

ডঃ জীবনকুমার সরকারঃ মালদা স্টেশন থেকে রাত দেড়টার ব্রহ্মপুত্র মেইল ধরেছে বিনয় আর তাপস। যাচ্ছে গুয়াহাটি। তারপর ওখান থেকে রাতের বাস ধরে পরের দিন সকালে গিয়ে নামবে শিলচর। ওখানে গিয়ে দু’জনে আসাম কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবে। ওটা শিলচর শহর থেকে দূরে। আর শিলচর শহর তো এগারো শহিদের তীর্থভূমি। আসামের বরাক উপত্যকার রাজধানী বলা যায় শিলচরকে। মাতৃভাষার অধিকার আদায় করতে গিয়ে এই শহরে পুলিশের গুলিতে প্রাণ যায় এগারো জন বাঙালির। এই রক্তাক্ত ইতিহাসের কথা অনেক বাঙালিই জানে না। কিন্তু এসব নিয়ে আমাদের দেশের বাঙালিরা চিন্তিত নন। বিনয় এসব খবর আগেই রাখতো।
তেইশ বছর আগের সব ঘটনা মনে রেখেছে বিনয়। একটি অপূরণীয় স্বপ্ন বিনয়ের স্মৃতি থেকে কিছুই মুছে দিতে পারেনি। সেই স্বপ্ন আজও বিনয়কে তাড়া করে। মাঝে মাঝে রাতের ঘুম কেড়ে নেয়। কাজে অস্বস্তি দেয়।
ট্রেনে বসে কত কী ভাবছে বিনয়! তার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিটা তার খুব দরকার। উচ্চ শিক্ষা তার বংশগত। সে মনে মনে আরও ভাবছে মনের মতো একটি বান্ধবী জুটিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়ে তাকে নিয়ে বাড়ি ফেরা। এই স্বপ্ন তাকে বিভোর করে রাখে।
রাতের ঘুম শেষ হলে উঠে বসে বিনয়। ট্রেনের জানালার ধারে বসে পড়ে। দেখতে পায়, ট্রেনটি ধীরে ধীরে পাহাড়ের কোল ঘেষে গুয়াহাটি স্টেশনে ঢুকছে। পাহাড়ের অপূর্ব দৃশ্য! এর আগে কখনও এভাবে পাহাড় দেখেনি বিনয়। ফলে অভিভূত হয়ে যায় সে। এ কোন মায়ার জগৎ! পাহাড়ের কোলে দাঁড়িয়ে থাকা গাছপালা যেন বিনয়ের স্বপ্নকে আরও নাগালের মধ্যে এনে দিতে চায়।
ট্রেন গুয়াহাটি পৌঁছানোর পর তারা দু’জনে চলে যায় বাসস্ট্যান্ডে। ক্যাপিটাল ট্রাভেলসের কাউন্টারে গিয়ে অগ্রিম টিকিট কেটে বিশ্রাম নিতে থাকে আর স্বপ্নের বান্ধবীর কথা ভাবে বিনয়। দুপুরে স্নান খাওয়া-দাওয়া সেরে বিনয় আর তাপস সোজা চলে যায় কামাখ্যা মন্দির। মন্দির-মসজিদ নিয়ে কোনো মাথা ব্যথা নেই বিনয়ের। সে তো কঠোর নাস্তিক। স্কুল জীবন থেকেই সে এমনই। বাবার হাতে এই চিন্তার হাতেখড়ি। একমাত্র পাহাড়ের লোভে সে যায়।
এই তার প্রথম যাওয়া। পাহাড়ের সঙ্গে এত কাছ থেকে মাখামাখি এর আগে হয়নি। তাই বিনয় এই পাহাড়ের রূপ চেটেপুটে খায়। বিশ্ববিদ্যায়ের কোনো বান্ধবীকে খোঁজার নেশা আরও বাড়িয়ে দেয় এই পাহাড়। পাহাড় নিয়ে সে কত কথা শুনেছে। সেই পাহাড় এত কাছে, সে ভাবতেই পারছে না। সারাদিন কাটিয়ে দেয় পাহাড়ে।
পাহাড় থেকে নেমে এসে সোজা ক্যাপিটাল ট্রাভেলসের কাউন্টারে। সবকিছু গুছিয়ে নিয়ে বাসে উঠে বসে তারা। বাস শিলচরের দিকে রওনা দেয় বিকেল পাঁচটায়। পৌঁছায় পরের দিন সকাল ঠিক কটায়, তা আর স্পষ্ট মনে নেই বিনয়দের। সারারাত পাহাড় ঠেলে ঠেলে বাস পৌঁছায় শিলচর। বিনয় এক বোঝা স্বপ্ন আর তাপসকে সঙ্গে নিয়ে ওঠে একটি হোটেলে। তেইশ বছর আগের দেখা হোটেলটির নাম বিনয়ের আজ আর মনে নেই। তবে সেই হোটেল আর শিলচর শহর প্রথম বিনয়কে সিলেটি ভাষা চেনায় আসামে এত বাঙালি, এটাও তার জানা ছিলো না। হোটেলে এক রাত থেকে পরের দিন যায় এক বোঝা স্বপ্ন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে এমএ ক্লাসে ভর্তির জন্য অ্যাডমিশন টেস্ট দিতে। অ্যাডমিশন টেস্টের নেশায় প্রথম দিন ভালো করে বিশ্ববিদ্যালয়টা দেখা হয়নি বিনয়ের। দু’দিন বাদে অ্যাডমিশন টেস্টের রেজাল্ট বেরোলে বিনয় দ্বিতীয় হয়। প্রথম হয় বিনিতা দাস। ক্লাস শুরু হলেই বিনয়রা সবাইকে চিনত শুরু করে এবং বিনিতাকেও। তখন জুলাই মাস। প্রথম সপ্তাহেই ভর্তি হয় তারা। বেশ গরম । বিনয়ের ধারণা ছিলো মালদার মতো এত গরম নিশ্চয়ই শিলচরে হবে না। কিন্তু দেখা যায়, গরমে দুই জায়গার মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। প্রথম প্রথম ভালো না লাগলেও ধীরে ধীরে পড়াশুনার নেশায় এসব নিয়ে আর ভাবতে চায় না বিনয়। তার স্বপ্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উজ্জ্বল ডিগ্রি আর একজন ভালো বান্ধবী। বিনিতাকে দেখলেই মনটা যেনো কেমন করে ওঠে বিনয়ের। যেনো মনে করে, সব পেয়ে গেছি। এই তো আমার স্বপ্ন। এই তো আমার আকাশ। এই তো আমার উজ্জ্বল রেজাল্টের প্রেরণা। বিনয় বিনিতাকে দেখিয়ে তাপসকে জিজ্ঞেস করে, ‘দেখতো, মালদার মাটিতে ওকে কেমন লাগবে?’
— এত তাড়াতাড়ি সিদ্ধান্ত নিবি?
— না নিয়ে উপায় কী বল দেখি?
— এত তাড়া কীসের তোর?
— তাড়াটা আমার নয়, সময়ের।
— আমার হাতে ওতো সময় নেই। যখন শিলচর ছাড়বো, সঙ্গে বান্ধবীকে নিয়ে বাড়ি ফিরবো। এই স্বপ্ন পূরণ করতে গেলে খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
— ও তো খুব গম্ভীর, তাই একটু বোঝা দরকার আগে।
— কিন্তু আমার তো মনে গুণী মেয়ে।
— তাহলে এগিয়ে যা।
— কীভাবে এগোবো?
— কথা বলা শুরু কর।
— ও তো কথাই তেমন বলতে চায় না।
— আমিও তো আর এর চেয়ে বেশি এগোতে পারছি না।
বিনিতা না এলে একদিনও ক্লাস করতে ভালো লাগে না বিনয়ের। বিশ্ববিদ্যালয় আর বিনিতা তার কাছে সমার্থক হয়ে ওঠে। তবু বিনয় বলতে পারছে না কেনো, ‘আমি তোকে ভালোবাসী’। ধীরে ধীরে দিনগুলো কেমন চলে যাচ্ছিলো। তবু যেনো বলার মতো সময় বিনয়ের হাতের মুঠোয় আসে না। প্রতিদিন সে ভাবে, আজ আইরংমারার নিবিড় সন্ধ্যায় বিনিতাকে বলে দেবে। সন্ধ্যা আসে। নিবিড়তাও আসে, কিন্তু মুখে বলাটা আর আসে না। এই না বলাটাই গ্রাস করে রাখলো বিনয়কে। আর বিনিতাও কোনোদিন জানতে পারলো না, তার জন্য কেউ এত প্রেম ঢেলে রেখে দিয়েছিলো আইরংমারার আকাশ-বাতাসে।
একটা স্বপ্ন যে কীভাবে মানুষকে বাঁচায়, আবার কীভাবে মারে তা সময় জানে। বিনিতার স্বপ্নে বিভোর হয়ে যায় বিনয়। দিনের পর দিন সে অপেক্ষা করে বসে থাকে পাপলুর দোকানে। পাপলুর দোকানটা ঠিক আইরংমারা বাজারের সামনে মেইন রাস্তায়। ওখানে খাত, কলম, আর জেরক্স করতে সবাই আসে। সময় এমনই জল্লাদ, যে বিনিতাকে এটাও জানতে দেয়নি।
আজ বিনয় সব জানাতে চায়। বিনিতাকে অকপটে বলতে চায়,”আমি তোকে ভালো বাসতাম। আজও ভালোবাসী।” এভাবে বলার অনুমতি সময় তাকে আজ দিচ্ছে। অথচ একথা বললেও বিনিতাকে পাবার আর কোনো সম্ভাবনা নেই। তবু সে বলতে চায়। সে মনে করে সত্যটা অন্তত বিনিতা জানুক।
হঠাৎ একদিন তাপসকে ফোন করে বিনয়।
— কী রে কেমন আছিস?
— ভালো আছি।
— একটা কথা তোকে বলতে চাই।
— বল।
— যে কথা বিনিতাকে সময় মতো বলতে পারিনি, তা আজ বলতে চাই।
— কোন কথাটা রে?
— ওই যে ‘ আমি তোকে ভালোবাসতাম বা আজও ভালোবাসী।’
— তাতে লাভ কী?
— লাভ-লোকসান জানি না। সত্যিটা ওর জানাতে ইচ্ছে করছে।
— এটা কি সত্যিটা জানানো, নাকি ওর ভেতরে একটা জ্বালা ধরিয়ে দিতে চাইছিস?
— কেনো?
— কারণ, তুই যেমন ওকে না পাবার জ্বালায় জ্বলছিস; ও তেমন আজ এই সত্যিটা জেনে আরও জ্বলবে।
— তাই?
— একটু ভাবতো, ও যদি তোর মতো গোপনে তোকে ভালোবেসে থাকে, তাহলে কি জ্বলবে না?
— ঠিকই তো। কী যন্ত্রণা বল তো!
বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ শেষ করে শিলচর শহর, আইরংমারা,টিলা, ঝর্ণা, দরগাকোনার ক্যাম্পাস, , পোস্ট অফিস আর বিনিতাকে ফেলে সেদিন শিলচর থেকে রাতের বাসে উঠতে বিনয়ের যে কষ্ট হয়েছিলো, তা আর কে বোঝে? সেই কষ্ট আজও বুকের মধ্যে বাঁশি হয়ে বাজে। বিনয় কোনোদিন ভাবেনি পারেনি বিনিতাকে ছেড়ে একা একা মালদায় ফিরবে। জীবনটাকে নিজের মতো বাঁধার কোনো উপায় নেই মানুষের। সময় আর পরিস্থিতি সব বেঁধে দেয়। ভালোমন্দ সব ওই সুতোয় বাঁধা। মানুষ এই এক জায়গায় চরম পরাজিত।
আজ চাকরি, সংসার, লেখালেখি, নানারকম সাংস্কৃতিক কাজ এবং নিজের সম্পাদিত পত্রিকা নিয়ে বিনয় খুব ব্যস্ত থাকে সারাক্ষণ। তবু বিনিতাকে ভুলতে পারছে না। সেই তেইশ বছর আগের স্বপ্ন নিয়ে আজও বয়ে চলেছে এক অনিকেত জীবন। এই জীবনের শেষ কোথায়? এর বোধহয় শেষ বলে কিছু হয় না। কেবল শুরু থাকে।
একদিন ঘুমের মধ্যে একটা স্বপ্ন দেখে বিনয়। সে আসাম কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় যাচ্ছে। বাংলা নিয়ে ভর্তি হবে। আবার সেই ব্রহ্মপুত্র মেইল ধরেছে। সেই গুয়াহাটি, সেই কামাখ্যা পাহাড়, সেই ক্যাপিটাল ট্রাভেলস বাস। সেই পাহাড় আর ঝর্না। সব ডিঙিয়ে আবার শিলচর । আগের মতো সে কাঁপাচ্ছে বাংলা বিভাগ। গোটা বিশ্ববিদ্যালয়। হই হই করছে বিনয়ের ভারে সাংস্কৃতিক মহল। ছুটছে সবাই। সেও। এবারে বিনিতাকে পেয়েই বলে দিয়েছে, “আই লাভ ইউ”।
কী মধুর স্বপ্ন! বিনিতাকে নিয়ে বসে থাকে ক্যান্টিনে, কখনও টিলার ওপর, কখনও বাংলা বিভাগের খোলা বারান্দায়। আর মাঝে মাঝে হেঁটে চলে আইরংমারা থেকে ডাকবাংলোর দিকে। কখনও চার হাত এক করে বসে থাকে টিলার মাথায়। সুযোগ পেলেই বিনিতার ঘন কালো চুলে মাথা গুঁজে দেয় বিনয়।
একদিন মাথার চুল থেকে ঠোঁট দু’টো নিয়ে বিনিতার শান্ত দু’টো ঠোঁটের মধ্যে গুঁজে দেয় বিনয়। বিনিতা ঝাপটে ধরে বিনয়কে। দু’জন ধীরে ধীরে হারাতে থাকে নিজেদের মধ্যে। চারদিকে জ্যোস্নার আলো ছড়িয়ে দিয়েছে সোহাগ। চাঁদের আলোয় চোখ মেলে বিনিতা বলে, বিনয়,’ চলো আজ আমরা পৃথিবীর এই এক কোণে দু’জন দু’জনের মধ্যে হারিয়ে যাই।’
— বিনয় বলে, ‘কীভাবে?’
— প্রেমে পড়লে সব জানতে হয়। আমার সমস্ত পাপড়ি আজ খুলে দাও।
— না, তুমি বরং এই জ্যোৎস্না দিয়ে আমাকে মেখে খাও।
— বিনিতা বল, ঘরের লাইট বন্ধ করে আসি। জ্যোৎস্নার আলোয় তুমি ভালো পাপড়ি ভাঙতে পারবে।
— তোমার পাপড়ি ভাঙায় যে এত সুখ, তা আমি আগেই বুঝেছিলাম।
— কথা বলে সময় নষ্ট করো না। জ্যোৎস্না ফুরিয়ে আসছে।
বিনয় আদরে আদরে জ্যোৎস্নার আলোয় পাপড়ি খুলতে থাকে হাইলাকান্দি শহরের বিনিতাকে। হঠাৎ সূর্যের আলো ঘরে ঢুকে ঘুম ভাঙিয়ে দেয় বিনয়কে।
আরও পড়ুন
রাতের ঘামের সমস্যা এবং এ সম্পর্কে আপনি কি করতে পারেন
উত্তরাপথঃ রাতের ঘামের সমস্যা শরীরের কুলিং সিস্টেমের একটি স্বাভাবিক অংশ, তাপ মুক্তি এবং সর্বোত্তম শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে।তবে রাতের ঘাম একটি সাধারণ সমস্যা যা বিভিন্ন কারণে হতে পারে।এর অস্বস্তিকর অনুভূতির জন্য ঘুম ব্যাহত হতে পারে, যার ফলে ক্লান্তি এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে। আপনি যদি রাতে অতিরিক্ত ঘাম অনুভব করেন, তাহলে তার অন্তর্নিহিত কারণটি চিহ্নিত করা এবং এটি মোকাবেলার জন্য কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এখানে রাতের ঘামের কিছু সম্ভাব্য কারণ নিয়ে আলোচনা করা হল।মেনোপজ: যে কেউ, বয়স বা লিঙ্গ নির্বিশেষে, রাতের ঘাম অনুভব করতে পারে। .....বিস্তারিত পড়ুন
দীপাবলির সময় কেন পটকা ফোটানো নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা যায় না ?
উত্তরাপথঃ দীপাবলির পরের দিন, যখন কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (CPCB) শহরের বায়ু মানের সূচকের তালিকা প্রকাশ করে,তখন দেখা যায় রাজধানী দিল্লি বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দূষিত শহরের প্রথমেই রয়েছে। CPCB-এর মতে, ১২ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় দিল্লির বায়ু মানের সূচক ছিল ২১৮ যা ভোরের দিকে বেড়ে ৪০৭ এ পৌঁছায় । ৪০০ – ৫০০ AQI এর স্তর সুস্থ ব্যক্তিদের প্রভাবিত করে। দীপাবলির সারা রাত, লোকেরা পটকা ফাটিয়ে দীপাবলি উদযাপন করে। ১৩ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আবার তথ্য প্রকাশ করে এই তালিকায়, দিল্লির গড় বায়ু মানের সূচক ছিল ৩৫৮ যা 'খুব খারাপ' বিভাগে পড়ে। বায়ু দূষণের এই পরিস্থিতি শুধু দিল্লিতেই সীমাবদ্ধ ছিল না। নয়ডার বায়ু মানের সূচক ১৮৯ থেকে ৩৬৩ এ এবং রোহতক, হরিয়ানার ১৩৭ থেকে বেড়ে ৩৮৩ হয়েছে। দীপাবলির দুই দিন দিল্লি ,নয়ডা ,কলকাতা, মুম্বাই সহ দেশের অন্যান্য শহরেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। এই দিনগুলিতে মানুষ বিষাক্ত বাতাসে শ্বাস নিতে বাধ্য হয়েছে। ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জাতীয় রাজধানী দিল্লি এবং নয়ডায় সবুজ পটকা ছাড়া যে কোনও ধরণের আতশবাজি ফাটান সম্পূর্ণ রূপে নিষিদ্ধ। আদালত সবুজ পটকা পোড়ানোর সময়ও নির্ধারণ করে দিয়েছে রাত ৮টা থেকে ১০টা। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে সুপ্রিম কোর্টের এই আদেশের মানে কী? আদালতের এই আদেশ কি এখন প্রত্যাহার করা উচিত? পুলিশ কেন এই আদেশ কার্যকর করতে পারছে না? এর জন্য কি পুলিশ দায়ী নাকি সরকারের উদাসীনতা রয়েছে এর পেছনে? .....বিস্তারিত পড়ুন
সম্পাদকীয়- রাজনৈতিক সহিংসতা ও আমাদের গণতন্ত্র
সেই দিনগুলো চলে গেছে যখন নেতারা তাদের প্রতিপক্ষকেও সম্মান করতেন। শাসক দলের নেতারা তাদের বিরোধী দলের নেতাদের কথা ধৈর্য সহকারে শুনতেন এবং তাদের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতেন। আজ রাজনীতিতে অসহিষ্ণুতা বাড়ছে। কেউ কারো কথা শুনতে প্রস্তুত নয়। আগ্রাসন যেন রাজনীতির অঙ্গ হয়ে গেছে। রাজনৈতিক কর্মীরা ছোটখাটো বিষয় নিয়ে খুন বা মানুষ মারার মত অবস্থার দিকে ঝুঁকছে। আমাদের দেশে যেন রাজনৈতিক সহিংসতা কিছুতেই শেষ হচ্ছে না।আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার চেয়ে রাজনৈতিক সংঘর্ষে বেশি মানুষ নিহত হচ্ছেন। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি) অনুসারে, ২০১৪ সালে, রাজনৈতিক সহিংসতায় ২৪০০ জন প্রাণ হারিয়েছিল এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ২০০০ জন মারা গিয়েছিল। আমরা পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্র হিসেবে আমাদের দেশের গণতন্ত্রের জন্য গর্বিত হতে পারি, কিন্তু এটা সত্য যে আমাদের সিস্টেমে অনেক মৌলিক সমস্যা রয়েছে যা আমাদের গণতন্ত্রের শিকড়কে গ্রাস করছে, যার জন্য সময়মতো সমাধান খুঁজে বের করা প্রয়োজন। .....বিস্তারিত পড়ুন
ফ্লিম রিভিউ -ওপেনহাইমার
উত্তরাপথ: বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্রিস্টোফার নোলান দ্বারা পরিচালিত”ওপেনহাইমার” একটি মাস্টারপিস মুভি। ছবিতে জে. রবার্ট ওপেনহেইমার, এক নামকরা পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পারমাণবিক বোমার বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।এই সিনেমায় ওপেনহাইমার এর জটিল জীবনকে বর্ণনা করা হয়েছে। সেই হিসেবে 'ওপেনহাইমার'কে বায়োপিক বলা যেতে পারে। কারণ এটি একজন মানুষের গল্প। এই ছবির গল্প তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত।ছবির শুরুতে পারমাণবিক বোমা তৈরির আবেগের কথা বলা হয়েছে। যেখানে নায়ক কিছু না ভেবে নিবেদিতপ্রাণভাবে এমন একটি অস্ত্র তৈরিতে নিয়োজিত থাকে যা বিশ্বকে ধ্বংস করতে পারে। অস্ত্র তৈরি হওয়ার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে নায়ক তার কাজের ফলাফল দেখে অপরাধবোধে পূর্ণ হয়। এবং তৃতীয় পর্যায়টি হল রাজনীতি যা ওপেনহাইমারকে মোকাবেলা করতে হয়েছে। পুরো সিনেমাটি রঙিন হলেও রাজনৈতিক অংশ সাদা-কালো রাখা হয়েছে। এই তিনটি সময়কালে যা কিছু ঘটছে, তা সবই একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত। .....বিস্তারিত পড়ুন