ধরেছেন নাচনি নাচকে। .....বিস্তারিত পড়ুন
রাজ্যসভার মনোনয়নপত্র জমা অনন্ত মহারাজের
উত্তরাপথ: বিজেপির রাজ্যসভা প্রার্থী হচ্ছেন গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান অনন্ত মহারাজ।আগামী ২৪ জুলাই ভোট। তৃণমূল ইতিমধ্যেই নিজেদের ৬ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে দিয়েছে। কিন্তু বিজেপির রাজ্যসভা প্রার্থী কে হবেন তাই নিয়ে চলছিল বিস্তর জল্পনা।নাম উঠে এসেছিল সৌরভ গাঙ্গুলি, ডোনা গাঙ্গুলি, অনির্বাণ গাঙ্গুলি সহ অনেকে । গতকাল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এবং কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান .....বিস্তারিত পড়ুন
Camel Cloning: দুবাই ‘উট' ক্লোনিং‘এর জন্য খবরের শিরোনামে
উত্তরাপথ: দুবাই, তার ঐশ্বর্য এবং জাঁকজমকের জন্য পরিচিত হলেও এবার দুবাই তার ‘উট ক্লোনিং ‘এর জন্য খবরের শিরোনামে।এবার আশা যাক ক্লোনিং কি তা নিয়ে আলোচনায়। ক্লোনিং হল প্রাকৃতিক বা কৃত্রিম উপায়ে অভিন্ন জিনোম সহ পৃথক জীব উৎপাদনের প্রক্রিয়া অর্থাৎ জীবের অভিন্ন অনুলিপি তৈরি করার প্রক্রিয়া।২০০৯সালে বিশ্বের প্রথম উটের ক্লোনিংয়ের নেতৃত্ব দেওয়া, নিসার ওয়ানি এখন দুবাইয়ের একটি ল্যাবে বছরে কয়েক ডজন উটের প্রতিলিপি তৈরি করছেন যা উপসাগরীয় অঞ্চলের এখন একটি বড় ব্যবসা যেখানে উট লালন-পালন করা হয় সৌন্দর্য ও রেসিং .....বিস্তারিত পড়ুন
The Dome of the Rock: দ্য ডোম অফ দ্য রক একটি সমৃদ্ধ ইতিহাসের মহিমান্বিত প্রতীক
উত্তরাপথ: দ্য ডোম অফ দ্য রক, জেরুজালেমের (Jerusalem) কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত একটি স্থাপত্যের এক অপূর্ব নিদর্শন। আজও এটি শহরের সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় ঐতিহ্যের একটি প্রমাণ হিসাবে দাঁড়িয়ে রয়েছে। টেম্পল মাউন্টে অবস্থিত এই আইকনিক কাঠামোটি শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করেছে এর মনমুগ্ধরুদ্ধকর সৌন্দর্য এবং ঐতিহাসিক তাৎপর্য দিয়ে। এটি উমাইয়া রাজবংশের সময় ৬৮৫ এবং ৬৯১ CE এর মধ্যে নির্মিত হয়েছিল যা .....বিস্তারিত পড়ুন