২০৩৫ সালের মধ্যে মহাকাশ স্টেশন স্থাপন করার পথে ভারত

ISRO মহাকাশ স্টেশন স্থাপন model ছবিটি X-একাউন্ট থেকে গৃহীত

উত্তরাপথঃ ভারতের মহাকাশ সংস্থা মহাকাশে বিস্ময়কর কাজ করছে।  অগাস্ট মাসে চতুর্থ দেশ হিসেবে চাঁদে যায় ভারত।  চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছাকাছি যাওয়া প্রথম দেশ ভারত।  কিন্তু এখন আরও দুটি বড় লক্ষ্য তৈরি করেছে ইসরো।  প্রধানমন্ত্রী মোদী মঙ্গলবার গগনযান মিশনের অবস্থা জানতে ISRO বিজ্ঞানীদের সাথে একটি উচ্চ পর্যায়ের পর্যালোচনা বৈঠক করেছেন এরপর  প্রধানমন্ত্রী মোদি বিজ্ঞানীদের ২০৩৫ সালের মধ্যে ভারতের মহাকাশ স্টেশন স্থাপন করার কথা বলেন।

এখন প্রশ্ন এই মহাকাশ স্টেশন কি?  একটি মহাকাশ স্টেশন হল একটি কৃত্রিম কাঠামো যা পৃথিবীর কক্ষপথে পাঠানো হয় এবং যা সেখানে থাকে।  আসলে মহাকাশে অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়।  এই পরীক্ষাগুলি পরিচালনা করার জন্য, বিজ্ঞানীদের জন্য একটি ল্যাব বা থাকার জায়গা তৈরি করতে হবে।  এর জন্য, মহাকাশে একটি ধাতব স্টেশন তৈরি করা হয়েছে যা ক্রমাগত পৃথিবীর চারপাশে ঘুরছে।  বর্তমানে, মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসার নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস) এবং চীনের তিয়ানগং মহাকাশ স্টেশন মহাকাশে রয়েছে।

 চীনের তিয়ানগং মহাকাশ স্টেশনে তিনটি মডিউল রয়েছে।  তবে চীন আগামী বছরগুলিতে তিনটি নতুন মডিউল যুক্ত করতে চায় অন্যান্য দেশের মহাকাশচারীদের পৃথিবীর কাছাকাছি মিশনের জন্য একটি বিকল্প প্ল্যাটফর্ম দিতে।  আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনটি কয়েক বছরের মধ্যে অবসর নিলে চীন তার স্টেশন সম্প্রসারণ করতে চায়।  তিয়ানগং স্পেস স্টেশনের কথা বলতে গেলে, এর আয়ুষ্কাল হবে আগামী ১৫ বছর।  এটি ২০২২ থেকে সম্পূর্ণরূপে কার্যকরী।  এটি পৃথিবী থেকে ৪৫০ কিলোমিটার উচ্চতায় অবস্থিত। এতে সর্বোচ্চ তিনজন মহাকাশচারী থাকতে পারে।

২০৩৫ সালে ভারতের মহাকাশ স্টেশন নির্মাণের সিদ্ধান্ত ভারতের মহাকাশ কর্মসূচির জন্য একটি স্বাভাবিক অগ্রগতি। একটি মহাকাশ স্টেশন স্থাপনের মাধ্যমে, ভারতের লক্ষ্য মাইক্রোগ্রাভিটি, জ্যোতির্বিদ্যা, মানব দেহতত্ত্ব এবং উন্নত প্রযুক্তির উন্নয়ন সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অত্যাধুনিক গবেষণা পরিচালনা করা। মহাকাশ স্টেশনটি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা, প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন এবং অন্যান্য দেশের সাথে সম্ভাব্য সহযোগিতার ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে।

ভারতীয় মহাকাশ স্টেশন স্থাপন দেশ এবং বিশ্বের বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায়ের জন্য অনেক সুবিধা সৃষ্টি । এটি উন্নত গবেষণা এবং উন্নয়ন, উদ্ভাবন এবং প্রযুক্তিগত বৃদ্ধির জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম প্রদান করবে। উপরন্তু, মহাকাশ স্টেশনটি ভারতীয় মহাকাশচারীদের জন্য একটি প্রশিক্ষণের ক্ষেত্র হিসেবে কাজ করবে, যা চাঁদ, মঙ্গল গ্রহ এবং তার বাইরেও সম্ভাব্য মানব মিশনের পথ প্রশস্ত করবে। এটি মহাবিশ্বকে বোঝার ক্ষেত্রে অবদান রাখবে।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


Fructose: নতুন গবেষণায় ফ্রুক্টোজকে স্থূলতার কারণ বলা হয়েছে

উত্তরাপথঃ একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় জোরালো প্রমাণ দেওয়া হয়েছে যে ফ্রুক্টোজ (Fructose), সাধারণত প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং পানীয়গুলিতে থাকা এক ধরনের চিনি, যা স্থূলতার প্রাথমিক চালক। বছরের পর বছর ধরে, পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা , পাশ্চাত্য খাদ্যে, স্থূলতার মূল কারণ নিয়ে বিতর্ক করেছেন, কেউ কেউ অত্যধিক ক্যালোরি গ্রহণের দিকে ইঙ্গিত করেছেন, অন্যরা কার্বোহাইড্রেট বা চর্বি জাতীয় খাবারকে দায়ী করেছেন। Obesity জার্নালে সাম্প্রতিক একটি গবেষণাপত্রে ফ্রুক্টোজকে স্থূলতার প্রকৃত চালক হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।The University of Colorado Anschutz Medical Campus এর Dr. Richard Johnson এবং তার দলের মতে, ফ্রুক্টোজ হল একটি সাধারণ চিনি যা ফল এবং মধুর প্রাথমিক পুষ্টি। .....বিস্তারিত পড়ুন

সম্পাদকীয়-  রাজনৈতিক সহিংসতা ও আমাদের গণতন্ত্র

সেই দিনগুলো চলে গেছে যখন নেতারা তাদের প্রতিপক্ষকেও সম্মান করতেন। শাসক দলের নেতারা তাদের বিরোধী দলের নেতাদের কথা ধৈর্য সহকারে শুনতেন এবং তাদের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতেন।  আজ রাজনীতিতে অসহিষ্ণুতা বাড়ছে।  কেউ কারো কথা শুনতে প্রস্তুত নয়।  আগ্রাসন যেন রাজনীতির অঙ্গ হয়ে গেছে।  রাজনৈতিক কর্মীরা ছোটখাটো বিষয় নিয়ে খুন বা মানুষ মারার মত অবস্থার দিকে ঝুঁকছে। আমাদের দেশে যেন রাজনৈতিক সহিংসতা কিছুতেই শেষ হচ্ছে না।আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার চেয়ে রাজনৈতিক সংঘর্ষে বেশি মানুষ নিহত হচ্ছেন।  ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি) অনুসারে, ২০১৪ সালে, রাজনৈতিক সহিংসতায় ২৪০০ জন প্রাণ হারিয়েছিল এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ২০০০ জন মারা গিয়েছিল।  আমরা পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্র হিসেবে আমাদের দেশের গণতন্ত্রের জন্য গর্বিত হতে পারি, কিন্তু এটা সত্য যে আমাদের সিস্টেমে অনেক মৌলিক সমস্যা রয়েছে যা আমাদের গণতন্ত্রের শিকড়কে গ্রাস করছে, যার জন্য সময়মতো সমাধান খুঁজে বের করা প্রয়োজন। .....বিস্তারিত পড়ুন

রাতের ঘামের সমস্যা এবং এ সম্পর্কে আপনি কি করতে পারেন  

উত্তরাপথঃ রাতের ঘামের সমস্যা শরীরের কুলিং সিস্টেমের একটি স্বাভাবিক অংশ, তাপ মুক্তি এবং সর্বোত্তম শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে।তবে রাতের ঘাম একটি সাধারণ সমস্যা যা বিভিন্ন কারণে হতে পারে।এর  অস্বস্তিকর অনুভূতির জন্য ঘুম ব্যাহত হতে পারে, যার ফলে ক্লান্তি এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে। আপনি যদি রাতে অতিরিক্ত ঘাম অনুভব করেন, তাহলে তার অন্তর্নিহিত কারণটি চিহ্নিত করা এবং এটি মোকাবেলার জন্য কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এখানে রাতের ঘামের কিছু সম্ভাব্য কারণ নিয়ে আলোচনা করা হল।মেনোপজ: যে কেউ, বয়স বা লিঙ্গ নির্বিশেষে, রাতের ঘাম অনুভব করতে পারে। .....বিস্তারিত পড়ুন

Electoral Bond এর গোপনীয়তা সরিয়ে রাজনৈতিক দলগুলিকে, জানাতে হবে প্রাপ্ত অনুদানের পরিমাণ

উত্তরাপথঃ বুধবার, নির্বাচনী বন্ড (Electoral Bond)প্রকল্পের আইনি বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদনের শুনানি হয়। শীর্ষ আদালত তার মন্তব্যে বলেছে, 'নির্বাচনী বন্ডগুলি রাজনৈতিক দলগুলিকে বেনামী অর্থ প্রদান করে, কারণ তাদের কেনাকাটা সম্পর্কিত রেকর্ডগুলি স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার কাছে উপলব্ধ যা শুধুমাত্র তদন্তকারী সংস্থাগুলি অ্যাক্সেস করতে পারে৷ এর আগে নির্বাচনী বন্ড’ (Electoral Bond) সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) কেন্দ্র দাবি করেছিল, রাজনৈতিক দলগুলির আয়ের উৎস জানার অধিকার নেই জনতার।এবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তৎপর হল নির্বাচন কমিশন (Election Commission of India)।বুধবার বিকেল ৫টার মধ্যে যাবতীয় হিসেব জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কমিশনের তরফে।নির্বাচনী বন্ডের (Electoral Bond)মামলায় কেন্দ্রের আর্জি সত্বেও সুপ্রিম কোর্ট রাজনৈতিক দলগুলিকে আয়ের উৎস জানাতে বলেছিল। আদলত নির্দেশ দিয়েছিল, গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোন রাজনৈতিক দল কত অনুদান মিলেছে, সেই তথ্য বন্ধ খামে জানাতে হবে।এর আগেও নির্বাচনী বন্ডের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে একাধিক মামলা হয়েছে শীর্ষ আদালতে। মামলাকারীরা অভিযোগ করেছিলেন, রাজনৈতিক দলগুলি এই নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ বিদেশ থেকে পেতে পারে এর ফলে গণতন্ত্র ধ্বংস হবে। যদিও কোনও রাজনৈতিক দলই এই দাবি মানতে চায়নি। ৩ অক্টোবর মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সব তথ্য দিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। এই রায়ের পরেই তৎপর হল কমিশন। .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top