উত্তরাপথঃ আমরা কি প্রতিদিন ব্যাকটেরিয়ায় স্নান করছি? আমাদের বেশিরভাগ লোকের জন্য, শাওয়ার বা ঝরনা আমাদের দৈনন্দিন পরিচ্ছন্নতা এবং স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখতে সাহায্য করে। কিন্তু ,সাম্প্রতিক গবেষণায় পিটসবার্গ সোয়ানসন স্কুল অফ ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল এবং এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সহকারী অধ্যাপক সারাহ হেইগ, দেখেছেন যে আমাদের প্রতিদিনের ব্যবহারের ঝরনার জলকে আমরা যতটা শুদ্ধ ভাবি ততটা শুদ্ধ নাও হতে পারে।তার মতে আপাতত এটিকে আশ্চর্যজনক মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে, ঝরনাতে প্রচুর পরিমাণে ব্যাকটেরিয়া জন্ম নিতে পারে যা অপ্রত্যাশিত স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।এই প্রসঙ্গে তিনি উপস্থিত DWPI-এর ঘনত্বের তুলনা করার জন্য বিভিন্ন শাওয়ারহেড বৈশিষ্ট্যগুলি তিন বছর ধরে পরীক্ষা করেন যার জন্য তাঁকে ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশন (NSF) থেকে $৪২০,০০০ দেওয়া হয়।
গবেশকদের মতে ঝরনা বায়োফিল্ম গঠনের জন্য একটি আদর্শ পরিবেশ প্রদান করে। এই বায়োফিল্মগুলি শাওয়ারহেড, টাইলস এবং এমনকি ঝরনার পর্দাতেও জমা হতে পারে, যা সম্ভাব্য ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়াগুলির জন্য একটি প্রজনন স্থল তৈরি করে।গবেশনায় বিভিন্ন প্যাথোজেনিক ব্যাকটেরিয়া, যেমন লেজিওনেলা, সিউডোমোনাস এরুগিনোসা এবং মাইকোব্যাকটেরিয়াম এভিয়াম, প্রভৃতি ব্যাকটেরিয়ার অস্তিত্ব ঝরনার জলে পাওয়া গেছে। এই ব্যাকটেরিয়াগুলি শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ, ত্বকের জ্বালা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, বিশেষ করে দুর্বল প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের মধ্যে।
ঝরনায় স্নানের সময়, জলের ফোঁটাগুলি অ্যারোসোলাইজড হয়ে যায়, এর ফলে ঝরনার জলে থাকা ব্যাকটেরিয়াগুলি বাতাসে ছড়িয়ে যায়। এই ব্যাকটেরিয়া-বোঝায় জলের ফোঁটাগুলিতে শ্বাস নেওয়ার ফলে শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ হতে পারে, বিশেষত কম বায়ুচলাচল যুক্ত আবদ্ধ স্থানে স্নানের ফলে।গবেশকদের মতে এই জাতীয় জলে স্নান করা ব্যাকটেরিয়ায় স্নান এর নামান্তর।
প্রতিকারঃ-
যথাযথ অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট ব্যবহার করে শাওয়ারহেড, টাইলস এবং অন্যান্য পৃষ্ঠগুলি নিয়মিত পরিষ্কার এবং জীবাণুমুক্ত করুন। বায়োফিল্মগুলি সমৃদ্ধ হতে পারে এমন অঞ্চলগুলি পরিষ্কারের ব্যাপারে বিশেষ মনোযোগ দিন।
অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্যযুক্ত শাওয়ারহেডগুলি বা একদম ভালোভাবে পরিষ্কারের জন্য সহজেই বিচ্ছিন্ন করা যেতে পারে এমন শাওয়ারহেডগুলি ব্যবহার করুন৷ পুরানো বা ক্ষতিগ্রস্থ শাওয়ারহেডগুলি প্রতিস্থাপন করুন ,কারণ এই জাতীয় শাওয়ারহেডগুলি থেকে বেশি পরিমাণে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকে।
আর্দ্রতা যা ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করতে পারে। তাই বাথরুমে আদ্রতা কমাতে সঠিক বায়ুচলাচল নিশ্চিত করুন, যা ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধিকে কম করতে সাহায্য করবে। বায়ুপ্রবাহের সুবিধার্থে এবং ব্যাকটেরিয়া-বোঝাই আর্দ্রতা কমাতে জানালা খুলুন বা এক্সজস্ট ফ্যান ব্যবহার করুন।
স্থির জল ব্যাকটেরিয়ার প্রজনন ক্ষেত্র হয়ে উঠতে পারে। ঝরনা এলাকায় ভেজা তোয়ালে বা বাথম্যাট ফেলে রাখা এড়িয়ে চলুন, এবং অবিলম্বে বাথরুমের আশপাশের এলাকা পরিষ্কার রাখুন এবং জমা জলের সমস্যার সমাধান করুন যাতে জল দাঁড়িয়ে থাকতে না পারে।
ভাল ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধির অভ্যাস বজায় রাখুন, যেমন পরিষ্কার তোয়ালে ব্যবহার করা, স্নানের আগে এবং পরে হাত ধোয়া এবং অন্যদের সাথে ব্যক্তিগত যত্নের জিনিসগুলি ভাগ করা এড়িয়ে চলুন।
লেজিওনেলা ব্যাকটেরিয়া ওয়াটার হিটারে দ্রুত বৃদ্ধি পায়।ব্যাকটেরিয়া দূষণের ঝুঁকি কমাতে আপনার ওয়াটার হিটার নিয়মিত ব্যবহার করুন এবং পরিষ্কার করুন।
ব্যাকটেরিয়া এবং অন্যান্য দূষিত পদার্থের উপস্থিতি কমাতে জলের ফিল্টার বা পিউরিফায়ার ইনস্টল করুন৷ এই ফিল্টারগুলি সম্ভাব্য স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিরুদ্ধে সুরক্ষার একটি অতিরিক্ত স্তর সরবরাহ করতে সহায়তা করতে পারে।
ঝরনা আমাদের দৈনন্দিন রুটিনের একটি অপরিহার্য অংশ হলেও,এটির ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত পরিষ্কার, সঠিক বায়ুচলাচল, এবং ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি অনুশীলনের মাধ্যমে একটি নিরাপদ এবং স্বাস্থ্যকর ঝরনা পরিবেশ বজায় রাখা সম্ভব। তাই পরের বার যখন আপনি আপনার বাথরুমে স্নান করবেন, তখন নিশ্চিত হয়ে নিন যে আপনি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার মধ্যে স্নান করছেনতো ,কোনও ব্যাকটেরিয়ায় স্নান করছেন না তো?
আরও পড়ুন
Green Washing থেকে সাবধান
প্রিয়াঙ্কা দত্ত, রঘনাথপুর: আপনি নিশ্চয়ই একজন পরিবেশ সচেতন নাগরিক? যদি নাও হন তবুও বাজার চলতি ভোগ্যপণ্য খরিদ করার সময় আপনি কি এখন একশ শতাংশ প্রাকৃতিক দ্রব্য কিনতেই পছন্দ করেন? এবং কেনেন? প্রসাধন দ্রব্য কেনার সময় কি আপনি নিম ,তুলসী, চন্দন বা গোলাপের নির্যাস যুক্ত জিনিসই কেনেন ? আর জামাকাপড়? একশ শতাংশ পচনশীল পদার্থ দিয়ে তৈরী? টুথ পেস্ট থেকে আরম্ভ করে তেল, সাবান, শাম্পু কিংবা ভোজ্য তেল , ফ্রুট জুস বা খাবার জিনিস! সব কিছুতেই আপনি পরিবেশে বান্ধব প্যাকেজিং এবং সম্পূর্ন প্রাকৃতিক এই লেবেল দেখেই কিনছেন। তাই না? বর্তমান যুগের .....বিস্তারিত পড়ুন
পরম সুন্দরী
মৈত্রেয়ী চৌধুরী: চাকরির বাজার ভীষণ মন্দা। পাত্র সৃজিত এম. এস.সি পাশ করেও কোনো চাকরি পাচ্ছে না। অগত্যা পরিবারের ব্যাবসার হাল ধরেছে। পারিবারিক সূত্রে তাদের মিষ্টির বেশ বড় দোকান রয়েছে। সৃজিত পড়াশোনা তে বেশ ভালো ছাত্র ছিল। প্রতিদিন সকালে পেপারে চাকরির বিজ্ঞাপন খোঁজা তার একটি কাজ। বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান, বয়স তো থেমে থাকবে না। বাবা মা ছেলের বিয়ে নিয়ে বেশ চিন্তিত। তারা কিছু দিনের মধ্যেই ছেলের বিয়ে দেবেন এরকম স্থির করেন। মোনালিসা ভূগোলে সদ্য এম.এ, পি. এইচ. ডি করে একই ভাবেই চাকরির খোঁজ করে যাচ্ছে। বাবা সুভাষ বাবু সরকারি .....বিস্তারিত পড়ুন
সম্পাদকীয়
এ যেন বহুদিন পর বিজেপির চেনা ছন্দের পতন। হিমাচল প্রদেশের পর কর্ণাটক কংগ্রেস নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বিজেপির বিজয়রথকে থামিয়ে দিল ।২০১৮ পর থেকে লাগাতার হারতে থাকা একটি দল আবার ২০২৪ সাধারণ নির্বাচনে প্রাসঙ্গিক হয়ে গেল । ২২৪ সদস্যের কর্ণাটক বিধানসভায় সরকার গঠন করতে গেলে প্রয়োজন ১১৩টি আসন সেখানে কংগ্রেস একাই পেয়েছে ১৩৬টি আসন, বিজেপি পেয়েছে ৬৫ টি এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী দেবগৌড়ার জেডিএস পেয়েছে ১৯টি এবং অন্যান্য ৪ টি আসন পেয়েছে। যা গতবারের তুলনায় বিজেপির ৩৯ টি আসন কমেছে এবং কংগ্রেসের বেড়েছে ৫৭টি আসন এবং জেডিএসের কমেছে ১৮ টি আসন। কর্ণাটকে কংগ্রেসের এই সাফল্য কি রাজ্যে কংগ্রেসের শক্তিশালী সংগঠনের ফল না কি কর্ণাটকের আগের ক্ষমতাশীল বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ । কর্ণাটকে কংগ্রেসে অনেক বড় নেতা রয়েছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শিবকুমার দক্ষ সংগঠক। আগের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধারামাইয়ার ব্যাপক জনভিত্তি রয়েছে। ভোটের আগে বিজেপির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জগদীশ শেট্টার এবং উপমুখ্যমন্ত্রী সাভাড়ি কংগ্রেসে যোগ দিয়ে নির্বাচনে লড়েছেন। অন্যদিকে বিজেপির প্রচারের সবচেয়ে বড় মুখ ছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। বিজেপির প্রচারে সব নেতারাই মোদীর নাম করেই ভোট চেয়েছিলেন কিন্তু শেষ রক্ষা হল না ।কর্ণাটকের বিজেপি সরকারের ব্যাপক দুর্নীতি সেই সাথে কংগ্রেসের লাগাতার প্রচার যা প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার সুরকে আরও তীব্র করেছে। তাই শুধুমাত্র মোদী ম্যাজিকের উপর ভর করে নির্বাচন জেতা যে আর বিজেপির পক্ষে সম্ভব নয় কর্ণাটকের জনগণ চোখে হাত দিয়ে তাই দেখিয়ে দিল। .....বিস্তারিত পড়ুন
বেতন, মাসে ৩০,০০০ আর সম্পত্তির মালিকানা ৭ কোটির বেশী
উত্তরাপথ: এ এক দুর্নীতির অনন্য নজির যা পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিবিদদের দুর্নীতি কে লজ্জায় ফেলবে । দুর্নীতির এই অভিযোগটি উঠেছে মধ্যপ্রদেশ পুলিশ হাউজিং কর্পোরেশনের সহকারী প্রকৌশলী ইনচার্জ হেমা মীনার বিরুদ্ধে।মধ্যপ্রদেশের সরকারি কর্মকর্তা দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের পর হেমা মীনা প্রচার মাধ্যমের নজরে আসে । এখন প্রশ্ন কে এই হেমা মীনা ? মধ্যপ্রদেশ পুলিশ হাউজিং কর্পোরেশনের চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োজিত সহকারী প্রকৌশলী ইনচার্জ যিনি মাসে ৩০,০০০ টাকা আয় করেন । দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে তার বাড়ি থেকে সাতটি বিলাসবহুল গাড়ি, ২০,০০০ বর্গফুট .....বিস্তারিত পড়ুন