

বলরাম মাহাতোঃ পুরুলিয়ার জয়পুর রাজবাড়ীর দুর্গাপূজা আর পাঁচটা পুজোর থেকে আলাদা (Golden Durga) ৷ কারণ প্রাচীন আমলের এই পুজোর সাথে জড়িত রয়েছে ওরঙ্গজেব থেকে রাজা জয় সিংহের নাম । সালটা ঠিক ১৬৬৬ সাল ওই সময় দিল্লির সুলতান ওরঙ্গজেব চালু করেছে জিজিয়া কর, ধর্ম রক্ষার জন্য রাজা জয় সিং স্ব-পরিবারে পালিয়ে আসেন পুরুলিয়া। পুরুলিয়ায় তখন বাস মুন্ডাদের। তাদের সর্দার খামার মুন্ডাকে হত্যা করে এই এলাকা দখল করলেন রাজা জয় সিং নাম হলো জয়পুর আবার অনেকে এটিকে গড় জয়পুরও বলে। মুন্ডারা খাঁরাকে তরবারি হিসেবে পূজো করতো। তারপর সেই খাঁরাটিকে নিয়ে জয় সিংহ সেই খাঁরাটিকে কলাবৌ হিসেবে পূজা করতে শুরু করেন। পরিবারের সদস্য প্রশান্ত সিংহ দেব বললেন এভাবেই দীর্ঘদিন ধরে পূজো হতো।
পরবর্তীকালে সপ্তম রাজা কাশিনাথ সিংহের আমলে পুজোর সময় প্রদীপ থেকে আগুন লেগে যায় যদিও সেই সময় জয়পুর রাজবাড়ির দুর্গোৎসবে মূর্তি পূজা হত না। নবপত্রিকা এবং জয়পুরের প্রতিষ্ঠাতা জয়সিং-এর কিংবদন্তীতে মোড়া খড়্গের পুজো হত যায় অমঙ্গলের ভয়ে তিন দিন ঠাকুরের সামনেই ছিলেন রাজা ,পরে স্বপ্নে দেখতে পান মা বলেছেন তুমি আমার স্বর্ণ প্রতিমা প্রতিষ্ঠা কর বারানসী থেকে স্বর্ন শিল্পী এনে শুরু হয় সোনার মূর্তি তৈরির কাজ ।এই মূর্তিটি বেনারসের কনকদুর্গার দ্বারা অনুপ্রাণিত ১০৮টি আকবর-যুগের স্বর্ণমুদ্রা থেকে তৈরি। এটি হীরা সহ বেনারসের মূল্যবান গহনা দিয়ে শোভিত।মা দুর্গার প্রতিমূর্তিটি দেড় মণ রূপা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।
পুরুলিয়ার জয়পুর রাজবাড়ীর দেবী দুর্গা সোনার। উচ্চতা আড়াই ফুট। একসের সোনা দিয়ে মূর্তিটি তৈরি হয়েছে। সঙ্গে রয়েছে দেড়মন রূপোর দৃষ্টিনন্দন সিংহাসন। মঙ্গলঘটের উপর রাখা থাকে দেবী মূর্তি। পাশে একই মাপের দু’টি বেল। ১৯৭০ সালে রাজবাড়িতে ডাকাত পড়ে কয়েকটি বিগ্র চুরি হয়ে যায় তবে সোনার মূর্তিটি নিয়ে যেতে পারিনি ডাকাতরা তৎকালীন পুরুলিয়ার পুলিশ সুপারের পরামর্শে এই মূর্তি সারা বছর রাখা থাকে ব্যাংকের লকারে ৷ এরপর থেকে সারা বছর ব্যাংকের লকার থেকেই আনা হয় সোনার মূর্তি। পুজোর ষষ্ঠী থেকে দশমী পুলিশি কড়ানিরাপত্তায় মুর্তিটি মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করে পূজো হয় ৷ পূজোর পর আবারও লকারে রেখে আসা হয় মূর্তিটিকে ৷রাজতন্ত্র না থাকলেও এখনও সাড়ম্বরে দুর্গাপূজা হয় রাজবাড়িতে ৷
এইবছর নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছে জয়পুর রাজপরিবারের দুর্গা মন্দির। রাজপরিবারের সদস্য শংকরনারায়ণ সিংহ দেও জানান, মন্দিরের প্রবেশদ্বার খুব ছোট ছিল । ভক্তদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে মন্দিরের পুর্ণনির্মান হয় ৷ প্রবেশদ্বারটিও বড় করে তৈরি করা হয়েছে নতুন মন্দিরের ৷ জয়পুরের ইতিহাসে মহারাজা কাশীনাথ সিং-এর দান এই সোনার দুর্গা।
আরও পড়ুন
ওজন হ্রাস (weight loss) মস্তিষ্কের বার্ধক্যের লক্ষণগুলিকে ধীর করে
উত্তরাপথঃ এপ্রিলে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, শাকসবজি, সামুদ্রিক খাবার এবং গোটা শস্য সমৃদ্ধ একটি ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্য খাওয়া - এমনকি শুধুমাত্র খাদ্যের নির্দেশিকা অনুসরণ করে ওজন হ্রাস (weight loss)মস্তিষ্কের বার্ধক্যের লক্ষণগুলিকে ধীর করে বলে মনে করা হয়।সাম্প্রতি ডিউক ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিনের বিজ্ঞানীদের দ্বারা পরিচালিত, একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে ওজন হ্রাস মস্তিষ্কে বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে ৯ মাস পর্যন্ত ধীর করে (aging process) দিতে পারে। গবেষণায় ৬০ থেকে ৭৮ বছর বয়সের মধ্যে ৪৭ জন অংশগ্রহণকারীকে জড়িত করা হয়েছিল, যাদের প্রত্যেকেরই ওজন বেশি বা স্থূল ছিল এবং তাদের অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যগ্রহণ ছিল। তাদের এলোমেলোভাবে একটি ক্যালোরি-সীমাবদ্ধ গ্রুপ বা একটি নিয়ন্ত্রণ গ্রুপে বরাদ্দ করা হয়েছিল।ক্যালোরি-সীমাবদ্ধতা গোষ্ঠীর সদস্যদের একটি খাদ্য পরিকল্পনা অনুসরণ করে, যার লক্ষ্য ছিল তাদের আনুমানিক প্রয়োজনের চেয়ে ১০ – ১৫% কম ক্যালোরি গ্রহণ করা। অন্যদিকে, নিয়ন্ত্রণ গ্রুপ তাদের খাদ্য পরিবর্তন করেনি .....বিস্তারিত পড়ুন
রাতের ঘামের সমস্যা এবং এ সম্পর্কে আপনি কি করতে পারেন
উত্তরাপথঃ রাতের ঘামের সমস্যা শরীরের কুলিং সিস্টেমের একটি স্বাভাবিক অংশ, তাপ মুক্তি এবং সর্বোত্তম শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে।তবে রাতের ঘাম একটি সাধারণ সমস্যা যা বিভিন্ন কারণে হতে পারে।এর অস্বস্তিকর অনুভূতির জন্য ঘুম ব্যাহত হতে পারে, যার ফলে ক্লান্তি এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে। আপনি যদি রাতে অতিরিক্ত ঘাম অনুভব করেন, তাহলে তার অন্তর্নিহিত কারণটি চিহ্নিত করা এবং এটি মোকাবেলার জন্য কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এখানে রাতের ঘামের কিছু সম্ভাব্য কারণ নিয়ে আলোচনা করা হল।মেনোপজ: যে কেউ, বয়স বা লিঙ্গ নির্বিশেষে, রাতের ঘাম অনুভব করতে পারে। .....বিস্তারিত পড়ুন
প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে
উত্তরাপথঃ হঠাৎ করেই একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে।২০২৩ এর ৩০ অক্টোবর প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি মৃত আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত একটি নতুন দ্বীপের জন্ম দিয়েছে। বিস্ফোরণের পর জাপানের ওগাসাওয়ারা দ্বীপ চেইনের কাছে বিশাল বিশাল পাথরের টুকরো দেখা গেছে। এ বিষয়ে জাপানি গবেষক বলেন, গত মাসে প্রশান্ত মহাসাগর জলের নিচে আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের পর টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে ইওটো দ্বীপের কাছে একটি ছোট নতুন দ্বীপের উদ্ভব হয়েছে।টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকম্প গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ফুকাশি মায়েনো জানিয়েছেন যে নতুন দ্বীপ, এখনও যার নাম নেই প্রশান্ত মহাসাগরের ইওটো দ্বীপ থেকে ১ কিলোমিটার দূরে ১০০ মিটার ব্যাসের একটি পাথুরে দ্বীপে একটি phreatomagmatic বিস্ফোরণ ঘটেছে। টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে বিস্ফোরণটি দেখা গেছে। ভূপৃষ্ঠের নীচে জলের সাথে লাল গরম ম্যাগমা সংঘর্ষের কারণে প্রতি কয়েক মিনিটে বিস্ফোরণ ঘটে।গত ২১ অক্টোবর, ২০২৩-এ অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়েছিল, যা আগে ইও জিমা নামে পরিচিত ছিল এবং এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের স্থান ছিল। প্রায় ১০ দিন ধরে অগ্ন্যুৎপাত চলার পর, আগ্নেয়গিরির উপাদান অগভীর সমুদ্রতলের উপর জমা হয় এবং প্রায় ১৬০ ফুট পর্যন্ত উচ্চতায় বড় বড় পাথরের আকারে সমুদ্র পৃষ্ঠের উপরে উঠে আসে। .....বিস্তারিত পড়ুন
World Children's Day: সত্যিই কি ‘বিশ্ব শিশু দিবস´পালনের কোনও যৌক্তিকতা আছে ?
প্রীতি গুপ্তাঃ হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটি দিন তারপর ১৪ নভেম্বর আমাদের দেশ সহ সারা বিশ্বজুড়ে পালন করা হবে ‘বিশ্ব শিশু দিবস´(World Children's Day)।এই দিনটি শিশুদের মঙ্গলের জন্য, তাদের ভবিষ্যতের জন্য একটি অনুকূল বিশ্ব তৈরি করার প্রচেষ্টার একটি দিন।কিন্তু প্রশ্ন,সত্যি কি হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে সারা বিশ্ব জুড়ে শিশু দিবস পালন করার কোনও যৌক্তিকতা আছে? আদৌ কি এর কোনও লাভ আমরা আমাদের প্রান্তিক স্তরের শিশুদের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছি ? সম্প্রতি কাজের প্রয়োজনে রাজস্থানের উদয়পুর শহরে আসা। আমরা সবাই জানি উদয়পুর বিখ্যাত তার হ্রদের কারণে । এখানকার স্থানীয় থেকে পর্যটক সকলেই এই সুন্দর হ্রদগুলির আকর্ষণে বারবার ছুঁটে যায়। ‘ফতে সাহেব লেক’ রাজস্থানের উদয়পুরের এক বিখ্যাত পর্যটক স্থল।এখানে বহু মানুষ সকাল- বিকেল এই লেকের চার ধারে হাঁটাহাঁটি করতে বেরিয়ে পড়ে। সেভাবেই দুই দিন আগে বিকেলে হঠাৎ করে বেরিয়ে পড়লাম ‘ফতে সাহেব লেকের ধারে হাঁটার উদ্দেশ্য নিয়ে। হাঁটার মাঝখানে হঠাৎ করে একটি বাচ্চাছেলে আওয়াজ করে ডাকছে ,বললাম কিছু বলবি? সে বলল একটু দাঁড়াতে। ও ছুটে গিয়ে হাতে করে কয়েকটি বেলুন নিয়ে এসে হাজির । সে বারবার বেলুন কেনার অনুরোধ জানাতে লাগল। হাতে অন্য কাজের চাপ নেই অনেকটা অবসর সময় তাই আমি অনেকটা সাংবাদিক সুলভ মন নিয়ে বললাম ঠিক আছে আমি তোর বেলুন নেব ,কিন্তু তার আগে আমি তোকে যা বলব তার তার ঠিক ঠিক উত্তর দিতে হবে। সে খুশী খুশী রাজি হয়ে গেল । .....বিস্তারিত পড়ুন