

Kota কোচিংয়ে ছাত্রদের আবার আত্মহত্যার খবরে চিন্তিত সারা দেশের ছাত্রসমাজ । ছবি – উত্তরাপথ
প্রীতি গুপ্তা, রাজস্থান – রাজস্থানের কোটায় (Kota) কোচিংয়ে ছাত্রদের আত্মহত্যার (Suicide)ঘটনা থামার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।এই বছর এটি কোটায় আত্মহত্যার এটি ২৫ তম ঘটনা বলে জানা যাচ্ছে। কোটার স্থানীয় পুলিশ রেকর্ড আনুসারে ২০১৫ সালের পর এই সংখ্যা সর্বোচ্চ। নিহত ছাত্রের নাম ফরিদ হোসেন পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার বাসিন্দা। সে কোটার (Kota) ওয়াকফ নগর এলাকায় একটি ভাড়া ঘরে থাকত এবং NEET এর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। সন্ধ্যায় নিজের ঘরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। ফরিদের আত্মহত্যার খবর শোনার পর তাকে ফাঁস থেকে নামিয়ে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে মরদেহ এমবিএস হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
দাদাবাড়ি থানার সিআই রাজেশ পাঠক জানিয়েছেন যে ফরিদ ভাড়া বাড়িতে থাকার সময় প্রাইভেট কোচিং নিয়ে NEET-এর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। অন্যান্য ছাত্ররাও সেই বাড়িতে থাকে,ঘটনার দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত ছাত্ররা তাকে দেখেছে। এরপর রাত ৭টা পর্যন্ত রুম থেকে বের না হলে তার বন্ধুরা ডাক দেয়, কিন্তু ফরিদ গেট না খোলায় পরে বাড়িওয়ালাকে খবর দেওয়া হয়। বাড়িওয়ালার খবরে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ। বলা হচ্ছে, বিকেল ৫টা থেকে ৭টার মধ্যে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করে ফরিদ। আপাতত আত্মহত্যার কারণ জানা না গেলেও পরিবারের সদস্যদের ঘটনার কথা জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য যে ১৩ সেপ্টেম্বর, কোটায় (Kota) ঝাড়খণ্ডের ১৬ বছর বয়সী আরও এক ছাত্র আত্মহত্যা করে মারা যায়। এর আগে ২৭ আগস্ট, বিহার এবং মহারাষ্ট্রের আরও দুইজন NEET ছাত্রও একটি কোচিং ইনস্টিটিউটে সাপ্তাহিক পরীক্ষা দেওয়ার ছয় ঘন্টার মধ্যে আত্মহত্যা করে মারা যায়।
১৫ আগস্ট, বিহারের একজন ১৮ বছর বয়সী ছাত্র, যিনি ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ভর্তির জন্য JEE-এর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, কোটার মহাবীর নগর এলাকায় তার পেয়িং গেস্ট (পিজি) বাড়িতে আত্মহত্যা করে।
১১ অগাস্ট, বিহারের এক ১৭ বছর বয়সী JEE পরীক্ষার্থী মহাবীর নগরের একটি হোস্টেলে আত্মহত্যা করে মারা যায়। ৪ অগাস্ট, মহাবীর নগরে আত্মহত্যা করে মারা যান বিহারের আরও ১৭ বছর বয়সী প্রকৌশলী প্রার্থী ।একদিন আগে, ৩ অগাস্ট, উত্তরপ্রদেশের একজন NEET পরীক্ষার্থী কোটায় আত্মহত্যা করে মারা যান।
পুলিশের তথ্য অনুসারে, কোটায় (Kota) ২০২২ সালে ১৫ জন, ২০১৯ সালে ১৮ জন, ২০১৮ সালে ২০ জন, ২০১৭ সালে ৭ জন, ২০১৬ সালে ১৭ জন এবং ২০১৫ সালে ১৮ জন ছাত্র মারা গিয়েছিল।করোনা কালে অর্থাৎ ২০২০ এবং ২০২১ সালে কোন আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেনি।
কোটায় (Kota ) ছাত্রদের ঘন ঘন আত্মহত্যার কারণ কি পারিবারিক চাপ না অত্যাধিক উচ্চাশার কারণে হতাশা ? এই ধরনের আত্মহত্যার ঘটনার দ্রুত বৃদ্ধি রোধের পরিপ্রেক্ষিতে, কোটার জেলা প্রশাসন ২৭ আগস্ট একটি আদেশ জারি করেছিল, তাতে কোচিং সেন্টারগুলিকে আগামী দুই মাসের জন্য সমস্ত পরীক্ষা স্থগিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল এছাড়াও রাজ্যের পুলিশ বিভাগ ২২ জুন একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি), তিনজন ইন্সপেক্টর বা সাব-ইন্সপেক্টর বা সহকারী সাব-ইন্সপেক্টর এবং একজন মহিলা পুলিশ অফিসারের সমন্বয়ে একটি স্টুডেন্ট সেল গঠন করেছিল, যাতে ছাত্রছাত্রীদের উপর নিয়মিত নজর রাখা যায়।
আরও পড়ুন
NASA Carbon Emission: পৃথিবী কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করার চেয়ে বেশি নির্গত করছে
উত্তরাপথঃ কার্বন নির্গমন (NASA Carbon Emission) সম্পর্কে নাসার সর্বশেষ আবিষ্কার পৃথিবীর জন্য এক সতর্কতা সংকেত। মহাকাশ সংস্থার মতে, পৃথিবী কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করার চেয়ে বেশি নির্গত করছে, যার ফলে গ্রিনহাউস গ্যাসের বায়ুমণ্ডলীয় ঘনত্ব উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। NASA এর এই আবিষ্কারটি জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য কারণ হিসাবে দেখা যেতে পারে, সেইসাথে কার্বন নিঃসরণ কমানোর জন্য জরুরি পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার উপর আলোকপাত করেছে।নাসার সর্বশেষ গবেষণায় যে তথ্য উঠে এসেছে তাতে পৃথিবীর মহাসাগর এবং ভূমি-ভিত্তিক বাস্তুতন্ত্র আগের চেয়ে কম কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করছে। গবেষণায় দেখা গেছে যে গত এক দশকে ভূমি এবং মহাসাগর দ্বারা শোষিত কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ ৫% হ্রাস পেয়েছে, যার ফলে গ্যাসের বায়ুমণ্ডলীয় ঘনত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। .....বিস্তারিত পড়ুন
World Children's Day: সত্যিই কি ‘বিশ্ব শিশু দিবস´পালনের কোনও যৌক্তিকতা আছে ?
প্রীতি গুপ্তাঃ হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটি দিন তারপর ১৪ নভেম্বর আমাদের দেশ সহ সারা বিশ্বজুড়ে পালন করা হবে ‘বিশ্ব শিশু দিবস´(World Children's Day)।এই দিনটি শিশুদের মঙ্গলের জন্য, তাদের ভবিষ্যতের জন্য একটি অনুকূল বিশ্ব তৈরি করার প্রচেষ্টার একটি দিন।কিন্তু প্রশ্ন,সত্যি কি হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে সারা বিশ্ব জুড়ে শিশু দিবস পালন করার কোনও যৌক্তিকতা আছে? আদৌ কি এর কোনও লাভ আমরা আমাদের প্রান্তিক স্তরের শিশুদের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছি ? সম্প্রতি কাজের প্রয়োজনে রাজস্থানের উদয়পুর শহরে আসা। আমরা সবাই জানি উদয়পুর বিখ্যাত তার হ্রদের কারণে । এখানকার স্থানীয় থেকে পর্যটক সকলেই এই সুন্দর হ্রদগুলির আকর্ষণে বারবার ছুঁটে যায়। ‘ফতে সাহেব লেক’ রাজস্থানের উদয়পুরের এক বিখ্যাত পর্যটক স্থল।এখানে বহু মানুষ সকাল- বিকেল এই লেকের চার ধারে হাঁটাহাঁটি করতে বেরিয়ে পড়ে। সেভাবেই দুই দিন আগে বিকেলে হঠাৎ করে বেরিয়ে পড়লাম ‘ফতে সাহেব লেকের ধারে হাঁটার উদ্দেশ্য নিয়ে। হাঁটার মাঝখানে হঠাৎ করে একটি বাচ্চাছেলে আওয়াজ করে ডাকছে ,বললাম কিছু বলবি? সে বলল একটু দাঁড়াতে। ও ছুটে গিয়ে হাতে করে কয়েকটি বেলুন নিয়ে এসে হাজির । সে বারবার বেলুন কেনার অনুরোধ জানাতে লাগল। হাতে অন্য কাজের চাপ নেই অনেকটা অবসর সময় তাই আমি অনেকটা সাংবাদিক সুলভ মন নিয়ে বললাম ঠিক আছে আমি তোর বেলুন নেব ,কিন্তু তার আগে আমি তোকে যা বলব তার তার ঠিক ঠিক উত্তর দিতে হবে। সে খুশী খুশী রাজি হয়ে গেল । .....বিস্তারিত পড়ুন
Fried rice syndrome: আগের দিনের রান্না করা ভাত খেলে হতে পারে এই বিশেষ অসুখটি
উত্তরাপথঃ আপনার কি বাসী ভাত বা পান্তা খাওয়ার অভ্যেস আছে? সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়া তোলপাড় ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম (Fried rice syndrome) নিয়ে আমরা প্রায়ই অবশিষ্ট খাবার গরম করে আবার খাই। কিন্তু জানেন কি এই অভ্যাস আপনাকে অসুস্থ করে তুলতে পারে। অনেক সময় পর আগের রান্না করা ভাত খাওয়ার ফলে পেট সংক্রান্ত সমস্যা হয়। কেউ কেউ মনে করেন যে খাবার পুনরায় গরম করলে এতে উপস্থিত ব্যাকটেরিয়া মারা যায়, কিন্তু তা নয়। যে খাবারেই স্টার্চ থাকে না কেন, এতে উপস্থিত টক্সিন তাপ প্রতিরোধী। অর্থাৎ খাবার গরম করার পরও ব্যাকটেরিয়া নষ্ট হয় না। ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম নামে এই সমস্যা সম্পর্কিত একটি অবস্থা রয়েছে। আজ আমরা এই ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম অবস্থার লক্ষণ, কারণ এবং প্রতিকার নিয়ে আলোচনা করব। ভাত রান্না করার পর, যখন অবশিষ্ট ভাত কয়েক ঘন্টা বা সারারাত ঘরের তাপমাত্রায় রেখে দেওয়া হয় এবং তাতে ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে শুরু করে, তখন এই অবস্থার নাম দেওয়া হয়েছে ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম। .....বিস্তারিত পড়ুন
ফ্লিম রিভিউ -ওপেনহাইমার
উত্তরাপথ: বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্রিস্টোফার নোলান দ্বারা পরিচালিত”ওপেনহাইমার” একটি মাস্টারপিস মুভি। ছবিতে জে. রবার্ট ওপেনহেইমার, এক নামকরা পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পারমাণবিক বোমার বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।এই সিনেমায় ওপেনহাইমার এর জটিল জীবনকে বর্ণনা করা হয়েছে। সেই হিসেবে 'ওপেনহাইমার'কে বায়োপিক বলা যেতে পারে। কারণ এটি একজন মানুষের গল্প। এই ছবির গল্প তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত।ছবির শুরুতে পারমাণবিক বোমা তৈরির আবেগের কথা বলা হয়েছে। যেখানে নায়ক কিছু না ভেবে নিবেদিতপ্রাণভাবে এমন একটি অস্ত্র তৈরিতে নিয়োজিত থাকে যা বিশ্বকে ধ্বংস করতে পারে। অস্ত্র তৈরি হওয়ার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে নায়ক তার কাজের ফলাফল দেখে অপরাধবোধে পূর্ণ হয়। এবং তৃতীয় পর্যায়টি হল রাজনীতি যা ওপেনহাইমারকে মোকাবেলা করতে হয়েছে। পুরো সিনেমাটি রঙিন হলেও রাজনৈতিক অংশ সাদা-কালো রাখা হয়েছে। এই তিনটি সময়কালে যা কিছু ঘটছে, তা সবই একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত। .....বিস্তারিত পড়ুন