২৬ সপ্তাহ পর গর্ভপাত সংক্রান্ত মামলায়, রিপোর্ট চাইল সুপ্রিম কোর্ট

উত্তরাপথঃ ২৬ সপ্তাহ পর গর্ভপাত সংক্রান্ত মামলায় মায়ের গর্ভপাতে আবেদনে বৃহস্পতিবার ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। এবার মহিলার শারীরিক পরিস্থিতি জানতে এইমসের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হল। মহিলা কোনও অস্বাভাবিকতায় ভুগছেন কীনা, তা এইমসের কাছে জানতে চেয়েছে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ।

এর আগে এইমসের তরফে আদালতে দাখিল করা রিপোর্টে বলা হয়েছিল যে ভ্রূণ স্বাভাবিক অবস্থায় রয়েছে। সেই সঙ্গে রয়েছে প্রাণের স্পন্দন। বিষয়টি সন্দেহের বাইরে রাখার জন্য ফের রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য এইমসকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্র।

এর আগে আবেদকারীর আইজীবী সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছিলেন যে মহিলা গত বছর থেকে সাইকোসিসে ভুগছেন। শারীরিক সমস্যা সমাধানে ওষুধ প্রয়োগ করা হলে, গর্ভস্থ ভ্রূণের কোনও ক্ষতি হতে পারে কীনা, তা-ও খতিয়ে দেখার জন্য এইমসকে নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই রিপোর্ট আদালতে জমা করার কথা বলেন দুই বিচারপতি।

আগামী ১৬ অক্টোবর মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। ওই দিনই রিপোর্টি পেশ করা নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, ঘটনার সূত্রপাত গত সোমবার। ২৬ সপ্তাহ পার হয়ে যাওয়ার পরেও গর্ভস্থ ভ্রূণ নষ্ট করার আবেদন জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে দ্বারস্থ হন এক মহিলা। অন্তঃসত্ত্বা ওই মহিলার আরও ২টি সন্তান থাকায় এবং তার শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ার জন্য নতুন করে সন্তান লালনপালনের অক্ষম বলে পিটিশনে জানিয়েছিলেন।

মহিলার সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে গর্ভপাতের অনুমতিও দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। পরের দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার, শেষ মুহুর্তে এইমসের দাখিল করা মেডিক্যাল রিপোর্টে বলা হয়েছে যে আবেদনকারী গর্ভে শিশুর বিকাশ স্বাভাবিক রয়েছে। আর তার বেঁচে থাকার সম্ভাবনাও প্রবল। এরপরেই ডিভিশন বেঞ্চের রায় পুনঃবিচেনার নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়।

বৃহস্পতিবারও ছিল সেই মামলার শুনানি ,তাতে কেন আদালতের রায় নিয়ে গর্ভস্থ সন্তানের মৃত্যুদণ্ড চাইছেন, ক্ষোভপ্রকাশ করে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় আবেদনকারীর উদ্দেশ্যে প্রশ্ন তোলেন। আগে কেন গর্ভপাত করানোর সিদ্ধান্ত নেন নি, তা নিয়েও ধমক দেন তিনি। শুক্রবার ফের মামলার শুনানি হয়। এরপরেই ফের এইমসকে শারীরিক পরীক্ষার পর রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দেয় আদালত।

 উল্লেখ্য, দেশের গর্ভপাত সংক্রান্ত আইনে ২৪ সপ্তাহের মধ্যে গর্ভপাতের বিধান রাখা হয়েছে। কিন্তু ২৬ সপ্তাহ পর গর্ভপাত সংক্রান্ত মামলায় , আইন অনুযায়ী এবার গর্ভপাতের জন্য সুপ্রিম অনুমোদন নিতে হবে। তাই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন আবেদনকারী।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


সহযাত্রী

দীপা - আর তো এগারো বছর আটমাস বারোদিন চাকরি , তাই না ? অংশু - বাপরে বরাবরই তোমার স্মৃতিশক্তি প্রবল , এতোটা মনে আছে ? দীপা- ঘোরো টো টো করে আর কটা বছর , আফটার রিটায়ার্ড মেন্ট কি করবে ? অংশু - ফার্ম হাউস ,গাছপালা পশুপাখি নিয়ে থাকবো। দীপা- বাঃ উন্নতি হয়েছে। যে অংশুবাবু কখনও একটা ফুলের চারা লাগায়নি সে কিনা ফার্ম হাউস করবে … অংশু - সময়ের সাথে সব বদলায় ম্যাডাম , আচ্ছা তোমার কনুইয়ের নীচে সেই পোড়া দাগটা দেখি তো গেছে কিনা … দীপা- তুমি অনেক রোগা হয়ে গেছো , তা ওজন কত শুনি ? অংশু - সত্তর বাহাত্তর হবে বোধহয় মাপিনি, দীপা - তা কেনো মাপবে ? একটা অগোছালো মানুষ। অংশু - যাক বাবা তাও অপদার্থ শব্দ টা বলোনি। দীপা - ভাবোনা ডিভোর্স হয়েছে বলে সে অধিকার নেই। সমাজ বিজ্ঞানের অধ্যাপক হয়েও আসলে সমাজটাই শেখোনি , আর কি শিখেছো বলো, ঐ ছেলে পড়ানো , সেমিনার আর লেখালেখি। তা ধন্যবাদ তোমার রূপালী ঠৌট উপন্যাস এবছর একাডেমি পেলো , দারুণ লেখো তুমি, আগের চেয়ে অনেক ধার। অংশু- বাঃ তুমি পড়েছো ? দীপা- সব পড়েছি , তোমার রিসেন্ট উপন্যাসের নায়িকা মেঘনা টি কে ? মানে কার আড়ালে কাকে লিখেছো ? অংশু - এও কি বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপিকাকে বলে দিতে হবে ? দীপা- বারোটা বছর সময়ের শাসনে অনেক বদলালেও আমি বোধহয় সেই বড্ড সেকেলেই রয়ে গেলাম। অংশু - একা একাই কাটিয়ে দিলে বারো বছর। দীপা- একই প্রশ্ন আমিও করতে পারি। অংশু - আচ্ছা দীপা আজ না হয় শেষবারের মতো বলি, আমার মধ্যে কি ছিলো না বলোতো ? কেনো পারোনি এই বাউন্ডুলে ভবঘুরে মানুষটার সাথে চিরকালের ঘর বাঁধতে ? আমি কি ভালোবাসতে জানি না ? .....বিস্তারিত পড়ুন

NASA Carbon Emission: পৃথিবী কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করার চেয়ে বেশি নির্গত করছে

উত্তরাপথঃ কার্বন নির্গমন (NASA Carbon Emission) সম্পর্কে নাসার সর্বশেষ আবিষ্কার পৃথিবীর জন্য এক সতর্কতা সংকেত। মহাকাশ সংস্থার মতে, পৃথিবী কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করার চেয়ে বেশি নির্গত করছে, যার ফলে গ্রিনহাউস গ্যাসের বায়ুমণ্ডলীয় ঘনত্ব উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। NASA এর এই আবিষ্কারটি জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য কারণ হিসাবে দেখা যেতে পারে, সেইসাথে কার্বন নিঃসরণ কমানোর জন্য জরুরি পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার উপর আলোকপাত করেছে।নাসার সর্বশেষ গবেষণায় যে তথ্য উঠে এসেছে তাতে পৃথিবীর মহাসাগর এবং ভূমি-ভিত্তিক বাস্তুতন্ত্র আগের চেয়ে কম কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করছে। গবেষণায় দেখা গেছে যে গত এক দশকে ভূমি এবং মহাসাগর দ্বারা শোষিত কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ ৫% হ্রাস পেয়েছে, যার ফলে গ্যাসের বায়ুমণ্ডলীয় ঘনত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। .....বিস্তারিত পড়ুন

ফ্লিম রিভিউ -ওপেনহাইমার

উত্তরাপথ: বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্রিস্টোফার নোলান দ্বারা পরিচালিত”ওপেনহাইমার” একটি মাস্টারপিস মুভি। ছবিতে জে. রবার্ট ওপেনহেইমার, এক নামকরা পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পারমাণবিক বোমার বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।এই সিনেমায় ওপেনহাইমার এর জটিল জীবনকে বর্ণনা করা হয়েছে। সেই হিসেবে 'ওপেনহাইমার'কে বায়োপিক বলা যেতে পারে।  কারণ এটি একজন মানুষের গল্প। এই ছবির গল্প তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত।ছবির শুরুতে পারমাণবিক বোমা তৈরির আবেগের কথা বলা হয়েছে।  যেখানে নায়ক কিছু না ভেবে নিবেদিতপ্রাণভাবে এমন একটি অস্ত্র তৈরিতে নিয়োজিত থাকে যা বিশ্বকে ধ্বংস করতে পারে।  অস্ত্র তৈরি হওয়ার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে নায়ক তার কাজের ফলাফল দেখে অপরাধবোধে পূর্ণ হয়।  এবং তৃতীয় পর্যায়টি হল রাজনীতি  যা ওপেনহাইমারকে মোকাবেলা করতে হয়েছে।  পুরো সিনেমাটি রঙিন হলেও রাজনৈতিক অংশ সাদা-কালো রাখা হয়েছে।  এই তিনটি সময়কালে যা কিছু ঘটছে, তা সবই একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত। .....বিস্তারিত পড়ুন

ওজন হ্রাস (weight loss) মস্তিষ্কের বার্ধক্যের লক্ষণগুলিকে ধীর করে

উত্তরাপথঃ এপ্রিলে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, শাকসবজি, সামুদ্রিক খাবার এবং গোটা শস্য সমৃদ্ধ একটি ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্য খাওয়া - এমনকি শুধুমাত্র খাদ্যের নির্দেশিকা অনুসরণ করে   ওজন হ্রাস (weight loss)মস্তিষ্কের বার্ধক্যের লক্ষণগুলিকে ধীর করে বলে মনে করা হয়।সাম্প্রতি ডিউক ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিনের বিজ্ঞানীদের দ্বারা পরিচালিত, একটি  গবেষণায় দেখা গেছে যে ওজন হ্রাস মস্তিষ্কে বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে ৯ মাস পর্যন্ত ধীর করে (aging process) দিতে পারে। গবেষণায় ৬০ থেকে ৭৮ বছর বয়সের মধ্যে ৪৭ জন অংশগ্রহণকারীকে জড়িত করা হয়েছিল, যাদের প্রত্যেকেরই ওজন বেশি বা স্থূল ছিল এবং তাদের অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যগ্রহণ  ছিল। তাদের এলোমেলোভাবে একটি ক্যালোরি-সীমাবদ্ধ গ্রুপ বা একটি নিয়ন্ত্রণ গ্রুপে বরাদ্দ করা হয়েছিল।ক্যালোরি-সীমাবদ্ধতা গোষ্ঠীর সদস্যদের একটি খাদ্য পরিকল্পনা অনুসরণ করে, যার লক্ষ্য ছিল তাদের আনুমানিক প্রয়োজনের চেয়ে ১০ – ১৫% কম ক্যালোরি গ্রহণ করা। অন্যদিকে, নিয়ন্ত্রণ গ্রুপ তাদের খাদ্য পরিবর্তন করেনি .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top