বিয়েতে পারফর্ম করতে সেলিব্রিটিদের ফি জানলে অবাক হবেন

উত্তরাপথঃ এখন সেলিব্রিটিদের ব্যয়বহুল বিয়েতে পারফর্ম করা সাধারণ হয়ে উঠেছে।  পাঁচ মিনিটের পারফরম্যান্সের জন্য কোটি কোটি টাকা তারা নেয় ।সম্প্রতি ইভেন্ট ম্যানেজারদের একটি রিপোর্ট সামনে এসেছে,তাতে দেখা যাচ্ছে , সালমান এবং শাহরুখের মতো তারকারা বিয়েতে পারফর্ম করার জন্য ৩ কোটি টাকারও বেশি চার্জ করেন। রণবীর সিং নেন ১.৭৫ কোটি, আর রণবীর কাপুর নেন ১.৫ কোটি।  আলিয়া ভাট ও দীপিকা পাড়ুকোনের পারিশ্রমিকও দেড় কোটি টাকা।  বিশেষ বিষয় হল অভিনেতার চেয়ে গায়কদের চাহিদা বেশি। তাদের চার্জও অভিনেতাদের চেয়ে বেশি।

 অরিজিৎ সিং খুব কমই বিয়েতে পারফর্ম করেন।  তবে তিনি যখনই পারফর্ম করেন, তার পারিশ্রমিক সবচেয়ে বেশি।তিনি অন্তত ৫ কোটি টাকা নেয়।এখন এপি ধিলনেরও কদর যথেষ্ট, তিনি বিয়েতে পারফর্ম করার জন্য ৪ কোটি টাকা পর্যন্ত চার্জ করেন।

 আগে ব্যয়বহুল বিয়েতে ক্যাটারিং ও ডেকোরেশন কেমন হবে তা নিয়ে আলোচনা হতো, এখন সরাসরি আলোচনা হয় কোন সেলিব্রিটি পারফর্ম করলেন। উদয়পুরের এক ইভেন্ট ম্যানেজারের বক্তব্য, ধরুন, শাহরুখ বা সালমানকে আমন্ত্রণ জানাতে গেলে তিন কোটির বেশি খরচ করতে হবে।  এ ছাড়া তাদের যাতায়াত ও থাকার ব্যবস্থা আলাদাভাবে করতে হবে।  তার দল চার-পাঁচ দিন আগে এসে পুরো ঘটনাস্থল দেখে। তিনি আরও বলেন,’আমরা যত চাহিদা পাই, তার মধ্যে শাহরুখ-সালমানের নাম খুবই কম।  এর কারণ তাদের দিয়ে পারফর্ম করানোর সামর্থ্য সবার নাগালের মধ্যে নয়।বছরে মাত্র দুই থেকে তিনটি বিয়ে হয় যেখানে তারা অনুষ্ঠান করে।  আমাদের কাছে যে চাহিদা আসে তার মধ্যে গুরু রন্ধাওয়া, মিকা সিং, হানি সিং, নেহা কক্কর এবং অখিল সচদেবার মতো গায়কের সংখ্যা বেশি।

 এপি ধিলন ও দিলজিৎ নেন ৪ কোটি, তবে সব কিছুর ঊর্ধ্বে অরিজিৎ সিং।  তারা কনসার্টের জন্য টাকা নেয়, কিন্তু  তাদের নিয়ে তেমন কোনও আর ঝামেলা থাকে না।তবে গুরু রন্ধাওয়া, বাদশা, হানি সিং, মিকা সিং এবং নেহা কক্করের মতো গায়করা ৫০ লাখ টাকা থেকে ১.২৫ কোটি টাকা পর্যন্ত চার্জ করেন। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, বলিউড তারকাদের থেকে আজ বিয়েতে গায়কদের চাহিদা বেশি।  কার্তিক আরিয়ান, সিদ্ধার্থ মালহোত্রা, ক্যাটরিনা কাইফ এবং জ্যাকলিন ফার্নান্দেজের মতো তারকাদের চেয়ে অরিজিৎ সিং, এপি ধিলোন এবং দিলজিৎ দোসাঞ্জের মতো গায়করা বেশি অর্থ নিচ্ছেন।

 সেলিব্রিটিরা বিয়েতে পারফর্ম করার জন্য কী সুবিধার দাবি করে?  তাদের চাহিদা কি?  এসব প্রশ্নে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ‘শাহরুখ-সালমানের মতো তারকাদের লাইন আপ করলে যে কোনো মূল্যে চার্টার্ড প্লেনের ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়া থাকার জন্য প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুট বুক করতে হবে।  তার পুরো দলটিও ব্যবস্থা করতে হবে।  যার মধ্যে হেয়ার স্টাইলিস্ট, স্পটবয়, দেহরক্ষী, ম্যানেজার সব মিলিয়ে ১০-১২ জনের একটি দল । এসবের জন্য অতিরিক্ত খরচ ও  বিশেষ ব্যবস্থা করতে হয়।

 ব্যাপারটা আরও খারাপ হয়ে যায় যখন আপনি ফ্যালকন প্লেনের পরিবর্তে ৬ সিটার প্লেন পাঠান।  রাষ্ট্রপতি স্যুটের পরিবর্তে একটি সাধারণ স্যুট বুক করুন।  বিজনেস ক্লাসের বদলে ইকোনমি ক্লাস দেবেন।সেই সময়  সেলিব্রিটিরা এতে রেগে যান এবং কখনও কখনও পারফর্ম না করে চলে যান।

উদয়পুরের এক ইভেন্ট ম্যানেজারের বক্তব্য, এখন ব্যয়বহুল বিয়ের ডেসটিনেশন মানেই উদয়পুর। আর সব চাইতে ডিমান্ডে রয়েছে সিটি প্যালেস। আম্বানী পরিবারের বিয়ের পর এটির ডিমান্ড আরও বেড়ে গেছে।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


ফ্লিম রিভিউ -ওপেনহাইমার

উত্তরাপথ: বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্রিস্টোফার নোলান দ্বারা পরিচালিত”ওপেনহাইমার” একটি মাস্টারপিস মুভি। ছবিতে জে. রবার্ট ওপেনহেইমার, এক নামকরা পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পারমাণবিক বোমার বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।এই সিনেমায় ওপেনহাইমার এর জটিল জীবনকে বর্ণনা করা হয়েছে। সেই হিসেবে 'ওপেনহাইমার'কে বায়োপিক বলা যেতে পারে।  কারণ এটি একজন মানুষের গল্প। এই ছবির গল্প তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত।ছবির শুরুতে পারমাণবিক বোমা তৈরির আবেগের কথা বলা হয়েছে।  যেখানে নায়ক কিছু না ভেবে নিবেদিতপ্রাণভাবে এমন একটি অস্ত্র তৈরিতে নিয়োজিত থাকে যা বিশ্বকে ধ্বংস করতে পারে।  অস্ত্র তৈরি হওয়ার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে নায়ক তার কাজের ফলাফল দেখে অপরাধবোধে পূর্ণ হয়।  এবং তৃতীয় পর্যায়টি হল রাজনীতি  যা ওপেনহাইমারকে মোকাবেলা করতে হয়েছে।  পুরো সিনেমাটি রঙিন হলেও রাজনৈতিক অংশ সাদা-কালো রাখা হয়েছে।  এই তিনটি সময়কালে যা কিছু ঘটছে, তা সবই একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত। .....বিস্তারিত পড়ুন

Vijay Stambh : চিতোরগড় দুর্গে বিজয় স্তম্ভ হিন্দু – মুসলিম সহাবস্থানের প্রতীক

উত্তরাপথঃ খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীতে মৌর্য রাজবংশ কর্তৃক স্থাপিত চিতোরগড় দুর্গ সাহস ও আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে আজও দাঁড়িয়ে আছে। এই দুর্গ তার বিশাল কাঠামো, রাজপ্রাসাদ, একাধিক  সুদৃশ্য মন্দির সহ সুন্দর জলাশয়ের জন্য বিখ্যাত।৭০০-একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, এই দুর্গটিতে প্রায় ৬৫টি ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন রয়েছে যা রাজপুত এবং ইসলামিক স্থাপত্য শৈলীর সূক্ষ্মতার প্রমান দেয়। বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh)) হল এই দুর্গে অবস্থিত,সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর কাঠামো।এই আশ্চর্য-অনুপ্রেরণামূলক স্তম্ভটি কেবল তার উচ্চতার জন্য বিখ্যাত নয়,এটি রাজপুতদের অদম্য সাহস এবং অধ্যবসায়ের গল্পও বলে যা চিতোরগড় দুর্গেরই সমার্থক হয়ে উঠেছে।বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh), নাম থেকে বোঝা যায়, বিজয়ের প্রতীক।  প্রাচীনকালে যে কোনো যুদ্ধ অভিযানের সাফল্যের পর সেই বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতে রাজারা মন্দির, স্তূপ, স্মৃতিস্তম্ভ ও স্তম্ভ নির্মাণ করতেন।  ৯ তলা এই বিজয় স্তম্ভটি ১৯৪০ থেকে ১৪৪৮ সালের মধ্যে মহারানা কুম্ভ দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন

সেলফির উচ্চ রেটিং কি আপনাকে আরওপাতলা হতে উৎসাহিত করছে ?

উত্তরাপথঃ সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে সেলফি তোলা এবং নিজেকে পাতলা হিসাবে দেখানোর মধ্যে একটি সম্পর্ক থাকতে পারে। যুক্তরাজ্যের ইয়র্ক সেন্ট জন ইউনিভার্সিটির রুথ নাইট এবং ইউনিভার্সিটি অফ ইয়র্কের ক্যাথরিন প্রেস্টন সম্প্রতি PLOS ONE জার্নালে তাদের ফলাফল প্রকাশ করেছেন।সেখানে সেলফির উচ্চ রেটিং এবং আমাদের শরীরের গঠনের মধ্যে যোগসূত্র খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে।    বর্তমান সোশ্যাল মিডিয়ায় সেলফি হল এক জনপ্রিয় ছবি দেওয়ার ধরন। যিনি সেলফি তোলেন তিনি ক্যামেরাকে তাদের শরীর থেকে দূরে রেখে নিজেই নিজের ছবি তোলে। আগের গবেষণায় বলা হয়েছে সেলফিগুলি দেখার ফলে ছবির বিষয়গুলি সম্পর্কে দর্শকদের সিদ্ধান্ত প্রভাবিত হতে পারে। .....বিস্তারিত পড়ুন

Free Gift in Politics: ভারতের নির্বাচন ও ফ্রি গিফট সংস্কৃতি

উত্তরাপথঃ ফ্রি গিফট (Free gift in politics)এর রাজনীতি সম্প্রতি ভারতের নির্বাচনী রাজনীতিতে একটি বিশিষ্ট ভূমিকা পালন করছে। বিনামূল্যে কোটি কোটি জনগণকে উপহার প্রদান যা রাজকোষের উপর অতিরিক্ত বোঝা ফেলবে এই সত্যটি জানা সত্ত্বেও, রাজনৈতিক দলগুলি ভোটারদের আকৃষ্ট করার জন্য ফ্রি গিফট (Free gift in politics) দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচনের দৌড়ে একে অপরের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।এক সময় প্রয়াত তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জে জয়ললিতা বিনামূল্যে শাড়ি, প্রেসার কুকার, ওয়াশিং মেশিন, টেলিভিশন সেট ইত্যাদির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটের আগে যে বিনামূল্যের সংস্কৃতি শুরু করেছিলেন তা পরবর্তী কালে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলি দ্রুত অনুসরণ করেছিল। এরপর ২০১৫ সালে আম আদমি পার্টি নেতৃত্ব দিল্লির ভোটারদের কাছে বিনামূল্যে বিদ্যুৎ, জল, বাস ভ্রমণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে জয়লাভ করেছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top