

উত্তরাপথঃ প্রতি বছরই যেন আগের বারের রেকর্ড ভেঙে বেশি পূণ্যার্থী এসে ভিড় করেন গঙ্গাসাগরে। এই আবহে মকরস্নানের আগেই উঠে এল পূণ্যার্থীদের অবিশ্বাস্য পরিসংখ্যান। উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গত বুধবার গঙ্গাসাগর মেলার উদ্বোধন করেছিলেন। সেদিন থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত গঙ্গাসাগরে আগত পূণ্যার্থীদের সংখ্যা প্রকাশ্যে এসেছে।জানা গেছে বুধবার গঙ্গাসাগর মেলা শুরু হওয়ার পর থেকে শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৪৫ লক্ষ পুণ্যার্থী গঙ্গাসাগরে স্নান সেরে ফিরে গিয়েছেন। এবছর পূণ্যস্নানের যোগ ছিল রবিবার (ইংরেজি মতে সোমবার) রাত ১২টা ১৩ মিনিট থেকে সোমবার দুপুর ১২ টা ১৩ মিনিট পর্যন্ত।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে শনিবারই গঙ্গাসাগরে যান মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, সুজিত বসু, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়রা। সেখানে গিয়ে গোটা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখেন তাঁরা।এই আবহে পূণ্যার্থীদের ভিড় সামলাতে কলকাতা থেকে কাকদ্বীপ পর্যন্ত একাধিক বাফার জোন তৈরি করা হয়েছে। মেলা প্রাঙ্গণে রয়েছে ৩৪টি ওয়াচ টাওয়ার। ১১০০ সিসি ক্যামেরা ও ড্রোনের মাধ্যমে নজদারি চলছে সবসময়।এবার গঙ্গাসাগরের ৬টি স্নানঘাটে স্নানের আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিটি ঘাট এখন কানায় কানায় পূর্ণ। ভোর থেকেই সাগরতটে চলছে গঙ্গাবন্দনা। কেউ কেউ প্রদীপ জ্বালিয়ে আরতি করছেন। কেউ কেউ গরুর লেজ ধরে বৈতরণী পার হচ্ছেন। প্রদীপের আলো, ধূপ, ধুনোর গন্ধে মোহময় হয়ে উঠেছে মিলনতীর্থ সাগরমেলা।
সংক্রান্তির ঠান্ডা তোয়াক্কা না করেই গঙ্গাসাগর মেলা লোকে লোকারণ্য। সারা রাস্তা সব তীর্থ বারবার গঙ্গাসাগর একবার’ লেখা ফেস্টুন ও ব্যানারে মুড়ে দেওয়া হয়েছে। সাধুসন্ত ও দেহাতি তীর্থযাত্রীরা অনেক আগে থেকেই ভিড় জমিয়েছেন। শুধু জটাধারী সাধুসন্তরা নন, প্রচুর সাধারণ মানুষওহাজির। যাত্রীবোঝাই বাসে চেপে দলে দলে পুণ্যার্থীরা আসছেন।প্রশাসনের হিসেব, ভিড় এ বার রেকর্ড করতে পারে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাগর ও আশপাশের এলাকার উন্নয়নে প্রায় ৬১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকার প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন। সাগর ব্লকে একটি বড় পানীয় জলের প্রকল্প করা হয়েছে। এতে খরচ হয়েছে ৪৩ কোটি ২০ লক্ষ টাকা।মেলার আলোর জন্যই ৮ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এ কথা ঠিক যে গঙ্গাসাগরে আগে তেমন কিছুই ছিল না। কিন্তু এখন পরিকাঠামো খুবই ভাল।


খোলা আকাশের নিচে উত্তরে হাওয়া আর প্রবল ঠান্ডা কে উপেক্ষা করে লক্ষ লক্ষ পূন্যার্থীর মুখে একটাই আওয়াজ কপিলমুনি কি জয়। গঙ্গা মাই কি জয়। যেহেতু রবিবার ও আজ সোমবার মকর সংক্রান্তির স্নান প্রশাসন মনে করা হচ্ছে এই সময়ের মধ্যে কয়েক লক্ষ্যধিক তীর্থ যাত্রীর সমগম হবে। সেইমতো গঙ্গাসাগর মেলা প্রশাসন সমস্ত বিভাগ গুলোকে সতর্ক থাকা নির্দেশ দিয়েছে অনেক আগেই।


আরও পড়ুন
সম্পাদকীয়- রাজনৈতিক সহিংসতা ও আমাদের গণতন্ত্র
সেই দিনগুলো চলে গেছে যখন নেতারা তাদের প্রতিপক্ষকেও সম্মান করতেন। শাসক দলের নেতারা তাদের বিরোধী দলের নেতাদের কথা ধৈর্য সহকারে শুনতেন এবং তাদের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতেন। আজ রাজনীতিতে অসহিষ্ণুতা বাড়ছে। কেউ কারো কথা শুনতে প্রস্তুত নয়। আগ্রাসন যেন রাজনীতির অঙ্গ হয়ে গেছে। রাজনৈতিক কর্মীরা ছোটখাটো বিষয় নিয়ে খুন বা মানুষ মারার মত অবস্থার দিকে ঝুঁকছে। আমাদের দেশে যেন রাজনৈতিক সহিংসতা কিছুতেই শেষ হচ্ছে না।আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার চেয়ে রাজনৈতিক সংঘর্ষে বেশি মানুষ নিহত হচ্ছেন। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি) অনুসারে, ২০১৪ সালে, রাজনৈতিক সহিংসতায় ২৪০০ জন প্রাণ হারিয়েছিল এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ২০০০ জন মারা গিয়েছিল। আমরা পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্র হিসেবে আমাদের দেশের গণতন্ত্রের জন্য গর্বিত হতে পারি, কিন্তু এটা সত্য যে আমাদের সিস্টেমে অনেক মৌলিক সমস্যা রয়েছে যা আমাদের গণতন্ত্রের শিকড়কে গ্রাস করছে, যার জন্য সময়মতো সমাধান খুঁজে বের করা প্রয়োজন। .....বিস্তারিত পড়ুন
ফ্লিম রিভিউ -ওপেনহাইমার
উত্তরাপথ: বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্রিস্টোফার নোলান দ্বারা পরিচালিত”ওপেনহাইমার” একটি মাস্টারপিস মুভি। ছবিতে জে. রবার্ট ওপেনহেইমার, এক নামকরা পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পারমাণবিক বোমার বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।এই সিনেমায় ওপেনহাইমার এর জটিল জীবনকে বর্ণনা করা হয়েছে। সেই হিসেবে 'ওপেনহাইমার'কে বায়োপিক বলা যেতে পারে। কারণ এটি একজন মানুষের গল্প। এই ছবির গল্প তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত।ছবির শুরুতে পারমাণবিক বোমা তৈরির আবেগের কথা বলা হয়েছে। যেখানে নায়ক কিছু না ভেবে নিবেদিতপ্রাণভাবে এমন একটি অস্ত্র তৈরিতে নিয়োজিত থাকে যা বিশ্বকে ধ্বংস করতে পারে। অস্ত্র তৈরি হওয়ার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে নায়ক তার কাজের ফলাফল দেখে অপরাধবোধে পূর্ণ হয়। এবং তৃতীয় পর্যায়টি হল রাজনীতি যা ওপেনহাইমারকে মোকাবেলা করতে হয়েছে। পুরো সিনেমাটি রঙিন হলেও রাজনৈতিক অংশ সাদা-কালো রাখা হয়েছে। এই তিনটি সময়কালে যা কিছু ঘটছে, তা সবই একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত। .....বিস্তারিত পড়ুন
Vijay Stambh : চিতোরগড় দুর্গে বিজয় স্তম্ভ হিন্দু – মুসলিম সহাবস্থানের প্রতীক
উত্তরাপথঃ খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীতে মৌর্য রাজবংশ কর্তৃক স্থাপিত চিতোরগড় দুর্গ সাহস ও আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে আজও দাঁড়িয়ে আছে। এই দুর্গ তার বিশাল কাঠামো, রাজপ্রাসাদ, একাধিক সুদৃশ্য মন্দির সহ সুন্দর জলাশয়ের জন্য বিখ্যাত।৭০০-একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, এই দুর্গটিতে প্রায় ৬৫টি ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন রয়েছে যা রাজপুত এবং ইসলামিক স্থাপত্য শৈলীর সূক্ষ্মতার প্রমান দেয়। বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh)) হল এই দুর্গে অবস্থিত,সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর কাঠামো।এই আশ্চর্য-অনুপ্রেরণামূলক স্তম্ভটি কেবল তার উচ্চতার জন্য বিখ্যাত নয়,এটি রাজপুতদের অদম্য সাহস এবং অধ্যবসায়ের গল্পও বলে যা চিতোরগড় দুর্গেরই সমার্থক হয়ে উঠেছে।বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh), নাম থেকে বোঝা যায়, বিজয়ের প্রতীক। প্রাচীনকালে যে কোনো যুদ্ধ অভিযানের সাফল্যের পর সেই বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতে রাজারা মন্দির, স্তূপ, স্মৃতিস্তম্ভ ও স্তম্ভ নির্মাণ করতেন। ৯ তলা এই বিজয় স্তম্ভটি ১৯৪০ থেকে ১৪৪৮ সালের মধ্যে মহারানা কুম্ভ দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন
রাতের ঘামের সমস্যা এবং এ সম্পর্কে আপনি কি করতে পারেন
উত্তরাপথঃ রাতের ঘামের সমস্যা শরীরের কুলিং সিস্টেমের একটি স্বাভাবিক অংশ, তাপ মুক্তি এবং সর্বোত্তম শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে।তবে রাতের ঘাম একটি সাধারণ সমস্যা যা বিভিন্ন কারণে হতে পারে।এর অস্বস্তিকর অনুভূতির জন্য ঘুম ব্যাহত হতে পারে, যার ফলে ক্লান্তি এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে। আপনি যদি রাতে অতিরিক্ত ঘাম অনুভব করেন, তাহলে তার অন্তর্নিহিত কারণটি চিহ্নিত করা এবং এটি মোকাবেলার জন্য কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এখানে রাতের ঘামের কিছু সম্ভাব্য কারণ নিয়ে আলোচনা করা হল।মেনোপজ: যে কেউ, বয়স বা লিঙ্গ নির্বিশেষে, রাতের ঘাম অনুভব করতে পারে। .....বিস্তারিত পড়ুন