

উত্তরাপথঃ ক্যান্সারের প্রাথমিক সনাক্তকরণ সফল চিকিৎসা এবং বেঁচে থাকার সম্ভাবনা বাড়াতে পারে। সফল চিকিৎসার ফলাফলের জন্য ক্যান্সারের প্রাথমিক সনাক্তকরণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দুর্ভাগ্যবশত, অনেক ক্যান্সার প্রায়শই সনাক্ত করা যায় না যতক্ষণ না তারা চরম পর্যায়ে পৌঁছায়, সেই ক্ষেত্রে কার্যকরভাবে চিকিৎসা করা আরও চ্যালেঞ্জিং হয়ে ওঠে। মার্কিন গবেষকরা একটি DNA পরীক্ষা নিয়ে এসেছেন যা ১৮ ধরনের প্রাথমিক পর্যায়ের ক্যান্সার সনাক্ত করতে পারে। রক্ত, প্রস্রাব এবং অন্যান্য শরীরের তরলগুলির মাধ্যমে প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার সনাক্ত করা কঠিন তাই বায়োপসি এবং ইমেজিং ক্যান্সার নির্ধারণের একমাত্র উপায় হিসেবে পরিচিত ছিল। এবার প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার সনাক্তকরণের জন্য এই মাল্টি-স্ক্রিনিং পরীক্ষাটি একটি গেমচেঞ্জার হিসাবে প্রমাণিত হতে পারে, যা ক্যান্সারের চিকিৎসা সহজ করতে এবং ক্যান্সার রোগীদের মধ্যে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা বাড়াতে পারে।
এই উন্নত DNA পরীক্ষাটির বিশেষত্ব হল একযোগে বিস্তৃত ক্যান্সার সনাক্ত করার ক্ষমতা। ফুসফুস, স্তন, ডিম্বাশয়, কোলোরেক্টাল এবং অগ্ন্যাশয় ক্যান্সার সহ ১৮টি বিভিন্ন ধরণের প্রাথমিক পর্যায়ের ক্যান্সার সনাক্ত করতে পরীক্ষাটি কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে।গবেষক দলটি ৪৪০ জনের রক্তের প্লাজমা নমুনা নিয়েছিল যাদের মধ্যে ৪৪ জনের ১৮টি বিভিন্ন ধরণের ক্যান্সার ধরা পড়েছে । গবেষকদের প্যানেলটি পুরুষদের মধ্যে ৯৩% ক্যান্সার এবং মহিলাদের মধ্যে ৮৪% ক্যান্সার সনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছিল।
এই অগ্রগতির প্রভাব সুদূরপ্রসারী। প্রথমত, পরীক্ষাটি প্রথাগত স্ক্রীনিং পদ্ধতির একটি অ-আক্রমণাত্মক বিকল্প হিসাবে কাজ করে, যা অনেক ক্ষেত্রে আক্রমণাত্মক পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তা দূর করে। উপরন্তু, একই সাথে একাধিক ক্যান্সার সনাক্ত করার ক্ষমতা একজন ব্যক্তির ক্যান্সারের ঝুঁকি ব্যাপক ভাবে কম করতে সাহায্য করে। যার ফলে যে কোনও ব্যক্তি আগে থাকতে ব্যক্তিগত চিকিৎসা পরিকল্পনা করতে পারে।
যদিও এই উন্নত ডিএনএ পরীক্ষার বিকাশ নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, তবুও এখনও এই পদ্ধতির সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। পরীক্ষার নির্ভুলতা এবং নির্ভরযোগ্যতা পরিমার্জিত করার জন্য আরও গবেষণা এবং সঠিক অধ্যয়ন প্রয়োজন।সেইসাথে, ব্যাপক প্রাপ্যতা এবং ক্রয়ক্ষমতা নিশ্চিত করার জন্য এর প্রযুক্তির খরচ এবং সহজ প্রাপ্যতার দিকে নজর দিতে হবে।
১৮ টি প্রাথমিক পর্যায়ের ক্যান্সার সনাক্ত করতে সক্ষম একটি উন্নত DNA পরীক্ষার বিকাশ ক্যান্সার নির্ণয়ের ক্ষেত্রে একটি বড় অগ্রগতি চিহ্নিত করে। এই উদ্ভাবনী পদ্ধতি ক্যান্সার শনাক্ত এবং চিকিৎসা করার উপায়কে রূপান্তরিত করার ক্ষমতা রাখে সেই সাথে দীর্ঘ বেঁচে থাকার হার নিশ্চিত করতে পারে।যেহেতু বিজ্ঞানীরা এই প্রযুক্তিকে পরিমার্জিত এবং যাচাই করে চলেছেন,তাই আমরা আশা করতে পারি ভবিষ্যতে প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার সনাক্তকরণ আগের চেয়ে আরও সহজ, নির্ভুল এবং কার্যকর হবে।
আরও পড়ুন
Free Gift in Politics: ভারতের নির্বাচন ও ফ্রি গিফট সংস্কৃতি
উত্তরাপথঃ ফ্রি গিফট (Free gift in politics)এর রাজনীতি সম্প্রতি ভারতের নির্বাচনী রাজনীতিতে একটি বিশিষ্ট ভূমিকা পালন করছে। বিনামূল্যে কোটি কোটি জনগণকে উপহার প্রদান যা রাজকোষের উপর অতিরিক্ত বোঝা ফেলবে এই সত্যটি জানা সত্ত্বেও, রাজনৈতিক দলগুলি ভোটারদের আকৃষ্ট করার জন্য ফ্রি গিফট (Free gift in politics) দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচনের দৌড়ে একে অপরের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।এক সময় প্রয়াত তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জে জয়ললিতা বিনামূল্যে শাড়ি, প্রেসার কুকার, ওয়াশিং মেশিন, টেলিভিশন সেট ইত্যাদির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটের আগে যে বিনামূল্যের সংস্কৃতি শুরু করেছিলেন তা পরবর্তী কালে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলি দ্রুত অনুসরণ করেছিল। এরপর ২০১৫ সালে আম আদমি পার্টি নেতৃত্ব দিল্লির ভোটারদের কাছে বিনামূল্যে বিদ্যুৎ, জল, বাস ভ্রমণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে জয়লাভ করেছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন
সহযাত্রী
দীপা - আর তো এগারো বছর আটমাস বারোদিন চাকরি , তাই না ? অংশু - বাপরে বরাবরই তোমার স্মৃতিশক্তি প্রবল , এতোটা মনে আছে ? দীপা- ঘোরো টো টো করে আর কটা বছর , আফটার রিটায়ার্ড মেন্ট কি করবে ? অংশু - ফার্ম হাউস ,গাছপালা পশুপাখি নিয়ে থাকবো। দীপা- বাঃ উন্নতি হয়েছে। যে অংশুবাবু কখনও একটা ফুলের চারা লাগায়নি সে কিনা ফার্ম হাউস করবে … অংশু - সময়ের সাথে সব বদলায় ম্যাডাম , আচ্ছা তোমার কনুইয়ের নীচে সেই পোড়া দাগটা দেখি তো গেছে কিনা … দীপা- তুমি অনেক রোগা হয়ে গেছো , তা ওজন কত শুনি ? অংশু - সত্তর বাহাত্তর হবে বোধহয় মাপিনি, দীপা - তা কেনো মাপবে ? একটা অগোছালো মানুষ। অংশু - যাক বাবা তাও অপদার্থ শব্দ টা বলোনি। দীপা - ভাবোনা ডিভোর্স হয়েছে বলে সে অধিকার নেই। সমাজ বিজ্ঞানের অধ্যাপক হয়েও আসলে সমাজটাই শেখোনি , আর কি শিখেছো বলো, ঐ ছেলে পড়ানো , সেমিনার আর লেখালেখি। তা ধন্যবাদ তোমার রূপালী ঠৌট উপন্যাস এবছর একাডেমি পেলো , দারুণ লেখো তুমি, আগের চেয়ে অনেক ধার। অংশু- বাঃ তুমি পড়েছো ? দীপা- সব পড়েছি , তোমার রিসেন্ট উপন্যাসের নায়িকা মেঘনা টি কে ? মানে কার আড়ালে কাকে লিখেছো ? অংশু - এও কি বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপিকাকে বলে দিতে হবে ? দীপা- বারোটা বছর সময়ের শাসনে অনেক বদলালেও আমি বোধহয় সেই বড্ড সেকেলেই রয়ে গেলাম। অংশু - একা একাই কাটিয়ে দিলে বারো বছর। দীপা- একই প্রশ্ন আমিও করতে পারি। অংশু - আচ্ছা দীপা আজ না হয় শেষবারের মতো বলি, আমার মধ্যে কি ছিলো না বলোতো ? কেনো পারোনি এই বাউন্ডুলে ভবঘুরে মানুষটার সাথে চিরকালের ঘর বাঁধতে ? আমি কি ভালোবাসতে জানি না ? .....বিস্তারিত পড়ুন
দীপাবলির সময় কেন পটকা ফোটানো নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা যায় না ?
উত্তরাপথঃ দীপাবলির পরের দিন, যখন কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (CPCB) শহরের বায়ু মানের সূচকের তালিকা প্রকাশ করে,তখন দেখা যায় রাজধানী দিল্লি বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দূষিত শহরের প্রথমেই রয়েছে। CPCB-এর মতে, ১২ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় দিল্লির বায়ু মানের সূচক ছিল ২১৮ যা ভোরের দিকে বেড়ে ৪০৭ এ পৌঁছায় । ৪০০ – ৫০০ AQI এর স্তর সুস্থ ব্যক্তিদের প্রভাবিত করে। দীপাবলির সারা রাত, লোকেরা পটকা ফাটিয়ে দীপাবলি উদযাপন করে। ১৩ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আবার তথ্য প্রকাশ করে এই তালিকায়, দিল্লির গড় বায়ু মানের সূচক ছিল ৩৫৮ যা 'খুব খারাপ' বিভাগে পড়ে। বায়ু দূষণের এই পরিস্থিতি শুধু দিল্লিতেই সীমাবদ্ধ ছিল না। নয়ডার বায়ু মানের সূচক ১৮৯ থেকে ৩৬৩ এ এবং রোহতক, হরিয়ানার ১৩৭ থেকে বেড়ে ৩৮৩ হয়েছে। দীপাবলির দুই দিন দিল্লি ,নয়ডা ,কলকাতা, মুম্বাই সহ দেশের অন্যান্য শহরেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। এই দিনগুলিতে মানুষ বিষাক্ত বাতাসে শ্বাস নিতে বাধ্য হয়েছে। ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জাতীয় রাজধানী দিল্লি এবং নয়ডায় সবুজ পটকা ছাড়া যে কোনও ধরণের আতশবাজি ফাটান সম্পূর্ণ রূপে নিষিদ্ধ। আদালত সবুজ পটকা পোড়ানোর সময়ও নির্ধারণ করে দিয়েছে রাত ৮টা থেকে ১০টা। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে সুপ্রিম কোর্টের এই আদেশের মানে কী? আদালতের এই আদেশ কি এখন প্রত্যাহার করা উচিত? পুলিশ কেন এই আদেশ কার্যকর করতে পারছে না? এর জন্য কি পুলিশ দায়ী নাকি সরকারের উদাসীনতা রয়েছে এর পেছনে? .....বিস্তারিত পড়ুন
Bandna Festival: ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল পাঁচ দিন বাঁদনার আমেজে মশগুল থাকে
বলরাম মাহাতোঃ চিরাচরিত রীতি অনুযায়ী কার্তিক অমাবস্যার আগের দিন থেকে মোট পাঁচ দিন ব্যাপী বাঁদনার(Bandna Festival) আমেজে মশগুল থাকে ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। অবশ্য, পরবের শুভ সূচনা হয় তারও কয়েকদিন আগে। আদিবাসী সম্প্রদায়ের সামাজিক শাসন ব্যবস্থার চূড়ামণি হিসাবে গাঁয়ের মাহাতো, লায়া, দেহরি কিম্বা বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি নির্ধারণ করেন- ৩, ৫, ৭ বা ৯ ক’দিন ধরে গবাদি পশুর শিং-এ তেল মাখাবে গৃহস্বামী! রুখামাটির দেশের লোকেরা কোনোকালেই মাছের তেলে মাছ ভাজা তত্ত্বের অনুসারী নয়। তাই তারা গোরুর শিং-এ অন্য তেলের পরিবর্তে কচড়া তেল মাখানোয় বিশ্বাসী। কারণ কচড়া তেল প্রস্তুত করতে গোধনকে খাটাতে হয় না যে! কচড়া তেলের অপ্রতুলতার কারণে বর্তমানে সরষের তেল ব্যবহৃত হলেও, কচড়া তেলের ধারণাটি যে কৃষিজীবী মানুষের গবাদি পশুর প্রতি প্রেমের দ্যোতক, তা বলাই বাহুল্য! এভাবেই রাঢ বঙ্গে গোবর নিকানো উঠোনে হাজির হয়- ঘাওয়া, অমাবস্যা, গরইয়া, বুঢ়ি বাঁদনা ও গুঁড়ি বাঁদনার উৎসবমুখর দিনগুলি। পঞ্চদিবসে তেল দেওয়া, গঠ পূজা, কাঁচি দুয়ারি, জাগান, গহাইল পূজা, চুমান, চউক পুরা, নিমছান, গোরু খুঁটা, কাঁটা কাঢ়া প্রভৃতি ১১টি প্রধান পর্ব সহ মোট ১৬টি লোকাচারের মাধ্যমে উদযাপিত হয় বাঁদনা পরব(Bandna Festival )। .....বিস্তারিত পড়ুন