পশ্চিমবঙ্গে  I.N.D.I.A জোটের সম্ভাবনা অন্বেষণ ও আসন ভাগাভাগি বিশ্লেষণ

উত্তরাপথঃপশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক দৃশ্যপট সাম্প্রতিক বছরগুলিতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সাক্ষী হয়েছে।রাজ্যের সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলি তাদের ক্ষমতার জন্য লড়াই করছে। এই প্রেক্ষাপটে, কেন্দ্রের ক্ষমতাশীল NDA তথা BJP র বিরুদ্ধে বিভিন্ন রাজ্যের ছোট- বড় একাধিক রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে ‘ইন্ডিয়া’(I.N.D.I.A) জোট গঠন করা হয়। সম্প্রতি TMC প্রধান তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুক্রবার বলেছেন যে লোকসভা নির্বাচনে শুধুমাত্র TMC বাংলায় বিজেপিকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে সক্ষম হবে।তিনি বলেন গোটা দেশে লড়াইটা হবে ইন্ডিয়ার (I.N.D.I.A) জোটের ব্যানারে। তবে বাংলায় বিজেপির বিরুদ্ধে লড়বে তৃণমূলই। দেগঙ্গার সভা থেকে জোট নিয়ে নিজের অবস্থান অনেকটাই স্পষ্ট করে দিয়েছেন মমতা।

ইন্ডিয়া (I.N.D.I.A) জোটে তৃণমূলের শরিক কংগ্রেস এবং সিপিএম। বামেদের সঙ্গে রাজ্যে তৃণমূলের কোনওরকম সমঝোতা যে হবে না, সেটা আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। দেগঙ্গার সভা থেকে কংগ্রেসকেও যেন বার্তা দিয়ে গেলেন মমতা। স্পষ্ট করে বলে দিলেন, বাংলায় বিজেপির বিরুদ্ধে লড়বে তৃণমূলই।অন্যদিকে  সিপিআই(এম)-এর রাজ্য সম্পাদক ও প্রাক্তন সাংসদ মহম্মদ সেলিম ইন্ডিয়া জোট সম্পর্কে বলেন, “ বাংলার রাজনীতির জটিলতা দেশের বাকিদের জানা উচিত। প্রতিটি রাজ্যের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য রয়েছে। বাংলারও রয়েছে নিজস্বতা। তাই এখানে আমরা মনে করি না যে তৃণমূলের পাশে থাকা কেউ বিজেপির বিরুদ্ধে লড়তে পারবে । কারণ বিজেপি ও আরএসএস ইতিমধ্যেই তৃণমূলের লিগে আছে। আপনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ১৯ ডিসেম্বর ইন্ডিয়া((I.N.D.I.A) জোটের সভায় যোগ দিতে এবং পরের দিন প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করতে দেখেছেন।‘’

আসন ভাগাভাগি যেকোনো জোটের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক, কারণ এটি অংশগ্রহণকারী দলগুলোর মধ্যে নির্বাচনী এলাকার বণ্টন নির্ধারণ করে। পশ্চিমবঙ্গে এই পরিস্থিতিতে ভবিষ্যতে ‘ইন্ডিয়া ‘ জোটের ব্যানারে পশ্চিমবঙ্গে লোকসভা নির্বাচনের জন্য আসন ভাগাভাগি আলোচনা মসৃণভাবে হওয়ার সম্ভাবনা কম।

পশ্চিমবঙ্গে আসন ভাগাভাগিকে প্রভাবিত করার কারণগুলি:

১। একটি শক্তিশালী নির্বাচনী ভিত্তি সহ জোটের শরিক তিনটি দলই মোট আসনের বড় অংশ দাবি করতে পারে।

২। জোটের মধ্যে থাকা দলগুলিকে একটি সমন্বিত অভিন্ন আদর্শিক ভিত্তি নিয়ে নির্বাচনে লড়াই করতে হবে। নীতিগত সমস্যা এবং এজেন্ডাগুলির সমন্বয় এই ক্ষেত্রে একটি বড় ফ্যাক্টর হতে পারে।

৩। গত লোকসভা নির্বাচনে নির্বাচনী পারফরম্যান্স এবং ভোটারদের সংগঠিত করার ক্ষমতা আসন বণ্টন নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর, যা জোটে শামিল সমস্ত দল মেনে নাও নিতে পারে।  

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


Fructose: নতুন গবেষণায় ফ্রুক্টোজকে স্থূলতার কারণ বলা হয়েছে

উত্তরাপথঃ একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় জোরালো প্রমাণ দেওয়া হয়েছে যে ফ্রুক্টোজ (Fructose), সাধারণত প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং পানীয়গুলিতে থাকা এক ধরনের চিনি, যা স্থূলতার প্রাথমিক চালক। বছরের পর বছর ধরে, পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা , পাশ্চাত্য খাদ্যে, স্থূলতার মূল কারণ নিয়ে বিতর্ক করেছেন, কেউ কেউ অত্যধিক ক্যালোরি গ্রহণের দিকে ইঙ্গিত করেছেন, অন্যরা কার্বোহাইড্রেট বা চর্বি জাতীয় খাবারকে দায়ী করেছেন। Obesity জার্নালে সাম্প্রতিক একটি গবেষণাপত্রে ফ্রুক্টোজকে স্থূলতার প্রকৃত চালক হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।The University of Colorado Anschutz Medical Campus এর Dr. Richard Johnson এবং তার দলের মতে, ফ্রুক্টোজ হল একটি সাধারণ চিনি যা ফল এবং মধুর প্রাথমিক পুষ্টি। .....বিস্তারিত পড়ুন

Karar Oi Lauh Kapat: কাজী নজরুলের এই গানকে ঘিরে  বিতর্কে এ আর রহমান

উত্তরাপথঃ বিতর্কে 'পিপ্পা' ছবির সঙ্গীত পরিচালক অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান।সম্প্রতি কবি কাজী নজরুল ইসলামের পরিবার একটি হিন্দি ছবিতে কবির জনপ্রিয় গান 'করার ঐ লৌহ কাপাত...' (Karar Oi Lauh Kapat )।কিন্তু এ আর রহমানের সঙ্গীত পরিচালনায় ওই গানটি যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে তাতে আপত্তি জানিয়েছে নজরুল পরিবার।বিতর্কের পর যে চুক্তির আওতায় ওই গানটি ছবিতে ব্যবহার করা হয়েছে তা প্রকাশ্যে আনার দাবি তুলেছে কবির পরিবার।'পিপ্পা' শিরোনামের হিন্দি চলচ্চিত্রটি যেখানে (Karar Oi Lauh Kapat )গানটি ব্যবহার করা হয়েছে তা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেওয়া একজন ভারতীয় সেনা সৈনিককে কেন্দ্র করে একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত। ছবির সঙ্গীত পরিচালক অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান। গানের কথা ঠিক রেখেও সুর পাল্টানোর অভিযোগে ভারত ও বাংলাদেশে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।কবির পরিবারের অভিযোগ, গানটি ব্যবহারের অনুমতি দিলেও সুর পরিবর্তনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।পরিবারের সদস্যরাও ছবিটি থেকে গানটি বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। .....বিস্তারিত পড়ুন

Electoral Bond এর গোপনীয়তা সরিয়ে রাজনৈতিক দলগুলিকে, জানাতে হবে প্রাপ্ত অনুদানের পরিমাণ

উত্তরাপথঃ বুধবার, নির্বাচনী বন্ড (Electoral Bond)প্রকল্পের আইনি বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদনের শুনানি হয়। শীর্ষ আদালত তার মন্তব্যে বলেছে, 'নির্বাচনী বন্ডগুলি রাজনৈতিক দলগুলিকে বেনামী অর্থ প্রদান করে, কারণ তাদের কেনাকাটা সম্পর্কিত রেকর্ডগুলি স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার কাছে উপলব্ধ যা শুধুমাত্র তদন্তকারী সংস্থাগুলি অ্যাক্সেস করতে পারে৷ এর আগে নির্বাচনী বন্ড’ (Electoral Bond) সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) কেন্দ্র দাবি করেছিল, রাজনৈতিক দলগুলির আয়ের উৎস জানার অধিকার নেই জনতার।এবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তৎপর হল নির্বাচন কমিশন (Election Commission of India)।বুধবার বিকেল ৫টার মধ্যে যাবতীয় হিসেব জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কমিশনের তরফে।নির্বাচনী বন্ডের (Electoral Bond)মামলায় কেন্দ্রের আর্জি সত্বেও সুপ্রিম কোর্ট রাজনৈতিক দলগুলিকে আয়ের উৎস জানাতে বলেছিল। আদলত নির্দেশ দিয়েছিল, গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোন রাজনৈতিক দল কত অনুদান মিলেছে, সেই তথ্য বন্ধ খামে জানাতে হবে।এর আগেও নির্বাচনী বন্ডের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে একাধিক মামলা হয়েছে শীর্ষ আদালতে। মামলাকারীরা অভিযোগ করেছিলেন, রাজনৈতিক দলগুলি এই নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ বিদেশ থেকে পেতে পারে এর ফলে গণতন্ত্র ধ্বংস হবে। যদিও কোনও রাজনৈতিক দলই এই দাবি মানতে চায়নি। ৩ অক্টোবর মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সব তথ্য দিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। এই রায়ের পরেই তৎপর হল কমিশন। .....বিস্তারিত পড়ুন

সম্পাদকীয়-  রাজনৈতিক সহিংসতা ও আমাদের গণতন্ত্র

সেই দিনগুলো চলে গেছে যখন নেতারা তাদের প্রতিপক্ষকেও সম্মান করতেন। শাসক দলের নেতারা তাদের বিরোধী দলের নেতাদের কথা ধৈর্য সহকারে শুনতেন এবং তাদের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতেন।  আজ রাজনীতিতে অসহিষ্ণুতা বাড়ছে।  কেউ কারো কথা শুনতে প্রস্তুত নয়।  আগ্রাসন যেন রাজনীতির অঙ্গ হয়ে গেছে।  রাজনৈতিক কর্মীরা ছোটখাটো বিষয় নিয়ে খুন বা মানুষ মারার মত অবস্থার দিকে ঝুঁকছে। আমাদের দেশে যেন রাজনৈতিক সহিংসতা কিছুতেই শেষ হচ্ছে না।আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার চেয়ে রাজনৈতিক সংঘর্ষে বেশি মানুষ নিহত হচ্ছেন।  ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি) অনুসারে, ২০১৪ সালে, রাজনৈতিক সহিংসতায় ২৪০০ জন প্রাণ হারিয়েছিল এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ২০০০ জন মারা গিয়েছিল।  আমরা পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্র হিসেবে আমাদের দেশের গণতন্ত্রের জন্য গর্বিত হতে পারি, কিন্তু এটা সত্য যে আমাদের সিস্টেমে অনেক মৌলিক সমস্যা রয়েছে যা আমাদের গণতন্ত্রের শিকড়কে গ্রাস করছে, যার জন্য সময়মতো সমাধান খুঁজে বের করা প্রয়োজন। .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top