

উত্তরাপথঃএকজন ডায়াবেটিস রোগীকে কিছু খাওয়ার আগে অনেকবার ভাবতে হয়। খাওয়ার আগে চিনির পরিমাণ দেখে নিতে হয়, কারণ একজন ডায়াবেটিস রোগীকে রক্তে শর্করার মাত্রা সবসময় নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়। এর জন্য ডায়েটের পাশাপাশি বেশ কিছু শারীরিক কাজকর্ম করতে হয়। কিন্তু একটু অসাবধান হলেই যখন শরীরে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়, তখন আমাদের আরও বেশী সতর্কতার প্রয়োজন হয়। এই নিবন্ধে, আমরা এমন পাঁচটি ভেষজ পানীয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব, যা নিয়মিত সেবনে একজন ডায়াবেটিক রোগীকে তার শরীরে শর্করার মাত্রা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করবে।
মেথি মিশ্রিত পানীয়
প্রায় প্রতিটি বাড়ির রান্নাঘরে মেথি পাওয়া যাবে। এটি রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে ভেষজের মতো কাজ করে। একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, মেথিতে দ্রবণীয় ফাইবার পাওয়া যায়, যা কার্বোহাইড্রেট হজমের গতি কমিয়ে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। মেথি চা বানাতে এক চা চামচ মেথি বীজ কয়েক মিনিট গরম জলে ভিজিয়ে ছেঁকে পান করুন। মেথির এই পানীয় নিয়মিত পান করলে HbA1c মাত্রা কমতে পারে, যা দীর্ঘমেয়াদে রক্তে শর্করাকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
দারুচিনি মিশ্রিত পানীয়
দারুচিনি একটি জনপ্রিয় মশলা, যা তার স্বাদের জন্য পরিচিত। তবে এর অনেক ঔষধি গুণও রয়েছে। একটি গবেষণা অনুসারে, দারুচিনি ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত করার পাশাপাশি রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। দারুচিনি মিশ্রিত পানীয় বানাতে গরম জলে দারুচিনি দিয়ে ১০ মিনিট ফুটিয়ে নিন। এর পর ফিল্টার করে পান করুন। এর নিয়মিত সেবন রক্তে শর্করা এবং HbA1c মাত্রা কমায়।
আদা মিশ্রিত পানীয়
আদা একটি ভেষজ যা প্রদাহরোধী এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে। একটি গবেষণা অনুসারে, আদা ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করার মাত্রা এবং HbA1c কমায়। আদা মিশ্রিত পানীয় তৈরি করতে, একটি ছোট টুকরো আদা বেটে গরম জলে ৫-১০ মিনিট সিদ্ধ করুন, তারপর ছেঁকে নিন এবং সেবন করুন। আদা নিয়মিত সেবন অক্সিডেটিভ স্ট্রেস এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
সবুজ চা
গ্রিন টি তার অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতার জন্য পরিচিত। এর নিয়মিত সেবন ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। গবেষণা অনুসারে, সবুজ চায়ে পলিফেনল রয়েছে, বিশেষ করে এপিগালোকাটেচিন গ্যালেট (ইজিসিজি), যা ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত করতে এবং রক্তে শর্করাকে কমাতে সাহায্য করে। এজন্য একটি টি ব্যাগ গরম জলে ২-৩ মিনিট ভিজিয়ে গ্রিন টি তৈরি করতে পারেন।
হিবিস্কাস মিশ্রিত পানীয়
হিবিস্কাস মিশ্রিত পানীয় স্বাদের পাশাপাশি অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা দেয়। এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায়, যা রক্তে শর্করার পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে হিবিস্কাস নির্যাস রক্তে শর্করার মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে পারে। হিবিস্কাস মিশ্রিত পানীয় তৈরি করতে, প্রায় ৫-১০ মিনিটের জন্য গরম জলে তাজা বা শুকনো হিবিস্কাস ফুল ফুটাতে হবে, এরপর সেই জল ফিল্টার করে পান করতে হবে।
সতর্কতা
তবে ভেষজ পানীয় গ্রহণ করার সময়, কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। এর প্রতিকূল প্রভাব এড়াতে কোনও ধরনের ভেষজ পানীয় গ্রহণ করার আগে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন। ডাক্তারের দেওয়া নির্দেশ মেনে চলুন। ভালো দোকান থেকে সব ভেষজ কিনুন, যাতে ভেজাল না থাকে। তবে গর্ভবতী মহিলাদের বিশেষভাবে সতর্ক হওয়া উচিত।
আরও পড়ুন
সম্পাদকীয়- রাজনৈতিক সহিংসতা ও আমাদের গণতন্ত্র
সেই দিনগুলো চলে গেছে যখন নেতারা তাদের প্রতিপক্ষকেও সম্মান করতেন। শাসক দলের নেতারা তাদের বিরোধী দলের নেতাদের কথা ধৈর্য সহকারে শুনতেন এবং তাদের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতেন। আজ রাজনীতিতে অসহিষ্ণুতা বাড়ছে। কেউ কারো কথা শুনতে প্রস্তুত নয়। আগ্রাসন যেন রাজনীতির অঙ্গ হয়ে গেছে। রাজনৈতিক কর্মীরা ছোটখাটো বিষয় নিয়ে খুন বা মানুষ মারার মত অবস্থার দিকে ঝুঁকছে। আমাদের দেশে যেন রাজনৈতিক সহিংসতা কিছুতেই শেষ হচ্ছে না।আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার চেয়ে রাজনৈতিক সংঘর্ষে বেশি মানুষ নিহত হচ্ছেন। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি) অনুসারে, ২০১৪ সালে, রাজনৈতিক সহিংসতায় ২৪০০ জন প্রাণ হারিয়েছিল এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ২০০০ জন মারা গিয়েছিল। আমরা পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্র হিসেবে আমাদের দেশের গণতন্ত্রের জন্য গর্বিত হতে পারি, কিন্তু এটা সত্য যে আমাদের সিস্টেমে অনেক মৌলিক সমস্যা রয়েছে যা আমাদের গণতন্ত্রের শিকড়কে গ্রাস করছে, যার জন্য সময়মতো সমাধান খুঁজে বের করা প্রয়োজন। .....বিস্তারিত পড়ুন
Fructose: নতুন গবেষণায় ফ্রুক্টোজকে স্থূলতার কারণ বলা হয়েছে
উত্তরাপথঃ একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় জোরালো প্রমাণ দেওয়া হয়েছে যে ফ্রুক্টোজ (Fructose), সাধারণত প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং পানীয়গুলিতে থাকা এক ধরনের চিনি, যা স্থূলতার প্রাথমিক চালক। বছরের পর বছর ধরে, পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা , পাশ্চাত্য খাদ্যে, স্থূলতার মূল কারণ নিয়ে বিতর্ক করেছেন, কেউ কেউ অত্যধিক ক্যালোরি গ্রহণের দিকে ইঙ্গিত করেছেন, অন্যরা কার্বোহাইড্রেট বা চর্বি জাতীয় খাবারকে দায়ী করেছেন। Obesity জার্নালে সাম্প্রতিক একটি গবেষণাপত্রে ফ্রুক্টোজকে স্থূলতার প্রকৃত চালক হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।The University of Colorado Anschutz Medical Campus এর Dr. Richard Johnson এবং তার দলের মতে, ফ্রুক্টোজ হল একটি সাধারণ চিনি যা ফল এবং মধুর প্রাথমিক পুষ্টি। .....বিস্তারিত পড়ুন
ফ্লিম রিভিউ -ওপেনহাইমার
উত্তরাপথ: বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্রিস্টোফার নোলান দ্বারা পরিচালিত”ওপেনহাইমার” একটি মাস্টারপিস মুভি। ছবিতে জে. রবার্ট ওপেনহেইমার, এক নামকরা পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পারমাণবিক বোমার বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।এই সিনেমায় ওপেনহাইমার এর জটিল জীবনকে বর্ণনা করা হয়েছে। সেই হিসেবে 'ওপেনহাইমার'কে বায়োপিক বলা যেতে পারে। কারণ এটি একজন মানুষের গল্প। এই ছবির গল্প তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত।ছবির শুরুতে পারমাণবিক বোমা তৈরির আবেগের কথা বলা হয়েছে। যেখানে নায়ক কিছু না ভেবে নিবেদিতপ্রাণভাবে এমন একটি অস্ত্র তৈরিতে নিয়োজিত থাকে যা বিশ্বকে ধ্বংস করতে পারে। অস্ত্র তৈরি হওয়ার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে নায়ক তার কাজের ফলাফল দেখে অপরাধবোধে পূর্ণ হয়। এবং তৃতীয় পর্যায়টি হল রাজনীতি যা ওপেনহাইমারকে মোকাবেলা করতে হয়েছে। পুরো সিনেমাটি রঙিন হলেও রাজনৈতিক অংশ সাদা-কালো রাখা হয়েছে। এই তিনটি সময়কালে যা কিছু ঘটছে, তা সবই একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত। .....বিস্তারিত পড়ুন
World Children's Day: সত্যিই কি ‘বিশ্ব শিশু দিবস´পালনের কোনও যৌক্তিকতা আছে ?
প্রীতি গুপ্তাঃ হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটি দিন তারপর ১৪ নভেম্বর আমাদের দেশ সহ সারা বিশ্বজুড়ে পালন করা হবে ‘বিশ্ব শিশু দিবস´(World Children's Day)।এই দিনটি শিশুদের মঙ্গলের জন্য, তাদের ভবিষ্যতের জন্য একটি অনুকূল বিশ্ব তৈরি করার প্রচেষ্টার একটি দিন।কিন্তু প্রশ্ন,সত্যি কি হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে সারা বিশ্ব জুড়ে শিশু দিবস পালন করার কোনও যৌক্তিকতা আছে? আদৌ কি এর কোনও লাভ আমরা আমাদের প্রান্তিক স্তরের শিশুদের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছি ? সম্প্রতি কাজের প্রয়োজনে রাজস্থানের উদয়পুর শহরে আসা। আমরা সবাই জানি উদয়পুর বিখ্যাত তার হ্রদের কারণে । এখানকার স্থানীয় থেকে পর্যটক সকলেই এই সুন্দর হ্রদগুলির আকর্ষণে বারবার ছুঁটে যায়। ‘ফতে সাহেব লেক’ রাজস্থানের উদয়পুরের এক বিখ্যাত পর্যটক স্থল।এখানে বহু মানুষ সকাল- বিকেল এই লেকের চার ধারে হাঁটাহাঁটি করতে বেরিয়ে পড়ে। সেভাবেই দুই দিন আগে বিকেলে হঠাৎ করে বেরিয়ে পড়লাম ‘ফতে সাহেব লেকের ধারে হাঁটার উদ্দেশ্য নিয়ে। হাঁটার মাঝখানে হঠাৎ করে একটি বাচ্চাছেলে আওয়াজ করে ডাকছে ,বললাম কিছু বলবি? সে বলল একটু দাঁড়াতে। ও ছুটে গিয়ে হাতে করে কয়েকটি বেলুন নিয়ে এসে হাজির । সে বারবার বেলুন কেনার অনুরোধ জানাতে লাগল। হাতে অন্য কাজের চাপ নেই অনেকটা অবসর সময় তাই আমি অনেকটা সাংবাদিক সুলভ মন নিয়ে বললাম ঠিক আছে আমি তোর বেলুন নেব ,কিন্তু তার আগে আমি তোকে যা বলব তার তার ঠিক ঠিক উত্তর দিতে হবে। সে খুশী খুশী রাজি হয়ে গেল । .....বিস্তারিত পড়ুন